আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
আইসিসি মর্যাদা | অনুমোদিত সদস্য (২০০৬) | ||||||
আইসিসি অঞ্চল | এশিয়া | ||||||
বিশ্ব ক্রিকেট লিগ | না | ||||||
| |||||||
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট | |||||||
প্রথম আন্তর্জাতিক | ১২ জানুয়ারি ১৯২৭ বনাম এমসিসি, ইয়াঙ্গুন | ||||||
৩ মে ২০১৯ অনুযায়ী |
মিয়ানমার ক্রিকেট দল হল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মিয়ানমার বা বার্মা কে প্রতিনিধিত্ব করা ক্রিকেট দল। দলটি ২০০৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল-এর সদস্য।[২]
মিয়ানমারে ক্রিকেটের ইতিহাস অনেক পুরনো। যখন বার্মা ব্রিটিশ ভারত-এর একটি রাজ্য ছিল তখন থেকে এ অঞ্চলে ক্রিকেট খেলা হয়। ব্রিটিশরা ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের মত মিয়ানমারেও ক্রিকেট খেলাকে নিয়ে আসে। এই খেলাটি এই অঞ্চলে যথেষ্ট অগ্রসর ছিল এবং মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব তাদের ১৯২৬/১৯২৭ ভারত সফরে মিয়ানমারে দুটি ২ দিনের প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে। দুটি ম্যাচের প্রথমটি ইয়াঙ্গুন-এর জিমখানা মাঠে ইয়াঙ্গুন জিমখানা ক্রিকেট দল-এর বিপক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। ঐ ম্যাচটি ড্র হয় যদিও এমসিসি স্বাগতিক দলকে ফলোঅনে পাঠায়।[৩] দ্বিতীয় ম্যাচটি বার্মা দলের বিপক্ষে ছিল এবং সেটি ইয়াঙ্গুনের বিএএ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এমসিসি বার্মা দলকে উভয় ইনিংসেই অল্প রানে অলআউট করে ম্যাচটি জিতে জিতে নেয়। দ্বিতীয় ইনিংসে এমসিসির জয়ের জন্য মাত্র ৭ রান প্রয়োজন ছিল।[৪] এটিই এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের একমাত্র প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ হয়ে রয়েছে।
স্বাধীনতার পর ক্রিকেট মিয়ানমারে খুবই গৌণ একটি খেলা হিসেবে রয়েছে এবং ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারের কোথাও খেলতে দেখা যায় নি। ২০০২ সালে বাংলার সাবেক প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার নরেশ কুমার আয়োজিত ৭ দলের একটি ক্রিকেট লীগের মাধ্যমে মিয়ানমারে খেলাটির পুনরুত্থান দেখা যায়। ঐ লীগে কয়েকজন সাবেক প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারসহ প্রায় ২৫০ জন অংশ নেন। ক্রিকেট টিভি সংবাদের রিপোর্টেও আলোচিত হয়। ২০০৪ সালে আইসিসি মিয়ানমার ক্রিকেট ফেডারেশন পরিদর্শনে যায়।[৫] এবং ২০০৬ সালে মিয়ানমার ক্রিকেট ফেডারেশন আইসিসির অনুমোদিত সদস্য হয়। প্রাথমিকভাবে মিয়ানমারের সাবেক খেলোয়াড়রাই ক্রিকেট খেললেও সাম্প্রতিক সময়ে স্কুলগুলোতে এই খেলাটির প্রসার বৃদ্ধি করা হচ্ছে।[৬]
আইসিসির সদস্যপদ লাভের মাত্র ২ মাস পর মিয়ানমার প্রথমবারের মত এসিসি টফিতে (২০০৬ এসিসি ট্রফি) অংশ নিতে মালয়েশিয়ায় যায়। তাদের টুর্নামেন্টটির ফল ছিল খুবই খারাপ। তারা টুর্নামেন্টে কুয়েত জাতীয় ক্রিকেট দল-এর কাছে ১০ ওভারের মধ্যে ৯ উইকেটে পরাজিত হয়, হংকং জাতীয় ক্রিকেট দল এর কাছে ২০ রানে অলআউট হয়ে ৪২২ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয় এবং ভুটান জাতীয় ক্রিকেট দল এর কাছে ৬.৫ ওভারে ৯ উইকেটে পরাজিত হয়, যদিও টুর্নামেন্টের পূর্ববর্তী খেলাগুলোতে ভুটানও বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়।
টুর্নামেন্টে মিয়ানমার নেপাল জাতীয় ক্রিকেট দল এর বিপক্ষে তাদের সবচেয়ে লজ্জাজনক এবং সবচেয়ে খারাপ ম্যাচটি খেলে। ম্যাচটিতে মিয়ানমার ১২.১ ওভারে মাত্র ১০ রানে অলআউট হয়। মিয়ানমারের হয়ে কোন ব্যাটসম্যান ১ রানের বেশি করতে পারেন নি এবং ৫ জন খেলোয়াড় শুন্য রানে আউট হন। মিয়ানমারের ইনিংসের সবচেয়ে বেশি রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে (৩টি লেগবাই ও ২টি ওয়াইড)। নেপাল তাদের ইনিংসের প্রথম বলে ৩ রান নেয় পরবর্তীতে ৩টি ওয়াইড রান থেকে পাঁচ রান আসে। নেপাল তাদের ইনিংসের দ্বিতীয় বৈধ বল থেকে ৩ রান নিয়ে ম্যাচটি ১০ উইকেটে জিতে নেয়। কয়েকজন সমালোচক ম্যাচটিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সবচেয়ে একপেশে ম্যাচ হিসেবে আখ্যা দেন।[৭] এছাড়াও ১০ রান পুরুষদেরদের যেকোনো স্তরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই দলীয় সর্বনিম্ন রান।
এসিসি ট্রফি এলিট ও চ্যালেঞ্জ এই দুটি স্তরে বিভক্ত হওয়ার পর মিয়ানমার ২০০৯ ও ২০১০ সালে চ্যালেঞ্জ স্তরে অংশ নেয় এবং দুটি আসরেই তারা সর্বশেষ স্থানটিতে থাকে। মানের দিক থেকে এলিটের চেয়ে নিচে থাকলেও মিয়ানমার চ্যালেঞ্জ স্তরে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হতে থাকে।