সমকালীন শিল্পকলা হলো অধুনা প্রচলিত শিল্পকলা, যার উদ্ভব হয় বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় অর্ধাংশে অথবা একবিংশ শতাব্দীতে। সমকালীন শিল্পীরা সার্বজনীন প্রভাবিত, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যমণ্ডিত এবং প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে আগুয়ান এক বিশ্বে কাজ করছেন। তাদের শিল্পকলা বর্তমান সময়ের প্রগতিশীল বিভিন্ন উপাদান, পদ্ধতি, ধারণা এবং বিষয়ের সমন্বয়ে গঠিত হয়, যা কিনা বিরামহীনভাবে বিংশ শতকের প্রচলিত শিল্পকলার সীমানা-পরিসীমা সমূহের বাঁধা ভেঙে এগিয়ে চলেছে। বৈচিত্রপূর্ণ ও সারগ্রাহী হওয়ার পাশাপাশি সমকালীন শিল্পকলা সামগ্রিকভাবে একটি অভিন্ন সংগঠন নীতি ও ভাবতত্ত্বের অতিশয় অভাবের দরুন স্বতন্ত্র বৈশিষ্টমণ্ডিত। সমকালীন শিল্পকলা একটি সাংস্কৃতিক ভাববিনিময়ের অংশ যা কিনা বৃহত্তর প্রাসংগিক কাঠামো সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে; যেমন, ব্যক্তিগত এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়, পরিবার সমাজ এবং জাতীয়তা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ।
চলিত ইংরেজি ভাষায় আধুনিক এবং সমকালীন হলো সমার্থক শব্দ, যার ফলস্বরূপ অনভিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গকে আধুনিক শিল্পকলা এবং সমকালীন শিল্পকলা পরিভাষা দু-টি অদলবদল করে ব্যবহার করতে দেখা যায়।[১]
কারো কারো সংজ্ঞা মতে সমকালীন শিল্পকলা হলো আমাদের জীবনকালে উদ্ভূত শিল্পকলা; এই ধারণা পোষণ করে যে, জীবন এবং জীবনের দৈর্ঘ্যের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। এটা স্বীকৃত যে, এই জাতীয় সংজ্ঞা বিশেষায়িত সীমাবদ্ধতার বিষয়।[২]
সাধারণ গুণবাচক শব্দের বদলে একটি বিশেষ ধরনের শিল্প হিসেবে "সমকালীন শিল্পকলা"-এর শ্রেণীকরণ হয় ইংরেজি ভাষা-ভাষী দেশসমূহের আধুনিকায়নের সূচনালগ্নে। ১৯১০ সালে সমালোচক রজার ফ্রাই ও তার সহযোগী কর্তৃক লন্ডনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সমকালীন শিল্পকলা সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়, যার উদ্দেশ্য ছিল পাবলিক জাদুঘরগুলোতে প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন ধরনের শিল্প-সামগ্রী ক্রয় করা।[৩] বিগত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে একই নামে অন্যান্য আরো অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে; যেমন ১৯৩৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া অ্যাডেলেইডের সমকালীন শিল্পকলা সমিতি এবং ১৯৪৫ সালের পর থেকে এই জাতীয় আরো বহু প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।[৪][৫] আধুনিকতা একটি ঐতিহাসিক শিল্প আন্দোলন হিসেবে সংজ্ঞায়িত হওয়ার পাশাপাশি আধুনিক শিল্প সমকালীন রূপ লাভ করলে বোস্টনের সমকালীন শিল্প ইনস্টিটিউটের পথ অনুসরণ করে বহু প্রতিষ্ঠান তাদের প্রতিষ্ঠানের নামের সাথে সংযুক্ত "আধুনিক" শব্দটি বাদ দিয়ে "সমকালীন" শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করে। সমকালীন বলতে প্রচলিত সকল বিষয়-বস্তুর সংজ্ঞা প্রাকৃতিক ভাবেই সর্বদা চলমান যা একটি শুরুর তারিখ সমেত বর্তমানে ঘাঁটি গেড়ে সর্বদা অগ্রসর রয়েছে । যার ফল স্বরূপ সমকালীন শিল্পকলা সমিতি কর্তৃক ১৯১০ সালে ক্রয়কৃত শিল্পগুলো এখন আর সমকালীন শিল্প বলে বিবেচিত হবে না।
শিল্পের শৈলীতে পরিবর্তনের চিহ্ন বয়ে আনা সুনির্দিষ্ট বিষয় ও ঘটনাগুলোর অন্তর্ভুক্ত হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং বিগত শতাব্দীর ষাট-এর দশক। বিগত শতাব্দীর ষাট -এর দশকের পর থেকে সম্ভবত প্রাকৃতিকভাবে এই শিল্পধারার মোড় ঘুরানোর মতো আর কোনো বিষয়ের অবতারণা হয় নি। কিন্তু সমকালীন শিল্পকলা কিসের দ্বারা গঠিত এর সংজ্ঞা চলতি শতাব্দীর প্রথম-দশকে এসে ভিন্নরূপ লাভ করে এবং এর পাশাপাশি তা অধিকাংশ ক্ষত্রে নিখুঁত নয়, যার অন্তর্ভুক্ত হলো বিগত বিশ বছরে সৃষ্ট শিল্পকর্ম। আর এই সংজ্ঞায় প্রায়শই সত্তরের দশক[৬], বিংশ শতাব্দীর শেষের দিক এবং একবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভিক সময়ের শিল্পকর্মকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৭] বিংশ শতাব্দীর শেষের দিক এবং একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের শিল্পকলা আধুনিক শিল্পকলার সংজ্ঞা একই সাথে ছাড়িয়ে গেছে এবং প্রত্যাখ্যান করেছে। কঠোরভাবে বলতে গেলে "সমকালীন শিল্প" পরিভাষাটি দ্বারা বর্তমান সময়ে জীবিত শিল্পীদের দ্বারা সৃষ্ট এবং নির্মিত শিল্পকর্মকে বোঝায়;[৮][৯] অর্থাৎ ষাট ও সত্তরের দশক থেকে শুরু করে ঠিক এই মুহূর্ত পর্যন্ত পর্যন্ত সৃষ্ট শিল্পকর্মসমূহ সমকালীন শিল্পকলার অন্তর্ভুক্ত এবং কখনও কখনও আরও দূরবর্তী সময়ের শিল্পকলাও এর অন্তর্ভুক্ত। বিশেষত যাদুঘরগুলো সমসাময়িক শিল্পের স্থায়ী সংগ্রহের জন্য অনিবার্যভাবে এই পরিপক্কতা অনুসন্ধান করে।[১০] অনেকেই এই সমস্যাটিকে এড়িয়ে চলার জন্য আধুনিক ও সমসাময়িক শিল্প সংযুক্ত পরিভাষাটি ব্যবহার করেন। ছোট-খাটো ধরনের বাণিজ্যিক গ্যালারী, ম্যাগাজিন এবং অন্যান্য উৎস কঠোর পরিভাষা ব্যবহার করতে পারে, সম্ভবত ২০০০ সালের পর থেকে এখন অবধি সৃষ্ট শিল্পকলার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে "আধুনিক" পরিভাষাটি ব্যবহারের প্রচলন লক্ষ্য করা যায়।[১১] সুদীর্ঘ কর্ম-জীবন ও কোনো চলমান শিল্প-আন্দোলনের পরেও যে সকল শিল্পীরা বিভিন্ন শিল্প সৃষ্টি করেই চলে তারা নির্দিষ্ট কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে; কারণ সমালোচক সমাজ এবং গ্যালারিগুলো প্রায়ই তাদের দ্বারা সৃষ্ট শিল্পগুলোকে সমকালীন এবং অসমকালীন এই দু ভাগে বিভক্ত করতে অনিচ্ছুক থাকে।
সমাজবিজ্ঞানী নাথালি হাইনিখ আধুনিক এবং সমকালীন শিল্পকে ঐতিহাসিকভাবে অঙ্গা-অঙ্গি জড়িত দুটি ভিন্ন ধারা হিসেবে ব্যাখ্যা করে আধুনিক শিল্পকলা এবং সমকালীন শিল্পকলার মধ্যে পার্থক্য নিরুপন করেন। তিনি খুঁজে পেয়েছেন যে, আধুনিক শিল্পকলা প্রতীকীরূপে শিল্পকলা প্রকাশের যে প্রচলন তার উল্টোপথে আবর্তিত হলেও সমকালীন শিল্পকলা একটি শিল্পকর্মের যথাযথ সংজ্ঞার বাইরে গিয়ে আবর্তিত হয়।[১২] তিনি দুচ্যাম্পের ফাউন্টাইন-কে (যা ১৯১০ সালে আধুনিক শিল্পকলার জয়ধ্বনির মাঝামাঝি সময়ে কথা), সমকালীন শিল্পের সূচনালগ্ন হিসেবে আখ্যা দেন, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গুতাই দলের অবদান, ইভেস ক্লেইন এর মনোক্রোম এবং রাউশেনবার্গের ইরেসড দ্যঁ কুনিং চিত্রকর্মের হাত ধরে অগ্রগতি লাভ করে।[১৩]
সমকালীন শিল্পকলা উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ সেসকল সমস্যার সম্মুখীন হন তার মধ্যে অন্যতম হলো এর বৈচিত্র; যেমন, উপাদান, গঠন, বিষয়-ভিত্তি এবং এমনকি সময়কালের বৈচিত্র। অন্যান্য শিল্পকলা আন্দোলন ও শিল্পকালের মধ্যে খুঁজে পাওয়া বিশেষ বৈশিষ্ট, যেমন "একটি অভিন্ন সংগঠন নীতি ও ভাবতত্ত্বের অতিশয় অভাব"-এর[১৪] দরুন সমকালীন শিল্পকলা স্বতন্ত্র বৈশিষ্টমণ্ডিত। বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, আধুনিকতাবাদী নীতির দিকে তাকালে আমরা আধুনিকতা-কেই দেখতে পাই; যেখানে আমদের দর্শনের কেন্দ্রবিন্দুতে স্ব-উল্লেখিত, স্বতন্ত্র উপাদান অনুসন্ধানকারী উপাদান (যেমন; রেখা, আকৃতি, রং ও গঠনের অনুসন্ধান) রয়েছে। অনুরূপভাবে, চিরন্তন বাস্তবতার বিরুদ্ধে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে প্রতীতিবাদ আলো এবং রং এর মধ্য দিয়ে কোনো বিশেষ কাল সমন্ধে আমাদের অর্জিত চেতনা তত্ত্বাবধান করে থাকে। অন্য দিকে সমকালীন শিল্পকলার কোনো একক লক্ষ্য বা দৃষ্টিকোণ নেই। পরিবর্তে এর দৃষ্টিকোণ অস্পষ্ট, সম্ভবত তা বর্তমান বিশ্বেরই প্রতিচ্ছবি। অতএব এটি দ্বন্দ্বপূর্ণ, বিভ্রান্তিকর এবং আমিমাংসিত উপসংহারপূর্ণ হতে পারে। যাইহোক, সমকালীন শিল্পকর্ম সমূহে বেশকিছু সাধারণ মূলভাব বা প্রতিপাদ্য লক্ষ্য করা গেছে। তবে সেগুলো পূর্ণাঙ্গ নয়, যেমন উল্লেখযোগ্য কিছু মূলভাব বা প্রতিপাদ্য বিষয় হলো, পরিচয় প্রসঙ্গে রাজনীতি, দেহ, বিশ্বায়ন ও অভিবাসন, প্রযুক্তি, সমসাময়িক সমাজ ও সংস্কৃতি, সময় ও অর্থ এবং প্রাতিষ্ঠান ও রাজনীতির সমালোচনা। শিল্পকলায় সমসাময়িক তত্ত্বের উন্নয়নে উত্তর-আধুনিকতা, নারীবাদ, মার্ক্সবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।[১৫]
শিল্প-জগতের কর্মকাণ্ড নির্ভর করে শিল্পকলা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর; যেমন বড় ধরনের জাদুঘর থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন গ্যালারি, অ-লাভজনক বিভিন্ন প্লাটফর্ম, শিল্পকলা বিদ্যালয় এবং স্বতন্ত্র শিল্পী, তত্ত্বাবধায়ক, লেখক, সংগ্রাহক ও জনহিতৈষীবৃন্দের উপর নির্ভর করে। শিল্পজগতের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিভাজন হলো লাভজনক এবং অলাভজনক সেক্টরের মধ্যকার বিভাজন, তবে সাম্প্রতিক সময়ে লাভজনক ব্যক্তি-মালিকানাধীন শিল্পকলা প্রতিষ্ঠান এবং অলাভজনক পাবলিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যকার সীমারেখা প্রায় মুছে যেতে শুরু করেছে। সর্বাধিক সুপরিচিত সমকালীন শিল্পকর্মগুলো পেশাদার শিল্পীদের দ্বারা বাণিজ্যিক সমকালীন শিল্পকলা গ্যালারিতে প্রদর্শিত হওয়ার পাশাপাশি স্বতন্ত্র সংগ্রাহক, শিল্প নিলাম, কর্পোরেশন, জনগণের অর্থে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন শিল্প সংঘ সমূহ, সমকালীন শিল্প জাদুঘর অথবা শিল্পীর নিজের দ্বারাই ভিন্ন শিল্পী-মহলে প্রদর্শিত হচ্ছে। সমকালীন শিল্পীরা বিভিন্ন বৃত্তি, সম্মাননা এবং পুরস্কার থেকে শুরু করে নিজেদের শিল্পকর্ম বিক্রি করার মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান পেয়ে থাকেন।[১৬] পেশাদারি শিল্পীরা বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারেন অথবা শিল্পকলার ব্যবহার ও চাহিদা রয়েছে এমন সব পেশায় যোগদান করতে পারেন।
জনগণের অর্থে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সমকালীন শিল্পকলা সংঘ এবং বাণিজ্যিক শিল্প-প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২০০৫ সালে Understanding International Art Markets and Management বইটি হতে জানা যায় যে, ব্রিটেনে বেশ কয়েকজন কারবারী জনসাধারণের অর্থে প্রতিষ্ঠিত সমকালীন শিল্পকলা জাদুঘরে স্বতন্ত্র শিল্পীদের তুলে ধরেছিলেন।[১৭]
বিভিন্ন কর্পোরেশনগুলো নিজেদের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক অঙ্গনে সমকালীন শিল্পকলা প্রদর্শন, সমকালীন শিল্পকলা সম্মাননার আয়োজন ও স্পনসর করার পাশাপাশি বিশাল প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পকর্মেরে সংগ্রহ গড়ে তুলে সমকালীন শিল্পকলার জগতে নিজেদেরকে সংযুক্ত করে নিয়েছে।[১৮] প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞাপনদাতারা বিলাসবহুল পণ্য-সামগ্রীর দিকে ভোক্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য সমকালীন শিল্পকলার সাথে সম্পৃক্ত খ্যাতি প্রদর্শন করে থাকে।
কি বা কেমন বিষয়-বস্তু সমকালীন শিল্প হিসেবে মর্যাদা পাবে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভিন্ন শিল্পকলা প্রতিষ্ঠান সমালোচিত হয়ে আসছে। বহিরাগত শিল্প, উদাহরণস্বরূপ, সোজাসুজিভাবে এক ধরনের সমকালীন শিল্পকলা, যদি তা সমসাময়িককালে সৃষ্ট হয়ে থাকে। তবে, একজন সমালোচক বিতর্ক করে বলেছেন যে, বহিরাগত-শিল্পের সাথে সম্পৃক্ত শিল্পীরা যেহেতু স্ব-শিক্ষিত এবং শিল্পকলার সাপেক্ষে ঐতিহাসিক প্রসঙ্গের বাইরে তাদের কর্মকাণ্ড চালিত হয় বলে ধরে নেয়া হয় তাই তাদের শিল্পকর্ম সমকালীন শিল্পকলা অন্তর্ভুক্ত বলে হিসেবে বিবেচিত হয় না।[১৯] প্রদর্শনের জন্য বিরাট দর্শক থাকা সত্ত্বেও কারুকলা সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড; যেমন, বয়নসংক্রান্ত নকশা সমকালীন শিল্পকলা জগতের বহির্ভূত একটি বিষয়। শিল্পকলা সমালোচক পিটার টিমস বলেছেন যে, সমকালীন শিল্পকলা জগতের অন্তর্ভক্ত হতে হলে কারু সামগ্রীকে সুনির্দিষ্ট মান ও সংজ্ঞার অধিকারী হতে হবে যেন তা নজর কাড়তে সক্ষম হয়। সমকালীন শিল্পকলা হিসেবে যুক্তিযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অতি সাধারণ সৌন্দর্যের চেয়ে সৌন্দর্যের চিরাচরিত সংজ্ঞার বিরুদ্ধে অভিহিত একটি মৃৎ-সামগ্রীর বেশি সম্ভাবনা রয়ে যায়।[২০][২১]
যে কোনও সময়ে একটি নির্দিষ্ট শিল্পকলার ক্ষেত্র বা শিল্পীদের দল পরবর্তী সমসাময়িক শিল্পকলায় শক্তিশালী প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফেরাস গ্যালারি লস-এঞ্জেলসের একটি বাণিজ্যিক গ্যালারি ছিল এবং পরবর্তীতে পঞ্চাশের দশক এবং ষাটের দশকে গ্যালারিটি ক্যালিফোর্নিয়ার সমকালীন শিল্পকলার দৃশ্যপট পুনরুজ্জীবিত করে।
সমসাময়িক শিল্প কখনও কখনও এমন জনসাধারণের সাথে মতভেদ দেখাতে পারে, যারা কিনা শিল্পকলা এবং শিল্পকলা বিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলি একই অর্থ ও গুরুত্ব বহন করে না বলে মনে করে।[২২] ব্রিটেনে, গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে, সমকালীন শিল্প জনপ্রিয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছিল, যেখানে শিল্পীরা তারকা বলে বিবেচিত হতো, কিন্তু এটি একটি প্রত্যাশিত "সাংস্কৃতিক স্বর্গরাজ্য" অবতারণা করতে পারেনি।[২৩] জুলিয়ান স্পালডিং এবং ডোনাল্ড কুস্পিত-এর মত কিছু সমালোচক প্রস্তাব করেছেন যে স্কেপ্টিজম, এমনকি প্রত্যাখ্যান, অধিকতর সমকালীন শিল্পের প্রতি বৈধ এবং যুক্তিযুক্ত প্রতিক্রিয়া। "আর্ট বোলকস" নামে একটি প্রবন্ধে ব্রায়ান অ্যাশিবি বলেন যে, "উত্তর-আধুনিকতার নামে বেশিরভাগ প্রতিস্থাপন শিল্প, ফটোগ্রাফি, ধারণাগত শিল্প এবং ভিডিও তাত্ত্বিক ভাববিনিময়ের রূপে মৌখিক ব্যাখ্যাগুলির উপর খুব নির্ভরশীল"। যাইহোক, একটি শিল্পকর্ম কিসের দ্বারা গঠিত এই প্রসঙ্গে দর্শনানুপাতের পরিবর্তনের বদৌলতে যাদুঘরে অ-ঐতিহ্যবাহী শিল্পের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে।[৬][২৪][২৫]
শিল্প কিসের দ্বারা গঠিত হয় এই প্রশ্নটি বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিক থেকেই একটি সাধারণ উদ্বেগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। সমসাময়িক যুগে (1950 থেকে এখন পর্যন্ত), কোন কোন শিল্প গ্যালারি, জাদুঘর এবং সংগ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে তা নির্ধারণে আভঁন্ত-গার্দ ধারণাটির প্রসার ঘটতে পারে।[২৬]
সমসাময়িক শিল্পকলা প্রসঙ্গে উদ্বেগের বিষয়ও সমালোচনার মধ্যে আসে। আন্দ্রেয়া রোসেন বলেছেন যে কিছু সমসাময়িক চিত্রশিল্পীদের "সমসাময়িক শিল্পী হওয়ার মানে কী তা তার কোনও ধারণা নেই" এবং তারা "সম্পূর্ণ ভুল কারণে এটির চর্চা করছে"।[২৭]
সমকালীন শিল্পকলা প্রসঙ্গে আয়োজিত প্রতিযোগিতা সমূহ এবং প্রদত্ত পুরস্কার ও সম্মাননা সমূহ:
নিম্নের সারণীটিতে দশক অনুযায়ী বিভিন্ন শিল্প আন্দোলন এবং শিল্পধারা তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ৷ এই তালিকাটি চূড়ান্ত বলে ধরে নেয়া উচিত হবে না;
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)
|তারিখ=
(সাহায্য)