আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে রপ্তানি হল একটি দেশে উৎপাদিত পণ্য অন্য দেশে বিক্রি করা বা অন্য দেশের নাগরিক বা বাসিন্দাদের জন্য পরিষেবা সরবরাহ করা। এই ধরনের পণ্যের বিক্রেতা বা পরিষেবা প্রদানকারীকে রপ্তানিকারক বলা হয়। অন্যদিকে ওই পন্যের ক্রেতা বা পরিষেবা গ্রহণকারীকে আমদানিকারক বলা হয়।[১] আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বর্তমানে প্রায় সব ধরনের পণ্য আমদানি এবং রপ্তানি করা হয়। পরিসেবাগুলির মধ্যে আর্থিক, অ্যাকাউন্টিং এবং অন্যান্য পেশাদার পরিষেবা, পর্যটন, শিক্ষা এবং সেইসাথে মেধা সম্পত্তি অধিকার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
পণ্য রপ্তানিতে প্রায়ই কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হয়।
বর্তমান বিশ্বের অনেক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রপ্তানিকারক হিসাবে তাদের বিশ্বব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অনেক প্রতিষ্ঠান প্রথমে তাদের কার্যক্রম দেশের মানুষের ভোগের জন্য উৎপাদন করলেও আন্তর্জাতিক চাহিদার কারণে তারা নিজেদের রপ্তানি বাণিজ্যে সম্পৃক্ত করেছে। [২]
রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রপ্তানিকারককে প্রধানত চারটি বাধার সমুক্ষ্মীন হতে হয়: প্রেরণামূলক, তথ্যগত, কর্মক্ষম/সম্পদ-ভিত্তিক এবং জ্ঞানভিত্তিক। [৩] [৪]
দেশীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যগুলিকে বিদেশী প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন দেশে আইন, প্রবিধান, নীতি প্রণয়ন করে বাণিজ্যে বিভিন্ন বিধিনিষেধ দেয়া হয়। বৈদেশিক বাণিজ্যে সাধারণ বাধাগুলি হচ্ছে সরকার-আরোপিত ব্যবস্থা এবং নীতিসমুহ যা পণ্য ও পরিষেবার আন্তর্জাতিক বিনিময় সীমাবদ্ধ বা প্রতিরোধ করে বা বাধা দেয়। [৫]
বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট ধরনের পণ্য এবং তথ্য হস্তান্তর, যেমন, গণবিধ্বংসী অস্ত্র, উন্নত টেলিযোগাযোগ, অস্ত্র এবং কিছু শিল্প ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ অন্যান্য বাণিজ্য সীমিত করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ:
শুল্ক হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট পণ্যের উপর একটি নির্দিষ্ট কর বা এক দেশ থেকে রপ্তানি করা বা আমদানি করা পণ্যের বা বাণিজ্যের উপর একটি অর্থনৈতিক বাধা। [৬] আমদানি বা রপ্তানি শুল্ক পণ্যের খরচ বাড়ায় ফলে দেশীয় উৎপাদকদের সাঠে আমদানিকারকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ব্যবসায় করতে অসুবিধা হয়। এতে বৈদেশিক বাণিজ্য সীমিত হয়। নির্দিষ্ট কোনো দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করতেও শুল্ক ব্যবহার করা হয়।[৭]
রপ্তানি বাণিজ্যর কারণে বিভিন্ন দেশে উৎপাদন কার্যক্রম প্রতিষ্ঠার খরচ এড়ানো যায়। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র একটি দেশে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করে বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত পণ্য বা পরিষেবা রপ্তানি বাণিজ্যের মাধ্যমে পৌঁছানো সম্ভব হয়।[২]
রপ্তানি একটি কোম্পানিকে অবস্থান অর্থনীতি বা অবস্থানগত সুবিধা অর্জনে সহায়তা করতে পারে।[২] কোম্পানির সম্পদ, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা এবং কম খরচে বা আলাদা পণ্য তৈরি করার সক্ষমতা বাড়ায়। একটি নির্দিষ্ট বাজারের অবস্থানগত সুবিধার মধ্যে রয়েছে খরচ, বাজারের সম্ভাবনা এবং বিনিয়োগ ঝুঁকির সমন্বয়।[৮]
বিদেশে উপযুক্ত অবস্থান না পাওয়া পর্যন্ত রপ্তানি কার্যকর করা সম্ভব নাও হতে পারে।
উচ্চ পরিবহন খরচ বিশেষ করে বাল্ক পণ্যের জন্য রপ্তানিকে অলাভজনক করে তুলতে পারে। বাণিজ্য বাধা এবং বিভিন্ন শুল্কের কারণে পণ্য বা পরিষেবা রপ্তানি অলাভজনক হতে পারে।[২]