সর্বোচ্চ ক্রীড়া পরিচালনা সংস্থা | আইটিটিএফ |
---|---|
প্রথম খেলা হয়েছে | ১৮৮০-এর দশকে, ইংল্যান্ডে |
বৈশিষ্ট্যসমূহ | |
শারীরিক সংস্পর্শ | না |
দলের সদস্য | একক অথবা দ্বৈত |
ধরন | র্যাকেট ক্রীড়া, ইনডোর |
খেলার সরঞ্জাম | সেলুলয়েড, ৪০ মিলিমিটার |
প্রচলন | |
অলিম্পিক | ১৯৮৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্স থেকে অদ্যাবধি |
টেবিল টেনিস বা পিং পং (ইংরেজি: Table tennis, Ping Pong) বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হিসেবে বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদদের নিকট অত্যন্ত পরিচিত। ব্যক্তিগত কিংবা দলগত বিষয় হিসেবে এ খেলা টেবিলের উপরের অংশে খেলতে হয়। এছাড়াও, খেলার উপকরণ হিসেবে ব্যাট, ছোট বল, জাল এবং টেবিলের প্রয়োজন পড়ে। ১৮৮০ সালে ইংল্যান্ডে টেবিল টেনিসের উৎপত্তি ঘটে। আধুনিক অলিম্পিকে এ ক্রীড়া ১৯৮৮ সালের সিউল অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হয়। বিশ্বের অধিকাংশ সেরা টেবিল টেনিস খেলোয়াড় চীন দেশের জন্মগ্রহণকারী। অন্যদিকে, ইউরোপীয় দেশের মধ্যে জার্মানি অন্যতম।
আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিস ফেডারেশন বা আইটিটিএফ টেবিল টেনিসের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। চীন, হংকং এবং তাইওয়ানে এ খেলার আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে পিং পং কিউ (乒乓球)। অন্যদিকে জাপানে খেলাটি তাক্কিও (卓球) নামে পরিচিত।
আন্তর্জাতিক আইনে খেলার উপযোগী বলের ওজন ২.৭ গ্রাম এবং ব্যাসার্ধ্য ৪০ মিলিমিটার হবে।[১] ৩০.৫ সেন্টিমিটার উচ্চতা থেকে বল আদর্শ স্টিলের পাতে ফেললে বলটি ২৪-২৬ সেন্টিমিটার উচ্চতায় বাউন্স খাবে। বায়ুপূর্ণ সেলুলয়েড বা সমগোত্রীয় প্লাস্টিক পদার্থ দিয়ে বল তৈরী করতে হবে। এর রং হবে সাদা কিংবা কমলা রঙের। টেবিলের রঙের উপর নির্ভর করে বলের রঙের ব্যবহার ঘটবে। যেমন: সাদা বল সহজেই সবুজ কিংবা নীল রঙের টেবিলে দৃশ্যমান হয়। তারকাখচিত চিহ্ন বলের মান নির্দেশক। তিন তারকাখচিত বল সর্বোচ্চ মানের এবং তা আনুষ্ঠানিক প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ব্যবহৃত টেবিলের দৈর্ঘ্য ২.৭৪ মিটার, প্রস্থে ১.৫২ মিটার এবং ৭৬ সেন্টিমিটার উচ্চতাবিশিষ্ট হবে। ম্যাসোনাইট জাতীয় একপ্রকারের হার্ডবোর্ড কিংবা সমমানের কাঠ দিয়ে তৈরী টেবিলের আচ্ছাদন মসৃণ হতে হবে।[২] টেবিলটি ১৫.২৫ সেন্টিমিটার উচ্চতাবিশিষ্ট জাল দিয়ে সমানভাবে বিভক্ত হবে। আইটিটিএফ টেবিলের রঙ সবুজ অথবা নীল নির্ধারণ করেছে। সাধারণ বিনোদন পার্কে কংক্রিট দিয়ে তৈরী টেবিলও মাঝে মাঝে দেখা যায়।[৩]
খেলোয়াড়ের হাতলে ধরার উপযোগী করে একদিকে কিংবা উভয় দিকে কাঠের র্যাকেট রাবার দিয়ে আচ্ছাদিত থাকে। আনুষ্ঠানিকভাবে আইটিটিএফ পারিভাষিকভাবে র্যাকেট, ব্রিটেনে ব্যাট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্টে প্যাডেল নামে ডেকে থাকে। র্যাকেটের কাঠের অংশ ব্লেডে কাঠ, কর্ক, গ্লাস ফাইবার, কার্বন ফাইবার, অ্যালুমিনিয়াম ফাইবার এবং কেভলারও কখনো কখনো ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে আইটিটিএফের ধারা মোতাবেক ব্লেডের ৮৫% ঘণত্ব অবশ্যই প্রাকৃতিক কাঠ দিয়ে তৈরী হতে হবে।[৪] জাপানে সাধারণ কাঠ হিসেবে বলসা, লিম্বা, সাইপ্রেস অথবা হিনোকি জাতীয় কাঠ ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। ব্লেডের গড়পড়তা দৈর্ঘ্য ৬.৫ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৬ ইঞ্চি হবে।
টেবিল টেনিসে খেলোয়াড়গণ তাদের ব্যাট বা র্যাকেটের হাতলে বিভিন্নভাবে ধরতে পারেন। তবে র্যাকেটের হাতল ধরাকে প্রধান দু'টি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। সেগুলো হলো - পেনহোল্ড এবং শ্যাকহ্যান্ড।[৫] টেবিল টেনিসের প্রচলিত নিয়ম-কানুনে র্যাকেটের হাতল কোন ধরনের পদ্ধতিতে ধরতে হবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন নির্দেশনাপত্র তুলে ধরা হয়নি।
টেবিল টেনিসে সাধারণতঃ আক্রমণাত্মক এবং রক্ষণাত্মক কৌশল ভাঙ্গার জন্য স্ট্রোক প্রয়োগ করা হয়।
প্রতিযোগিতামূলক খেলা হিসেবে টেবিল টেনিস এশিয়া এবং ইউরোপসহ অধুনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।[৬] প্রধান ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতারূপে বিশ্ব টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশীপ, বিশ্বকাপ টেবিল টেনিস, অলিম্পিক্স, আইটিটিএফ প্রো ট্যুর অন্যতম। এছাড়াও, মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা হিসেবে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ, ইউরোপ টপ-১২, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ এবং এশিয়ান গেমস উল্লেখযোগ্য।
চীনে জন্মগ্রহণকারী খেলোয়াড়েরা ১৯৫৯ সাল থেকে পুরুষদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপে ৬০ শতাংশ শিরোপা জয় করেছেন।[৭] অপরদিকে, ১৯৭১ সাল থেকে মহিলাদের প্রতিযোগিতায় চীনা খেলোয়াড়গণ তিনটি প্রতিযোগিতা বাদে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের সবগুলোই নিজেদের দখলে রেখেছেন।[৮] এছাড়া, অন্যান্য শক্তিশালী দলরূপে পূর্ব এশিয়া এবং ইউরোপীয় দেশগুলো রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে - অস্ট্রিয়া, বেলারুশ, জার্মানি, হংকং, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, সুইডেন এবং তাইওয়ান।[৯]
|month=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)