এই নিবন্ধটি উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্পন্ন অবস্থায় আনতে পরিচ্ছন্ন করা প্রয়োজন। মূল সমস্যা হল: <পুনরুক্তি দুষ্টতা এবং অবিন্যস্ত কাঠামো।>। |
জন্ম | হোর্হে মারিও পেদ্রো বার্গাস ইয়োসা ২৮ মার্চ, ১৯৩৬ আরেক্বিপা, আরেক্বিপা, পেরু |
---|---|
পেশা | লেখক ও কথাসাহিত্যিক, অধ্যাপক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক |
ভাষা | স্পেনীয় ভাষা |
জাতীয়তা | পেরুভিয় |
নাগরিকত্ব | পেরুভিয় এবং স্পেনীয় |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সান মার্কস কপ্লুটেন্স ইউনিভার্সিটি অব মাদ্রিদ |
সাহিত্য আন্দোলন | সামাজিক বাস্তবতা |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার (২০১০) |
দাম্পত্যসঙ্গী | জুলিয়া উরক্বিদি (১৯৫৫–১৯৬৪) প্যাট্রিসিয়া ইয়োসা(১৯৬৫–অদ্যাবধি) |
সন্তান | আলভ্যারো বার্গাস ইয়োসা গনজালো বার্গাস ইয়োসা মরগানা বার্গাস ইয়োসা |
ওয়েবসাইট | |
http://www.mvargasllosa.com |
মারিও বার্গাস ইয়োসা (স্পেনীয় ভাষায়: Mario Vargas Llosa) পেরুর শীর্ষস্থানীয় কথাসাহিত্যিক ও গদ্যকার যিনি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার রাজনীতিস্নাত রচনাবলীতে ল্যাটিন আমেরিকায় ক্ষমতা ও দুর্নীতির অমানিশা তীব্র ও নিবিড়ভাবে চিত্রিত। বিংশ শতকের হিস্পানী লেখকদের মধ্যে তিনি অন্যতম প্রধান। তার রচিত উপন্যাস, নাটক এবং গদ্যগ্রন্থের সংখ্যা ৩০-এর অধিক। স্পেনীয় ভাষার সাহিত্যে বার্গাস ইয়োসার নাম কালোর্স ফুয়েন্তেস এবং গার্সিয়া মার্কেসের সঙ্গে সমমর্যাদায় উচ্চারিত হয়ে থাকে। অনেক পর্যবেক্ষকের মতে আন্তর্জাতিক সাহিত্য পরিমণ্ডলে তার প্রভাব গভীরতর। ১৯৬০-এর দশকে নায়কের কাল, দ্য গ্রীন হাউস এবং গীর্জ্জায় কথোপকথন উপন্যাসত্রয় কেন্দ্র করে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে। উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ এবং সংবাদপত্রীয় রচনাবলীতে অবধৃত তার অকপট রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী শাসক মহলে বিশেষ তোলপাড় সৃষ্টি করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পেরুর জাতীয় ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও কেবল পেরু নয় বরং ক্রমশ বিংশ শতকের বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের রাজনীতিসঞ্জাত অসহায়ত্ব ও বিপন্নতা তার লেখনীতে প্রতিফলিত হয়েছে। তার রচনায় দ্রোহের গভীর অনুপ্রাণনার সঙ্গে-সঙ্গে রয়েছে ব্যাপ্ত কৌতুকাবহ, কখনো যৌনতা। যেখানেই মানুষের স্বাধীনতা বিপন্ন কিংবা মানবাধিকার লাঞ্চিত সেখানেই বার্গাস ইয়োসার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর শোনা যায়। তাই তাকে ল্যাটিন আমেরিকার "রাজনৈতিক বিবেক" বিবেচনা হয়। সমাজ বদলের অনপনেয় তাড়না তাকে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করেছিল ; তিনি ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে পেরুর রাষ্ট্রপতি পদের জন্য সাধারণ নিবার্চনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যদিও তিনি জয় লাভ করেন নি, তবু চেকোস্লাভাকিয়ার ভাস্লাভ হাভেলের পর পৃথিবীতে তিনিই দ্বিতীয় সাহিত্যিক যিনি ভোটাভুটির প্রথম পর্বে বিজয়ী হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতার শীর্ষ পদ গ্রহণের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন।
তার জন্ম দক্ষিণ পেরুর আরেক্বিপা শহরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে, ১৯৩৬-এর ২৮ মার্চ তারিখে। জন্মসূত্রে তার পূর্ণ নাম হোর্হে মারিও পেদ্রো বার্গাস ইয়োসা। তাকে সচরাচর তার পারিবারিক নাম 'বার্গাস ইয়োসা' ধরেই সম্বোধন করা হয়। জন্মের ঠিক পূর্বে তার পিতা-মাতার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তার শৈশব কাটে মা আর নানা-নানীর সাথে বলিভিয়ায়।[১] দশ বৎসর বয়সে তিনি প্রথম পিতার দেখা লাভ করেন। তার শৈশব কেটেছে নিবিড় দারিদ্রের মধ্যে। জীবিকার তাগিদে তিনি মাত্র ষোল বৎসর বয়সে বিভিন্ন অপরাধ সাময়িকীতে সাংবাদিকতার কাজ করতে শুরু করেন।[১]
হাই স্কুলের পর তিনি 'কলেজিও ন্যাসনাল সান মিগেল দ্য পিওরা'-তে ভর্তি হন। পরে তিনি 'ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সান মার্কস'-এ আইন ও সাহিত্য অধ্যয়ন করে। বৃত্তি পেয়ে মাদ্রিদের ইনিভার্সিতি কমপ্লুতেন্সেতে থেকে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। মাত্র আঠারোো বৎসর বয়সে তার দশ বৎসরের বড় সম্পর্কিত খালা হুলিয়া ঊরক্বিদিকে বিয়ে করে তিনি স্বীয় অ্যাডভেঞ্চার প্রবণতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। এই বিয়ে ভেঙ্গে যায় ১৯৫৯-এ। পরবর্তীতে ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্যাত্রিসিয়া ইয়োসাকে বিয়ে করেন। তাদের তিনটি সন্তান।
১৯৫০-এর দশকের শেষভাগে ছাত্রাবস্থায় তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন।[২] তার মূল জীবিকা অধ্যাপনা। ১৯৬৭-তে তিনি গ্রিসে হুলিয়ো কোর্তজার-এর সঙ্গে যৌথভাবে ইউনেস্কোর হয়ে অনুবাদের কাজ করছিলেন।
পরবর্তীতে যে সকল প্রতিষ্ঠানে তিনি শিক্ষকতা করেছেন তার মধ্যে রয়েছে ইউনির্ভাসিটি আব লন্ডনের কুইন ম্যারী করেজ ও কিংস কলেজ, ওয়াশিংটন স্টেট (পুলম্যান), ইউনিভার্সিটি অব পুয়ের্টো রিকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়, জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্ক। এছাড়া তিনি ওয়াশিটনের উড্রো উইলসন সেন্টারে ফেলো হিসাবেও কাজ করেছেন।[৩] অধ্যাপনা ছাড়াও সাংবাদিকতা করে থাকেন।
বার্গাস ইয়োসা গভীরভাবে সমাজ সচেতন। তিনি মনে করেন যে রাজনীতি রাজনীতিবিদদের একচেটিয়া অধিকার নয়। লেখক এবং সংস্কৃতি কর্মীরাও রাজনীতিতে গভীর ভূমিকা রাখতে সক্ষম। বর্তমান বিশ্বে রাজনীতিকে এড়িয়ে থাকার অবকাশ নেই। তিনি মনে করেন বর্তমান সমাজের প্রধান সমস্যা সহনশীলতার প্রকট অভাব। সহনশীলতার অভাবে গণতন্ত্র গণতন্ত্র থাকে না। তিনি মনে করেন একবিংশ শতাব্দীর মূল আন্তজাতির্ক সমস্যা হলো "সন্ত্রাসবাদ"। সন্ত্রাসবাদের উৎপত্তি "ফ্যানাটিজম" থেকে ; ফ্যানাটিকরা স্বীয় বিশ্বাসকে অবিমিশ্র সত্য মনে করে এবং প্রতিপক্ষ অসত্য বিধায় তাকে ধ্বংস করে দেয়ার নীতিতে কাজ করে। তিনি মনে করেন ল্যাটিন আমেরিকার সকল সমস্যার মূলে রয়েছে ভ্রষ্ট রাজনীতি।[৪] বার্গাস ইয়োসা লেখকের রাজনৈতিক দর্শনের ব্যাপারে অনাপসী। গার্সিয়া মার্কেস সম্পর্কে তার বক্তব্য, "আমার মতে, তাঁর লেখা ও রাজনীতির মান এক নয়। এখন শুধু এইটুকুই বলি, আমি লেখক হিসেবে তাঁর কাজের বড় ভক্ত। এরমধ্যে আমি তো বলেছি যে, আমি তাঁর কাজ নিয়ে ৬০০ পৃষ্ঠার একটি বই লিখেছি। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি তাঁকে ততটা শ্রদ্ধা করতে পারি না; তাঁর রাজনৈতিক বিশ্বাসকেও না। তাঁর বিশ্বাসকে সিরিয়াস মনে হয় না।"[৫]
জীবনের প্রারম্ভেই তিনি রাজনীতিমনস্ক ছিলেন এবং তার কথাসাহিত্য শুরু থেকেই গভীরভাবে রাজনীতিগ্রস্ত। রাষ্ট্রযন্ত্র কর্তৃক মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ড, সামরিক বাহিনীর দাপট, মুনাফালোভী বৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের শোষণ ইত্যাদি তার চেতনায় যে দ্রোহ সৃষ্টি করেছিল সে থেকেই তার রাজনীতিকতার সূত্রপাত। তবে তার রাজনৈতিক দর্শন ক্রমশ বাম থেকে ডানে হেলে পড়েছে। একসময় ফিদেল কাস্ত্রো তাকে প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত করলেও পরবর্তীকালে তিনি কিউবার বিপ্লবী শাসনের সমালোচনা করেছেন। তিনি সমাজতন্ত্রিক সোভিয়েত রাশিয়ার বাক-স্বাধীনতা বিরোধী শাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। ১৯৮০'র শেষপাদে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে তার মনে হয়েছে যে এ' সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল না।[৬] ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে পেরুর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ও পরাজিত হন। এই পরাজয় তাকে বিক্ষুব্ধ করে এবং তিনি স্পেনে অভিবাসন গ্রহণ করেন।[৭] নাগাড়ে সাত বছর তিনি পেরু যান নি।[৮] তিনি মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাস করেন। বার্গাস ইয়োসা ব্রিটিশ প্রধামন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের সমর্থক ছিলেন। অন্যদিকে তিনি বলতেন লেবার পার্টির টনি ব্লেয়ার থ্যাচারের উপযুক্ত শিষ্য। বার্গাস ইয়োসা মনে করেন পৃথিবীতে যুদ্ধ ছড়িয়ে দিয়ে বহুজাতিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভুল পথে চলেছে।[৬] যদিও তিনি আর ক্ষমতা-লাভের রাজনীতিতে জড়িত নন, তবু রাজনীতি তার প্রধান প্রতিপাদ্য রয়ে গেছে।[৯]
ছেলেবেলাতেই সাহিত্য রচনায় তার প্রবল আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময় তিনি লেখক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যৌবনে প্যারিস, মাদ্রিদ ও লন্ডনে অবস্থানকালে তিনি লেখক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। সাহিত্য রচনায় তিনি শুরু থেকেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সঙ্গে ঐতিহাসিক ঘটনাবলী উপজীব্য করেছেন। সমাজের ক্ষয়িষ্ণু রূপ, বৈষম্য, শোষণ ও নিপীড়ন ইত্যাদি বিষয়াবলী পৌন:পুনিকভাবে তার আনুকূল্য লাভ করেছে বিভিন্ন উপন্যাসে।
তার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ লস জেফিস। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে। এর পর ২০১০ পর্যন্ত তিনি আর ছোটগল্পের কোন সংকলনগ্রন্থ প্রকাশ করেন নি। জীবনের প্রথম গ্রন্থটি সম্পর্কে বার্গাস ইয়োসা বলেছেন, "আমি ফকনারের অনুরক্ত ছিলাম, কিন্তু এই গল্পগুলোতে আমি হেমিংওয়েকে অনুকরণ করেছি"।[১০]
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত নায়কের কাল নামক[১১] প্রথম উপন্যাসটিই বিতর্কের জন্ম দেয়। এটি পেরুর মিলিটারি একাডেমীর প্রেক্ষাপটে রচিত। এই একাডেমীতে তিনি দুই বছর অধ্যয়ন করেছিলেন। বিক্ষুব্ধ সামরিক বাহিনী এ বইটির এক হাজার কপি পুড়িযে দেয়। প্রথম উপন্যাসের মধ্য দিয়েই তিনি বিশ্বব্যাপী হিস্পানী পাঠকগোষ্ঠীর মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
রাজনৈতিক উপন্যাস রচনায় তিনি বিশেষভাবে নিবদ্ধ। তার প্রধান পাঁচটি উপন্যাস হলো: ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত নায়কের কাল (The Time of the Hero), ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত জুলি চাচী এবং নাট্যরূপকার, (Aunt Julia and the Scriptwriter), ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত জগৎ বিলয়ের যুদ্ধ (The War of the End of the World), ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত ছাগলের মহাভোজ (The Feast of the Goat) এবং ২০০৬-এ প্রকাশিত নষ্টা মেয়ে (The Bad Girl)।[১২] ছাগলের মহাভোজ উপন্যাসের কাহিনীতে তিনি স্বৈরাচারী একনায়কের উত্থান এবং অদ্ভুত সমাজ-সম্পৃক্ততার বিশ্লেষণ করেছেন। তার রচনা রাজনীতিস্নাত হলেও তিনি কখনো সাহিত্যগুণ ও শিল্পমানের ব্যাপারে আপস করেন নি। নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শেষে সুইডিশ একাডেমীর সচিব সাংবাদিকদের কাছে ভার্গাস ইয়োসাকে একজন অনন্যসাধারণ "কাহিনীকার" হিসাবে আখ্যায়িত করেন, যার "রচনাশৈলী জটিল" এবং "সংলাপ অসরল"। তার রচনারীতিকে "কাহিনী-বয়নের একটি প্রাগ্রসর কৌশল" হিসাবে বর্ণনা করা হয়।।[১৩]
সাহিত্যে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি দেশে-বিদেশের বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২০১০ খ্রিস্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার। পুরস্কারের মূল্যমান ১০ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার। গুজব ছিল ২০১০-এ কেনিয়ার নগুগি ওয়া থিয়োঙ্গ'ও, মার্কিন কর্ম্যাক ম্যাকারথি বা সুইডিশ কবি টমাস ট্রান্সটোমার এই তিনজনের কারো একজনের ভাগ্যে নোবেল পুরস্কারের শিকে ছিঁড়বে। বার্গাস ইয়োসার ধারণা ছিল যেহেতু তিনি অতিমাত্রায় উদারনৈতিক তাই সুইডেনের নোবেল কমিটি কখনো তাঁকে এ পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করবে না।[১৪][১৫][১৬] ৭ অক্টোবর বিকাল ৫টায় (জিএমটি) যখন নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা করা হলো তখন তিনি একই সঙ্গে বিস্ময় ও আনন্দ অনুভব করেন। বস্তুত নোবেল প্রাপ্তির সংবাদটিকে তিনি প্রথমে কৌতুক বলে জ্ঞান করেছিলেন।[১৭] এ সময় তিনি নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছিলেন, প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদেয় একটি লেকচার প্রস্তুত করছিলেন ভোর ৫টায় উঠে: বিষয় ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত কিউবান সাহিত্যিক কার্পেন্তিয়েরের একটি উপন্যাস।[১৮][১৯] একই দিন অপরাহ্নে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি তাঁর নোবেল প্রাপ্তিকে "ল্যাটিন আমেরিকান সাহিত্যের স্বীকৃতি" হিসেবে বর্ণনা করেন।[২০] ৭ ডিসেম্বর ২০১০ সোমবার তিনি স্টকহোমে গিয়ে নোবেল পুরস্কার গ্রহণ করেন। এ দিন সন্ধ্যায় তিনি রিচার্ডসন অডিটোরিয়ামে স্পেনীয় ভাষায় বক্তৃতা প্রদান করেন। বক্তৃতায় তিনি অভিযোগ করেন যে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির আধিপত্য মানুষের সংস্কৃতির সর্ব্বনাশ করেছে।[২১]