ব্ল্যাকমেল হচ্ছে একটি কাজ, প্রায়ই একটি অপরাধমূলক কাজ,যা হুমকি দিয়ে অন্যায়ভাবে কোন কিছু আদায় করা (সাধারণত টাকা বা সম্পত্তি) বা কোন চাহিদা পূরণ না করলে অন্যায়ভাবে ক্ষতি করাকে বোঝায়।[১][২] সাধারণত এই অপরাধের সাথে যথেষ্ট সত্য বা মিথ্যা তথ্য সবার নিকট বা জনসম্মুখে প্রকাশ করে কোন ব্যক্তির, বা তার পরিবারের সদস্য, বা তার সহযোগীর শারীরিক ক্ষতি করার বা তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করা হুমকি দেবার কর্মকাণ্ড জড়িত।[৩][৪][৫] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ায় এটি একটি সংবিধিবদ্ধ অপরাধ,[৬] এবং অন্য কোন অপরাধকে সহজতম উপায়ে বুঝাতে বা নির্দেশ করতে এটি ব্যবহার করা হয়, কিন্তু ১৮৬৮ সালের পূর্বে ইংরেজি আইনে এর সংজ্ঞা লেখা ছিল না।[৭] ব্ল্যাকমেল শব্দটি দ্বারা আসলে স্কটল্যান্ড সীমান্তে ইংল্যান্ডের অধিবাসী কর্তৃক তাদের গোষ্ঠী প্রধান বা স্কটিশ ভূস্বামীদের খাজনা প্রদান করা বুঝাতো যা তারা স্কটিশ চোর বা ডাকাতের হাত থেকে সুরক্ষার বিনিময়ে দিয়ে থাকতো।[৮]
ব্ল্যাকমেলকে এক প্রকারের চাঁদাবাজিও বলা যেতে পারে। সাধারণতঃ শব্দ দুটি সমার্থক হলেও, চাঁদাবাজি ভবিষ্যতে ক্ষতি করার হুমকি দ্বারা ব্যক্তিগত সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়াকে বুঝায়।[৯] ব্ল্যাকমেল হচ্ছে হুমকি ব্যবহার করে আরেকজনকে বৈধ অধিকার থেকে বিরত রাখা এবং কুৎসাপূর্ণ চিঠি বা এমন চিঠি লেখা যা শান্তি ভঙ্গ করে এবং সেইসাথে ভীতিপ্রদর্শন করে অপরিশোধিত ঋণ আদায় করাকে বোঝায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিছু কিছু রাজ্যে অন্য অপরাধের মধ্যে পার্থক্য করা হয় এইভাবে যে ব্ল্যাকমেইলের লিখিত প্রমাণ থাকতে হবে।কিছু কিছু দেশের আইন অনুযায়ী, অনেক সময় ডাকাতি চলাকালিন সময়ও ব্লাকমেল করা হয়।এই ঘটনাটি ঘটে যখন একটি অপরাধী ডাকাতির অংশ হিসেবে কিছু ছিনিয়ে নেবার জন্য অন্য কারও প্রতি অবিলম্বে সহিংসতার হুমকি দেয়। উদাহরণস্বরূপ, কোন কিছু আদায় করার জন্য "তোমার টাকা, বা তোমার জীবন" এই সহিংস হুমকিটি একটি বেআইনি হুমকি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
বিভিন্ন ভাবে এই শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে ব্রিটিশ ও স্কটিশ সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারীরা সীমান্ত ডাকাতদের হামলাসহ অন্যান্য হয়রানির হাত থেকে বাচতে যে রাজস্ব (আধুনিক শব্দ, সুরক্ষা চাঁদা) দিত তা থেকে। ব্ল্যাকমেল এর "মেইল" অংশটি এসেছে মধ্যযুগের ইংরেজি শব্দ MALE থেকে যার অর্থ "রাজস্ব বা খাজনা"।[১০] এই খাজনা সাধারণত কোন বস্তু বা শ্রমের মাধ্যমে দিতে হত ; এর বিপরীত শব্দ হচ্ছে ব্লাঞ্চে ফিরমেস (blanche firmes) বা রেডিটাস এলবি (reditus albi), বা "সাদা রাজস্ব" (রূপা দ্বারা প্রদান করা)। অন্যভাবে, ম্যাককে(Mckay) এর মতে শব্দটি দুটি স্কট্স গ্যালিক শব্দ ব্লাথিইচ(blathaich) উচ্চারন হবে ব্লা-ইচ (রক্ষা করা)এবং ম্যাল(mal)(রাজস্ব বা খাজনা) থেকে এসেছে। তিনি লক্ষ্য করেন যে এই খাজনা দেবার রীতি স্কটল্যান্ডের পার্বত্য অঞ্চলের পাশাপাশি সীমান্ত অঞ্চলে প্রচলিত ছিল।[১১] আইরিশ গেইলিক ভাষায়,সিওস ডুভ শব্দটি, মানে "কালো-রাজস্ব" ব্যবহৃত হয়েছে।
ব্ল্যাকমেল অপরাধ আইন ১৯৫৮ (Crimes Act 1958) এর অনুচ্ছেদ ৮৭ তে অপরাধ হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।[১২]
অনুচ্ছেদ ৮৭(১) এবং (২) চুরি আইন (Theft Act) ১৯৬৮ এর অনুচ্ছেদ ২১(১) এবং (২) থেকে হুবহু নেয়া হয়েছে।
অনুচ্ছেদ ৮৭(৩)এ বলা আছে ব্ল্যাকমেলে অভিযুক্ত অপরাধী অভিযোগ্য অপরাধী বলে গণ্য হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট এবং ৪ মাত্রার কারাদণ্ডে দণ্ডনীয়(১৫ বছর সর্বোচ্চ) হবেন।
ব্ল্যাকমেল অপরাধটি ফৌজদারি আইনসমূহ একত্রিকরণ আইন ১৯৩৫ (Criminal Law Consolidation Act 1935) এর পার্ট ৬বি এর অনুচ্ছেদ ১৭২ তে অপরাধ হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।[১৩]
অনুচ্ছেদ ১৭২ এ বলা আছে একজন ব্যক্তি যিনি আরেকজন ব্যক্তিকে যদি ভীতিপ্রদর্শন করে কোন চাহিদা পূরণ করতে বাধ্য করেন তাহলে তিনি ব্ল্যাকমেল অপরাধে দোষী স্যাবস্ত হবেন এবং কারাবাসের মুখমুখি হবেন (একটি অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ বছর বা সাংঘাতিক অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ২০ বছর)।
এই অপরাধটি অপরাধ বিচার (জন শৃঙ্খলা) আইন,১৯৯৪ (Criminal Justice (Public Order) Act, 1994) এর অনুচ্ছেদ ১৭(১)[১৪] তে "ব্ল্যাকমেল, চাঁদাবাজি, বা ভীতিপ্রদর্শন করে টাকা দাবি করা" শিরোনামে ক্ষুদ্র টীকা হিসেবে লিপিবদ্ধ আছে।এই অপরাধটি চুরি আইন ১৯৬৮ এর অনুচ্ছেদ ২১ এ বর্ণিত অপরাধ সমূহ থেকে নেওয়া হয়েছে।
ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ব্ল্যাকমেল অপরাধটি চুরি আইনে ১৯৬৮ (Theft Act 1968) এর অনুচ্ছেদ ২১(১) এ লিপিবদ্ধ রয়েছে।আইনের অনুচ্ছেদ ২১(১) এবং (২) এ লেখা আছে যে :
(১) একজন ব্যক্তি ব্ল্যাকমেলের অপরাধে দোষী হবেন যদি তিনি, নিজের বা অন্য কারোর লাভের উদ্দেশ্য বা অন্য কারোর ক্ষতির উদ্দেশ্যে ভীতিপ্রদর্শন করে কোনো অন্যায্য দাবী করে থাকেন; এবং ভীতিপ্রদর্শন করে একটি চাহিদা করা এই উদ্দেশ্যে অন্যায্য হবে যদি না তিনি এই বিশ্বাসে করে থাকেন যে:
- (ক) তার দাবি করার জন্য যুক্তিসংগত কারণ আছে; এবং
- (খ) ভীতিপ্রদর্শন করে দাবী করা একটি সঠিক উপায়।
(২) অপরাধের প্রকৃতি বা ভ্রান্তি গুরুত্বপূর্ণ নয়, এবং এটাও গুরুত্বপূর্ণ নয় যে হুমকিদাতা ব্যক্তির দ্বারা সংঘটিত কর্মকাণ্ডের সাথে অপরাধ সম্পর্কিত কিনা।
জোচ্চুরি আইন ১৯১৬ (Larceny Act 1916) এর অনুচ্ছেদ ২৯(১)(i) এবং ৩০ থেকে ভীতিপ্রদর্শন শব্দটি নেয়া হয়েছে। অনুচ্ছেদ ২৯(১)(i) এ বলা আছে যে যদি কোন ব্যক্তি সজ্ঞানে এবং বিষয়বস্তু জেনেশুনে, ভীতিপ্রদর্শন করে বা অপরাধের সহিত, কোনো যুক্তিসঙ্গত বা সম্ভাব্য কারণ ছাড়া, কিছু বলে বা লিখিত ভাবে কোনো সম্পত্তি বা মূল্যবান জিনিস দাবী করে তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। অনুচ্ছেদ ৩০ এ বলা আছে যে,যদি একজন ব্যক্তি নিজের চুরি করার উদ্দেশ্যে,ভয় দেখিয়ে বা বলপূর্বক অন্য ব্যক্তি দ্বারা কোন কিছু চুরি করতে বাধ্য করেন তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
থর্ন বনাম মোটর ট্রেড এসোসিয়েশন মামলাটি[১৫] জোচ্চুরি আইন ১৯১৬ (Larceny Act 1916) এর অনুচ্ছেদ ২৯(১)(i) এর অধীনে নিষ্পত্তি করা হয়।প্রফেসর গ্রিও(Griew) এর মতে এই মামলাটি "ভীতিপ্রদর্শন" শব্দটি সুন্দর ভাবে ব্যাখ্যা করেছে।[৭]
এই মামলার রায়ে লর্ড রাইট বলেছেনঃ
আমি মনে করি "ভীতিপ্রদর্শন" শব্দটি অকুণ্ঠচিত্তে ব্যাখ্যা করতে হবে এবং শুধুমাত্র সহিংসতার হুমকির মধ্যে না থেকে বরং কোনো ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে যে কোনো ক্ষতিকারক বা অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ড করাকেও এর সাথে যুক্ত করতে হবে।এর মধ্যে একটি নির্দিষ্ট ঘটনায় একটি নির্দিষ্ট কাজের হুমকিকেও যুক্ত করা যেতে পারে।[১৬]
এবং লর্ড এটকিন বলেছেন:
একজন সাধারন ব্লাকমেলার সাধারণত এমন হুমকি দেন যা তিনি করতে চান। যেমন, এমন এক ব্যক্তির কাছে কিছু আপত্তিজনক তথ্য পাঠানো যার ফলে হুমকির সম্মুখীন ব্যক্তির আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে। যা তাকে প্রমাণ করতে হবে তা হলো অর্থের দাবীর ন্যায্যতা, হুমকি নয়। এই অভিযোগের মূল্যায়ন হচ্ছে যুক্তিযুক্ত বা সম্ভাব্য কারণ ছাড়া চাহিদা: এবং আমি মনে করতে পারি না এটা নিছক সত্য যে হুমকি দেয়া হচ্ছে এমন এক জিনিশ যা একজন ব্যক্তি দিতে পারে, হয় হুমকিটি কোন অপরাধমূলক হুমকি নয় বা কিছু দাবী করার যুক্তিসংগত বা সম্ভাব্য কারণ এটি দিতে পারবে।[১৭]
আর বানাম ক্লিয়ার মামলাটি[১৮] জোচ্চুরি আইন ১৯১৬ (Larceny Act 1916) এর অনুচ্ছেদ ৩০ এর অধীনে নিষ্পত্তি করা হয়। সেলারস এল.যে. বলেছেন:[১৯]
কোন কথা বা ব্যবহার, যা কাউকে ভয় দেখিয়ে বা প্রভাবিত করে কোনো দাবী পূরণ করতে বাধ্য করে না তা অপরাধ বলে গণ্য হবে না ...কিন্তু হুমকি ও ব্যবহার এই প্রকৃতির এবং এতখানি যে তা স্বাভাবিক স্থিতিশীলতা ও সাহসের একজন সাধারণ ব্যক্তির মন প্রভাবিত হতে পারে বা শঙ্কিত করে কোনো অনিচ্ছুক দাবী পূরণ করতে বাধ্য করে তবে তা জুরির বিবেচনায় আসার জন্য যথেষ্ট।
তিনি আরও বলেন:
হুমকিদাতার অজানায় এমন বিশেষ পরিস্থিতি থাকতে পারে যা তার হুমকিকে নির্দোষ এবং অকার্যকর করে, কিন্তু এই পরিস্থিতি হুমকিদাতার মানসিক অবস্থা ও উদ্দেশ্যের উপর কোনো প্রভাব ফেলে না।যদি অভিযুক্ত জেনে থাকে যে তার হুমকি ভুক্তভোগীর উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না তাহলে এটা ভিন্ন হতে পারে।
আর বানাম লরেন্স বানাম পম্রয় মামলায়,[২০] অভিযোগকারীরা দাবী করেন যে আর বানাম ক্লিয়ার মামলায় বর্ণিত "ভীতিপ্রদর্শনের" সংজ্ঞা বিষয়ক একটি নির্দেশনা জুরিদের দিতে হবে। ক্রেন এল.যে. বলেছেন:
"ভীতিপ্রদর্শন" শব্দটি একটি সাধারন ইংরেজি শব্দ যা যেকোনো জুরির বোঝতে পারর আশা রাখা যায়। কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে যেখানে বিশেষ পরিস্থিতিতে বিশেষ জ্ঞানের কারণে "ভীতিপ্রদর্শন" একজন সাধারন লোকের কাছে যা মনে হতে পারে তা যাকে দেখানো হয়েছে তার কাছে তা একই নাও মনে হতে পারে, অথবা এর বিপরীত কথাটিও সত্য হতে পারে, এটায় সন্দেহ নেই যে এই শব্দের অর্থ ব্যাখ্যা করতে হবে।[২১]
ভীতিপ্রদর্শন শব্দের ব্যাখ্যায় নিম্মলিখিত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে:
অধ্যাপক গ্রেউ বলেন যে "ভীতিপ্রদর্শন" শব্দের ব্যাখ্যায় অনুমেয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে:
ডেভিড অর্মেরড বলেছেন সম্পতির ক্ষতি করার হুমকিও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।[২৭]
ব্ল্যাকমেল একটি শুধুমাত্র অভিযুক্ত হবার পর শাস্তি দেবার যোগ্য অপরাধ।
ব্ল্যাকমেলে দোষী সাব্যস্ত একজন ব্যক্তি অনাধিক চৌদ্দ বছর হতে যেকোনো সময়ের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।[২৮]
আর বানাম হাদজৌ মামলায় ,[২৯] লর্ড লেন সিজি বলেছিলেন যে ব্ল্যাকমেল হচ্ছে কুৎসিত এবং সবচেয়ে পঙ্কিল অপরাধের মধ্যে অন্যতম কারণ এটা প্রায়ই জড়িত সেই সব কর্মকাণ্ডের সাথে যা তিনি ব্যাখ্যা করেন "আত্মার হত্যাচেষ্টা" হিসেবে।তিনি বলেন যে, সম্ভবত আদালত সবসময় কঠোর শাস্তি আরোপ করার কারণে কদাপি একটি ব্যক্তি দ্বিতীয় বারের জন্য ব্লাকমেলে দোষী সাব্যস্ত অপরাধী খুঁজে পাবেন। তিনি বলেন যে, ব্ল্যাকমেল মামলার ক্ষেত্রে প্ররোচনা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
ডেভিড অর্মেরড বলেন যে বিচারের প্রশাসন আইন ১৯৭০ ( Administration of Justice Act 1970) এর অনুচ্ছেদ ৪০ এ বর্ণিত অপরাধ ব্লাকমেলের সাথে সম্পর্কিত।[২৭]
ব্ল্যাকমেল করার সময় একইসাথে অন্যান্য অপরাধ সংঘটিত হতে পারে:
একজন ব্ল্যাকমেলার যে অন্য কারোর অপরাধ সংঘটন করার ঘটনা প্রকাশ করার হুমকি দেয় তাহলে তিনি ফৌজদারি আইন ১৯৬৭ (Criminal Law Act 1967) এর অনুচ্ছেদ ৫ এর আওতায় অপরাধী হিসেবে গণ্য যদি তিনি পরবর্তীকালে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কিছু আদায় করে থাকেন।
একজন ব্ল্যাকমেলার যদি কোনো ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত বা তার বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশ করার হুমকি দেয় তাহলে তিনি পরনিন্দা এবং কুৎসা রটনার জন্য মামলার সম্মুখীন হবেন,যদি তিনি তা করে থাকেন।
চুরি আইন ১৯৬৮ (Theft Act 1968) এর অনুচ্ছেদ ২১ এর প্রণয়নের পূর্বে, ব্ল্যাকমেল শব্দের কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না। জোচ্চুরি আইন ১৯১৬ (Larceny Act 1916) এর অনুচ্ছেদ ২৯ থেকে ৩১ এর আওতায় অপরাধকে সহজভাবে বর্ণিত করতে আইনজীবীদের দ্বারা এই শব্দটি ব্যবহিত হত, এবং সেই অপরাধগুলো সাধারণভাবে ব্লাকমেল নামে পরিচিত ছিল।[৩১] কিন্তু ব্ল্যাকমেল শব্দটি আইনের কোনো জায়গায় উল্লেখিত ছিল না।
হোগেন এই অপরাধকে বর্ণিত করেছিলেন এই ভাবে যে তা "আইনি বিবিধ ছোট প্রবন্ধের একটি বিসদৃশ সংগ্রহ যা ১৯১৬ সালের আইনের প্রণেতারা কাঁচি ও আঠারো সাহায্যে একত্র করেছে।"[৩২]
চুরি আইন ১৯৬৮ (Theft Act 1968) এর অনুচ্ছেদ ২১ দ্বারা তারা প্রতিস্থাপিত হয়।
চুরি আইন( উত্তর আয়ারল্যান্ড) ১৯৬৯ এর অনুছেদ ২০ দ্বারা ব্ল্যাকমেলকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।[৩৩] এটি চুরি আইন ১৯৬৮ (Theft Act 1968) এর অনুচ্ছেদ ২১ থেকে হুবহু নেয়া।
ব্ল্যাকমেল অপরাধটি ১৮ ইউ.এস.ছি. § ৮৭৩ দ্বারা সৃষ্টি করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে:
"যে কেউ, কাউকে জানানোর হুমকি দ্বারা, বা না জানানোর বিচার্য দ্বারা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো আইনের কোন লঙ্ঘন করে, টাকা বা অন্য কোনো মূল্যবান সামগ্রী দাবী বা আদায় করে, এই শিরোনামের অধীনে জরিমানা বা সর্বচ্চ এক বছরের জন্য কারাদণ্ড, বা উভয়েই দণ্ডিত হবেন।"[৩৪]
কিছু মানুষ মনে করে ব্ল্যাকমেলকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত নয়।[৩৫][৩৬] তারা উল্লেখ করেন যে (এই মুহূর্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে) অন্য কারোও গোপন তথ্য নিয়ে পরচর্চা করা, সেই তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করার হুমকি দেয়া, এবং কারো কাছে টাকা চাওয়া বৈধ, কিন্তু একসাথে টাকার দাবীর বিপরীতে হুমকি দেয়া অবৈধ।তারা এই প্রশ্ন উত্তথাপন করে যে " কেন দুটি বৈধ একটি অবৈধ সৃষ্টি করে?"[৩৭]
এই পর্যবেক্ষণকে খণ্ডিত করা হয় এই বলে যে মদ্যপান এবং গাড়ি চালানো আলাদাভাবে বৈধ, একসাথে নয়।[৩৮]