| |||||||
অতিরিক্ত সময় পর পেনাল্টিতে লিভারপুল ৫–৪ গোলে জয়ী | |||||||
তারিখ | ১৪ আগস্ট ২০১৯ | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ম্যাচসেরা | সাদিও মানে (লিভারপুল)[১] | ||||||
রেফারি | স্তেফানি ফ্রাপার্ত (ফ্রান্স)[২] | ||||||
দর্শক সংখ্যা | ৩৮,৪৩৪[৩] | ||||||
আবহাওয়া | মেঘাচ্ছন্ন রাত ২৬ °সে (৭৯ °ফা) ৭৩% আর্দ্রতা[৪] | ||||||
২০১৯ উয়েফা সুপার কাপ উয়েফা দ্বারা আয়োজিত উয়েফা সুপার কাপের ৪৪তম সংস্করণ ছিল, যেটি একটি বার্ষিক ফুটবল ম্যাচ। এই ম্যাচে প্রধান দুটি ইউরোপীয় ক্লাব প্রতিযোগিতা, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ এবং উয়েফা ইউরোপা লীগের চ্যাম্পিয়ন দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এই ম্যাচে ২০১৮–১৯ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের চ্যাম্পিয়ন ইংরেজ ক্লাব লিভারপুল (যারা ফাইনালে অন্য আরেক ইংরেজ ক্লাব টটেনহ্যাম হটস্পারকে ২–০ হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের শিরোপা জয়লাভ করেছিল) এবং ২০১৮–১৯ উয়েফা ইউরোপা লীগের চ্যাম্পিয়ন অন্য আরেক ইংরেজ ক্লাব চেলসি (যারা ফাইনালে আরেক ইংরেজ ক্লাব আর্সেনালকে ৪–১ হারিয়ে উয়েফা ইউরোপা লীগের শিরোপা জয়লাভ করেছিল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।[৫] এই ম্যাচটি ২০১৯ সালের ১৪ই আগস্ট তারিখে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলের ভোডাফোন পার্কে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[৬]
এই ম্যাচটি উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসে প্রথম সর্ব-ইংরেজ ম্যাচ ছিল; একই সাথে এটি সুপার কাপের ইতিহাসে অষ্টম ম্যাচ ছিল, যেখানে একই দেশের দুটি ক্লাব মুখোমুখি হয়েছিল। অন্যদিকে, উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই ম্যাচে ভিডিও সহকারী রেফারি (ভিএআর) পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল।[৭]
দ্বিতীয়ার্ধ শেষে ২–২ গোলে সমতায় থাকার পর, অতিরিক্ত সময়ের পর পেনাল্টিতে লিভারপুল ৫–৪ গোলের ব্যবধানে ম্যাচটি এবং উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো শিরোপা জয়লাভ করেছিল।[৮][৯] বিজয়ী দল হিসেবে লিভারপুল ৪ মিলিয়ন ডলার অর্থমূল্য লাভ করেছিল।[১০]
দল | বাছাইপর্ব | পূর্ববর্তী অংশগ্রহণ১ |
---|---|---|
লিভারপুল | ২০১৮–১৯ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগের চ্যাম্পিয়ন | ৫ (১৯৭৭, ১৯৭৮, ১৯৮৪, ২০০১, ২০০৫) |
চেলসি | ২০১৮–১৯ উয়েফা ইউরোপা লীগের চ্যাম্পিয়ন | ৩ (১৯৯৮, ২০১২, ২০১৩) |
এটি উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসে তুরস্কে অনুষ্ঠিত প্রথম ম্যাচ এবং তুরস্কে আয়োজিত উয়েফা ক্লাব প্রতিযোগিতার তৃতীয় ফাইনাল ছিল। ইতিপূর্বে ২০০৫ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ ফাইনাল আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এবং ২০০৯ উয়েফা কাপ ফাইনাল শুক্রু সারাকোয়লু স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে; উভয় স্টেডিয়ামই ইস্তাম্বুলে অবস্থিত।[১১]
প্রতিযোগিতা-বহির্ভূত পৃষ্ঠপোষকদের নামকরণের অধিকার সম্পর্কিত উয়েফার নিয়মের কারণে এই স্টেডিয়ামটিকে উয়েফার সকল কাজকর্মে বেশিকতাশ পার্ক হিসেবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।[১১]
ক্লাব প্রতিযোগিতার ফাইনালের (উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ, উয়েফা ইউরোপা লীগ, উয়েফা নারী চ্যাম্পিয়নস লীগ এবং উয়েফা সুপার কাপ) মাঠ নির্বাচন করতে উয়েফা কর্তৃক ২০১৬ সালের ৯ই ডিসেম্বর তারিখে প্রথমবারের মতো একটি উন্মুক্ত নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল।[১২][১৩] আগ্রহ প্রকাশের জন্য অ্যাসোসিয়েশনগুলো ২০১৭ সালের ২৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পেয়েছিল এবং ২০১৭ সালের ৬শে জুন তারিখের মধ্যে নিলামের সকল কাগজপত্র জমা দিতে হয়েছিল।
২০১৭ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি তারিখে, উয়েফা এক ঘোষণায় জানায় যে, ৯টি অ্যাসোসিয়েশন ২০১৯ উয়েফা সুপার কাপ আয়োজনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে[১৪] এবং ২০১৭ সালের ৭ই জুন তারিখে, উয়েফা অন্য এক ঘোষণায় জানায় যে, ৭টি অ্যাসোসিয়েশন এই ম্যাচটি আয়োজনের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছে:[১৫]
দেশ | স্টেডিয়াম | শহর | ধারণক্ষমতা | টীকা |
---|---|---|---|---|
আলবেনিয়া | এরিনা কোম্বেতারে | তিরানা | ২২,৫০০ | |
ফ্রান্স | স্টেডিয়াম মুনিসিপাল | তুলুজ | ৩৩,১৫০ | |
ইসরায়েল | স্যামি ওফার স্টেডিয়াম | হাইফা | ৩০,৮৭০ | |
কাজাখস্তান | আস্তানা এরিনা | আস্তানা | ৩০,২৪৪ | এছাড়াও ২০১৯ উয়েফা নারী চ্যাম্পিয়নস লীগ ফাইনালের নিলামে অংশগ্রহণ করেছিল |
উত্তর আয়ারল্যান্ড | উইন্ডসর পার্ক | বেলফাস্ট | ১৮,৪৩৪ | |
পোল্যান্ড | স্তাদিয়ন এনেরগা গদাইয়স্ক | গদাইয়স্ক | ৪১,১৬০[১৬] | ওয়ারশের জাতীয় স্টেডিয়ামের ওপর পছন্দ করা হয়েছে |
তুরস্ক | ভোডাফোন পার্ক | ইস্তাম্বুল | ৪১,১৮৮[১৭] | এছাড়াও ২০১৯ উয়েফা ইউরোপা লীগ ফাইনালের নিলামে অংশগ্রহণ করেছিল |
নিম্নলিখিত অ্যাসোসিয়েশনগুলো এই ম্যাচ আয়োজনে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল, তবে শেষ পর্যন্ত নিলামের কাগজপত্র জমা দেয়নি:
২০১৭ সালের ১৪ই সেপ্টেম্বর তারিখে, উয়েফা এই ম্যাচের নিলাম মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।[১৮] পরবর্তীতে ২০শে সেপ্টেম্বর তারিখে, উয়েফার নির্বাহী কমিটির এক সভায় ভোডাফোন পার্ক এই ম্যাচ আয়োজনের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল।[১৯][৬]
এই ম্যাচটি উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসে প্রথম ম্যাচ ছিল, যেখানে দুটি ইংরেজ দল একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। এরপূর্বে উয়েফার মৌসুমি প্রতিযোগিতাও সর্ব-ইংরেজ ফাইনালের দেখা পেয়েছিল; চ্যাম্পিয়নস লীগে লিভারপুল টটেনহ্যাম হটস্পারকে এবং ইউরোপা লীগে চেলসি আর্সেনালকে পরাজিত করেছে। অন্যদিকে, এই ম্যাচটি সামগ্রিকভাবে সুপার কাপের ইতিহাসে অষ্টম ম্যাচ ছিল, যেখানে একই দেশের দুটি ক্লাব মুখোমুখি হয়েছিল; ইতিপূর্বে ৫ বার স্পেনীয় দল (২০০৬, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৬ এবং ২০১৮) এবং ২ বার ইতালীয় দল (১৯৯০ এবং ১৯৯৩) সুপার কাপের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল। এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্বেই নিশ্চিত ছিল যে, ২০০৫ সালে লিভারপুলের পরে প্রথম কোন ইংরেজ দল সুপার কাপের শিরোপা জয়লাভ করবে।[২০]
এটি উয়েফা প্রতিযোগিতায় উভয় ক্লাবের মধ্যে একাদশতম সাক্ষাত ছিল।[২১] ২০০৪–০৫ থেকে ২০০৮–০৯ মৌসুম পর্যন্ত পরপর ৫ বার লিভারপুল এবং চেলসি একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল।[২২] পূর্ববর্তী ১০ সাক্ষাতের মধ্যে ৩ বার চেলসি (অতিরিক্ত সময়ের পরে ১ বার সহ) এবং লিভারপুল ২ বার জয়লাভ করেছিল, অন্য ৫টি ম্যাচ ড্রয়ে সম্পন্ন হয়েছিল (পেনাল্টির মাধ্যমে লিভারপুলের ১ বার জয় সহ)। উভয় দল ২ বার করে ঘরোয়া লীগের পয়েন্ট তালিকায় একে অপরের উপরে অবস্থান করে উয়েফা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছিল। অন্যদিকে, ২০০৫–০৬ উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ গ্রুপ পর্বে লিভারপুলের অনন্য যোগ্যতা অর্জন উক্ত মৌসুমে তাদের অ্যাসোসিয়েশন হতে সুরক্ষা প্রদান করেনি।[২৩][২৪]
২০১৯ সালের ২রা আগস্ট তারিখে, উয়েফা এই ম্যাচের রেফারি হিসেবে ফরাসি রেফারি স্তেফান ফ্রাপার্তের নাম ঘোষণা করেছিল; এই ম্যাচে উয়েফার পুরুষদের প্রতিযোগিতার ইতিহাসে ফাইনালে প্রথমবারের মতো একজন নারী রেফারির দায়িত্ব পালন করেছিল। ফ্রাপার্ত ২০০৯ সাল থেকে ফিফা রেফারি দায়িত্ব পালন করছেন[২৫] এবং ইতিপূর্বে তিনি ২০১৫ ফিফা নারী বিশ্বকাপ, ২০১৬ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক, উয়েফা নারী ইউরো ২০১৭, ২০১৯ ফিফা নারী বিশ্বকাপ এবং ২০১৯ ফিফা নারী বিশ্বকাপ ফাইনালে রেফারির দায়িত্ব পালন করেছেন।[২৬][২৭] এছাড়াও ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে, তিনি লীগ ১-এ প্রথম নারী রেফারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[২৮] সহকারী রেফারি হিসেবে মানুয়েলা নিকোলোসি এবং মিচেল ও'নিল, ভিডিও সহকারী রেফারি (উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে) হিসেবে ক্লেমঁ তুরপেঁ এবং সহকারী ভিডিও সহকারী রেফারি হিসেবে ফ্রঁসোয়া লেতেক্সিয়ে এবং মাসিমিলিয়ানো ইররাতি কাজ করেছিলেন। তুরস্কের রেফারি জুনেয়ত চাকের চতুর্থ রেফারির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এছাড়াও জার্মানির মার্ক বর্শ অফসাইড ভিডিও সহকারী রেফারি হিসেবে কাজ করেছিলেন।[২]
চেলসি ৩৬তম মিনিটে ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের কাছ থেকে আসা পাস বাম দিকে অবস্থানরত অলিভিয়ে জিরুকে খুঁজে পায় এবং জিরু বাম পা দ্বারা গোলবারের কোণে শুট করে চেলসিকে ম্যাচে ১–০ গোলে এগিয়ে নিয়েছিলেন। ভিডিও সহকারী রেফারি থেকে নিশ্চিতকরণের পরে অফসাইডের জন্য পুলিসিচের করা দ্বিতীয় গোলটি বাতিল হয়ে যায়। ৪৮তম মিনিটে রবের্তো ফিরমিনোর শট করা বলটি গোলরক্ষকের কাছ থেকে ফিরে এসে সাদিও মানেকে খুঁজে পায়, যিনি ম্যাচটি ১–১ গোলের সমতায় ফিরিয়ে এনেছিলেন। অতঃপর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আর কোন গোল না হওয়ার ফলে ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়িয়েছিল। পরবর্তীতে ৯৫তম মিনিটে সাদিও মানে রবার্তো ফিরমিনোর কাছ থেকে পাওয়া বলটি পায়ের পার্শ্বভাগ দিয়ে শুট করে গোলবারের ডান কোণে জড়ানোর মাধ্যমে ম্যাচে লিভারপুলকে ২–১ গোলে এগিয়ে নিয়েছিল।[২৯] এর ৬ মিনিট পর, ট্যামি আব্রাহাম পেনাল্টি অঞ্চলে আদ্রিয়ানকে অবরুদ্ধ করার ফলে চেলসি একটি পেনাল্টি পায়; জর্জিনিয়ো পেনাল্টি স্পট হতে গোলবারের ডান কোণে শুট করে সেভিয়াকে ম্যাচে ২–২ গোলে সমতায় ফিরিয়ে এনেছিলেন। অতঃপর অতিরিক্ত সময়ে আর কোন গোল না হওয়ার ফলে ম্যাচটি পেনাল্টিতে গড়িয়েছিল। অতঃপর চেলসির হয়ে ট্যামি আব্রাহামের নেওয়া সর্বশেষ পেনাল্টিটি আদ্রিয়ান রুখে দেওয়ার ফলে লিভারপুল ৫–৪ গোলের ব্যবধানে পেনাল্টিতে ম্যাচটি জয়লাভ করেছিল।[৩০]
চ্যাম্পিয়নস লীগ বিজয়ী দলকে প্রশাসনিক কাজের জন্য "স্বাগতিক" দল হিসেবে নির্দেশ করা হয়েছে।
লিভারপুল[৪]
|
চেলসি[৪]
|
ম্যান অব দ্য ম্যাচ:
সহকারী রেফারি:[২]
|
ম্যাচের নিয়ম[৩১]
|
|
|
|
|
টেমপ্লেট:লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের ম্যাচ টেমপ্লেট:চেলসি ফুটবল ক্লাবের ম্যাচ