চিয়াংসু প্রদেশ 江苏省 | |
---|---|
প্রদেশ | |
নামের প্রতিলিপি | |
• চীনা | 江苏省 (Jiāngsū Shěng) |
• সংক্ষিপ্ত রূপ | 苏 (ফিনিন: Sū) |
• উ | Kaonsu San |
চীনের মানচিত্রে চিয়াংসু প্রদেশ-এর অবস্থান দেখানো হচ্ছে | |
স্থানাঙ্ক: ৩২°৫৪′ উত্তর ১১৯°৪৮′ পূর্ব / ৩২.৯° উত্তর ১১৯.৮° পূর্ব | |
নামকরণের কারণ | 江 চিয়াংনিং (বর্তমান নানচিং) 苏 সুচৌ |
রাজধানী | নানজিং |
বৃহত্তম শহর | সুচৌ |
প্রশাসনিক বিভাজন | ১৩ জেলা, ১০৬ উপজেলা, শহর |
সরকার | |
• সচিব | লি ছিয়াং (জন্ম ১৯৫৯)লি ছিয়াং |
• গভর্নর বা প্রশাসক | শি থাইফেং |
আয়তন | |
• মোট | ১,০২,৬০০ বর্গকিমি (৩৯,৬০০ বর্গমাইল) |
এলাকার ক্রম | ২৫তম |
জনসংখ্যা (2012)[১] | |
• মোট | ৭,৯২,০০,০০০ |
• ক্রম | ৫ |
• জনঘনত্ব | ৭৭০/বর্গকিমি (২,০০০/বর্গমাইল) |
• ঘনত্বের ক্রম | ৪র্থ |
জনপরিসংখ্যান | |
• জাতিগত গঠন | হান – 99.6% Hui – 0.2% |
• ভাষা ও আঞ্চলিকতা | Jianghuai Mandarin, Wu, Zhongyuan Mandarin |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | CN-32 |
GDP (২০১৫) | CNY 7.2 trillion $ 1.1 trillion[২] (৩য়) |
• মাথাপিছু | CNY 90,800 US$ 14,100 (৪র্থ) |
এইচডিআই (২০১০) | 0.748[৩] (high) (৪র্থ) |
ওয়েবসাইট | www |
Jiangsu | |||||||||||||||||||||||||||||
সরলীকৃত চীনা | 江苏 | ||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 江蘇 | ||||||||||||||||||||||||||||
পোস্টাল | Kiangsu | ||||||||||||||||||||||||||||
আক্ষরিক অর্থ | Nanjing (from its former name Jiangning) and Suzhou | ||||||||||||||||||||||||||||
|
চিয়াংসু[টীকা ১] গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত একটি প্রদেশ। এর সাথে আনহুই প্রদেশ, বেইজিং ও সাংহাই মহানগরী এবং শানতুং প্রদেশের সীমান্ত রয়েছে। ইয়াং ছি কিয়াং নদী চিয়াংসুর দক্ষিণাংশ দিয়ে অতিক্রম করেছে। চিয়াংসু প্রদেশের ১০২০ কি.মি. সমুদ্র সৈকত রয়েছে পীত সাগর বরাবর।
১৯১২ সনে স্বল্পস্থায়ী চীন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায়। ১৯২৭ সনে নানচিং শহরে চিয়াংকাই শেকের নতুন সরকার গঠনের পূর্ব পর্যন্ত বহু সম্রাট দ্বারা চিয়াংসু শাসিত হয়েছে। ১৯৩৭ সনে দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ শুরুর পূর্ব পর্যন্ত চিয়াংকাই শেক প্রতিষ্ঠিত চিয়াংসু প্রদেশ সুস্থিত ছিল। শেষ পর্যন্ত চিয়াং কাই শেকের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হতে থাকে এবং ১৩ ডিসেম্বর, ১৯৩৭ জাপানী বাহিনী নানচিং/চিয়াংসু দখল করে নেয় এবং পরবর্তী তিন মাস মর্মান্তিক নানচিং গণহত্যা হিসেবে স্মরিত হয়ে আসছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির সাথে সাথে নানচিং আবার গণপ্রজাতান্ত্রিক চীনের রাজধানী হিসেবে আত্বপ্রকাশ করে। কম্যুনিস্ট বাহিনী ও কুওমিনতাং সরকারের মধ্যকার যুদ্ধে কুওমিনটাং সরকার পরাজয় বরণ করে। ফলস্রুতিতে কুওমিনটাং তাইপেইতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে চীনা সরকার তাইওয়ান শাসন করতে থাকে। কম্যুনিস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই বেইজিং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাজধানী হয় এবং তখন থেকে নানচিং কেবল চিয়াংসুর প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
চিয়াংসু বহু বছর যাবত চীনে ‘প্রাচ্যের ভেনিস’ নামে পরিচিত কেননা দক্ষিণের সুচৌ শহরের মধ্যে বিভাজনকারী খাল বয়ে গিয়েছে। চিয়াংসুর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হচ্ছে ইউনতাই পর্বত যার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬২৫ মিটার উচ্চে। চিয়াংসুর সর্ববৃহত হ্রদ হচ্ছে তাইহু হ্রদ। চিয়াংসু প্রদেশ রাজধানী নানচিং (Nanjing) শহরে বহু দর্শনীয় স্থাপত্য রয়েছে এছাড়া চিয়াংসুর অন্যান্য অনেক দর্শনীয় শহরগুলিও আপনি দেখতে পারেন যদি হাতে সময় থাকে। অন্যান্য শহরগুলি যেমন খুনশান (Kunshan), চেনচিয়াং (Zhenjiang), চিয়াংইয়ান (Jiangyan), চিয়াংইন (Jiangyin), নানথুং (Nantong), কাওইয়ৌ (Gaoyou), ইশিং (Yixing), ইয়ানছেং (Yancheng), সুছিয়েন (Suqian), রুকাও (Rugao), থাইচৌ (Taizhou), চিংচিয়াং (Jingjiang), শুচৌ (Xuzhou), ছাংচৌ (Changzhou), সুচৌ (Suzhou), হুয়াইআন (Huai'an), থাইৎসাং (Taicang), উচিয়াং (Wujiang), উশি (Wuxi), ইয়াংচৌ (Yangzhou), লিয়েন ইউন কাং (Lianyungang), চাংচিয়াকাং (Zhangjiagang) এবং ছাংশু (Changshu)।
চিয়াংসুর জলবায়ু শুষ্ক, আদ্রতাপূর্ণ এবং প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয়। জানুয়ারী মাসে গড় তাপমাত্রা -২৭ ডিগ্রী থেকে ৪ ডিগ্রী সে. এবং জুলাই মাসের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রী থেকে ৩০ ডিগ্রী সে.। প্রায়ই এখানে টাইফুন আঘাত হানে এবং গ্রীষ্মকাল থেকে শরতকাল পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টি হয়।
চিয়াংসুর কৃষিজাত পণ্য হলো রেশম, গম, ধান, ভুট্টা এবং সরঘাম। চিয়াংসু প্রদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল হলো, সয়াবিন, আমবেরী, গাজা, চীনাবাদাম, আঙুর, তুলা, চা এবং তিসি। এছাড়াও রয়েছে আপেল, পীচ, চীনা ঔষধি গাছ, নাশপাতি ও স্বাদু পানির মাছ যা চিয়াংসুর গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। চিয়াংসুর বিশালায়তনের টেক্সটাইল ও খাদ্যশিল্প, নির্মাণ উপকরণ, অটোমোবাইল, ইলেক্ট্রনিক এবং রসায়ন শিল্প রয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা তেং চিয়াও ফিং অনেক অর্থনৈতিক সংস্কার সাধন করেন যা চিয়াংসুর অনেক প্রদেশকে গড়ে তুলতে সাহায্য করে যেমন উশি ও সুচৌ শহর। সুচৌ শহরে চীনের একমাত্র শিল্প পার্ক রয়েছে যেটা সিঙ্গাপুরের তৈরী। চিয়াংসুর রয়েছে শানতুং ও কুয়াংতুং প্রদেশের পরে তৃতীয় সর্বোচ্চ জিডিপি যা ২০০৭ সনে ছিল ৩৩,৬৮৯ ইউয়ান মাথাপিছু, এটা চিয়াংসুকে চীনের মধ্যে সবচেয়ে ধনী প্রদেশে পরিনত করেছে। প্রদেশের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১৪.৮% সেই সাথে ২০০৭ সালে সর্বনিম্ন জিডিপি ছিল ২.৫৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ।
চিয়াংসুর রাজধানী নানচিং অনেক চীনা রাজবংশের রাজধানী শহর হওয়ায় এর প্রচুর ঐতিহাসিক সম্পদ রয়েছে। এদের মধ্যে সুন ইয়াত সেন সমাধিসৌধ, পার্পল পর্বতমালা, জুয়ানউ হ্রদ, মিং রাজবংশ সিটি ওয়াল এবং গেট, জিমিং মন্দির, নানচিংয়ের কনফুসিয়াস মন্দির এবং নানচিং গণহত্যা স্মৃতিসৌধ অন্যতম।
আপনার যদি সুচৌ ভ্রমণের সময় থাকে তাহলে অবশ্যই ইউনেস্কো স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট সুচৌয়ের ধ্রুপদী উদ্যান, হুকি টাওয়ার এবং হানশান মন্দিরের মতো বিখ্যাত জায়গাগুলো ভ্রমণ করবেন।
অন্যান্য দেখার মতো জিনিস হচ্ছে হাংচৌ শহরের পশ্চিম হ্রদ এবং উশি শহরে দুনিয়ার সবচেয়ে উচ্চ বুদ্ধ মূর্তি।