জ্যাক লেমন | |
---|---|
Jack Lemmon | |
জন্ম | তৃতীয় জন উহলার লেমন ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯২৫ |
মৃত্যু | ২৭ জুন ২০০১ লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৭৬)
সমাধি | ওয়েস্টউড ভিলেজ মেমোরিয়াল পার্ক সিমেট্রি |
মাতৃশিক্ষায়তন | হার্ভার্ড কলেজ |
পেশা | অভিনেতা, সঙ্গীতজ্ঞ |
কর্মজীবন | ১৯৪৯–২০০০ |
দাম্পত্য সঙ্গী | সিনথিয়া স্টোন (বি. ১৯৫০; বিচ্ছেদ. ১৯৫৬) ফেলিসিয়া ফার (বি. ১৯৬২; মৃ. ২০০০) |
সন্তান | ২, ক্রিস লেমন |
সামরিক কর্মজীবন | |
আনুগত্য | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
সেবা/ | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী |
কার্যকাল | ১৯৪৫–৪৬ |
পদমর্যাদা | টেমপ্লেট:Dodseal এনসাইন[১] |
তৃতীয় জন উহলার "জ্যাক" লেমন (ইংরেজি: John Uhler Jack Lemmon III, ৮ই ফেব্রুয়ারি, ১৯২৫ - ২৭শে জুন, ২০০১) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেতা ও সঙ্গীতজ্ঞ। তিনি আটবার একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং দুইবার এই পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ষাটের অধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যার মধ্যে রয়েছে সাম লাইক ইট হট, দি অ্যাপার্টমেন্ট, মিস্টার রবার্টস, ডেজ অব ওয়াইন অ্যান্ড রোজেস, দ্য গ্রেট রেস, ইর্মা লা দোস, দি অড কাপল, সেভ দ্য টাইগার, দ্য আউট-অফ-টাউনার্স, দ্য চায়না সিনড্রোম, মিসিং, গ্লেনগারি গ্লেন রস, টুয়েসডেজ উইথ মোরি, গ্রাম্পি ওল্ড মেন এবং গ্রাম্পিয়ার ওল্ড মেন। দ্য চায়না সিনড্রোম ও মিসিং চলচ্চিত্রের জন্য তিনি দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে কান চলচ্চিত্র উৎসব পুরস্কার লাভ করেন।
লেমন ১৯২৫ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি বোস্টনের নিকটবর্তী ম্যাসাচুসেটসের নিউটন শহরের নিউটন-ওয়েলেস্লি হাসপাতালে এলিভেটরে[২] জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হন উহলার লেমন জুনিয়র ছিলেন ডাফনাট কোম্পানির সভাপতি এবং মাতা মিলড্রেড বুর্গেস লারু। তিনি তার পিতামাতার একমাত্র সন্তান।[৩][৪] লেমন ম্যাসাচুসেটসের নিউটন শহরের জন ওয়ার্ড এলিমেন্টারি স্কুল এবং ওয়েস্টন শহরের রিভার্স স্কুলে পড়াশুনা করেন। লেমন ১৯৪৩ সালে ফিলিপস একাডেমি এবং ১৯৪৭ সালে হার্ভার্ড কলেজে পড়াশুনা করেন। হার্ভার্ডে পড়াকালীন তিনি এলিয়ট হাউজে বসবাস করতেন[৫] এবং কয়েকটি নাট্য সংঘের সক্রিয় সদস্য ছিলেন ও হাস্টি পুডিং ক্লাবের সভাপতি ছিলেন।[৬] তিনি হার্ভার্ডের ডেলফিক ক্লাবেরও সদস্য ছিলেন।
হার্ভার্ডে লেমন ভি-১২ নেভি কলেজ ট্রেনিং প্রোগ্রামের সদস্য ছিলেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী থেকে পদোন্নতি লাভ করেন।[৬] তার সামরিক জীবন সমাপ্ত করে হার্ভার্ডে ফিরে আসার পূর্বে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের এনসাইন পদে কাজ করেন।[৭] ১৯৪৭ সালে[৮] একটি ডিগ্রিসহ যুদ্ধ সেবা বিজ্ঞান বিষয়ে[৯] স্নাতক শেষ করার পর, লেমন অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেন এবং বেতার, টেলিভিশন ও ব্রডওয়েতে অভিনয় শুরু করেন। তিনি প্রশিক্ষক উটা হ্যাগেনের নিকট অভিনয় বিষয়ে পড়াশুনা করেন।[৬]
লেমনের চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় মাইকেল কার্টিজের ১৯৪৯ সালের দ্য লেডি টেক্স আ সেইলর চলচ্চিত্রে ক্ষুদ্র ভূমিকায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। কিন্তু তিনি ১৯৫৪ সালে জুডি হলিডে'র বিপরীতে হাস্যরসাত্মক ইট শুড হ্যাপেন টু ইউ চলচ্চিত্রের পূর্ব পর্যন্ত তেমন পরিচিতি পান নি।[৬] পরের বছর জন ফোর্ড ও মেলভিন লেরয় পরিচালিত মিস্টার রবার্টস চলচ্চিত্রে ফ্রাঙ্ক থল্রো পালভার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন এবং শ্রেষ্ঠ বিদেশি অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[৬]
লেমন পরিচালক বিলি ওয়াইল্ডারের পছন্দের অভিনেতা ছিলেন এবং তার পরিচালিত সাম লাইক ইট হট, দি অ্যাপার্টমেন্ট, ইর্মা লা দোস, দ্য ফরচুন কুকি, আভান্তি! দ্য ফ্রন্ট পেজ, এবং বাডি বাডি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯৫৯ সালে সাম লাইট ইট হট চলচ্চিত্রে জেরি "জেরার্ড" / ড্যাফনি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং শ্রেষ্ঠ বিদেশি অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কার ও সেরা সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন। পরের বছর দি অ্যাপার্টমেন্ট চলচ্চিত্রে সি সি ব্যাক্সটার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি পুনরায় শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং শ্রেষ্ঠ বিদেশি অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কার ও সেরা সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন।
লেমন পিয়ানোতে আসক্ত ছিলেন এবং নিজে নিজেই পিয়ানো বাজানো শিখেন। এছাড়া তিনি হারমোনিকা, গিটার, অরগান ও ডাবল বেজ বাজাতে পারতেন। লেমনের গানের গোলা প্রথম শুনা যায় ১৯৫৫ সালের থ্রি ফর দ্য শো উইথ বেটি গ্রেবল ও মাই সিস্টার এইলিন চলচ্চিত্র দুটিতে। তিনি ১৯৫৬ সালে ইউ ক্যান্ট রান অ্যাওয়ে ফ্রম ইট চলচ্চিত্রে স্টাবি কাই ও জুন অ্যালিসনের সাথে গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৫৮ সালে এপিক রেকর্ডস থেকে তার প্রথম একক অ্যালবাম আ টুইস্ট অব লেমন প্রকাশিত হয়।.১৯৫৯ সালে মেরিলিন মনরোর সাথে সাম লাইট ইট হট চলচ্চিত্রের চিত্রায়নের সময় তিনি তার দ্বিতীয় অ্যালবাম সাম লাইট ইট হট প্রকাশ করেন। এতে লেমনের কণ্ঠ গানের পাশাপাশি একটি একক পিয়ানো বাদনও রয়েছে।
এপিকের এই দুটি অ্যালবাম পরবর্তীতে ২০০১ সালে কালেক্টর্স চয়েস মিউজিকে আ টুইস্ট অব লেমন/সাম লাইট ইট হট নামে একক সিডিতে প্রকাশ হয়। কিন্তু এই অ্যালবামে ১৯৫৯ সালে প্রকাশিত "ড্যাফনি/স্লিপি লাগুন" ও ১৯৬০ সালে প্রকাশিত "আই এম ফরেভার ব্লোয়িং বাবলস/আই কভার দ্য ওয়াটারফ্রন্ট" গান দুটি ছিল না। এপিক রেকর্ডস ১৯৬০ সালে দি অ্যাপার্টমেন্ট চলচ্চিত্রের থিমের লেমনের পিয়ানোর একটি একক প্রকাশ করে। এটি লেমনের নিজের সুর লেমন ব্লুজ এই একক প্রকাশে সহায়তা করে। ১৯৬৩ সালে ক্যাপিটল রেকর্ডস থেকে লেমন তার তৃতীয় অ্যালবাম জ্যাক লেমন প্লেস পিয়ানো সিলেকশন্স ফ্রম ইর্মা লা দোস প্রকাশ করে।
লেমন মূত্রতলিতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০০১ সালের ২৭শে জুন লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[১০] তিনি তার মৃত্যুর দুই বছর পূর্ব থেকে এই রোগের সাথে সংগ্রাম করছিলেন। তাকে ক্যালিফোর্নিয়ার ওয়েস্টউড ভিলেজ মেমোরিয়াল পার্ক সিমেট্রিতে তার বন্ধু ও সহ-অভিনেতা ওয়াল্টার ম্যাথাউয়ের পাশে সমাহিত করা হয়। ম্যাথু লেমনের ঠিক এক বছর পূর্বে মারা যান। তার সমাধির পাথরে তার একটি চলচ্চিত্রের মত "জ্যাক লেমন ইন" লেখা রয়েছে।[১১]