মুহাম্মাদ


মুহাম্মাদ

مُحَمَّد
বাক্যটির অর্থ হলো মুহাম্মাদ আল্লাহর প্রেরিত রাসুল।
মুহাম্মাদ, আল্লাহর রাসুল
মদিনায় মসজিদে নববীর দরজায় খোদাই করা
অন্য নাম
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্মআনু. ৫৭০ খ্রি. (৫৩ হিজরিপূর্ব)[৩]
মৃত্যু৮ জুন ৬৩২(৬৩২-০৬-০৮) খ্রি. (১১ হিজরি; বয়স ৬১–৬২)
মদিনা, হেজাজ, আরব
সমাধিস্থল
২৪°২৮′০৩″ উত্তর ৩৯°৩৬′৪১″ পূর্ব / ২৪.৪৬৭৫০° উত্তর ৩৯.৬১১৩৯° পূর্ব / 24.46750; 39.61139 (Green Dome)
দাম্পত্য সঙ্গীমুহাম্মাদের স্ত্রীগণ দেখুন
সন্তানমুহাম্মাদের সন্তানগণ দেখুন
পিতামাতা
যে জন্য পরিচিতইসলাম ধর্মের প্রবর্তক
অন্য নাম
আত্মীয়
আরবি নাম
ব্যক্তিগত
(ইসম)
মুহাম্মাদ
مُحَمَّد
পৈত্রিক
(নাসাব)
ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম ইবনে আবদ মানাফ ইবনে কুসাই ইবনে কিলাব
ٱبْن عَبْد ٱللَّٰه بْن عَبْد ٱلْمُطَّلِب بْن هَاشِم بْن عَبْد مَنَاف بْن قُصَيّ بْن كِلَاب
ডাকনাম
(কুনিয়া)
আবু আল-কাসিম
أَبُو ٱلْقَاسِم
উপাধি
(লাক্বাব)
খতমে নবুয়ত ('সর্বশেষ প্রেরিত নবী')
خَاتَم ٱلنَّبِيِّين

মুহাম্মাদ[টীকা ১] (আরবি: مُحَمَّد, প্রতিবর্ণীকৃত: মুহাম্মাদ; আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দ – ৮ জুন ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ)[ক], পূর্ণ সম্মানসূচক নাম হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আরবের একজন ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতা এবং ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক ছিলেন।[খ] ইসলামি মতবাদ অনুযায়ী, তিনি আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত একজন নবী যিনি আদম, ইব্রাহিম, মুসা, ঈসা এবং অন্যান্য নবীদের একত্ববাদী শিক্ষাকে প্রচার ও দৃঢ় করতে এসেছিলেন।[৪][৫][৬] মুসলিমগণ বিশ্বাস করেন যে, মুহাম্মাদ ছিলেন আল্লাহ প্রেরিত শেষ নবীরাসুল এবং কুরআন ও মুহাম্মাদের জীবনাদর্শ (সুন্নাহ) ইসলাম ধর্মের ভিত্তি।

মুহাম্মাদ আনুমানিক ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।[৭] তার পিতার নাম আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব এবং মাতার নাম আমিনা বিনতে ওহাব। মুহাম্মাদ এর জন্মের পূর্বেই তার পিতা আব্দুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন। মুহাম্মাদ এর ছয় বছর বয়সে তার মাতা আমিনা মৃত্যুবরণ করেন। ফলে তিনি এতিম হয়ে যান।[৮][৯] এতিম মুহাম্মাদ তার দাদা আবদুল মুত্তালিব এবং পরে তার চাচা আবু তালিবের আশ্রয়ে বড় হন।[১০] পরবর্তী জীবনে, তিনি মাঝে মাঝে নূর পর্বতের হেরা নামক গুহায় রাত কাটাতেন এবং একাগ্রচিত্তে ধ্যানমগ্ন থাকতেন।

আনুমানিক ৬১০ খ্রিস্টাব্দে, হেরা গুহায় অবস্থানকালে জিবরাঈল নামক ফেরেশতা মুহাম্মাদ এর কাছে আসেন[৭] এবং তাকে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রথম ওহি বা বাণী পৌঁছে দেন।[১১] তখন মুহাম্মাদ এর বয়স ছিল ৪০ বছর। ৬১৩ খ্রিস্টাব্দে[১১] মুহাম্মাদ সর্বসমক্ষে এসব বাণী প্রচার করা শুরু করেন।[১২] তিনি ঘোষণা করেন, "আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়", আল্লাহর কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ (ইসলাম) হলো জীবনের একমাত্র সঠিক পথ (দ্বীন)[১৩] এবং ইসলামের অন্যান্য নবীদের মতোই তিনি আল্লাহর একজন নবী ও রাসূল।"[৫][১৪][১৫]

মুহাম্মাদ এর অনুসারীর সংখ্যা প্রথমদিকে খুবই কম ছিল। মক্কার বহুঈশ্বরবাদী কুরাইশদের পক্ষ থেকে তিনি ১৩ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার হন। ক্রমাগত নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে ৬১৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর কিছু অনুসারী আবিসিনিয়ায় (বর্তমান ইথিওপিয়া) চলে যান। পরবর্তীতে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে তিনি ও তার অনুসারীরা মক্কা থেকে মদিনায় (তৎকালীন নাম ইয়াসরিব) চলে যান। এই ঘটনাকে ‘হিজরত’ বলা হয়। এই ঘটনার মাধ্যমে ইসলামি বর্ষপঞ্জি বা হিজরি সনের সূচনা হয়। মদিনায় মুহাম্মাদ সকল গোত্রকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং একটি চুক্তির মাধ্যমে ‘মদিনার সনদ’ প্রতিষ্ঠা করেন। ৬২৯ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে, মক্কার গোত্রগুলোর সাথে আট বছরব্যাপী আন্তঃবৈরিতার পর, মুহাম্মাদ দশ হাজার মুসলিম সৈন্যের একটি বাহিনী নিয়ে মক্কা শহরের দিকে অগ্রসর হন। তিনি প্রায় বিনা রক্তপাতেই মক্কা নগরী জয় করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে বিদায় হজ্জ থেকে ফেরার কয়েক মাস পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর সময়, আরব উপদ্বীপের অধিকাংশ অঞ্চলে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৬][১৭]

মুহাম্মাদ তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আল্লাহর কাছ থেকে যে বাণীগুলো লাভ করেন সেগুলো কুরআনের আয়াত হিসেবে পরিগণিত হয়। মুসলিমদের নিকট এটি আল্লাহর অবিকৃত বাণী হিসেবে পরিগণিত হয়, যার ওপর ভিত্তি করে ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠিত। কুরআনের পাশাপাশি মুহাম্মাদ এর নিজস্ব জীবনাদর্শ ও নির্দেশনা (সুন্নাহ), যা হাদিসসীরাহ গ্রন্থে বর্ণিত আছে, সেগুলোকেও ইসলামি আইনের উৎস হিসেবে গণ্য করা হয়।

নাম ও উপাধি

ইসলামী সমাজে মুহাম্মাদ-কে অসংখ্য নাম ও উপাধি দেওয়া হয়েছে।[১৮] এই নামগুলোকে কুরআনে প্রদত্ত নাম, হাদিসে বর্ণিত নাম, পবিত্র গ্রন্থে বর্ণিত নাম এবং আল্লাহর সুন্দর নামসমূহের (আসমাউল হুসনা) সাথে মিল আছে এমন নাম - এইভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। উসমানীয় পণ্ডিত মুস্তাকিমজাদে সুলাইমান সাদেদ্দিন (১৭১৯-১৭৮৮) তাঁর "মিরাতুস সাফা ফি নুহবেতি এসমাইল মোস্তফা" গ্রন্থে মুহাম্মাদ এর ৯৯টি নাম ব্যাখ্যা করেছেন।[১৯][২০]

তাঁর পুরো নাম হলো "আবুল কাসিম মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম ইবনে আব্দ মানাফ আল কুরাইশি" (আরবি: محمد بن عبد الله بن عبد المطلب بن هاشم بن عبد مناف القرشي) অথবা সংক্ষেপে "আবুল কাসিম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল মুত্তালিব আল হাশিমি"। এই নামটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায় "কুরাইশ গোত্রের আব্দুল মানাফের পুত্র হাশিম, হাশিমের পুত্র আব্দুল মুত্তালিব, আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র আব্দুল্লাহ এবং আব্দুল্লাহর পুত্র ও কাসিমের পিতা মুহাম্মাদ"।[২১] এছাড়াও বলা হয়ে থাকে যে সমাজে তিনি "আল-আমিন" (বিশ্বস্ত ব্যক্তি, সত্যবাদী ব্যক্তি) উপাধি লাভ করেছিলেন এবং তাই 'মুহাম্মাদুল আমিন' নামেও পরিচিত ছিলেন।[২১]

মুহাম্মাদ নামটি আরবি ভাষার "হামদ" শব্দ থেকে উৎপন্ন, যার অর্থ "প্রশংসা"।[২২] "মুহাম্মাদ" অর্থ "প্রশংসিত", "যিনি প্রশংসা পান", "যিনি প্রশংসার যোগ্য"।[২১] মুসলিমরা তাকে "মুস্তাফা", "মাহমুদ" এবং "আহমদ" নামেও ডাকে। "মুস্তাফা" অর্থ "নির্বাচিত" এবং "আহমদ" অর্থ "অধিক প্রশংসিত"। তার কুনিয়া (পিতৃত্বসূচক নাম) "আবু'ল-কাসিম", যার অর্থ "কাসিমের পিতা"। আরব সমাজে কুনিয়া প্রথম পুত্রের নামের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়।[২৩] মুহাম্মাদ নিজেকে "আবু'ল-বানাত" (কন্যাদের পিতা) হিসেবেও অভিহিত করেছিলেন কারণ তার সাত সন্তানের মধ্যে চারজন ছিল কন্যা।

কুরআন অনুসারে, মুহাম্মাদ এর আগমন পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থ যেমন তাওরাত এবং ইঞ্জিল-এ ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে একটি হাদিসে রয়েছে যে, মুহাম্মাদ বলেছেন, "কুরআনে আমার নাম মুহাম্মাদ, ইঞ্জিলে আহমদ এবং তাওরাতে আহয়েদ।"[২৪][২৫][২৬]

জার্মান প্রাচ্যবিদ (Orientalist) ভলকার পপ একটি মতবাদ প্রস্তাব করেছেন যে, "মুহাম্মাদ" এবং চতুর্থ খলিফার নাম "আলি" (যার অর্থ মহান) প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তিবিশেষের নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি; বরং এগুলো উপাধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।[২৭]

কুরআন

"মুহাম্মাদ", সুলুস-এ লিখিত ইসলামী চারুলিপি

মুহাম্মাদ নামের বাংলা অর্থ "প্রশংসনীয়" এবং এই নামটি পবিত্র কুরআন শরীফে মোট চারবার এসেছে।[২৮] পবিত্র কুরআনে মুহাম্মাদকে বিভিন্ন উপাধির মাধ্যমে সম্বোধন করা হয়েছে। উপাধিগুলো হলো- নবী, রাসূল, আল্লাহর বান্দা ('আবদ'), ঘোষক ('বশির'), সাক্ষী ('শহীদ'), সুসংবাদদাতা ('মুবাশ্শীর'), সতর্ককারী ('নাজির'), স্মরণকারী ('মুজাক্কির'), সৃষ্টিকর্তার বার্তাবাহক ('দাঈ') আলোকিত ব্যক্তিত্ব ('নূর'), এবং আলো-প্রদানকারী বাতি ('সিরাজ মুনির')।

তথ্যের উৎস

কুরআন

বার্মিংহাম কুরআন পান্ডুলিপির দুটি ফলিও (পৃষ্ঠা), সম্ভবত হেজাজি লিপিতে লেখা একটি প্রাচীন পাণ্ডুলিপি যা নবী মুহাম্মাদ এর জীবদ্দশায়, খ্রিস্টাব্দ ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ সালের মধ্যে লেখা হয়েছিল।
কুফী লিপিতে লেখা প্রাথমিক যুগের কুরআন (আব্বাসীয় যুগ, ৮ম-৯ম শতাব্দী)

কুরআন হলো ইসলামের কেন্দ্রীয় ধর্মীয় গ্রন্থ। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন যে, এটি মহান আল্লাহর বাণী যা প্রধান ফেরেশতা জিব্রাইলের মাধ্যমে মুহাম্মাদ-এর নিকট প্রত্যাদেশ হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছে।[২৯][৩০][৩১] কুরআন মূলত একক "আল্লাহর রাসূল" কে সম্বোধন করেছেন, যাকে বেশ কয়েকটি আয়াতে মুহাম্মাদ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কুরাইশদের দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার পরে মদিনায় তাঁর অনুসারীদের বসতি স্থাপনের কথাও কুরআনে বর্ণনা করা হয়েছে এবং বদরের যুদ্ধের মতো মুসলিমদের সামরিক বিজয় অভিযানেরও সংক্ষিপ্ত উল্লেখ রয়েছে।[৩২]

তবে, কুরআন মুহাম্মাদ-এর জীবনীসংক্রান্ত কালানুক্রমের জন্য সামান্যই তথ্য প্রদান করে; কুরআনের বেশিরভাগ আয়াত উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বা সময়রেখা সরবরাহ করে না।[৩৩][৩৪] কুরআনের মধ্যে মুহাম্মাদ-এর বেশিরভাগ সাহাবির নামও উল্লেখ নেই, ফলে সংক্ষিপ্ত জীবনী রচনার জন্য পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যায় না। কুরআনকে মুহাম্মাদ-এর সমসাময়িক বলে মনে করা হয়। বার্মিংহাম পান্ডুলিপিটি রেডিওকার্বন পদ্ধতিতে তাঁর জীবদ্দশায় লেখা বলে প্রমাণিত হয়েছে, যা পশ্চিমা পুনর্বিবেচনাবাদী তত্ত্বগুলোর বিরোধিতা করে যারা কুরআনের উৎপত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল।[৩৫][৩৬]

প্রারম্ভিক জীবনী

ইবনে হিশাম রচিত আল-সিরাহ আন-নাবাউইয়াহ-র একটি প্রাচীনতম পাণ্ডুলিপি যা ধারণা করা হয় ৮৩৩ সালে তার মৃত্যুর পরপরই তার শিক্ষার্থীরা অন্যদের কাছে পাঠিয়েছিলেন। এই পাণ্ডুলিপিটি ইসলামের নবী মুহাম্মাদ-এর জীবন সম্পর্কে লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল।

মুহাম্মাদ-এর জীবন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উৎস পাওয়া যায় হিজরি দ্বিতীয় ও তৃতীয় শতাব্দীতে (খ্রিস্টীয় অষ্টম ও নবম শতাব্দীর আশেপাশে) লেখকদের ঐতিহাসিক রচনাবলীতে।[৩৭] এর মধ্যে রয়েছে নবী মুহাম্মাদ-এর প্রথাগত মুসলিম জীবনীগ্রন্থসমূহ, যেগুলো তাঁর জীবন সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য সরবরাহ করে।[৩৮]

প্রাচীনতম লিখিত সীরাহ (মুহাম্মাদের জীবনী এবং তার কথিত উদ্ধৃতি) হলো ইবনে ইসহাকের সীরাতে রাসূলুল্লাহ যা লেখা হয় আনুমানিক খ্রিস্টীয় ৭৬৭ সালে (১৫০ হিজরি)। যদিও মূল রচনাটি হারিয়ে গেছে, ইবনে হিশামের রচনায় ব্যাপক উদ্ধৃতি হিসেবে এবং আল-তাবারির রচনায় কিছুটা কম পরিমাণে এই সীরাহটি টিকে আছে।[৩৯][৪০] তবে ইবনে হিশাম মুহাম্মাদ-এর জীবনী গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছেন যে তিনি ইবনে ইসহাকের জীবনী থেকে এমন বিষয়গুলো বাদ দিয়েছেন যা "নির্দিষ্ট কিছু লোককে বিচলিত করবে"।[৪১] আরেকটি প্রাথমিক ঐতিহাসিক উৎস হলো আল-ওয়াকিদি (মৃত্যু ২০৭ হিজরী) কর্তৃক মুহাম্মাদ-এর অভিযানের ইতিহাস এবং ওয়াকিদির সচিব ইবনে সা'দ আল-বাগদাদির (মৃত্যু ২৩০ হিজরী) রচনা[৩৭]

অনেক পণ্ডিত এই প্রাথমিক জীবনীগুলোকে সঠিক বলে মেনে নেন, যদিও তাদের নির্ভুলতা যাচাই করা যায় না।[৩৯] সাম্প্রতিক গবেষণায় পণ্ডিতদেরকে আইনগত বিষয় এবং সম্পূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনাসম্পর্কিত রেওয়ায়াতগুলোর মধ্যে পার্থক্য করতে পরিচালিত করেছে। আইনগত ক্ষেত্রে, রেওয়ায়াতসমূহ উদ্ভাবনের শিকার হতে পারত; অন্যদিকে ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো, ব্যতিক্রমী কয়েকটি ক্ষেত্র বাদে, হয়তো কেবল "প্রবণতামূলক রূপদানের" শিকার হয়েছিল।[৪২]

হাদিস

মালিক ইবনে আনাস রচিত মুয়াত্তার একটি প্রাথমিক পাণ্ডুলিপি, যা ৭৮০ সালে তার জীবদ্দশায় লেখা হয়েছিল।

ইসলামী অনুশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হলো হাদিস সংকলন, যেখানে নবী মুহাম্মাদ এর মৌখিক এবং আচরণগত শিক্ষা ও রীতিনীতির বিবরণ পাওয়া যায়। ইমাম বুখারী, মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজ, মুহাম্মাদ ইবনে ঈসা আত-তিরমিজি, ইমাম নাসাই, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, মালিক ইবনে আনাস, আল-দারাকুতনি সহ বেশ কিছু ইসলামী পণ্ডিতগণ নবী মুহাম্মাদের ইন্তেকালের কয়েক প্রজন্ম পরে হাদিসগুলো সংকলন করেছিলেন।[৪৩][৪৪]

কিছু পশ্চিমা পণ্ডিত হাদিস সংগ্রহগুলোকে নির্ভুল ঐতিহাসিক উৎস হিসাবে বিবেচনা করতে সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। উইলফার্ড মেডেলাং এর মতো পন্ডিতরা পরবর্তীকালে সংকলিত বর্ণনাগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেন না, বরং এইগুলোকে ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে এবং সেই সময়কার ঘটনা ও ব্যক্তিত্বের সাথে সামঞ্জস্যের ভিত্তিতে বিচার করেন।[৪৫] অন্যদিকে, মুসলিম পন্ডিতরা সাধারণত জীবনীমূলক সাহিত্যের পরিবর্তে হাদীস সংকলনগুলোর উপর বেশি গুরুত্ব আরোপ করেন। এর কারণ, হাদিসগুলোতে একটি ঐতিহ্যবাহী সনদ (পরম্পরা) বজায় থাকে। জীবনীমূলক সাহিত্যে এমন সনদের অভাব থাকায় মুসলিম পন্ডিতদের কাছে সেগুলো অপ্রমাণিত বলে বিবেচিত হয়।[৪৬]

মৌখিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য

মুহাম্মাদ ও তার সমসাময়িকদের জীবন সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের প্রধান উৎস হলো হাদিসসীরাত। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই তথ্যগুলো লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল মুহাম্মাদের ওফাতের ১৫০-২০০ বছর পরে, যখন তার জীবনের ঘটনাগুলো মৌখিকভাবে প্রচলিত ছিলো।[৪৭] এই দীর্ঘ মৌখিক ঐতিহ্যের কারণে, হাদিস ও সীরাতে বর্ণিত ঘটনাগুলোর সত্যতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।[৪৮][৪৯] কিছু তথ্য বাইরের উৎস দ্বারা সমর্থিত না হলেও, অনেকের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বৈপরীত্যও লক্ষ্য করা যায়। সময়ের সাথে সাথে, মৌখিকভাবে প্রচলিত ঘটনাগুলো পরিবর্তিত হয়েছে এবং কয়েক প্রজন্ম পরে ঐতিহাসিক সত্য থেকে বহু দূরে সরে গেছে।[৪৯][৫০][৫১] অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, হাদিস ও সীরাতের মতো প্রাথমিক উৎসগুলোতে[৫২][৫৩] মুহাম্মাদের জীবনের সাথে সম্পর্কহীন গল্পগুলো পরিবর্তনের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে।[৫২][৫৪] ফিলিস্তিনি অধ্যাপক সামি আলদীব এই বিষয়ে একটি উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন যে, খায়বারের যুদ্ধ এবং বনু কুরাইজা অবরোধ এর মতো ঘটনাগুলো মুহাম্মাদের জীবনে ঘটেছিল বলে দাবি করা হয়, কিন্তু ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থে এই ঘটনাগুলোর বর্ণনা আছে, যেখানে বলা হয়েছে যে ইহুদিরা ইহুদি-নয় এমন লোকদের হত্যা করেছিল।[৫৫]

হাদিস ও সীরাতের মতো ঐতিহ্যবাহী রচনা ছাড়াও ইসলামের প্রাথমিক ইতিহাস, এর উত্থানের সময়কাল এবং এর উৎপত্তি ও বিস্তারের ভৌগলিক অবস্থান বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক চলছে। ঐতিহ্যবাহী বর্ণনা যেখানে মক্কাকে কেন্দ্র করে, সেখানে "পেত্রা" সহ বিকল্প ভৌগলিক অবস্থানের দিকে ইঙ্গিত করে এমন নতুন তত্ত্ব ও দাবি উঠে এসেছে।[৫৬] এই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পেত্রা, পেত্রার উত্তরে অবস্থিত একটি অঞ্চল, কুফা এবং হিরা (দক্ষিণ ইরাক) অঞ্চল। বাইজেন্টাইন ক্রনিকল, খ্রিস্টান ধর্মযাজকদের রেকর্ড, মুদ্রা, আব্বাসীয় যুগে হাদিস ও ইতিহাসবিদদের লেখা ইসলামের প্রাথমিক ইতিহাস, হিরা ও মদিনার মতো প্রাচীন শহরের নাম এবং অন্যান্য প্রমাণ মুহাম্মাদ ও প্রাথমিক ইসলামের ভৌগলিক অবস্থানকে দক্ষিণ ইরাকের সাথে যুক্ত করে। এছাড়াও, মুহাম্মাদের জীবনী একাধিক ব্যক্তির জীবনীর সংমিশ্রণ হতে পারে বলে ধারণা করা হয়।[৫৭][৫৮][৫৯][৬০]

প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার

ইসলামী ভূগোলে লুকানো, সময়ে সময়ে প্রদর্শিত ও প্রচারিত এবং মুহাম্মাদ এর জীবনী সম্পর্কিত নথি, যা রেডিওকার্বন ডেটিং এবং জিনগত বংশতালিকা পরীক্ষার মতো পদ্ধতি দ্বারা প্রমাণিত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মদিনার সনদ, মুহাম্মাদের আশতীনামা এবং তার সময়ের রাষ্ট্রপ্রধান ও গভর্নরদের কাছে লিখিত বলে মনে করা চিঠিপত্র। এছাড়াও চুল, দাড়ি, জামা, জুতা ইত্যাদি জিনিসপত্রও এই আবিষ্কারের অন্তর্গত।

ঐতিহাসিকতা

ইসলামের প্রাথমিক ইতিহাস, বিশেষ করে মুহাম্মাদ এর জীবন ও কর্ম, কেবলমাত্র মুসলিম উৎস থেকেই জানা যায় না। ৬৩৩ সালের পরে লেখা বাইরের উৎস, যেমন: ইহুদি ও খ্রিস্টানদের লেখা গ্রিক, সিরীয়, আর্মেনীয় এবং হিব্রু ভাষার লেখায়ও এই সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এই বাইরের উৎসগুলো, বিশেষ করে কালক্রম এবং মুহাম্মাদ এর ইহুদি ও ফিলিস্তিনের প্রতি মনোভাব সম্পর্কে, মুসলিম উৎসগুলোর তথ্যের সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য প্রদর্শন করে।[৬১] উল্লেখযোগ্য যে, মুহাম্মাদ এর নবী হিসেবে খ্যাতির পূর্ববর্তী জীবন সম্পর্কে বাইজেন্টাইন বা সিরীয় কোনো উৎসে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না।[৬২] ইংরেজ ইতিহাসবিদ সেবাস্টিয়ান পল ব্রক এর গবেষণা অনুসারে, সিরীয় ও বাইজেন্টাইন উৎসগুলোতে "নবী" উপাধি মুহাম্মাদ এর জন্য তেমন ব্যবহৃত হয়নি, "রাসুল" তো আরও কম।[৬৩] বরং, তাকে "প্রথম আরব রাজা" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই সময়কালের সিরীয় উৎসগুলো প্রাথমিক ইসলামী বিজয়কে "মুসলিম বিজয়" হিসেবে চিহ্নিত না করে "আরব বিজয়" হিসেবে উল্লেখ করে।[৬৪][৬৫]

মুহাম্মাদের ওফাতের প্রায় ২০ বছর পর ইসলামী খিলাফত এবং অন্যান্য সমসাময়িক রাষ্ট্রের সীমানা চিহ্নিত মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা এবং ভূমধ্যসাগরের মানচিত্র।

ডক্টরিনা জ্যাকবি (ইয়াকুবের শিক্ষা) নামে পরিচিত একটি গ্রীক ভাষার রচনা ৬৩৪ সালে, মুহাম্মাদের মৃত্যুর দুই বছর পরে লেখা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এই রচনায় Candidatus (ক্যান্ডিডেটাস) নামক এক ব্যক্তির মৃত্যুর সংবাদ এবং আরব উপদ্বীপে একজন নতুন নবীর আবির্ভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।[৬৬][৬৭] ধারণা করা হয় যে, এই রচনাটি কার্থেজে লেখা হলেও ৬৩৪-৬৪০ সালের মধ্যে ফিলিস্তিনে রচিত হয়েছিল।[৬৮] প্যাট্রিসিয়া ক্রোন এবং মাইকেল কুক মত প্রকাশ করেছেন যে, এই রচনাটি ৬৩৪ সালে কার্থেজে লেখা হয়েছিল এবং ঐ তারিখের কয়েক বছর পরে লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল। ৬৪০ সালের ধারণাটি তাদের মতে অনেক পরে।[৬৮]

এখানে উল্লেখিত "ক্যান্ডিডেটাস" সম্পর্কে গবেষকদের ধারণা, এটি সম্ভবত বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের ফিলিস্তিনের কমান্ডার সার্জিয়াস। বর্ণিত ঘটনাটি ৬৩৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফিলিস্তিনের গাজা শহরের কাছে রাশিদুন খিলাফতের সেনাবাহিনী এবং বাইজেন্টাইন সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘটিত "দাসিনের যুদ্ধ"।[৬৯] মুহাম্মাদের মৃত্যুর প্রায় দুই বছর পর সংঘটিত এই যুদ্ধে, আমর ইবনুল আস এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী পূর্ব রোমান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিজয়ী হয় এবং কমান্ডার সার্জিয়াস ও তার অশ্বারোহীরা নিহত হয়।[৭০] "ইয়াকুবের শিক্ষা" গ্রন্থেও লেখা আছে যে, ঐ অঞ্চলে সংখ্যালঘু হিসেবে বসবাসকারী এবং পূর্ব রোমানদের অত্যাচারের শিকার ইহুদিরা মুসলিমদের এই বিজয় উদযাপন করে এবং সার্জিয়াসের মৃত্যুতে আনন্দ প্রকাশ করে।[৭০][৭১] মুহাম্মাদ সম্পর্কে সপ্তম শতাব্দীর শুরুর দিককার আরেকটি বর্ণনা পাওয়া যায় আর্মেনীয় বিশপ সেবেওসের কাছ থেকে, যিনি ব্যাগ্রাতুনি রাজবংশের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তার বর্ণনা অনুসারে, তিনি এমন এক সময়ে লিখেছেন যখন আরবদের আকস্মিক উত্থানের স্মৃতি এখনও তাজা ছিল। সেবেওস মুহাম্মাদের নাম এবং তার পেশা বণিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ঐশ্বরিক বাণীর মাধ্যমে তার জীবন হঠাৎ পরিবর্তিত হয়েছিল।[৭২] মুসলিমরা কী করছে তা ভেবে দেখেছিলেন এবং ইসলামের উত্থানের জন্য একটি তত্ত্ব প্রদানকারী সেবেওস ছিলেন প্রথম অমুসলিম লেখক।[৭৩]

বিখ্যাত স্কটিশ লেখক অ্যান্ড্রু মার তার বিখ্যাত বই "বৃহত্তর বিশ্বের ইতিহাস" ("A History of the World")-এ মুহাম্মাদের ঐতিহাসিকতা সম্পর্কে লিখেছেন। বইটি ২০১২ সালে বিবিসি দ্বারা একটি ডকুমেন্টারিতেও রূপান্তরিত হয়েছিল যার শিরোনাম ছিল এ্যান্ড্রু মার'স হিস্ট্রি অব দ্য ওয়ার্ল্ড

মার মুহাম্মাদের ঐতিহাসিকতার বিষয়ে নিম্নলিখিত বক্তব্য দিয়েছেন:

অন্যান্য ইহুদি নবী এবং এমনকি যীশু খ্রীষ্টের ঐতিহাসিকতা বিতর্কিত হলেও, মুহাম্মাদকে বেশিরভাগ পণ্ডিত এবং ইতিহাসবিদ "ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব" হিসেবে গ্রহণ করেন।[৭৭][৭৮][৭৯]

বংশধারা

মুহাম্মাদ এর পিতা আবদুল্লাহ এবং মাতা আমিনা, যাদের উভয়েরই পূর্বপুরুষ মুররাহ ইবনে কা'ব, তাদের পূর্ণাঙ্গ বংশলতিকা।

সুপ্রচলিত ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, মুহাম্মাদ ইব্রাহিম এর জ্যেষ্ঠ পুত্র ইসমাইল এর বংশধরের মধ্য হতে আগত। তাঁর বংশলতিকা আদনানি উপজাতি পর্যন্ত বিস্তৃত এবং আরো নির্দিষ্টভাবে কুরাইশ বংশের হাশিমী শাখা হতে উদ্ভূত।[৮০] তাঁর পূর্বপুরুষদের বংশক্রম: মুহাম্মাদ, আব্দুল্লাহ, আব্দুল মুত্তালিব (শায়বা), হাশিম, আবদ মানাফ (মুগিরা), কুসাই, কিলাব, মুররাহ, কা'ব, লুয়াই, গালিব, ফিহর, মালিক, নাদর (কুরাইশ), কিনানাহ (কিনানা উপজাতি), হুজাইমা, মুদরিকা (আমির), ইলিয়াস, মুদার, নিজার, মা'আদ, আদনান[৮১][৮২][৮৩][৮৪][৮৫]

অন্যদিকে, কিছু হাদিস অনুসারে মুহাম্মাদ নিজের বংশধারা ইব্রাহিম এর সাথে সংযুক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন,

ঐতিহ্য অনুসারে, মক্কা বিজয়ের পর যখন কাবাঘর থেকে মূর্তিগুলো সরিয়ে ফেলা হচ্ছিল, তখন কাবার ভেতর থেকে হাতে ভবিষ্যদ্বাণীর তীর ধারণকারী ইব্রাহিম ও তার পুত্র ইসমাইল এর মূর্তি উদ্ধার করা হয়। মুহাম্মাদ তখন বলেছিলেন যে তারা কখনোই এমন কাজ করেননি এবং মূর্তিপূজার উপকরণ হিসেবে তাদের ব্যবহারের জন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। অন্য একটি হাদিস অনুসারে, মুহাম্মাদ তার নাতি হাসানহুসাইন এর জন্য যে দোয়া করেছিলেন, ইব্রাহিম পূর্বে তার নিজ পুত্র ইসমাইলইসহাক এর জন্য একই দোয়া করেছিলেন বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন।[৮৮]

কিছু সংশোধনবাদী গবেষকের মতে, "কুরাইশ" নামটি নবী মুহাম্মাদ এর বংশধরদের গোত্রের নাম নয়, বরং এটি খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে পারস্যে হাখমানেশি সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা পারস্য সম্রাট কুরুশের নাম। সম্রাট কুরুশ ব্যাবিলনীয় বন্দিদশা থেকে ইহুদিদের মুক্তি দিয়েছিলেন এবং ইহুদিদের মধ্যে তিনি অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তিত্ব।[৮৯] ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, মুহাম্মাদ এর বংশোদ্ভূত কুরাইশ গোত্রটি প্রাচীন আরব সভ্যতা নবতাঈদের একটি শাখা ছিল। নবতাঈদের আদি বাসস্থান ছিল আরব উপদ্বীপের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এবং তারা তাদের নিজস্ব লিপি ও ভাষার অধিকারী ছিল। নবতাঈদের বংশোদ্ভূতি নিয়ে বিতর্ক বিদ্যমান।[৯০] কিছু মতামত অনুসারে, তারা আদি আরব বংশোদ্ভূত, যদিও পরবর্তীতে পারস্যদের সাথে মিশে তাদের বংশধারা ও ভাষায় পরিবর্তন আসে।[৯০]

জন্ম তারিখ

মুহাম্মাদের জন্মের সময় আরব উপদ্বীপের বড় বড় গোত্র এবং তাদের বসবাসের স্থান।

প্রচলিত ধারণা অনুসারে, ইসলামের ইতিহাসে "ফিলবর্ষ" (হস্তিবর্ষ) নামে পরিচিত সময়ে হযরত মুহাম্মাদ মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন।[৯১] ঐতিহ্য অনুসারে, এই বছরটি হলো আবিসিনিয়ার আকসুম রাজ্যের অধীনস্থ ইয়েমেনের রাজা আবরাহা কাবাঘর আক্রমণের জন্য বিশাল হাতিবাহিনী নিয়ে ব্যর্থ অভিযান চালানোর বছর।[৯২][৯৩] এই নির্দিষ্ট তারিখটি স্পষ্টভাবে জানা যায় না এবং পূর্ববর্তী সময়ের হিসাব অনুসারে বিভিন্ন উৎসে ভিন্ন ভিন্ন তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। পাকিস্তানি ইসলামী পণ্ডিত মোহাম্মদ হামিদুল্লাহর মতে, তারিখটি ১৭ জুন ৫৬৯;[৯১] কিছু উৎসে ৫৭০ সাল উল্লেখ করা হয়েছে;[৯৪][৯৫] মিশরীয় পণ্ডিত মাহমুদ পাশা আল-ফালাকীর মতে, তারিখটি ২০ এপ্রিল ৫৭১।[৯৬] ব্রিটিশ লেখক শেরার্ড বোমন্ট বার্নাবী আল-ফালাকীর হিসাবের কিছু ত্রুটি উদঘাটন করেছেন।[৯৭]

ইসলামী উৎসগুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, নবী মুহাম্মাদ ৫৭১ সালে, ফিল ঘটনা এর বছর, ১২ই রবিউল আউয়াল (২০শে এপ্রিল) সোমবার রাতে জন্মগ্রহণ করেন।[৯৮] এই তারিখটি ফিল ঘটনা এর ৫২ দিন পরে।[৯৬][৯৯] সীরাত ও ইসলামী ইতিহাসের লেখকরা এই বিষয়ে একমত যে, নবী মুহাম্মাদ রবিউল আউয়াল মাসের একটি সোমবার ভোরবেলা, সূর্যোদয়ের কিছুক্ষণ আগে জন্মগ্রহণ করেন। তবে, মাসের কত তারিখে তিনি জন্মগ্রহণ করেন সে বিষয়ে তাদের মতপার্থক্য রয়েছে।[৯৬] এই মতভেদের কারণ হিসেবে মৌখিক সংস্কৃতির অংশ হিসেবে রিওয়ায়েতের বৈচিত্র্য, চন্দ্র ক্যালেন্ডারসৌর ক্যালেন্ডারের পার্থক্য[১০০][১০১] এবং আরবদের "নাসি" প্রথা (বছরকে ১২ মাসের পরিবর্তে ১০ মাস ধার্য করা) উল্লেখ করা হয়।[৯৯]

লরেন্স কনরাড মৌখিক যুগের পরের প্রাথমিক যুগে লেখা জীবনী গ্রন্থগুলো পর্যালোচনা করেছেন এবং এই গ্রন্থগুলোতে মুহাম্মাদের জন্ম তারিখের ক্ষেত্রে ৮৫ বছরের সময়কালের ব্যবধান দেখতে পেয়েছেন। কনরাড এটিকে "গল্পের প্রবাহিততা (বিবর্তনমূলক প্রক্রিয়া) এখনও চলমান" হিসাবে বর্ণনা করেছেন।[১০২][১০৩]

প্রাক-ইসলামি আরব

সাধারণ ভৌগোলিক অবস্থা

ইসলাম-পূর্ব আরব উপদ্বীপের প্রধান বাণিজ্য পথ।

ইসলাম পূর্ববর্তী আরব উপদ্বীপে, কঠিন পরিবেশগত পরিস্থিতি এবং জীবনধারার সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে মরুভূমির পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার জন্য, মানুষের একসাথে বসবাস করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। এর ফলে, যে গোষ্ঠীগুলোর উত্থান হয়েছিল সেগুলো রক্তের সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছিল।[১০৪] স্থানীয় আরবরা, যাযাবর এবং স্থায়ী উভয় জীবনযাপনই করত।[১০৫] পানি এবং চারণভূমি খুঁজে বের করার জন্য যাযাবররা একসাথে একটি স্থান থেকে অন্য স্থানে যেত, অন্যদিকে স্থায়ী জীবনযাপনকারীরা বাণিজ্য এবং কৃষিকাজের সাথে জড়িত ছিল। কাফেলা বা ওয়াহাতে আক্রমণ করাও যাযাবরদের জীবনের একটি অংশ ছিল এবং তারা এটিকে অপরাধ বলে মনে করত না।[১০৬][১০৭][১০৮]

খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দ থেকে, মসলা বাণিজ্যের মাধ্যমে সমৃদ্ধ বেশ কিছু উন্নত রাজ্য দক্ষিণ আরবে অস্তিত্ব লাভ করেছিল। প্রাথমিকভাবে, বাণিজ্য পথগুলো উত্তর-পশ্চিম উপকূল দিয়ে চলেছিল, কিন্তু ৭ম শতাব্দীর পর থেকে, ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যবসায়ীরা লোহিত সাগরের উপর দিয়ে সমুদ্রপথ ব্যবহার করতে পছন্দ করায়, এই অঞ্চলের বাণিজ্য হ্রাস পেয়েছিল এবং অনেক অপেক্ষাকৃত সমৃদ্ধ স্থান অবনতির দিকে ধাবিত হয়েছিল।[১০৯] ধান্য এবং জলপাই তেলের মতো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের পাশাপাশি উল এবং চামড়ার বাণিজ্য, আরও স্থানীয় বাণিজ্যিক কার্যকলাপের উপর নির্ভরশীল মক্কা এবং মদিনা (যা তখন "ইয়াসরিব" নামে পরিচিত ছিল) এর মতো কয়েকটি শহর টিকে ছিল। আরব উপদ্বীপের মরুভূমির অঞ্চলগুলো ছিল অত্যন্ত দরিদ্র। বেদুঈন গোষ্ঠীগুলো যাযাবর জীবনধারা গ্রহণ করেছিল এবং সীমিত সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিযোগিতাপূর্ণভাবে সমাজকে রূপ দিয়েছিল; প্রধানত বংশ বা গোষ্ঠীর প্রতি আনুগত্য স্বীকৃত হয়েছিল।[১০৯]

ইসলামের উত্থানের পূর্বে, ষষ্ঠ শতাব্দীতে আরব উপদ্বীপ, বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং সাসানীয় সাম্রাজ্য

ইসলামের আবির্ভাবের পূর্বে, বাইজেন্টাইন এবং সাসানি সাম্রাজ্য ছিল দুটি প্রধান শক্তি যারা মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ন্ত্রণ করত। শতাব্দী দীর্ঘ পারস্য-রোমান যুদ্ধ এই অঞ্চলকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। পারস্যদের লাখমিদ এবং রোমানদের গাসানীদের মতো সামন্ত রাষ্ট্র ছিল এই অঞ্চলে। আরব উপদ্বীপের ভূগোল অত্যন্ত শুষ্ক এবং আগ্নেয়মৃত্তিকার কারণে, মরুদ্যান এবং পানির উৎস ছাড়া অন্যত্র কৃষি করা কঠিন ছিল। মরুভূমির মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিন্দু-আকৃতির গ্রাম এবং শহরগুলো এই অঞ্চলের সাধারণ চিত্র তুলে ধরে। মক্কা এবং মদিনা (ইয়াসরিব) ছিল এই শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মদিনা ছিল একটি ক্রমবর্ধমান বৃহৎ কৃষিক্ষেত্র, যখন মক্কা ছিল অনেক গোষ্ঠী দ্বারা বেষ্টিত একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক কেন্দ্র এবং হজের কারণে একটি তীর্থস্থান।[১১০] মুহাম্মাদের জীবনের প্রথম দিকে, তার অন্তর্গত কুরাইশ গোত্র পশ্চিম আরবে একটি প্রভাবশালী শক্তি হয়ে ওঠে।[১১১][১১২] কুরাইশরা পশ্চিম আরবের অনেক গোষ্ঠীর সদস্যদের কাবা ঘরের সাথে যুক্ত করে এবং এই মক্কার তীর্থক্ষেত্রের মর্যাদা বৃদ্ধি করে একটি সাংস্কৃতিক ঐক্য স্থাপন করে।[১১২]

জাহেলি যুগ

ইসলামী সাহিত্যে, আরব সমাজের ইসলাম পূর্ব যুগকে "আইয়ামে জাহেলিয়া" বা মূর্খতার যুগ বলা হয়।[১১৩] ইসলামী যুগে উদ্ভূত এই শব্দটি কুরআনহাদিসে আরবদের ইসলাম পূর্ব বিশ্বাস, মনোভাব ও আচরণ, সামাজিক জীবন দৃষ্টিভঙ্গি এবং সাধারণভাবে ব্যক্তি ও সমাজের পাপ ও বিদ্রোহকে ইসলামী যুগ থেকে আলাদা করতে বা গ্রহনযোগ্য করতে ব্যবহৃত হয়।[১১৩] জাহেলিয়া যুগের বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়: ব্যভিচার, পরকীয়া, চুরি, মূর্তিপূজা, অন্যায়, সহিংসতা, গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে অন্তহীন রক্তক্ষয়ী বিবাদ, ডাকাতি, দাসপ্রথা, বিশেষ করে নারীর দাসত্ব এবং পণ্যের মতো ক্রয়-বিক্রয়, নারীর প্রতি এমন অবমাননা যে জাহেলিয়া সমাজের মানুষদের কাছে মেয়ে সন্তানকে লজ্জা বলে মনে করা হত এবং কন্যাসন্তানকে জীবন্ত অবস্থাতেই কবর দেয়ার নিদর্শনও ছিল।[১১৪]

ইসলামী ইতিহাসগ্রন্থ অনুসারে, জাহেলিয়াতের যুগের কবিতায় নারীর উপলব্ধি সমাজজীবনে প্রতিফলিত হয়নি। নারীকে নিম্ন শ্রেণীর মানুষ হিসেবে দেখা হতো। সীমাহীন বহুবিবাহ প্রচলিত ছিল। পতিতাবৃত্তি একটি সাধারণ পেশায় পরিণত হয়েছিল এবং দাস মালিকরা তাদের ক্রীতদাসদের এটি করতে বাধ্য করত। নারীদের পিতা বা স্বামীর উত্তরাধিকারের অংশ পাওয়ার অধিকার ছিল না। সন্তানরা চাইলে বাবার মৃত্যুর পর তাদের সৎ মাকে বিয়ে করতে পারত। বিবাহবিচ্ছেদের অধিকারও শুধুমাত্র পুরুষদের ছিল এবং তা সীমাহীন ছিল। যখন সম্ভ্রান্তদের কন্যা সন্তানের জন্ম হম, তখন তারা এটিকে লজ্জার বিষয় হিসেবে দেখতে এবং তাদের হত্যা করতেও পিছপা হতোনা।[১১৪] ইসলামী সমাজের স্মৃতিতে, জাহেলিয়া যুগে জীবিত কন্যা শিশুকে মাটিতে পুঁতে ফেলার ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে।[১১৫] কুরআনের সূরা তাকভীর এর ৮ম ও ৯ম আয়াতে কন্যা শিশুদের জীবন্ত কবর দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে এই ঘটনার সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে,

কন্যা শিশুকে জীবন্ত কবর দেয়ার প্রথা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল না, তবে মাঝে মাঝে এটি করা হত। কিছু গোত্রের মধ্যে এই ঘটনা বেশি দেখা গেলেও, অন্যদের মধ্যে এটি খুবই বিরল ছিল। এছাড়াও, শহরের তুলনায় মরুভূমি ও গ্রামাঞ্চলে এটি বেশি দেখা যেত। তবে, মুহাম্মাদের গোত্র কুরাইশদের মধ্যে এই প্রথা বিদ্যমান ছিল বলে মনে করা হয়, তবে তা ব্যাপক ছিল না।[১১৫] আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক যে, কোরবানি দেওয়া বা অন্য কারণে শিশু হত্যার ক্ষেত্রে আরবরা অন্য জাতিদের তুলনায় খুব বেশি আলাদা ছিল না।[১১৬]

উপাসনা ও ধর্মীয় গোষ্ঠী

ইরাকের হাতরা শহর থেকে আবিষ্কৃত এই খোদাইতে তিনজন কল্পিত আরব দেবীদের দেখানো হয়েছে: লাত, মানাত, এবং উজ্জাইসলামপূর্ব আরবদের বিশ্বাস অনুযায়ী, লাত মক্কার একটি প্রধান দেবী ছিল, মানাত উর্বরতার দেবী ছিল, এবং উজ্জা যুদ্ধের দেবী ছিল।

ইসলাম পূর্ব আরবের প্রতিটি গোত্র তাদের নিজস্ব দেবতা ও দেবীকে রক্ষাকর্তা হিসেবে মনে করত। এই দেবতা ও দেবীদের আত্মা পবিত্র বৃক্ষ, পাথর, পানির উৎস এবং কূপের সাথে সম্পর্কিত ছিল। আরব পৌরাণিক কাহিনী ও সংস্কৃতিতে, প্রতীকী দেবতা ও দেবীর কারণে মূর্তিগুলোকে পবিত্র মনে করা হত এবং পূজার প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হত।[১১৭] ইসলাম পূর্ব আরব উপদ্বীপে অসংখ্য পবিত্র স্থান এবং সেখানে নির্মিত ঘনক্ষেত্রাকৃতি দেবালয় ছিল। জানা যায়, এই পবিত্র স্থান ও দেবালয়গুলো আরবরা হারাম (নিষিদ্ধ) মাসগুলোতে পরিদর্শন করত এবং এই মন্দিরগুলিতে বিভিন্ন উপাসনা ও আচার-অনুষ্ঠান পালন করত।[১১৮]

মক্কার কাবা ৩৬০টি মূর্তির আবাসস্থল ছিল, যা বিভিন্ন গোত্রের রক্ষাকর্তা দেবতা হিসেবে বিবেচিত হত।[১১৭] মানাত, লাতউজ্জা নামক তিন দেবীকে প্রধান দেবতা ইলাহ এর কন্যা বলে মনে করা হত। এই সময়ের অধিকাংশ আরব বাসিন্দা বহুঈশ্বরবাদ ও পৌত্তলিকতায় বিশ্বাসী ছিল।[১১৯] কিছু আরব গোত্র আল্লাহ'র অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিল, তবে পরকালকিয়ামতের ধারণা তাদের মধ্যে ছিল না।[১১৯] বেশিরভাগ মূর্তিপূজক মূর্তিগুলোকে ঈশ্বর হিসেবে গ্রহন করত না, বরং ঈশ্বরের কাছে পৌঁছানোর জন্য এক ধরণের মাধ্যম হিসেবে দেখত।[১১৯] যুদ্ধ নিষিদ্ধ তীর্থের মাসগুলোতে (হারাম মাস) আরব গোত্রগুলো উৎসব ও মেলায় অংশগ্রহণ করত।[১২০] এই উৎসবগুলোতে তারা নিজ নিজ গোত্রের মূর্তির প্রতি প্রার্থনা, সিজদা ও সম্মান প্রদর্শন করত, মূর্তির নামে কুরবানি দিত এবং দান করত। এরপর প্রতিটি গোত্র কাবা তাওয়াফ করত। এই তাওয়াফ সাধারণত উলঙ্গ অবস্থায় করা হত।[১২১] এই পরিদর্শনগুলোতে তারা দেবতাদের বিভিন্ন উপহার দান করত, সুগন্ধি ব্যবহার করত এবং এমনকি এই পরিদর্শনগুলোর পূর্বে রোজা (উপস) রাখত।[১২১] এই সময়ে বদনজর থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাবিজ ও কবজ ব্যবহার করাও ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল।[১২১]

এই সকল বহুঈশ্বরবাদী ও পৌত্তলিক রীতিনীতির পাশাপাশি খ্রিস্টান, ইহুদি এবং মাজুসদের মতো একঈশ্বরবাদী বিশ্বাসে বিশ্বাসী বিভিন্ন সম্প্রদায়ও আরব উপদ্বীপে বিদ্যমান ছিল।[১২২] শক্তিশালী ইহুদি গোষ্ঠীগুলো দক্ষিণে ইয়েমেন এবং উত্তর-পশ্চিমে মদিনার মতো কৃষিভিত্তিক মরুদ্যান শহরগুলোতে বসতি স্থাপন করেছিল। খ্রিস্টানরাও ইয়েমেন এবং পূর্ব আরবে তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে শুরু করেছিল। যদিও একঈশ্বরবাদী বিশ্বাস বেদুঈন আরবদের ঐতিহ্যবাহী বহুঈশ্বরবাদী বিশ্বাসের উপর প্রভাব ফেলেছিল, তবুও বহুঈশ্বরবাদ তখনো খুবই শক্তিশালী ছিল।[১০৯] মুহাম্মাদের সময়ে, আরব উপদ্বীপ সম্পূর্ণভাবে ধর্মীয় ও রাজনৈতিকভাবে উত্তাল ও অস্থিতিশীল ছিল।[১০৯]

আরব উপদ্বীপের স্থানীয় আরবদের মধ্যে হানিফরা ছিল একঈশ্বরবাদী বিশ্বাসীদের একটি সম্প্রদায়।[১২৩] তাদেরকে ভুলভাবে মাঝে মাঝে খ্রিস্টান ও ইহুদিদের সাথে শ্রেণীবদ্ধ করা হত।[১২৪] ইসলামী শিক্ষা অনুসারে, ইসলাম পূর্ব যুগে ইব্রাহিম কর্তৃক প্রচারিত ধর্মের অনুসারীদের হানিফ বলা হত।[১২৫] কুরআনের কিছু আয়াতে "হানিফ" শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে এবং হানিফ ধর্মকে মুশরিক ও পৌত্তলিকদের বহুঈশ্বরবাদী ধর্মের থেকে আলাদা ও তার বিপরীত এবং ইব্রাহিম এর ধর্ম বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সূরা বাকারা এর ১৩৫নং আয়াতে বলা হয়েছে,

ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, মুহাম্মাদও একজন হানিফ ছিলেন এবং তিনি ইব্রাহিম এর পুত্র ইসমাইল এর বংশধর ছিলেন।[১২৬][১২৭][১২৮]

নবী আগমনের প্রত্যাশা

ধ্রুপদী ধর্মীয় বর্ণনা অনুসারে, ইসলাম পূর্ব যুগে, হানিফ ধর্মাবলম্বী আরব কবিরা, যাদের রহস্যময় ক্ষমতার অধিকারী বলেও মনে করা হত, তাদের কবিতায় একজন নবীর আসন্ন আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যদিও কুরআনে ভবিষ্যদ্বাণী ও অনুরূপ অনুশীলনগুলোকে সমর্থন করা হয় না, তবুও ওসব সমাজে এই ধরণের বক্তব্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হত।[১২৯]

কুরআনের সূরা আস-সাফ‌ এর ৬নং আয়াত অনুসারে, নবী ঈসা বনী ইসরাঈলকে সম্বোধন করে বলেছিলেন:

মুহাম্মাদ এর নাম বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে বিভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বলে একটি ধারণা প্রচলিত। এর মধ্যে একটি হাদিসে বলা হয়েছে, "আমার নাম কুরআনে মুহাম্মাদ, ইঞ্জিলে আহমদ এবং তাওরাতে আহ্যদ।"[১৩১] তবে, বর্তমান আধুনিক ইঞ্জিলগুলোতে এই নামগুলোর স্পষ্ট উল্লেখ পাওয়া যায় না। তবে, কিছু ইসলামী পণ্ডিত যোহন ইঞ্জিলের "পারাক্লিত" শব্দটিকে মুহাম্মাদ এর সাথে সম্পর্কিত বলে মনে করেন।[১৩২] খ্রিস্টধর্মে পারাক্লিত-কে "পবিত্র আত্মা" হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।[১৩৩] যোহন ইঞ্জিলের ১৪তম অধ্যায়ে, যিশু কর্তৃক পারাক্লিত ("সত্যের আত্মা") সম্পর্কে বলা হয়েছে,

সপ্তদশ শতাব্দীর বিখ্যাত উসমানীয় পর্যটক ইভলিয়া সেলেবি[১৩৬][১৩৭] তার সেয়াহতনামা গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে তিনি লেবাননের দক্ষিণে নাকুরা শহরের কাছে প্রেরিত পিতর এর সমাধিতে একটি ইঞ্জিলের পাণ্ডুলিপি খুঁজে পেয়েছেন।[১৩৮] প্রেরিত পিতর ছিলেন যিশু এর একজন হাওয়ারী। ইভলিয়া সেলেবি দাবি করেছেন যে ওই পাণ্ডুলিপিতে মুহাম্মাদ এর আগমনের সুসংবাদ বর্ণিত ছিল। তিনি আরও দাবি করেছেন যে ওই পাণ্ডুলিপিটি স্বয়ং প্রেরিত পিতর লিখেছিলেন।[১৩৬][১৩৯][১৪০] কিন্তু ইভলিয়া সেলেবি কর্তৃক উল্লেখিত ওই পাণ্ডুলিপিটি আর কখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

মক্কার জীবন

সারসংক্ষেপ

১৬শ শতাব্দীর একটি চিত্র যা সিয়ার-ই নবী গ্রন্থে পাওয়া যায়। চিত্রে দেখা যাচ্ছে ফেরেশতা জিবরাঈল নবী মুহাম্মাদের সাথে সাক্ষাৎ করছেন।

কিছু উৎস অনুসারে, মুহাম্মাদ ৫৭০ সালে[১৪১][১৪২][১৪৩] এবং কিছু উৎস অনুসারে ৫৭১ সালে[১৪৪] আরবের মক্কা শহরে জন্মগ্রহণ করেন।[১৪১][১৪২][১৪৫] জন্মের আগে তার বাবা আব্দুল্লাহ মারা যান এবং ৬ বছর বয়সে তার মা আমিনা মারা যাওয়ার পর তার চাচা আবু তালিব তাকে লালন-পালন করেন। শৈশবে তিনি চরবাহা (মেষপালন) করতেন এবং তারপর একজন ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করেন। প্রথমবারের মতো ২৫ বছর বয়সে তিনি মক্কার বিখ্যাত এবং সম্মানিত ব্যক্তিত্ব, ৪০ বছর বয়সী একজন ধনী বিধবা খাদিজাকে বিবাহ করেন।[১৪৬]

মুহাম্মাদ নিয়মিতভাবে কিছু রাত নূর পর্বতের হেরা গুহায় গিয়ে ধ্যান করতেন। ৩৫ বছর বয়সের পর তার এই অভ্যাস আরও ব্যাপক হয়ে ওঠে। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, ৪০ বছর বয়সে[১৪১][১৪২] কুরআনের প্রথম আয়াত মুহাম্মাদের উপর অবতীর্ণ হয়[১৪৭] এবং তিনি জানান যে এগুলো আল্লাহর নিকট হতে জিবরাঈল ফেরেশতা কর্তৃক প্রেরিত। প্রথমে তিনি কেবল আপনজনদের ইসলামের প্রতি আহ্বান জানা এবং তিন বছর পর থেকে মানুষকে সামগ্রিকভাবে ইসলামে আমন্ত্রণ জানাতে শুরু করেন।[১৪৮] তিনি আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয় এই বার্তা প্রচার করেন এবং বলেন যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের একমাত্র উপায় হলো আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ।[১৪৯] তিনি নিজেকে আল্লাহর রাসুলনবী হিসেবে ঘোষণা করেন এবং বলেন যে তিনি পূর্ববর্তী নবীদের বংশধর।[১৫০][১৫১]

প্রথম দিকে মুহাম্মাদের অনুসারী সংখ্যা ছিল অল্প। তিনি মক্কার কিছু গোত্র এবং কিছু আত্মীয়ের বিরোধিতার সম্মুখীন হন। এই সময়ে তার অনুসারীরা তীব্র নির্যাতনের শিকার হওয়ায় তিনি ৬১৫ সালে কিছু অনুসারীকে আবিসিনিয়ার আকসুম রাজ্যে পাঠান। ৬২২ সালে নিজের অনুসারীদের সাথে মদিনায় হিজরত করেন।

মদিনায় পৌঁছানোর পর মুহাম্মাদ মদিনার সনদ নামক সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে সেখানকার গোত্রগুলোকে একত্রিত করেন। মক্কার গোত্র এবং পৌত্তলিকদের সাথে আট বছর ধরে যুদ্ধ চলার পর তার অনুসারীর সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়ে যায়।[১৫২] ৬৩০ সালের শুরুতে দশ হাজার সাহাবির এক বিশাল মুসলিম বাহিনীর নেতৃত্বে[১৫৩] মক্কা অবরোধের পর একটি চুক্তির মাধ্যমে রক্তপাতহীনভাবে মক্কার নিয়ন্ত্রণ লাভ করেন।[১৫৩][১৫৪] তিনি শহরে প্রবেশ করে সকল মূর্তি ভেঙে ফেলেন এবং তারপর তার অনুসারীদের পূর্ব আরব-এ অবশিষ্ট সকল পৌত্তলিক মন্দির ধ্বংস করার জন্য পাঠান।[১৫৫][১৫৬][১৫৭] অল্প সময়ের মধ্যে অনেক সকল অভিযান পরিচালনন করে তিনি আরবের বেশিরভাগ অংশ জয় করেন। ৬৩২ সালে বিদায় হজ্জ পালন করেন এবং আরাফাত পর্বতে এক লক্ষেরও বেশি সমবেত মুসলিমের উপস্থিতিতে বিদায়ী ভাষণ প্রদান করার পর মদিনায় ফিরে আসেন। এর কয়েক মাস পর তিনি অসুস্থ হয়ে মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর সময় আরব উপদ্বীপের অধিকাংশ অধিবাসী ইসলাম গ্রহণ করে এবং তিনি আরব উপদ্বীপকে একটি এককরাষ্ট্রের অধীনে একত্রিত করেছিলেন।[১৫৮][১৫৯]

শৈশব ও কৈশোর

মক্কার এই ভবনটি, যা বর্তমানে একটি গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, বিশ্বাস করা হয় যে এটি মুহাম্মাদের জন্মস্থানে অবস্থিত। এই কারণে, এই ভবনটিকে বেতু'ল মেভলিদ (জন্মস্থান) হিসেবেও অভিহিত করা হয়।

মুহাম্মাদ এর পিতা আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব এবং মাতা কুরাইশ গোত্রের ওয়াহাব ইবনে আবদ মান্নাফ-এর কন্যা আমিনা। জন্মের প্রায় পাঁচ-ছয় মাস আগেই মুহাম্মাদ এর পিতা আবদুল্লাহ মারা যান। এরপর তার লালন-পালনের ভার দাদা আবদুল মুত্তালিব গ্রহণ করেন। আবদুল মুত্তালিব তার নাম "মুহাম্মাদ" রাখেন। তার মাতা আমিনা শিশু মুহাম্মাদকে পূর্ণাঙ্গভাবে স্তন্যদান করতে পারেননি। কিছু সময়ের জন্য মুহাম্মাদকে তার চাচা আবু লাহাব-এর দাসী সুওয়াইবা স্তন্যদান করেন।[১৬০] তৎকালীন আরবের রীতিনীতি অনুসারে, মক্কার নবজাতকদের মরুভূমি ও প্রকৃতির জীবনকে শিশুদের জন্য আরও স্বাস্থ্যকর মনে করে, কিছু সময়ের জন্য মরুভূমিতে একটি বেদুঈন পরিবারের সাথে থাকার জন্য পাঠানো হত এবং স্তন্যদাত্রী মহিলাদের দ্বারা স্তন্যদান ও লালনপালন করা হত।[১৬১][১৬২] বাবা না থাকায় এক অনাথের যত্ন নেওয়া লাভজনক হবে না ভেবে স্তন্যদানকারী মহিলারা মুহাম্মাদকে গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন।[১৬১] কিন্তু সেই সময়ে মক্কায় স্তন্য শিশু খুঁজতে আসা এবং কোন শিশু খুঁজে না পাওয়া হালিমা নামের বনু সা'দ গোত্রের এক মহিলা, অনিচ্ছা সত্ত্বেও, মুহাম্মাদকে গ্রহণ করতে রাজি হন।[৯৬][৯৯][১৬১][১৬৩][১৬৪] মুহাম্মাদ দুধমা হালিমা এবং তার স্বামী হারিস এর কাছে দুই বা তিন বছর বয়স পর্যন্ত থাকেন।[১৬৫] হালিমা মুহাম্মাদকে স্তন্যদান ছাড়ানোর পর তাকে তার পরিবারের নিকট ফেরত পাঠান। কিন্তু অসুস্থতার ঝুঁকির কারণে তাকে আবার দুধমা হালিমার কাছে পাঠানো হয় এবং মুহাম্মাদ আরও এক-দুই বছর সেখানে থাকে।

১৬শ শতাব্দীর সিয়ার-ই নবী নামক একটি গ্রন্থে বর্ণিত মুহাম্মাদ-এর জন্মের ঘটনাকে নির্দেশ করে।

মুহাম্মাদ জন্মের পর প্রায় চার বছর পর্যন্ত তার দুধমা হালিমা সাদিয়ার কাছে ছিলেন। তার মা আমিনাও এই সময়ে তার দেখাশোনা করতেন। চার বছর বয়সে তিনি মায়ের কাছে ফিরে আসেন এবং ছয় বছর বয়স পর্যন্ত তার স্নেহ ও যত্নে বেড়ে ওঠেন।[৯৬] ছয় বছর বয়সে, মুহাম্মাদ তার মা আমিনা এবং ধাত্রী উম্মে আইমান এর সাথে তার বাবার সমাধি দেখতে এবং কিছু আত্মীয়-স্বজনের সাথে সাক্ষাৎ করতে মদিনায় যাত্রা করেন।[১৬৬] মদিনায় তিনি তার মায়ের আত্মীয় বনু নাজ্জার গোত্রের কাছে এক মাসের জন্য অবস্থান করেন। এরপর মক্কায় ফেরার পথে আবওয়া গ্রামে পৌঁছালে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন[১৬৬] এবং সেখানেই খুব অল্প বয়সে মারা যান। তাকে সেখানেই সমাহিত করা হয়।[১৬৭] ধাত্রী উম্মে আইমান মুহাম্মাদকে মক্কায় নিয়ে এসে তার দাদা আবদুল মুত্তালিব এর কাছে হস্তান্তর করেন।

ছয় বছর থেকে আট বছর বয়স পর্যন্ত, তার দাদা আবদুল মুত্তালিব তার দেখাশোনা করেন। আবদুল মুত্তালিব বয়সের দিক থেকে আশি বছরেরও বেশি বয়স্ক এক বৃদ্ধ ছিলেন। মুহাম্মাদের আট বছর বয়সে, তার দাদাও অসুস্থ হয়ে মারা যান। মারা যাওয়ার আগে, তিনি তার পুত্র আবু তালিবকে তাকে লালনপালনের জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিছু উৎস বলে যে, আবদুল মুত্তালিব চেয়েছিলেন যে তার দুই পুত্র আবু তালিব এবং যুবায়ের এর মধ্যে কুরা (ভাগ্য নির্ধারণের জন্য লটারি) টেনে মুহাম্মাদের লালনপালনের দায়িত্ব কার হবে তা নির্ধারণ করা হোক এবং কুরা আবু তালিবের পক্ষে এসেছিল।[৯৬] ফলস্বরূপ, মুহাম্মাদ তার বনু হাশিম গোত্রের নবনির্বাচিত নেতা চাচা আবু তালিবের অভিভাবকত্বে আশ্রয় লাভ করেন।[১৬৮]

ইসলামি ঐতিহ্য অনুসারে, মুহাম্মাদ যখন ১২ বছর বয়সী ছিলেন তখন তিনি বহিরা নামে পাদ্রির সাথে পরিচিত হন। এই ঘটনাটি বর্তমান সিরিয়ার বুসরা শহরে ঘটেছিল, যা সে সময় বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীনে ছিল।

কথিত আছে, মুহাম্মাদ যখন প্রায় ১২ বছর বয়সী ছিলেন, তখন তার চাচা আবু তালিব ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়া যান এবং তাকেও সাথে নিয়ে যান। এই ভ্রমণে তিনি বাইজেন্টাইন শাসিত বুসরা শহরে বহিরা নামে একজন খ্রিস্টান সন্ন্যাসীর সাথে পরিচিত হন।[১৬৯] ঐতিহ্য অনুসারে, বহিরা শিশু মুহাম্মাদকে পর্যবেক্ষণ এবং তার সাথে কথোপকথন করার পর তার চাচা আবু তালিবকে জানান যে তিনিই হবেন শেষ নবী।[১৭০] এরপর তিনি শিশু মুহাম্মাদকে ইহুদিবাইজেন্টাইনদের হাত থেকে রক্ষা করার এবং শামে (তৎকালীন সিরিয়ার নাম) না যাওয়ার পরামর্শ দেন।[১৬৯][১৭১] পরবর্তী বছরগুলোতে, মুহাম্মাদ ১৭ বছর বয়সে তার অন্য চাচা যুবায়ের ইবনে আবদুল মুত্তালিবের সাথে ব্যবসার উদ্দেশ্যে ইয়েমেনে যান। ধারণা করা হয় যে এই ভ্রমণগুলো মুহাম্মাদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং মানসিক ভিত্তি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এছাড়াও তার যৌবনে তিনি তার চাচাদের সাথে কুরাইশকায়েস গোত্রের মধ্যে সংঘটিত ফিজার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এই যুদ্ধগুলোতে তিনি তলোয়ার বাজিয়ে যুদ্ধ না করে ছুঁড়ে আসা তীর সংগ্রহ করে তার চাচাদের হাতে তুলে দিতেন।[১৭২]

ব্যবসায়িক জীবন ও খাদিজার সাথে বিবাহ

মুহাম্মাদ মাঝে মাঝে মক্কা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নূর পর্বতের হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন।

মুহাম্মাদের যৌবন সম্পর্কে খুব কমই জানা যায় কারণ বিদ্যমান তথ্য খণ্ডিত এবং ঐতিহাসিক তথ্য থেকে কিংবদন্তি আলাদা করা কঠিন।[১৭৩][১৭৪] তবে, তিনি একজন ব্যবসায়ী ছিলেন এবং ভারত মহাসাগরভূমধ্যসাগরের মধ্যে ব্যবসা করতেন বলে জানা যায়।[১৭৫] ব্যবসায়িক জীবনের পূর্বে, মুহাম্মাদ কিছুকাল তার চাচা আবু তালিবের আর্থিক সহায়তার জন্য পশুপালন করতেন এবং বড় হওয়ার পর ব্যবসায় নিয়োজিত হন। ব্যবসার প্রতি আগ্রহ তাকে পরবর্তীতে তার স্ত্রী খাদিজার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।[১৭৬] ব্যবসার প্রতি আগ্রহ তাকে পরবর্তীতে তার স্ত্রী খাদিজার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। ৫৯৪-৫৯৫ সালে তিনি খাদিজার সাথে অংশীদারিত্বে কাজ শুরু করেন এবং তার মূলধন ব্যবহার করে ব্যবসা পরিচালনা করেন।[১৭৭] ব্যবসায়িক লেনদেনে তার নীতি-নৈতিকতা ও সততার জন্য মক্কার জনগণ তাকে "আল-আমিন" (الامين) বা "বিশ্বস্ত" উপাধিতে ভূষিত করেছিল। এছাড়াও, তিনি মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিরোধের নিরপেক্ষ মীমাংসক হিসেবেও আহ্বান পেতেন।[১৭৮]

কয়েকটি ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বের পর, খাদিজা মুহাম্মাদের সততায় মুগ্ধ হন এবং তাকে অত্যন্ত পছন্দ করতে শুরু করেন। তার বান্ধবী নফিসা বিনতে উমাইয়া এর মাধ্যমে তিনি মুহাম্মাদকে বিবাহ করার প্রস্তাব পাঠান। মুহাম্মাদ খাদিজার প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং তার চাচাদের সাথে গিয়ে খাদিজার জন্য আনুষ্ঠানিক বিবাহের প্রস্তাব পাঠান।[১৭৯] খাদিজার চাচাও প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন এবং বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহের সময় মুহাম্মাদের বয়স ছিল ২৩-২৫ বছর[১৮০][১৮১][১৮২] এবং খাদিজার বয়স ছিল প্রায় ৪০ বছর।[১৮১][১৮২] তবে, কিছু উৎসে বলা হয়েছে যে বিবাহের সময় খাদিজার বয়স ছিল ২০-এর শেষের দিকে বা ৩০-এর শুরুর দিকে।[১৮৩] অধিকাংশ ইসলামী পণ্ডিত এই বিকল্প বয়সের তথ্যগুলোকে দুর্বল বলে মনে করেন।[১৮২]

ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, মুহাম্মাদ তার যৌবনে তার চারপাশের লোকদের পৌত্তলিক বিশ্বাস ও রীতিনীতির প্রতি আগ্রহী ছিলেন না।[১৮৪] এই সময়ে তিনি নিজে কোনো মূর্তির পূজা করতেন না, তবে অন্যদের পূজা করার বিরোধিতাও করেননি। মক্কার মানুষের অন্যায়, কুৎসিত, শিরক (বহুঈশ্বরবাদ) এবং মূর্তিপূজায় পূর্ণ জীবনযাত্রা মুহাম্মাদ এর পছন্দ ছিল না। তিনি একাকীত্বে থাকা (ধ্যানমগ্ন) এবং চিন্তাভাবনা করার মাধ্যমে এর সমাধান খুঁজে বের করতেন।

নিম্নোক্ত কুরআনের আয়াতগুলো ইসলাম-পূর্ব মুহাম্মাদ এর অবস্থা ব্যাখ্যা করে:[১৮৫][১৮৬]

কাবা মধ্যস্থতা

হাজরে আসওয়াদ (কালো পাথর), মক্কার কাবা শরীফের একটি কোণে স্থাপিত।

মুহাম্মাদ এর ৩৫ বছর বয়সে, মক্কায় ঘন ঘন বন্যার কারণে কাবার কিছু অংশ ক্ষয়প্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর, তিনি কাবার মেরামতের কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বলে জানা যায়।[১৮৭]

এই ঘটনার পর কুরাইশ গোত্র কাবা ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়।[১৮৮] কিন্তু তাদের এই কাজের ফলে দেবতাগণ রুষ্ট হবেন এমন আশঙ্কা দেখা দেয়।[১৮৮] আরবদের মধ্যে ইব্রাহিম এর আমল থেকেই কাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জ্ঞাপন একটি পবিত্র কর্তব্য হিসেবে বিবেচিত হম।[১৮৯] অবশেষে কুরাইশ গোত্রের এক প্রধান ব্যক্তি হাতে কোদাল নিয়ে এগিয়ে এসে বলেন, "হে দেবী! ভয় পেয়ো না! আমাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র ভালোর জন্য!" এবং কাবা ভাঙতে শুরু করেন।[১৮৮] মক্কার জনগণ সেই রাতে সতর্ক অবস্থায় ছিল এবং তাদের পবিত্র মন্দিরে হস্তক্ষেপ করার জন্য ঈশ্বরের শাস্তি নেমে আসবে কিনা তা ভেবে আতঙ্কিত ছিল। পরদিন সকালে, যখন তারা দেখতে পেল যে ব্যক্তিটি হাতুড়ি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন, তখন তারা এটিকে "ঈশ্বরের অনুগ্রহের নিদর্শন" হিসেবে ব্যাখ্যা করে।[১৮৮] এরপর কাবা ইব্রাহিম এর স্থাপিত ভিত্তি পর্যন্ত ভেঙে ফেলা হয় এবং পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হয়। জেদ্দা উপকূলে একটি জাহাজ ভেঙে গিয়েছিল এবং সেই জাহাজে স্থাপত্যবিদ্যায় পারদর্শী একজন কারিগর ছিলেন। সেই জাহাজের মেরামতের সরঞ্জামও কিনে কাবার নির্মাণে ব্যবহার করা হয়।[১৮৯][১৯০]

ইবনে ইশাকের সংগ্রহিত একটি বর্ণনা অনুসারে, পুনর্নির্মাণ প্রায় সম্পূর্ণ হলে, কাবা শরীফের হাজরে আসওয়াদ পাথরটি স্থাপন করার সম্মান কোন গোত্র পাবে তা নিয়ে গোত্রপ্রধানদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। সেখানকার এক বয়স্ক ব্যক্তি প্রস্তাব দেন যে কা'বা অবস্থিত এলাকায়, অর্থাৎ মসজিদুল হারামে প্রবেশকারী পরবর্তী ব্যক্তির পরামর্শ নেওয়া হোক এবং তাকে "হাকেম" নিযুক্ত করা হোক। পরবর্তীতে মসজিদে প্রবেশকারী ব্যক্তি ছিলেন মুহাম্মাদ। সকলে অধীর আগ্রহের সাথে মুহাম্মাদ এর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রইল। মুহাম্মাদ কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর একটি চাদর আনার নির্দেশ দেন অথবা নিজের পোশাক খুলে চাদর হিসেবে ব্যবহার করেন। এরপর তিনি পাথরটি চাদরের মাঝখানে রাখেন এবং প্রতিটি গোত্রের গোত্রপ্রধানকে চাদরের এক প্রান্ত ধরে তুলতে বলেন। তারপর তিনি পাথরটি হাতে নিয়ে যথাস্থানে স্থাপন করলেন।[১৮৮][১৯০] এই ঘটনা এবং "আহল আল-কিসা"-এ বর্ণিত ঘটনার কারণে মুহাম্মাদ এর আবৃত পোশাক বা চাদর (আবা) পরবর্তীকালে কবি ও লেখকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হয়ে ওঠে।[১৯১]

প্রথম ওহী ও কুরআনের সূচনা

মুহাম্মাদের প্রথম ওহী লাভের স্থান নূর পর্বতের হেরা গুহা, মক্কা, সৌদি আরব

সীরাতের বর্ণনা অনুসারে, যখন মুহাম্মাদ ৪০ বছর বয়সের কাছাকাছি পৌঁছালেন, তখন তিনি প্রায়শই জনসমাগম থেকে দূরে সরে গিয়ে একাকীত্বে সময় কাটাতে শুরু করেন।[১৯২] এই অবস্থা প্রায় ১-২ বছর ধরে চলতে থাকে। মুহাম্মাদ মক্কা থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে নূর পর্বতের হেরা গুহায় তার দাদা আবদুল মুত্তালিবের মতো প্রতি বছর কয়েক সপ্তাহ ধরে একা একা থেকে ইতিকাফ (ধ্যান) করতেন।[১৯৩] ইসলামী শিক্ষা অনুসারে, ৬১০ খ্রিস্টাব্দে, রমজান মাসের একটি রাতে (কদর রাত) তিনি হেরা গুহায় চাদর জড়িয়ে ধ্যানে মগ্ন থাকাকালীন আল্লাহর নিকট হতে ফেরেশতা জিবরাঈল এর মাধ্যমে প্রথম ঐশ্বরিক বাণী (ওহী) লাভ করেন।[১৯৪] ফেরেশতা তার কাছে এগিয়ে এসে বললেন, "পড়ো!" কিন্তু মুহাম্মাদ নিরক্ষরতা স্বীকার করে বললেন যে তিনি পড়তে জানেন না। এরপর জিবরাঈল মুহাম্মাদের আরও কাছে এসে তার কথাটি পুনরাবৃত্তি করেন; মুহাম্মাদও পুনরায় বললেন যে তিনি পড়তে জানেন না। এই ঘটনাটি আরও একবার ঘটে। অবশেষে জিবরাঈল নিজেই আয়াতগুলো পড়ে শোনান এবং মুহাম্মাদ সেগুলো মুখস্থ করতে সক্ষম হন।[১৯৫][১৯৬] জিবরাঈল যে আয়াতগুলো পড়ে শুনিয়েছিলেন, সেগুলো পরবর্তীতে কুরআনের ৯৬তম সূরা "সূরা আলাক্ব" এর প্রথম পাঁচটি আয়াতে অন্তর্ভুক্ত হয়। ৬১০ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুর পূর্বাবধি মুহাম্মাদ যে ঐশ্বরিক বাণীগুলো (ওহী) লাভ করেছিলেন, সেগুলোই কুরআনের সকল সূরাআয়াত গঠন করে। ইসলামে বিশ্বাস, ইবাদত, শরিয়ত, নীতিশাস্ত্র, তাসাউফের মতো অনুশীলন ও বিষয়গুলোর ভিত্তি হিসেবে কুরআনকে ব্যবহার করা হয়।[৯৪][৯৫][১৪৫][১৪৬][১৫১][১৯৭]

প্রচলিত রিওয়ায়েত অনুযায়ী, মুহাম্মাদ প্রথম ঐশ্বরিক বাণী (ওহী) লাভ করার পর ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। তখন ফেরেশতা জিবরাঈল তার কাছে এসে বলেন যে, তিনি আল্লাহর রাসুল হিসেবে মনোনীত হয়েছেন।[১৯৯][২০০] এরপর মুহাম্মাদ ঘরে ফিরে স্ত্রী খাদিজাকে ঘটনার বিবরণ জানান। খাদিজা তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার পর তাকে তার চাচাতো ভাই ও খ্রিস্টান পাদ্রী ওয়ারাকা ইবনে নওফেলের কাছে নিয়ে যান।[২০১] ওয়ারাকা মুহাম্মাদকে সান্ত্বনা দেন এবং তাকে শেষ নবী হিসেবে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, শিয়া ঐতিহ্য মুহাম্মাদ এর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ভিন্ন মত পোষণ করে। তাদের মতে, জিবরাঈল এর আবির্ভাবে মুহাম্মাদ ন্যূনতম বিস্মিত বা ভীত হননি, বরং তিনি যেন তার আগমনের অপেক্ষায় ছিলেন, এমনভাবে তাকে স্বাগত জানান।[২০২]

প্রথম ঐশ্বরিক বাণীর পর, মুহাম্মাদ এক দীর্ঘ সময় ধরে কোন নতুন বাণী লাভ করেননি। এই সময়কালকে ফাতরাতুল ওহী (ওহী বন্ধ) বলা হয়। এই সময়ে তিনি ধ্যান, প্রার্থনা এবং উপাসনায় মনোনিবেশ করেন। তবে, এই বিরতি তাকে উদ্বিগ্ন ও ভীত করে তোলে।[২০৩] এই অবস্থার কারণে তিনি ব্যাপকভাবে দুঃখিত ও হতাশ বোধ করেন। কিন্তু কিছুদিন পরে, যখন ঐশ্বরিক বাণী পুনরায় শুরু হয়, তখন তিনি স্বস্তি পান এবং নির্দ্বিধায় মানুষকে সত্যের দিকে আহ্বান জানানোর নির্দেশ লাভ করেন। এই বিষয়ে কুরআনে বেশ কিছু আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে, যেমন:[২০৪][২০৫]

ইসলাম প্রচার, ধর্মগ্রহণ ও প্রতিক্রিয়া

কুরআনের সূরা নাজম এর শেষ আয়াতে বলা হয়েছে, যা মুহাম্মাদের নবুয়ত প্রাপ্তির সূচনালগ্নে অবতীর্ণ হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। আয়াতটির একঈশ্বরবাদী নির্দেশনা মক্কার অভিজাত ও পৌত্তলিকদের রীতিনীতির প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছিল

ইসলামী ঐতিহ্য অনুসারে, মুহাম্মাদের আহ্বানে প্রথম সাড়া দেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন তার স্ত্রী খাদিজা, যখন তিনি প্রথম ওহী লাভ করে ঘরে ফিরে আসেন। তারপর তাকে অনুসরণ করেন তার চাচা আবু তালিবের পুত্র আলি, মুক্ত দাস যায়েদ ইবনে হারেসা এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবু বকর[২০৬] এরপর তিন বছর ধরে মুহাম্মাদ কেবল তার আত্মীয়স্বজন এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কাছেই ইসলামের প্রচার করেন।[২০৭] এরপর, বিশ্বাস অনুসারে, কুরআনে সূরা হিজর এর ৯৪ নম্বর আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর তিনি সাফা পাহাড়ে উঠে সমগ্র মক্কার জনগণকে উন্মুক্তভাবে ইসলাম গ্রহণের ও মুসলিম হওয়ার আহ্বান জানান।

কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া ছিল বেশিরভাগই নেতিবাচক। এই কারণে প্রথম মুসলিমদেরকে ভারী অপমান ও নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছিল মক্কার অবিশ্বাসীদের কাছ থেকে, যারা মুহাম্মাদের নবুয়ত প্রাপ্তির বিষয়টিকে প্রথমে সন্দেহের চোখে দেখেছিল। শুরুতে, মুহাম্মাদ মক্কার নেতাদের কাছ থেকে তেমন কোনো বিরোধিতার সম্মুখীন হননি। তারা ইসলাম প্রচারের ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন।[২০৮] কিন্তু কিছুদিন পরে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। কারণ মুহাম্ম একত্ববাদী বিশ্বাসের প্রচার মক্কার অভিজাতদের উদ্বিগ্ন করে তোলে। তারা মনে করেছিল যে এতে তাদের সামাজিক অবস্থান বিপন্ন হতে পারে।[২০৯] বিশেষ করে কাবা থেকে মূর্তি সরিয়ে ফেলার বিষয়টি তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়, কারণ এটি ধারণা করা হয়েছিল যে এটি তীর্থকেন্দ্রিক বাণিজ্যকে ব্যাহত করবে এবং বহুঈশ্বরবাদী ও পৌত্তলিক রীতিনীতির অবসান ঘটাবে।[২১০] এই সময়ে ইসলাম গ্রহণকারীদের অধিকাংশই তাদের ধর্ম গ্রহণের ব্যপারটি গোপন করতে বাধ্য হয়েছিল।

মুহাম্মাদ কেবল মক্কার বহুঈশ্বরবাদী, পৌত্তলিক ও অবিশ্বাসীদেরই নয়, ইহুদি ও খ্রিস্টানদেরও তাদের ধর্মের মূলনীতি বিকৃত হয়েছে উল্লেখ করে ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানান।[২১১] এই এক ঈশ্বরবাদী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে কেউ কেউ তার আহ্বান গ্রহণ করেছিলেন, আবার কেউ কেউ তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। প্রথম দিকে, মুহাম্মাদ কুরাইশ নেতাদের তেমন কোনো প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হননি। কিন্তু যখন তিনি মূর্তিপূজা-অর্চনার সমালোচনা করে কুরআনের আয়াত পাঠ করতে শুরু করেন এবং পৌত্তলিক (মূর্তিপূজারী) পূজা-অর্চনাকারীদের জাহান্নামে যেতে হবে বলে উল্লেখ করেন, তখন কুরাইশরা তার প্রচারকে একটি বড় বিপদ হিসাবে দেখতে শুরু করে এবং তার একঈশ্বরবাদী বিশ্বাসের প্রতি আহ্বান বন্ধ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে শুরু করে। মুহাম্মাদের দিন দিন অনুসারী বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের পৌত্তলিক বহুঈশ্বরবাদী বিশ্বাস ও আচরণের নিরলসভাবে সমালোচনা করছে দেখে কুরাইশরা তাকে হেয় করতে ও অপমান করতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে সহিংসতার আশ্রয় নেয়।[২০৮] মক্কী সূরাগুলো বিশ্লেষণ করলে এই প্রতিক্রিয়া এবং সহিংসতার প্রতিফলন দেখা যায়। মুহাম্মাদের ইসলাম প্রচার বন্ধ করার জন্য মক্কার অবিশ্বাসীরা তার চাচা আবু তালিবের সাথে মোট তিনবার সাক্ষাৎ করে। প্রথম সাক্ষাতে, আবু তালিব সৌজন্যতার সাথে তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠিয়েছিলেন।[২১২] দ্বিতীয়বারে যখন কুরাইশরা তাকে চূড়ান্ত হুমকি দিয়েছিল,

তখন তিনি তার ভাতিজা মুহাম্মাদকে ডেকে এনে পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছিলেন,

মুহাম্মাদ তখন কাঁদতে কাঁদতে উত্তর দিলেন যে-

মুহাম্মাদ যখন অশ্রুসিক্ত হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন, আবু তালিব তাকে ডেকে বললেন, ‘যাও ভাতিজা! তুমি যা খুশী প্রচার কর। আল্লাহর কসম! কোন কিছুর বিনিময়ে আমি তোমাকে ওদের হাতে তুলে দেব না’। তৃতীয়বার যখন কুরাইশরা এসেছিল, তখন তারা আবু তালিবকে তার ভাতিজাকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, আবু তালিব তীব্রভাবে প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এই সময়ে, কিছু কুরাইশেরা ব্যক্তিগতভাবে মুহাম্মাদের সাথে দেখা করে তাকে এই কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে এবং তাকে অর্থ, পদ ও নারীর প্রস্তাব দেয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।[২১২]

এই সময়ে, মক্কার দুই শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হামযা (মুহাম্মাদের চাচা) ও উমরের পরপর এবং কিছুটা আকস্মিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করা মুসলমানদের মনোবল ও সাহস বৃদ্ধি করে; এর ফলে তারা কাবায় গিয়ে প্রকাশ্যে নামাজ আদায় করে। মুহাম্মাদের চাচা আবু লাহাব ব্যতীত তার অন্যান্য আত্মীয়দের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া এবং মক্কার কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তির ইসলাম গ্রহণ, বহুঈশ্বরবাদী ও পৌত্তলিকতায় বিশ্বাসীদের প্রতিক্রিয়া আরও বৃদ্ধি করে এবং মুসলিমদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব তীব্রতর করে।[২১২] তার অনুসারীদের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য, মুহাম্মাদ কিছু মুসলমানকে খ্রিস্টান রাজ্য আবিসিনিয়ায় (হাবশা নামেও ডাকা হত; বর্তমান ইথিওপিয়া) হিজরত করার অনুমতি দেন। ৬১৫ খ্রিস্টাব্দে একদল মুসলিম হাবশায় (আবিসিনিয়া) হিজরত করে। ইসলামের ইতিহাসে প্রথম হিজরত হিসেবে খ্যাত গুরুত্বপূর্ণ এই ঘটনা মুহাম্মাদের আফ্রিকার সাথেও যোগাযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।[২১২]

৬১৫ সালে মুসলিমদের হিজরত করা হাবশা (আকসুম রাজ্য) এর মানচিত্র। মুহাম্মাদের সময়ে হাবশা খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য ছিল।

দুই দফায় আবিসিনিয়ায় হিজরতকারীরা কিছু সময় পর মুহাম্মাদ ও মক্কাবাসীর মধ্যে মীমাংসা এবং সকলের ইসলাম গ্রহণের খবর পান। এই খবর শুনে হিজরতকারীদের কিছু অংশ মক্কায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কথিত আছে, মক্কার নিকটে পৌঁছালে তারা একটি কাফেলাকে কি ঘটেছে জিজ্ঞাসা করে। কাফেলা জানায়, মুহাম্মাদ প্রথমে তাদের দেবতাদের প্রশংসা করেছিলেন এবং কুরাইশরা তার কথা মেনে চলেছিল। কিন্তু পরে তিনি দেবতাদের নিন্দা করেন এবং কুরাইশরা আবার তার বিরোধিতা শুরু করে। ইবনে সা'দ কর্তৃক বর্ণিত এই ঘটনাটি ইতিহাসে "গারানিক ঘটনা" নামে পরিচিত এবং কালক্রমে বিভিন্ন রূপে প্রচলিত হয়েছে।[২১৩]

হামযাউমরের ইসলাম গ্রহণের মাধ্যমে মুসলিমদের শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায়, কুরাইশরা তাদের দমন করার জন্য বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য কুরাইশরা বনু হাশিমমুত্তালিব গোত্রের সাথে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং তাদের শত্রু হিসেবে ঘোষণা করে। কুরাইশরা তাদের সাথে কথা বলা ও লেনদেন করা পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বয়কটের শর্তাবলী লিখে কাবার দেয়ালে টাঙিয়ে দেয়।[২১২] এর প্রতিক্রিয়ায়, মুহাম্মাদের চাচা আবু তালিব তাকে ও তার অনুসারীদের নিজের মহল্লায় নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দেন। মক্কার মুশরিকদের সাথে যোগদানকারী আবু লাহাব ও তার পুত্ররা ব্যতীত মুহাম্মাদের সকল আত্মীয় ৬১৬ থেকে ৬১৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সেখানেই বন্দিদশায় বসবাস করতে বাধ্য হয়। এই সমস্ত ঘটনার পরও মুহাম্মাদের নবুয়তের প্রতি বিশ্বাস দৃঢ় ছিল এবং তিনি আল্লাহর একত্ববাদের প্রচার করে যেতে থাকেন। এই পরিস্থিতি থেকে সাহস নিয়ে তিনি ধর্মীয় ক্ষেত্রে তার ইসলাম প্রচার মক্কার বাইরে ছড়িয়ে দেওয়ার দিকে মনোনিবেশ করেন।

হিজরতের পূর্ববর্তী শেষ বছরগুলো

হিজাজ পর্বতমালার পাদদেশে এবং পূর্বে তায়েফের পথ। মুহাম্মাদ তার চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর পর তার পালিত পুত্র যায়েদ ইবনে হারেসার সাথে তায়েফ পরিদর্শন করেন।

৬১৯ সালে কুরাইশদের বনু হাশিম গোত্রের উপর আরোপিত বৃহৎ বয়কট সমাপ্ত হয়। বয়কটের অল্প কিছুদিন পর, মুহাম্মাদের চাচা আবু তালিব এবং তার স্ত্রী খাদিজা তিন দিনের ব্যবধানে মৃত্যুবরণ করেন।[২১৪] তাঁর সবচেয়ে বড় সমর্থক এই দুজন প্রিয়জনের মৃত্যু মুহাম্মাদকে অত্যন্ত দুঃখিত করে।[২১৪] খাদিজা ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন এবং আবু তালিব ছিলেন মক্কার অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে তাঁকে সর্বদা রক্ষাকারী।[২১৪] হাদিস অনুসারে, আবু তালিব মারা যাওয়ার পরে, কুরাইশরা মুহাম্মাদের উপর নির্যাতন আরও তীব্র করে তোলে। তারা তাকে গালি দিত, তাকে নোংরা জিনিস ছুঁড়ে মারত এবং এমনকি তাকে হত্যার চেষ্টা করত। উল্লেখ্য, খাদিজা ও আবু তালিবের মৃত্যুবরণ করা এই বছরটিকে দুঃখের বছর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

আবু তালিব এর মৃত্যুর পর, বনু হাশিম গোত্রের নেতৃত্ব চলে যায় মুহাম্মাদ এর তীব্র শত্রু, তার চাচা আবু লাহাবের হাতে।[২১৫] এরপর থেকে মুহাম্মাদ আরব উপজাতিদের কাছে নিজেকে নবী হিসেবে প্রচার করার এবং তাদের আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনে আহ্বান জানানোর জন্য বিভিন্ন বাণিজ্য মেলা ও বাজারে ঘুরতে শুরু করেন।[২১৬] এই ভ্রমণগুলোতে মুহাম্মাদকে অনুসরণ করে আবু লাহাব লোকজনকে বলতেন যে, তিনি "বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন, তার কথা শোনা উচিত নয় এবং তাকে উপেক্ষা করা উচিত।"[২১৫] অল্প কিছুদিন পর, আবু লাহাব মক্কার মুশরিকদের সহায়তায় গোত্রের মুহাম্মাদ এর উপর প্রদত্ত সুরক্ষা প্রত্যাহার করে নেয়।[২১৬] এই ঘটনা মুহাম্মাদকে মারাত্মক বিপদে ফেলে দেয় কারণ গোত্রের সুরক্ষা প্রত্যাহারের অর্থ ছিল যে, তাকে হত্যা করলে তার জন্য কোন রক্তপাতের প্রতিশোধ নেওয়া হবে না।

উল্লেখিত ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে মুহাম্মাদ আরবের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর তায়েফ যাত্রা করেন এবং সেখানে একজন গোত্রীয় সুরক্ষাদাতা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তায়েফে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং তাকে আরও বেশি শারীরিক বিপদের মুখোমুখি হতে হয়। তার পালিত পুত্র যায়েদ ইবনে হারেসার সাথে তাকে পাথর নিক্ষেপ করে ভয়াবহরকমভাবে আহত করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।[২১৭][২১৮] অবশেষে মুহাম্মাদ মক্কায় ফিরে যেতে বাধ্য হন। মুহাম্মাদ যখন মক্কায় ফিরছিলেন, তখন তায়েফের ঘটনাবলীর খবর আবু জাহেলের নিকট পৌঁছেছিল। সে বলল, "তারা তাকে তায়েফে প্রবেশ করতে দেয়নি, তাই আমরাও তাকে মক্কায় প্রবেশ করতে দেবো না।" পরিস্থিতির ভয়াবহতা বুঝতে পেরে, মুহাম্মাদ একজন চলতি ঘোড়সওয়ারকে তার মায়ের গোত্রের সদস্য আখনাস ইবনে শুরায়কের কাছে বার্তা পৌঁছানোর অনুরোধ করেন। মুহাম্মাদ চেয়েছিলেন আখনাস তাকে নিরাপদে মক্কায় ঢোকার সুরক্ষা দেবেন। কিন্তু আখনাস তা প্রত্যাখ্যান করেন, এই বলে যে তিনি কেবল কুরাইশদের একজন মিত্র। এরপর মুহাম্মাদ সুহাইল ইবনে আমরের কাছে বার্তা প্রেরণ করেন, যিনি গোত্রীয় মর্যাদার কারণে তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরিশেষে, মুহাম্মাদ বনু নওফালের প্রধান মুতইম ইবনে আদির কাছে সুরক্ষার অনুরোধ পাঠান। মুতইম সম্মত হন এবং নিজেকে অস্ত্রসজ্জিত করে সকালে তাঁর ছেলে ও ভাইপোদের সাথে মুহাম্মাদকে শহরে নিয়ে আসার জন্য রওনা দেন। আবু জাহেল তাকে দেখে জিজ্ঞাসা করে যে মুতইম কেবল তাকে সুরক্ষা দিচ্ছেন, নাকি ইতোমধ্যে তিনি তার ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। মুতইম জবাবে বললেন, "অবশ্যই তাকে সুরক্ষা দিচ্ছি।" এরপর আবু জাহেল বলল, "তুমি যাকে রক্ষা করবে, আমরাও তাকে রক্ষা করব।" এভাবে মুহাম্মাদ নিরাপদে তার নিজ শহরে পুনঃপ্রবেশ করতে সক্ষম হন।[২১৯]

আকাবার শপথ

আরব উপদ্বীপের বহু মানুষ এই নতুন ধর্ম ও এর নবী সম্পর্কে শুনেছিল এবং ব্যবসা বা কাবায় তীর্থের মতো কারণে মক্কা ভ্রমণ করতে আসত। প্রথমবার মক্কায় আসা প্রায় ১২ জন (আকাবার প্রথম শপথ) এবং এরপর আবার মক্কায় আসা প্রায় ৩০০ জন (আকাবার দ্বিতীয় শপথ); ৬২০-৬২১ সালে 'আকাবা' নামক স্থানে, যা মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে, মুহাম্মাদ এর সাথে গোপনে সাক্ষাৎ করে তাকে ইসলাম গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে ইয়াসরিবে (যা পরবর্তীতে মদিনা নামে পরিচিত) আমন্ত্রণ জানায়।[২২০] মুহাম্মাদ এই সুযোগটি নিজে এবং তার অনুসারীদের জন্য নতুন আশ্রয় খুঁজে পেতে ব্যবহার করেন। ইয়াসরিবের (মদিনা) আরব জনগোষ্ঠী এক ঈশ্বরে বিশ্বাসের সাথে পরিচিত ছিল, কারণ শহরে একটি ইহুদি সম্প্রদায় ছিল।[২২১] এছাড়াও ইয়াসরিবের জনগণ মুহাম্মাদ এবং এই নতুন ধর্মের মাধ্যমে মক্কার উপর আধিপত্য বিস্তার করার আশা করেছিল। কারণ তীর্থস্থান হওয়ার কারণে মক্কার গুরুত্বের জন্য ইয়াসরিববাসী ঈর্ষা করত।[২২২][২২৩]

আকাবায় প্রতিশ্রুতির পর মুহাম্মাদ ইয়াসরিবকে উপযুক্ত মনে করেছিলেন এবং তার অনুসারীদের সেখানে হিজরত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।[২২৪] পূর্বে হাবশায় যে হিজরত হয়েছিল, ঠিক তেমনি কুরাইশরা আবার এই হিজরত বন্ধ করার চেষ্টা করবে, কিন্তু প্রায় সকল মুসলিম হিজরত করতে সক্ষম হবে।

মদিনায় হিজরত

আজকের মদিনা শহরের ছবি। (উপরে: সূর্যাস্তের সময় শহরের একটি দৃশ্য। নিচে: মসজিদে নববীর রাতের দৃশ্য, যার মধ্যে রয়েছে নবী মুহাম্মাদ এর সমাধি।)

এই সময়ের মধ্যে, মক্কার মুসলমানরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে মদিনায় হিজরত করতে শুরু করে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই মক্কার অধিকাংশ মুসলমান মদিনায় স্থানান্তরিত হয়। শহরে শুধুমাত্র মুহাম্মাদ এবং আবু বকর ও তাদের পরিবার, আলি এবং তার মা এবং কিছু বয়স্ক মুসলমান এবং যারা মক্কাবাসীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে বন্দি ছিল তারা অবশিষ্ট ছিল।[২২৫] মুহাম্মাদ এই কঠিন ও দীর্ঘ যাত্রার জন্য তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবু বকরকে সঙ্গী হিসেবে বেছে নেন এবং তাকে দ্রুত প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি তার চাচাতো ভাই আলিকে তার অপরিশোধিত ঋণ পরিশোধ করার জন্য এবং তার কাছে থাকা কিছু আমানত মালিকদের কাছে ফেরত দেওয়ার জন্য পিছনে রেখে যেতে চেয়েছিলেন।

মক্কার কুরাইশরা যখন দেখতে পেল যে তারা মুহাম্মাদকে তার একঈশ্বরবাদী প্রচারণা থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং মদিনায় অবস্থিত মুসলমানরা ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে, তখন তারা আশঙ্কা করতে শুরু করল যে এই পরিস্থিতি তাদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। এই উদ্বেগের ভিত্তিতে তারা "দারুন-নদওয়া" নামক একটি সভায় মিলিত হয় এবং এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে।[২২৬] আলোচনায় তারা উল্লেখ করে যে ইসলাম দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের ঐতিহ্যবাহী পৌত্তলিক রীতিনীতি ও ব্যবস্থার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। সর্বোপরি, তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে মুহাম্মাদকে অবশ্যই হত্যা করতে হবে। এই কাজের জন্য বিভিন্ন গোত্র থেকে কয়েকজন শক্তিশালী তরুণ যুবককে নির্বাচিত করা হয়।

মুহাম্মাদ সেই রাতে যখন মক্কার কুরাইশদের হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনার খবর পেলেন, তখন তিনি তার ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। আলি তখন মুহাম্মাদ এর পোশাক পরে তার বিছানায় শুয়ে পড়েন। এতে করে হত্যাকারীরা ভেবেছিল যে মুহাম্মাদ এখনও ঘরেই আছেন।[২২৭] কিন্তু যখন হত্যাকারীরা সত্যিটা জানতে পারল, তখন মুহাম্মাদ ইতিমধ্যেই আবু বকর এর সাথে মক্কা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। মুহাম্মাদ এর চাচাতো ভাই আলি এই ষড়যন্ত্র থেকে জীবিত রক্ষা পান। তবে মুহাম্মাদ এর নির্দেশাবলী পালন করার জন্য তিনি কিছুদিনের জন্য মক্কায় অবস্থান করেন।[২২৮] পরে আলি তার মা ফাতিমা বিনতে আসাদ, মুহাম্মাদ এর কন্যারা, স্ত্রী সাওদা বিনতে জামআ, ধাত্রী উম্মে আইমান এবং বিভিন্ন কারণে পিছিয়ে পড়া অন্যান্য মুসলমানদের সাথে যাত্রা শুরু করেন।[২২৮]

ছবিতে চিহ্নিত অংশে দেখা যাচ্ছে একটি পাহাড়ি শিলা। ইসলামের ইতিহাসে এই শিলাটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সেই গুহার অংশ যেখানে নবী মুহাম্মাদ এবং আবু বকর হিজরতের সময় মক্কার কাফেরদের থেকে বাঁচতে লুকিয়ে ছিলেন।

মক্কার মুশরিকরা যখন মুহাম্মাদকে তার বাড়িতে খুঁজে না পেয়ে এবং এরপর আবু বকর এর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েও কোন ফলাফল না পেয়ে হতাশ হলো, তখন তারা চারপাশের সব এলাকা নিয়ন্ত্রণ ও তল্লাশি করতে শুরু করলো। তারা মুহাম্মাদ ও আবু বকর এর মাথার দাম ঘোষণা করে চারদিকে প্রচারক পাঠালো।[২২৫] এই সময় মুহাম্মাদ এবং আবু বকর শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাওর পর্বতের একটি গুহায় তিন দিন লুকিয়ে ছিলেন। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে তারা কৃষ্ণ সাগরের দিকে তুলনামূলক নিরাপদ পথে যাত্রা শুরু করেন।[২২৫] মদিনায় নিরাপদে পৌঁছাতে তারা প্রধান ও ব্যস্ত রাস্তার পরিবর্তে বিকল্প পথ বেছে নেন এবং পাহাড়ি গিরিপথমরুভূমির মধ্য দিয়ে যাত্রা করেন। তবুও, মদিনায় পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত মক্কার মুশরিকদের তল্লাশি থেকে মুক্তি পেতে তাদের অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয় এবং মাঝে মাঝে প্রাণের ঝুঁকিও নিতে হয়।

মুহাম্মাদ এবং আবু বকর তাদের যাত্রার শেষ পর্যায়ে মদিনার কাছে কুবা নামক একটি গ্রামে পৌঁছান। সেখানে মুহাম্মাদ কে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং তিনি পূর্বে ইসলাম গ্রহণকারী কুলসুম ইবনে হিদম এর বাড়িতে অতিথি হিসেবে অবস্থান করেন। কিছু তথ্য অনুসারে, মুহাম্মাদ সেখানে চার দিন এবং অন্য তথ্য অনুসারে দশ দিন অবস্থান করেন।[২২৯] এই সময়ের মধ্যে, তিনি কুবায় নিজেও নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণ করে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে মসজিদে কুবা নামে পরিচিত এই মসজিদটি ইসলামের ইতিহাসে নির্মিত প্রথম মসজিদ হিসেবে খ্যাতি লাভ করে। এই সময়ে আলি এবং তার সাথে থাকা মুসলমানরাও কুবায় পৌঁছান। এরপর মুহাম্মাদ ও অন্যরা সকলে একসাথে কুবা থেকে যাত্রা শুরু করেন এবং অবশেষে ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ২৭ সেপ্টেম্বর মদিনায় পৌঁছান।[২২৫]

মদিনার জীবন

৬২২ সালে মুহাম্মাদ যখন মদিনায় পৌঁছান, তখন স্থানীয় মুসলমানরা তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায়। প্রত্যেক মুসলিম তাকে নিজ বাড়িতে অতিথি হিসেবে রাখতে চেয়েছিল। অবশেষে, তার উট যেখানে বসে পড়ে, সেই স্থানের কাছেই বসবাসকারী আবু আইয়ুব আনসারি-এর বাড়িতে তিনি অবস্থান করেন।[২৩০] মুহাম্মাদ মদিনায় একটি মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেন এবং তার পরিবারের জন্য মসজিদের পাশে ঘর তৈরি করেন। মসজিদের এক পাশে বেঘরদের থাকার জন্য "সুফফাহ" নামে একটি স্থান তৈরি করা হয়। এখানে থাকা ব্যক্তিদের "আসহাবুস সুফফাহ" বলা হত। পরবর্তীতে "মসজিদে নববী" নামে পরিচিত এই মসজিদটি মুহাম্মাদ-এর মদিনার সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। এটি পরবর্তী যুগে নির্মিত মসজিদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে ওঠে।[২৩১]

মদিনার সনদ এবং মদিনা শহর রাষ্ট্র

মদিনা (যার আসল নাম "ইয়াসরিব" ছিল, মুসলমানরা শহরটিকে "মদিনাতু'ন নবি" এবং পরে সংক্ষেপে "মদিনা" বলে অভিহিত করেছিল) জনসংখ্যা ছিল "মুহাজির" নামে পরিচিত মক্কার অভিবাসী, "আনসার" নামে পরিচিত স্থানীয় জনগোষ্ঠী (বিশেষ করে ইয়েমেন বংশোদ্ভূত বনু আউস এবং বনু খাযরাজ গোত্র) এবং বনু কুরাইজা, বনু কায়নুকাবনু নাদির নামে পরিচিত ইহুদি গোত্র থেকে। তাদের মধ্যে ঐক্য স্থাপন করা বেশ কঠিন ছিল। খায়বারের মতো মদিনার সীমানা সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী ইহুদিরা ধনী ব্যক্তি ছিলেন বলে তারা আশেপাশের উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল। আউস ও খাযরাজ গোত্রের মধ্যে শেষবার ৬১৭ সালে সংঘটিত ঐতিহ্যবাহী শত্রুতা পুনরায় জাগরিত হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল। এছাড়াও, আনসার ও মুহাজিরদের একত্রিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ছিল।

মুহাম্মাদ এই সকল শ্রেণীকে একত্রিত ও সংযুক্ত করার উদ্দেশ্যে ছিলেন। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল অত্যন্ত দরিদ্র অভিবাসীদের অবস্থার উন্নতি করা। মুহাম্মাদ মুহাজিরদের স্থানীয় জনগণের সাথে ভ্রাতৃত্ব ঘোষণা করে তাদের সাহায্য করার ব্যবস্থা করেছিলেন। ইহুদিদের সাথে তার মতবিরোধ মিটিয়ে তিনি আশেপাশে একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন এবং বিভিন্ন শ্রেণীর অধিকার ও কর্তব্য নির্ধারণ করে ৪৭ ধারার "মদিনা সংবিধান" গ্রহণ করা হয়। এই সংবিধান মূলত এলাকার গোত্রীয় বিষয়গুলোকে সমাধান করে মদিনায় একটি বহু-ধর্মীয় ইসলামী রাষ্ট্র, অর্থাৎ মদিনা শহর রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করে;[২৩২] এবং মুহাম্মাদ এই শাসনের প্রধান নির্বাচিত হন।

যদিও বেশিরভাগ পশ্চিমা ও মুসলিম পণ্ডিত মদিনার সংবিধানের লেখার বাস্তবতা সম্পর্কে একমত, এর প্রকৃতি - একটি চুক্তি নাকি মুহাম্মাদের একতরফা ঘোষণা, নথির সংখ্যা, প্রাথমিক পক্ষ, এবং লেখার নির্দিষ্ট সময়কাল - নিয়ে এখনও বিতর্ক রয়েছে।[২৩৩] জার্মান ধর্মতত্ত্ববিদ এবং প্রাচ্যবিদ জুলিয়াস ওয়েলহাউসেন ৪৭টি ধারার একটি সংস্করণ প্রস্তাব করেছিলেন, যা বেশিরভাগ পরবর্তী গবেষক অনুসরণ করেছেন। ভারতীয় পণ্ডিত মোহাম্মদ হামিদুল্লাহ ৫২টি ধারার সংস্করণ প্রস্তাব করেছিলেন, ওয়েলহাউসেনের ৪৭টি ধারা গ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু কিছু ধারাকে দুটি অংশে বিভক্ত করেছিলেন।[২৩৪] ইসরায়েলি পণ্ডিত মাইকেল লেকার ৬৪টি ধারার সংস্করণ প্রস্তাব করেছিলেন। ব্রিটিশ পণ্ডিত রবার্ট বি. সার্জেন্ট ৮টি আলাদা অংশ এবং মোট ৭০টি ধারার সংস্করণ প্রস্তাব করেছিলেন।

মুসলিম পণ্ডিতদের বর্ণনা অনুসারে, বিসমিল্লাহ-এর সাথে শুরু হওয়া দলিলের প্রথম ধারাটি নিম্নরূপ:[২৩৪]

মদিনার সনদ, ৬২২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মাদ কর্তৃক প্রণীত একটি ঐতিহাসিক দলিল যা মদিনার বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি ও সহাবস্থান প্রতিষ্ঠা করে। এর ২৫নং ধারাটি বেশ আকর্ষণীয়, কারণ এতে ইহুদি গোষ্ঠীগুলোকে "উম্মাহ"-এর অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং উভয় সম্প্রদায়ের জন্য নিজ নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে।[২৩৪] ওয়াশবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এল. আলি খান এই দলিলকে একটি "সামাজিক চুক্তি" হিসেবে বর্ণনা করেছেন যা একটি "সনদের" উপর ভিত্তি করে তৈরি। খানের মতে, এই দলিলটি "এক ঈশ্বরের আধিপত্যের অধীনে বসবাসকারী বিভিন্ন গোষ্ঠী দ্বারা গঠিত একক সম্প্রদায়ের ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।"[২৩৫] মদিনার সংবিধানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো মুসলমানদের মধ্যকার সম্পর্কের পুনর্নির্ধারণ। এই দলিলের মাধ্যমে মুসলমানরা রক্তের সম্পর্কের চেয়ে তাদের বিশ্বাসকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করে।[২৩৬] গোষ্ঠী পরিচয় বিভিন্ন গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করার জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তবে নতুন করে গঠিত "উম্মাহ"-এর জন্য প্রধান সংযোগকারী শক্তি ছিল "ধর্ম"।[২৩৭] কিছু ইতিহাসবিদ মনে করেন "উম্মাহ" নামক এই নতুন সম্প্রদায়কে একটি নতুন গোষ্ঠীর সাথে তুলনা করা যেতে পারে, তবে এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য হলো এটি রক্তের সম্পর্কের পরিবর্তে ধর্মের উপর ভিত্তি করে তৈরি।[২৩৭] এই বৈশিষ্ট্যটি গোষ্ঠী-ভিত্তিক সমাজে গঠিত ইসলাম পূর্ব আরবের রীতিনীতির সাথে সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। মদিনার এই ছোট মুসলিম গোষ্ঠীটির পরবর্তীতে একটি বিশাল মুসলিম সম্প্রদায় ও সাম্রাজ্যে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল।[২৩৮]

মদিনার সংবিধান, যা মিসাক-ই-মদিনা নামেও পরিচিত, ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি ৬২২ সালে মুহাম্মাদ কর্তৃক প্রণীত হয়েছিল এবং মদিনার বিভিন্ন ধর্মীয় ও গোষ্ঠীগত সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি ও সহাবস্থান প্রতিষ্ঠার জন্য নীতি নির্ধারণ করে। এই সংবিধানে অমুসলিমদের অধিকার বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ধর্মীয় সহনশীলতা ও ন্যায়বিচারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মদিনার সংবিধান অনুসারে মদিনায় বসবাসকারী অমুসলিমদের নিম্নলিখিত অধিকার ছিল:[২৩৯]

  • ধর্মীয় স্বাধীনতা:

অমুসলিমদের তাদের নিজস্ব ধর্ম পালন করার পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল। তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন, ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণ ও সংরক্ষণ এবং ধর্মীয় নেতা নির্বাচনের অধিকার ছিল। তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের জন্য তাদের কখনোই হয়রানি করা হত না।

  • রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা:

মদিনার রাষ্ট্র অমুসলিমদের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিত। বাইরের আক্রমণ থেকে মদিনা রক্ষা করার জন্য অমুসলিমদেরও সাহায্য করতে হত।

  • রাজনৈতিক অধিকার:

অমুসলিমদের মদিনার রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে অংশগ্রহণের অধিকার ছিল। তাদের নিজস্ব বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন করার অধিকার ছিল। মুসলিমদের সাথে তাদের সমান অধিকার ছিল।

  • অর্থনৈতিক অধিকার:

অমুসলিমদের তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল। তাদের সম্পত্তির মালিকানা ও উত্তরাধিকারের অধিকার ছিল। মুসলিমদের সাথে তাদের সমান অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ছিল।

  • সামাজিক অধিকার:

অমুসলিমদের মদিনার সমাজে সম্মানের সাথে বসবাস করার অধিকার ছিল। তাদের মুসলিমদের সাথে সমান সামাজিক ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ছিল।

মসজিদে নববী-এর একটি বিস্তৃত দৃশ্য। একটি বর্ণনা অনুসারে, মুহাম্মাদ একটি হাদিসে বলেছেন: "আমার এই মসজিদে আদায়কৃত একটি নামাজ মসজিদুল হারাম ব্যতীত অন্য মসজিদে আদায়কৃত নামাজের তুলনায় এক হাজার গুণ উত্তম।"[২৪০]

প্রথম জনগণনা এবং যুদ্ধের দিকে

মদিনায় শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার পর মুহাম্মাদ একটি জনশুমারি পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ মক্কার কাফেরদের সাথে যুদ্ধ এখন সময়ের ব্যাপার ছিল এবং এর জন্য মুসলমানদের সংখ্যার সঠিক তথ্য জানা প্রয়োজন ছিল।[২৪১] সাহাবীদের সাথে আলোচনার পর মুহাম্মাদ তাদের মধ্যে কয়েকজনকে দায়িত্ব দেন এবং মুসলমানদের নাম ও সংখ্যা জানতে চান।[২৪২] বিভিন্ন বর্ণনামতে এই সংখ্যা ৫০০ থেকে ১৫০০ এর মধ্যে বলা হয়েছে।[২৪১] তবে ধারণা করা হয় মুসলমানদের মোট সংখ্যা ছিল প্রায় ১৫০০ জন, যার মধ্যে ৬০০-৭০০ জন ছিল পুরুষ এবং ৫০০ জন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার জন্য সক্ষম।[২৪১][২৪২]

এই সময়ে, বিশ্বাস অনুযায়ী, সূরা হাজ্জ্ব-এর ৩৯ নম্বর আয়াত অবতীর্ণ হয় যার মাধ্যমে মুসলমানদের যুদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়। মুহাম্মাদ এবং অন্যান্য মুসলমানদের হিজরতের পূর্বে ১২ বছরের সময়কালে যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হয়নি, শুধুমাত্র "ধৈর্য ধারণ" করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। এর আরেকটি কারণ ছিল মুসলমানদের পর্যাপ্ত সামরিক শক্তির অভাব। হিজরতের প্রথম বা দ্বিতীয় বছরে, বিশ্বাস অনুযায়ী, কেবলমাত্র মক্কার মুশরিকদের বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত কুরআন আয়াতের মাধ্যমে যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হয়:[২৪৩][২৪৪]

সশস্ত্র সংঘাতের সূচনা: বদর যুদ্ধ

মানচিত্রটি বদর যুদ্ধের সময় আবু সুফিয়ানের কাফেলা, আবু জাহেল এবং মুসলিম বাহিনীর যাত্রাপথ নির্দেশ করে।

মক্কার কুরাইশরা মুসলিমদের উপর নির্যাতন চালাত এবং তাদের মদিনা থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করত। মুসলমানদের একটি বাণিজ্য কাফেলাকে লুণ্ঠন করারও চেষ্টা করেছিল কুরাইশরা। মুহাম্মাদ যখন মদিনায় হিজরত করেন, তখন মক্কার কাফেররা মদিনায় অভিবাসী মুসলমানদের সম্পত্তি লুণ্ঠন করে। যুদ্ধের অনুমতি দেয় এমন আয়াত নাজিল হওয়ার পর, এই লুণ্ঠনের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এবং মুসলমানদের অর্থনৈতিক দুরবস্থার সমাধান করার জন্য মুসলমানরা মক্কার কাফেলা আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেয়।[১৫১] ৬২৪ সালের মার্চ মাসে, হজরত মুহাম্মাদ খবর পেলেন যে, মক্কার একটি বড় বাণিজ্য কাফেলা সিরিয়া থেকে মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে।[২৪৫] এই কাফেলায় প্রায় ১০০০টি উট এবং ৫০,০০০ দিনার মূল্যের সম্পদ ছিল। কাফেলাটি ৭০ জন সশস্ত্র লোক দ্বারা রক্ষিত ছিল এবং এর নেতৃত্বে ছিলেন আবু সুফিয়ান[২৪৫]

মুহাম্মাদ যখন এই বিশাল কাফেলা সম্পর্কে শুনলেন, তিনি তার সাহাবীদের একত্রিত করেন। তিনি কাফেলায় থাকা বিপুল পরিমাণ পণ্যসম্ভারের কথা তুলে ধরেন এবং তাদের বলেন যে ফেরার পথে তারা কাফেলাটি আটকাতে পারে। এজন্য তিনি অভিযানে অংশগ্রহণের জন্য সাহাবীদের প্রস্তুতি নিতে বলেন।[২৪৬] ফলস্বরূপ, মুহাম্মাদ ৬২৪ সালের ৮ই মার্চ, প্রায় ৩১০ জনের একটি বাহিনী নিয়ে মদিনা থেকে রওনা হন। সিরিয়া থেকে ফেরার পথে আবু সুফিয়ান খবর পান যে মুসলিমরা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি মক্কায় সাহায্যের জন্য একজন অশ্বারোহী প্রেরণ করেন[২৪৬] এবং কাফেলার গতিপথ পরিবর্তন করেন। আবু সুফিয়ানের পাঠানো খবর পেয়ে, কুরাইশ গোত্রের প্রায় ৯৫০ জন মক্কা থেকে আবু জেহেলের নেতৃত্বে রওনা হয়।

বদরের যুদ্ধের আগে ঘোড়ার পিঠে আরোহী মুসলিম বাহিনীকে তুলে ধরা একটি চিত্রকর্ম।

মুসলমানরা একটি বাণিজ্য কাফেলায় আক্রমণ করার পরিকল্পনা করছে - এই খবর পেয়ে মক্কার অধিবাসীরা তাদের বাহিনী প্রস্তুত করে। এরপর আবু সুফিয়ান, বাণিজ্য কাফেলার নেতা, মক্কায় দ্বিতীয়বার বার্তা পাঠিয়ে জানান যে বিপদ এড়িয়ে গেছে। কিন্তু মক্কার নেতারা যুদ্ধের সিদ্ধান্ত বদলাননি। ৯৫০ জনের একটি বিশাল বাহিনী নিয়ে তারা বদরের দিকে রওনা হন। এদিকে, মুহাম্মাদ এবং তার অনুসারীরা এখনও জানতেন না যে কুরাইশ বাহিনী মক্কা থেকে বেরিয়ে বদরের দিকে এগিয়ে আসছে। ৬২৪ সালের ১৪ই মার্চ দুই বাহিনী বদরে মুখোমুখি হয়। যুদ্ধ শুরুর আগে, আরব যুদ্ধের ঐতিহ্য অনুযায়ী, "দ্বন্দ্বযুদ্ধ" (মুবারাজা) অনুষ্ঠিত হয়। এর জন্য উভয় পক্ষ থেকে তিনজন করে যোদ্ধা নির্বাচিত হয়।[২৪৭] মুসলিম বাহিনীর পক্ষ থেকে হামযা, উবাইদাহ ইবনে হারিস এবং আলি; এবং মক্কার পক্ষ থেকে উতবা, তার ভাই শায়বা এবং তার পুত্র ওয়ালিদ যুদ্ধে অংশ নেন। হামজা এবং আলী তাদের প্রতিপক্ষদের পরাজিত করেন। উবাইদা উতবার সাথে সমানে লড়াই করলেও আহত হন। এরপর হামজা এবং আলী উবাইদার সাহায্যে এগিয়ে এসে উতবাকে হত্যা করেন।[২৪৬]

বদরের যুদ্ধ হিজরতের দ্বিতীয় বছরের রমজান মাসের ১৭ তারিখে (১৭ মার্চ ৬২৪ খ্রিস্টাব্দ) সংঘটিত হয়েছিল। যুদ্ধের পূর্বে ৬২৩ থেকে ৬২৪ সালের মধ্যে মুসলিম ও কুরাইশদের মধ্যে বেশ কিছু খন্ডযুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধের কারণ ছিল মক্কার কুরাইশদের মুসলমানদের উপর নির্যাতন এবং মুসলিমদের একটি বাণিজ্য কাফেলা আটক করার চেষ্টা। যুদ্ধের শুরুতে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩১০ জন, কিন্তু মক্কার কুরাইশদের সৈন্য সংখ্যা ছিল ৯৫০ জন। যুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে মুসলমানরা কঠিন প্রতিরোধ করে। কুরাইশদের সেনাপতি আবু জাহেল যখন নিহত হন, তখন তারা পালিয়ে যেতে শুরু করে। কয়েক ঘন্টা স্থায়ী এই যুদ্ধে মুসলমানরা বিজয়ী হয়। কিছু আধুনিক ইতিহাসবিদ, যেমন রিচার্ড এ. গ্যাব্রিয়েল, মনে করেন মুহাম্মাদ-এর কৌশলগত সামরিক কৌশল এবং মুসলমানদের সাহসই এই বিজয়ের মূল কারণ।[২৪৮] অন্যদিকে, কুরআনের কিছু আয়াত এবং পরবর্তীকালের কিছু বর্ণনা অনুসারে, যুদ্ধের সময় মুসলমানদের সাহায্য করার জন্য হাজার হাজার ফেরেশতা পাঠানো হয়েছিল।[২৪৯]

বদরের যুদ্ধ ছিল মুসলিমদের মক্কার মুশরিকদের বিরুদ্ধে প্রথম জয়।[২৫০] যুদ্ধে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল ৩১৩ জন এবং কুরাইশদের সংখ্যা ছিল ১০০০ জনেরও বেশি। যুদ্ধে মুসলমানরা ৭০ জন পৌত্তলিককে হত্যা করে এবং ৭০ জনকে বন্দি করে। মুসলমানদের মাত্র ১৪ জন শহীদ হন। যুদ্ধের পর মুহাম্মাদ বন্দিদের সাথে উদার আচরণ করার নির্দেশ দেন। বন্দীদের মধ্যে মাত্র দু'জনকে মুসলিমদের উপর নির্যাতনের প্রতিশোধ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।[২৪৬] অন্যান্য বন্দীদের তাদের আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করে অর্থ প্রদানের শর্ত আরোপ করা হয়। যারা মুক্তিপণ দিতে পারত তাদের মুক্তিপণ দিয়ে মুক্তি দেওয়া হয়। যারা মুক্তিপণ দিতে পারত না তাদের ১০ জন করে মুসলমানকে পড়া-লেখা শেখানোর শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়। যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মক্কার কাফেররা নিহত নেতা আবু জাহেলের পরিবর্তে আবু সুফিয়ানকে তাদের নতুন নেতা হিসেবে নির্বাচিত করে।[২৪৬] বদর যুদ্ধ মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় ছিল। এটি তাদের মনোবল বৃদ্ধি করে এবং ইসলামের প্রসারের পথ সুগম করে। এই যুদ্ধের পর মক্কার কুরাইশরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে আরও তীব্রভাবে শত্রুতা পোষণ করতে শুরু করে।[২৪৬]

উহুদের যুদ্ধ

চিত্রকর্মটি তৃতীয় হিজরী সনে সংঘটিত উহুদের যুদ্ধে নবী মুহাম্মাদ এবং মুসলিম বাহিনীকে চিত্রিত করে। এই চিত্রটি ১৫৯৪ সালের দিকে সিয়ার-ই নবী গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

মক্কার কাফিররা বদর যুদ্ধে মুসলিমদের কাছে পরাজিত হয়েছিল। এই পরাজয়ের ক্ষোভ তাদের মনে গেঁথে ছিল। কারণ, এই যুদ্ধের পর শামের বাণিজ্যপথ মুসলিমদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে এবং মুসলিমরা আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। মক্কার কাফেররা আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে দ্বিতীয় যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ২০০ জন অশ্বারোহী, ৭০০ জন বর্মধারী সহ মোট ৩,০০০ জনের একটি সৈন্য তৈরি করা হয় এবং যাত্রা শুরু করা হয়।[২৫১] মুহাম্মাদ এর চাচা আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব তখন মক্কায় অবস্থান করছিলেন। তিনি মক্কার যুদ্ধের প্রস্তুতি সম্পর্কে একটি চিঠি লিখে মদিনায় পাঠান। চিঠি পেয়ে মুহাম্মাদ যুদ্ধ কীভাবে পরিচালনা করা হবে তা নিয়ে সাহাবীদের সাথে আলোচনা শুরু করেন এবং এরপর মক্কা বাহিনীর মোকাবিলায় সৈন্য বাহিনী প্রস্তুত করা হয়।[২৫১]

মক্কার সৈন্যবাহিনী, ৬২৫ সালের ১১ মার্চ মক্কা থেকে মদিনার দিকে যাত্রা শুরু করে। এই আক্রমণে মক্কাবাসীর প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল গত বছর সংঘটিত বদর যুদ্ধে তাদের ক্ষয়ক্ষতির প্রতিশোধ নেওয়া এবং মুসলিমদের ক্রমবর্ধমান শক্তিকে দমন করা। মুসলিমরাও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। কিছুক্ষণ পর দুই বাহিনী উহুদ পর্বতের পাদদেশে ও সমতলে মুখোমুখি হয়।[২৫২] মুহাম্মাদ উহুদ পর্বতের একটি সংকীর্ণ গিরিখাতের দুই পাশে তাঁর তীরন্দাজদের মোতায়েন করেন।[২৫২] এই কৌশলের মাধ্যমে তিনি মক্কা বাহিনীর উহুদ পর্বতের চারপাশে ঘুরে মুসলিমদের উপর সম্ভাব্য আক্রমণের সম্ভাবনা রোধ করতে চেয়েছিলেন। তিনি তাঁর তীরন্দাজদের নির্দেশ দেন, "নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তোমরা তোমাদের অবস্থান ত্যাগ করবে না!" মুসলিমদের সৈন্যবাহিনীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১০০০ জন।[২৫২]

উহুদ শহীদস্থল থেকে উহুদ পর্বতের বর্তমান সময়ের দৃশ্য। মুসলমানদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হওয়া উহুদের যুদ্ধ এই পর্বত ও এর আশেপাশে সংঘটিত হয়েছিল।

উহুদ পর্বতের পাদদেশে দুই পক্ষের বাহিনী মুখোমুখি হয়।[২৫৩] যুদ্ধের শুরুতে মুসলিমদের জোরালো আক্রমণের মুখে মক্কার বাহিনী পিছু হটতে শুরু করে। এই দৃশ্য দেখে, মুসলিম বাহিনীর ধনুর্ধররা ভেবে নেয় যে যুদ্ধ শেষ হয়েছে এবং তারা তাদের অবস্থান ত্যাগ করে যুদ্ধক্ষেত্রে ফেলে যাওয়া মক্কার বাহিনীর সম্পদ সংগ্রহ করতে শুরু করে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে খালিদ বিন ওয়ালিদ তার বাহিনী নিয়ে ধনুর্ধরদের ফাঁকা অবস্থান দিয়ে মুসলিম বাহিনীর উপর আক্রমণ করে।[২৫৩] এই আক্রমণে মুসলিম বাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং পিছু হটতে শুরু করে। পিছু হটতে থাকা মক্কার বাহিনী এই সুযোগে যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে এসে মুসলিম বাহিনীর উপর আক্রমণ করে। মুসলিম বাহিনী উহুদ পর্বতের দিকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পর্বতে আশ্রয় নেওয়া মুসলিম বাহিনী তীরন্দাজদের সাহায্যে মক্কার বাহিনীকে পিছু হটাতে সক্ষম হয়। মক্কার বাহিনীও নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করতে ব্যর্থ হয় এবং যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করে।[২৫৩]

উহুদের যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর ৭০ জন সৈনিক শহীদ হয় এবং মক্কার বাহিনীর ৪৪-৪৫ জন সৈনিক নিহত হয়।[২৫২] এই যুদ্ধে মুহাম্মাদ গুরুতর আহত হন এবং তার চাচা হামযা সহ আরও অনেক মুসলিম শহীদ হন। মক্কার বাহিনীর নেতা আবু সুফিয়ান এই যুদ্ধকে বদর যুদ্ধের প্রতিশোধ হিসেবে ঘোষণা করে।[২৫১]

খন্দক যুদ্ধ

খন্দকের যুদ্ধের মানচিত্র

৬২৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ শে মার্চ, ১০,০০০ সৈন্য এবং ৬০০ অশ্বারোহী নিয়ে মদিনা আক্রমণ করতে আসে মক্কার বাহিনী।[২৫৪][২৫৫][২৫৬] মুহাম্মাদের নেতৃত্বে ৩০০০ পদাতিক সৈন্য নিয়ে মদিনাবাসী শহরে প্রতিরক্ষামূলক যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। সালমান আল-ফারসির পরামর্শ অনুযায়ী শহরের কিছু কৌশলগত স্থানে খন্দক (পরিখা) খনন করা হয়, যার ফলে এই যুদ্ধ খন্দকের যুদ্ধ নামে পরিচিতি লাভ করে। এক মাস ধরে চলা এই অবরোধ শেষ পর্যন্ত ঠান্ডা আবহাওয়া এবং ঝড়ের কারণে প্রত্যাহার করা হয়, যা মদিনাবাসীর বিজয় হিসেবে চিহ্নিত হয়।[২৫৭][২৫৮]

খনন করা খন্দক, মদিনার প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাথে মিলিত হয়ে, দুই পক্ষকে এক অচলাবস্থায় আটকে রাখে এবং বাহিনীর অশ্বারোহী ও উট-বহরকে অকার্যকর করে তোলে। মুসলিমদের মিত্র মদিনার ইহুদি গোত্র বনু কুরাইজাকে শহরের দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ করার জন্য, অর্থাৎ মুসলমানদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করার জন্য প্ররোচিত করে পৌত্তলিকরা। কুরাইজাদের এই পদক্ষেপ মদিনা চুক্তির প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ চুক্তি অনুযায়ী, বাইরে থেকে মদিনা শহরে আক্রমণ হলে, শহরের সকল গোত্র ঐক্যবদ্ধ হয়ে শহরকে একসাথে রক্ষা করবে। কিন্তু মুহাম্মাদের কূটনীতি এই ঐক্যকে ভেঙে ফেলে এবং মিত্ররা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। মুসলিমরা মাত্র ১-৫ জন হতাহতের শিকার হলেও, অপরপক্ষ হারায় ১০ জন সৈন্য।[২৫৪][২৫৫][২৫৬]

হুদাইবিয়ার সন্ধি

নবী মুহাম্মাদ ও সাহাবীরা যখন কাবা জিয়ারতের জন্য মক্কার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন, তখন মক্কাবাসী তাদের শহরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। নিষিদ্ধ মাস চলমান থাকায় যুদ্ধও তাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই তারা আপসের প্রস্তাব দেয়। ৬২৮ সালে হুদায়বিয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে ১০ বছরের জন্য যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।[২৫৯] এই চুক্তির মূল বিষয়বস্তু ছিল-

১০ বছরের জন্য কোন পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে না। এই সময়ের মধ্যে কেউ কারো জান ও মালের ক্ষতি করতে পারবে না। ঐ বছর মুসলমানরা কাবা জিয়ারত না করে ফিরে যাবে। পরের বছর মুসলমানরা তিন দিনের বেশি না থেকে কাবা জিয়ারত করতে পারবে।

হুদায়বিয়ার সন্ধি ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই সন্ধি মুসলিমদের জন্য একটি বড় সাফল্য ছিল কারণ এটি ইসলামী রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রদান করে। এই সন্ধির ফলে মুসলিমদের মক্কা জয়ের পথও সুগম হয়।[২৬০]

ইসলামে আমন্ত্রণপত্র

হুদাইবিয়ার সন্ধি (৬২৮ খ্রিস্টাব্দ) সম্পন্ন হওয়ার পর, মুহাম্মাদ আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্রের শাসকদের কাছে ইসলামে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠান। এই চিঠিগুলো ছিল ইসলামের বাণী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই বিষয়ে কুরআনে বেশ কিছু আয়াত রয়েছে। যেমন:

বলুন, হে মানুষ! আমি তোমাদের সকলের জন্য আল্লাহর রসূল, (সেই আল্লাহর) যিনি আকাশসমূহ আর পৃথিবীর রাজত্বের মালিক, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন ইলাহ নেই, তিনিই জীবিত করেন আর মৃত্যু আনেন। কাজেই তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি ও তাঁর প্রেরিত সেই উম্মী বার্তাবাহকের প্রতি যে নিজে আল্লাহর প্রতি ও তাঁর যাবতীয় বাণীর প্রতি বিশ্বাস করে, তোমরা তাঁর অনুসরণ কর যাতে তোমরা সঠিক পথ পেতে পার। [২৬২]
হে রসূল! আপনার প্রতিপালকের নিকট থেকে যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা প্রচার কর, যদি না কর তাহলে আপনি তাঁর বার্তা পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করলে না। মানুষের অনিষ্ট হতে আল্লাহ্ই আপনাকে রক্ষা করবেন, আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে কক্ষনো সৎপথ প্রদর্শন করবেন না। [২৬৩]
আমি আপনাকে সমগ্র মানবমন্ডলীর জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। [২৬৪]

ইসলামী ঐতিহ্য অনুসারে, মুহাম্মাদের মদিনা জীবনে অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের চিঠি পাঠানোর বেশ কিছু উদাহরণ রয়েছে। চিঠি প্রাপকদের মধ্যে রয়েছে পূর্ব রোমান (বাইজেন্টাইন) সম্রাট হেরাক্লিয়াস (৬১০-৬৪১), সাসানি সম্রাট দ্বিতীয় খসরু (৫৯০-৬২৮), আবিসিনিয়ার রাজা নাজাশি, মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ার পিতৃপতি মুকাওকিস, সিরিয়ায় শাসনকারী আরব বংশোদ্ভূত খ্রিস্টান গাসানীরা, ইয়েমেন, ওমান, বাহরাইন সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের শাসক।[২৬৫] এই চিঠিগুলোর সত্যতা নিয়ে শিক্ষাবিদদের মধ্যে বিতর্ক থাকলেও,[২৬৬] কতিপয় পক্ষ এগুলোকে "ভুয়া" বলে দাবি করলেও,[২৬৭] জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষাইসলামী সাহিত্যের অধ্যাপক ইরফান শহীদ মনে করেন যে মুহাম্মাদ কর্তৃক প্রেরিত এই চিঠিগুলোকে "ভুয়া" বলে উড়িয়ে দেওয়া "অন্যায়"। তিনি বাইজেন্টাইন সম্রাট হেরাক্লিয়াস (৬১০-৬৪১) কে লেখা চিঠিটির ঐতিহাসিকতা প্রমাণ করার জন্য সাম্প্রতিক গবেষণা উল্লেখ করেছেন।[২৬৮]

মুহাম্মাদ কর্তৃক তাঁর সমসাময়িক বাইজেন্টাইন সম্রাট হেরাক্লিয়াসের কাছে প্রেরিত চিঠি। (পুনঃপ্রকাশ: মাজিদ আলী খান, মুহাম্মাদ: দ্য ফাইনাল মেসেঞ্জার, ইসলামিক বুক সার্ভিস, নতুন দিল্লি, ১৯৯৮)
মুকাউকিসের কাছে মুহাম্মাদের চিঠি
বাহরাইনের শাসক মুনজিরের নিকট প্রেরিত চিঠি

ইসলামী ইতিহাস অনুসারে, ৬২৮ সালে, নবী মুহাম্মাদ বাইজেন্টাইন সম্রাট হেরাক্লিয়াসের কাছে একটি চিঠি পাঠান। এই চিঠিতে তিনি সম্রাটকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আহ্বান জানান। চিঠিটি পৌঁছে দেওয়ার জন্য দাহিয়া কালবী নামে একজন সাহাবিকে দূত হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।[২৬৯] ঐ সময়ে, সম্রাট হেরাক্লিয়াস সাসানির রাজা দ্বিতীয় খসরুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করে জেরুজালেমে ধর্মীয় পরিদর্শনে ছিলেন।[২৬৯] দাহিয়া কালবীর মূল দায়িত্ব ছিল চিঠিটি বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের বুসরা প্রদেশের গভর্নরের কাছে হস্তান্তর করা। কিন্তু সম্রাটের ফিলিস্তিনে উপস্থিতির খবর পেয়ে তাকে সম্রাটের সামনে উপস্থিত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।[২৭০] ইতিহাসে বলা হয়েছে যে দাহিয়া কালবী সরাসরি সম্রাট হেরাক্লিয়াসের সাথে দেখা করেছিলেন। ঐ সময়ে, মক্কার কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান ব্যবসার জন্য গাজায় অবস্থান করছিলেন। সম্রাটের আদেশে তিনিও এই সাক্ষাৎকারে উপস্থিত ছিলেন। হেরাক্লিয়াস নবী মুহাম্মাদ এর চিঠিটি সম্মানের সাথে গ্রহণ করেন। ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তিনি আরও জানতে আগ্রহী ছিলেন। তবে, তিনি স্পষ্টভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি। নবী মুহাম্মাদ এর বাইজেন্টাইন সম্রাট হেরাক্লিয়াসের কাছে চিঠি পাঠানো একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনা। এটি ইসলামের প্রসারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল। এই ঘটনাটি প্রমাণ করে যে নবী মুহাম্মাদ শুধুমাত্র আরবের একজন নেতা ছিলেন না, বরং তিনি একজন বিশ্ব নেতা হিসেবে তার ভূমিকা পালন করছিলেন।[২৭০] মুসলিম ঐতিহাসিকদের দ্বারা সংগ্রহ করা চিঠির নিম্নলিখিত অনুবাদ:

রহমান ও রহিম আল্লাহর নামে।

আল্লাহর বান্দা ও রাসুল, মুহাম্মাদের পক্ষ হতে, রোমের সম্রাট হেরাক্লিয়াসের উদ্দেশ্যে...
যারা হেদায়েতের পথ অনুসরণ করে তাদের জন্য সালাম! আমি আপনাকে ইসলামে দাওয়াত জানাচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, যাতে আপনি মুক্তি পেতে পারেন এবং আল্লাহ আপনাকে এর দ্বিগুণ প্রতিদান দেবেন। যদি আপনি আমার এই দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেন, তাহলে আপনার সমস্ত প্রজার পাপ তোমার কাঁধে বইতে হবে।

বল, ‘হে আহলে কিতাব! এমন এক কথার দিকে আসো, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই, তা এই যে, আমরা আল্লাহ ভিন্ন অন্য কারো ‘ইবাদাত করব না এবং কোন কিছুকে তাঁর শরীক করব না এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমাদের মধ্যে কেউ কাউকে রব হিসেবে গ্রহণ করব না। তারপরও যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে বলে দাও, তোমরা এ বিষয়ে সাক্ষী থাক যে, আমরা আত্মসমর্পণকারী। (সূরা আল-ইমরান, আয়াত ৬৪)

ইরফান শহীদ দাবি করেন যে, বাইজেন্টাইন সম্রাট হেরাক্লিয়াসকে পাঠানো মুহাম্মাদের চিঠির চারপাশে তৈরি করা ইতিবাচক উপাখ্যানগুলো খুব কমই বিশ্বাসযোগ্য।[২৬৮] অন্যদিকে, ইসলামী গবেষক মোহাম্মদ হামিদুল্লাহ এই চিঠির সত্যতা সমর্থন করেন এবং পরবর্তীতে একটি রচনায় মূল চিঠি বলে দাবি করা লেখাটিকে পুনর্গঠন করেন।[২৭২][২৭৩]

এছাড়াও, এই চিঠিগুলো অন্যান্য শাসকদের কাছেও পাঠানো হয়েছিল। কিছু শাসক, যেমন মিশরের শাসক, এই চিঠিগুলোকে সহনশীলতার সাথে গ্রহণ করেছিলেন, অন্যদিকে সাসানি সাম্রাজ্যের শাসকের মতো কিছু শাসক সহিংসভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।[২৬৫][২৭৪]

মক্কা বিজয়

হুদাইবিয়ার সন্ধি মক্কার কুরাইশদের একটি শাখা লঙ্ঘন করার পর, মুহাম্মাদ ১০,০০০ সৈন্যের একটি বিশাল মুসলিম বাহিনী গঠন করে মক্কা অবরোধ করেন। মক্কার নেতা আবু সুফিয়ান এরপর মুহাম্মাদের সাথে দেখা করে মুসলিম হওয়ার ঘোষণা দেন।[২৭৫] মুহাম্মাদ আবু সুফিয়ান সহ অনেক মক্কাবাসীকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দেন যারা তার বাড়িতে আশ্রয় নেবে। ঐ সময় মক্কায় অবস্থিত মুহাম্মাদের চাচা আব্বাসও মক্কাবাসীদের একই রকম কথা বলেন; তারা মসজিদুল হারামের ভেতরে বা তাদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়।[২৭৫] মুসলিম বাহিনী চারদিক থেকে একই সাথে মক্কায় প্রবেশ করে।[২৭৬] ১১ জানুয়ারী ৬৩০ সালে, খুব অল্প সংখ্যক আক্রমণ ছাড়া রক্তপাতহীনভাবে মুসলিমরা মক্কা বিজয় করে। মক্কায় প্রবেশ করার সাথে সাথে মুহাম্মাদ আবু সুফিয়ানকে জানিয়ে কয়েকজন ব্যতীত অন্য কাউকে স্পর্শ করা হবে না বলে ঘোষণা করেন এবং সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। এরপর তিনি ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করে রাখা কাবার দিকে এগিয়ে যান। সূরা ইসরা-এর ৮১তম আয়াত পাঠ করে তিনি মূর্তিগুলোকে একের পর এক ভেঙে ফেলেন। বিলাল হাবেশী আযান দেন এবং এরপর মুহাম্মাদ তার সঙ্গী মুসলিমদের সাথে কাবা তাওয়াফ করেন। বিজয়ের পর কিছু মক্কাবাসী দলবদ্ধভাবে মুহাম্মাদের কাছে এসে মুসলিম হয়েছিল। মক্কা বিজয়ের পর ইসলাম ধর্ম আরব উপদ্বীপে আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করে।[২৭৭]

আরব বিজয়

মক্কা বিজয়ের পর, মুহাম্মাদ হাওয়াজিন গোত্রের মিত্রসংঘের সামরিক হুমকির সম্মুখীন হন। হাওয়াজিন ছিল মক্কার পুরোনো শত্রু এবং মক্কার প্রতিপত্তি হ্রাসের কারণে মক্কা বিরোধী নীতি গ্রহণ করে।[২৭৮] মুহাম্মাদ হুনাইনের যুদ্ধে হাওয়াজিন এবং সাকিফ গোত্রকে পরাজিত করেন।[২৭৯]

একই বছর, মুহাম্মাদ উত্তর আরবে একটি অভিযান পরিচালনা করেন। মুতার যুদ্ধে পূর্ববর্তী পরাজয় এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে শত্রুতা প্রদর্শনের অভিযোগের কারণে তিনি এই অভিযান চালান। তিনি ৩০,০০০ সৈন্য সমাবেশ করেন, আবদুল্লাহ ইবনে উবাই দ্বিতীয় দিনে মুহাম্মাদ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে অর্ধেক সৈন্যকে ফিরিয়ে নিয়ে যান। মুহাম্মাদ তাবুক-এ শত্রু বাহিনীর সাথে যুদ্ধে না জড়ালেও, এই অঞ্চলের কিছু স্থানীয় নেতাদের আত্মসমর্পণ গ্রহণ করেন।[২৭৯][২৮০]

পূর্ব আরবে অবশিষ্ট সকল মূর্তি ধ্বংস করার নির্দেশও তিনি দেন। পশ্চিম আরবে মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধকারী শেষ শহর ছিল তায়েফ। মুহাম্মাদ তাদের আত্মসমর্পণ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান যতক্ষণ না তারা ইসলাম গ্রহণ করে এবং পুরুষরা দেবী লাত-এর মূর্তি ধ্বংস করতে সম্মত হয়।[২৮১][২৮২][২৮৩]

তাবুক যুদ্ধের এক বছর পর, বনু সাকিফ মুহাম্মাদ-এর কাছে আত্মসমর্পণ করতে এবং ইসলাম গ্রহণ করতে দূত পাঠায়। অনেক বেদুঈন তাদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে এবং যুদ্ধের লভ্যাংশ ভাগ করে নেওয়ার জন্য মুহাম্মাদ-এর কাছে আনুগত্য স্বীকার করে। তবে, বেদুঈনরা ইসলামী ব্যবস্থার সাথে পরিচিত ছিল না এবং তারা তাদের স্বাধীনতা, অর্থাৎ তাদের নিজস্ব নীতিমালা এবং পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চেয়েছিল। মুহাম্মাদ-এর "মদিনার শাসন গ্রহণ করা, মুসলমান এবং তাদের মিত্রদের আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকা এবং মুসলমানদের ধর্মীয় কর যাকাত প্রদান করা"-এর জন্য একটি সামরিক ও রাজনৈতিক চুক্তির প্রয়োজন ছিল।[২৮৪]

বিদায়ী ভাষণ ও মৃত্যু

১৫৯৫ সালের দিকে সিয়ার-ই নবী-তে 'মুহাম্মাদের ওফাত'-এর চিত্রায়ণ।

কিছু ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, মুহাম্মাদ-কে বিষ প্রদান করে হত্যা করা হয়েছিল।[২৮৫] ৬২৯ সালে, খায়বারের বিজয়ের পর, খায়বারের এক ইহুদি নারী, যার নাম ছিলো জয়নব, তার নিহত আত্মীয়দের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মুহাম্মাদ-কে বিষাক্ত খাসির মাংস পরিবেশন করে। মুহাম্মাদ প্রথম খাবার খাওয়ার সাথে সাথেই বুঝতে পারেন যে মাংসটি বিষাক্ত এবং তিনি তার সাহাবীদের সতর্ক করেন। তবে, সাহাবী বিশর ইবনে বেরা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। জয়নব পরবর্তীতে ইসলাম গ্রহণ করে ক্ষমা পান, তবুও মুহাম্মাদ দীর্ঘদিন ধরে এই ঘটনার কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।[২৮৬]

৬৩২ সালের মার্চ মাসে (৯ই জিলহজ্জ), মুহাম্মাদ তার বিদায়ী হজ্জ পালন করেন। এই হজ্জের সময়, তিনি আরাফাত পর্বতের রহমত পাহাড়ে ১০০,০০০ এরও বেশি মুসলমানের সমাবেশে 'বিদায়ী ভাষণ' প্রদান করেন। হজ্জ থেকে মদিনায় ফিরে আসার পর, মুহাম্মাদ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার জীবনের শেষ মুহূর্তে তার স্ত্রী আয়িশা এবং তার কন্যারা তার পাশে ছিলেন। বর্ণনা অনুসারে, তিনি মুসলিমদের উদ্দেশ্যে তার শেষ বাণীতে বলেছিলেন, "তোমাদের হাতে থাকা দাসদের প্রতি সদয় আচরণ করো, নামাজের প্রতি মনোযোগ দাও এবং নিয়মিত আদায় করো।"[২৮৭] তিনি আয়িশার কোলে মাথা রেখে শাহাদাহ পাঠ করেন। তার মুখ থেকে বেরিয়ে আসা শেষ বাক্যটি ছিল "আল্লাহুম্মা আর-রাফিকুল 'আলা..." (যার অর্থ "সর্বোচ্চ বন্ধুর জন্য!"[২৮৮])। ৮ই জুন ৬৩২ সালে মদিনায় মুহাম্মাদ শাহাদৎবরণ করেন।[২৮৯] তাকে মসজিদে নববীর পাশে, হযরত আয়িশার ঘরের পাশে সমাহিত করা হয়।

মুহাম্মাদ এর মৃত্যুর পর, সাহাবীরা নবীজির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু আবু বকর-কে নতুন নেতা (খলিফা) হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেন। মসজিদে নববীতে তার হাতে বায়'আত (আনুগত্যের শপথ) গ্রহণ করে তাকে প্রথম খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।[২৯০] কিছুদিন পর, বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে ইরতিদাদ (ধর্মত্যাগ) এর ঘটনা ঘটতে থাকে। খলিফা আবু বকর সৈন্য নিয়ে এই বিদ্রোহী গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালান এবং রিদ্দা যুদ্ধ নামে পরিচিত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয়।[২৯১]

সমাধি

মদিনার (সৌদি আরব) মসজিদে নববীতে অবস্থিত সবুজ গম্বুজ যেখানে মুহাম্মাদ-এর কবর রয়েছে।

হযরত মুহাম্মাদ-কে যেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল, তাঁর স্ত্রী আয়েশার ঘরেই তাঁকে দাফন করা হয়।[২৯২][২৯৩] উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ প্রথমের শাসনামলে মসজিদে নববী সম্প্রসারণ করা হয় এবং মুহাম্মাদের সমাধি (রওজা মোবারক) স্থানটিকেও এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[২৯৪] ত্রয়োদশ শতকে মামলুক সুলতান মনসুর কালাউন নবী মুহাম্মাদের সমাধির উপর সবুজ গম্বুজটি নির্মাণ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে ষোড়শ শতকে উসমানীয় সুলতান সুলতান সুলাইমান গম্বুজটির রঙ সবুজে পরিবর্তন করেন।[২৯৫] নবী মুহাম্মাদ এর কবরের ঠিক পাশে তাঁর সাহাবী এবং প্রথম দুই খলিফা আবু বকরউমর ইবনুল খাত্তাব-কে দাফন করা হয়েছে।[২৯২][২৯৬][২৯৭]

১৮০৫ সালে সৌদ বিন আবদুল-আজিজ মদিনা দখল করলে মুহাম্মাদের সমাধি থেকে সোনা ও রত্ন খচিত সাজসজ্জা সরিয়ে ফেলা হয়।[২৯৮] সৌদের অনুসারী ওয়াহাবিরা মদিনার প্রায় সকল গম্বুজ ভেঙ্গে দেয় (মুহাম্মাদের সমাধি গম্বুজ ব্যতীত) যাতে মানুষ সেগুলোর পূজা না করে।[২৯৮] সেই হামলায় নিছক ভাগ্যের জোরে নবী মুহাম্মাদ এর রওজা মোবারক রক্ষা পায়।[২৯৯] ১৯২৫ সালে আবার যখন সৌদি মিলিশিয়ারা মদিনা পুনর্দখল করে, তখন তারা শহরটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়।[৩০০] ওয়াহাবি ইসলামি ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কবর চিহ্নিত না করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার রীতি রয়েছে।[২৯৯] যদিও সৌদিরা এই রীতিটি অনুসরণ করে না, কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেক হাজী এই রীতি পালন করতে মদিনায় আসে এবং অনেক হাজী এখনও সমাধিতে আয়াত পাঠ করতে থাকেন।[৩০১]

অলৌকিকত্ব

মুহাম্মাদকে আদরিত করা বাক্যের সংখ্যার মতো, মুজিজা বা অলৌকিক ঘটনার সংখ্যাও শতাব্দী ধরে ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সূরা ইসরা-এর ১ম আয়াতে উল্লেখিত ইসরা ও মিরাজ ঘটনাটি, যা সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে ঘটেনি, বাদ দিলে, কুরআনে সরাসরি মুহাম্মাদের ব্যক্তিগতভাবে করা কোন মুজিজার উল্লেখ নেই। তবে কিছু আয়াতের ব্যাখ্যা এবং হাদিস থেকে কিছু মুজিজার কথা জানা যায়।[৩০২] বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হাদিসের বর্ণনা থেকে মুহাম্মাদের সাথে সম্পর্কিত প্রচুর সংখ্যক মুজিজার কথা জানা যায়। তবে, এসব হাদিস থেকে বর্ণিত অসংখ্য মুজিজার বর্ণনা কিছু ইসলামী গোষ্ঠী দ্বারা সন্দেহের সাথে দেখা হয়। অন্যদিকে, কিছু ইসলামী পণ্ডিত মনে করেন, মুহাম্মাদ অন্য নবীদের মতো স্পষ্ট মুজিজা দেখাননি, বরং তার একমাত্র মুজিজা হলো কুরআন, যা অনন্য এবং সকল ত্রুটি থেকে মুক্ত।[৩০৩]

জন্মের রাতের অলৌকিক ঘটনা

ইসলামী তথ্যসূত্র অনুসারে, মুহাম্মাদের জন্মের পূর্বে সূর্যোদয়ের আগে কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটেছিল: কা'বার বড় বড় মূর্তি নিজে থেকেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল; সাসানি সাম্রাজ্যের শাসক প্রথম খসরু পারস্যের রাজধানীতে অবস্থিত তার প্রাসাদের স্তম্ভগুলো ভেঙে পড়েছিল; হাজার বছর ধরে জ্বলন্ত জরাথুস্ট্রীয়দের পবিত্র আগুন নিভে গিয়েছিল; পারস্যের অগ্নিপূজারীদের পবিত্র মনে করা সাওয়া সরোবর মাটিতে ধসে গিয়েছিল; শতাব্দী ধরে শুকনো সেমাওয়া সরোবর পানিতে ভরে উঠেছিল; সেই রাতে আকাশে একটি অত্যন্ত উজ্জ্বল নক্ষত্র উদিত হয়েছিল, এমনকি কিছু ইহুদি পণ্ডিত এই নক্ষত্রের মাধ্যমে মুহাম্মাদের জন্মের সংবাদ পেয়েছিলেন।[৩০৪][৩০৫]

চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ঘটনা

১৬শ শতাব্দীর এই পার্সিয়ান মিনিয়েচারে (ক্ষুদ্র চিত্রশিল্পে) মুহাম্মাদ চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করার দিকে ইঙ্গিত করছেন।

চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার মুজিজা হলো ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি বিশ্বাস, যা মুহাম্মাদ-এর প্রদর্শিত অন্যতম মহান মুজিজা হিসেবে বিবেচিত। কুরআনের সূরা ক্বামার-এর প্রথম আয়াত এবং সংশ্লিষ্ট হাদিসসমূহের ভিত্তিতে এই বিশ্বাস প্রচলিত। কুরআনে বলা হয়েছে, "ক্বিয়ামত আসন্ন। চন্দ্র বিদীর্ণ হয়েছে।" (সূরা কামার, আয়াত ১)[৩০৬] অনেক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, মুহাম্মাদ একবার একদল মক্কাবাসীর কাছে চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করে দেখান।[৩০৭] তিনি তার আঙুল দিয়ে ইশারা করলে চাঁদ দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর আবার চাঁদ একত্রিত হয়ে যায়।[৩০৮]

এক রাতে, মক্কার কিছু মূর্তিপূজক মুহাম্মাদের কাছে এসে তাকে চাঁদকে দুই ভাগ করার জন্য অনুরোধ করল। তারা বলেছিল যে যদি তিনি এটি করতে পারেন, তাহলে তারা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে।[৩০৭] মুহাম্মাদ সারা রাত ভাবলেন এবং আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন। এরপর তিনি তার তর্জনী চাঁদের দিকে তুলে ধরলেন এবং চাঁদকে দুই ভাগে বিভক্ত করে দিলেন। কয়েক সেকেন্ডের জন্য চাঁদ দুই টুকরো হয়ে আকাশে ঝুলন্ত ছিল, তারপর আবার একত্রিত হয়ে গেল। এই অলৌকিক ঘটনাটি স্বচক্ষে দেখার পরও, মক্কার মূর্তিপূজকরা এটিকে জাদু বা বর্ম বলে অভিহিত করে মুহাম্মাদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে অস্বীকৃতি জানায়।[৩০৯]

পূর্ণিমা চাঁদ দুই টুকরো হয়ে, এক টুকরো মক্কার একটি পাহাড়ের পেছনে এবং অন্য টুকরো পাহাড়ের সামনে নেমে আসার পর আবার আকাশে মিলিত হওয়ার ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। আলেম, হাদিস সমালোচক এবং ইসলামী দার্শনিকদের মধ্যে এই ঘটনার ব্যাখ্যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলে আসছে। কিছু গবেষক মনে করেন, এই ঘটনার বর্ণনা যে হাদিসগুলোতে পাওয়া যায়, সেগুলো দুর্বল, অবিশ্বস্ত এবং বানোয়াট।[৩১০][৩১১] অন্যদিকে, ইসলামী দার্শনিকদের মতামত হলো কুরআনের সূরা ক্বামার এর আয়াতগুলো রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ আসলে চাঁদ দুই টুকরো হওয়ার ঘটনাটি ঘটেনি। কিছু লোক মনে করেন, এটি একটি দৃষ্টিভ্রম ছিল। আবার কিছু তাফসিরকারী মনে করেন, আয়াতে বর্ণিত বিভাজনটি ভবিষ্যতে কিয়ামতের সময় ঘটবে।

ইসরা ও মিরাজের ঘটনা

কুব্বাতুস সাখরা কুরআনের আয়াতগুলো সেই স্থানকে নির্দেশ করে যেখান থেকে মুসলমানরা বিশ্বাস করে যে, নবী মুহাম্মাদ সপ্ত আসমানে আরোহণ করেছিলেন। [৩১২]

মুহাম্মাদ-এর হিজরতের দেড় বছর আগে ইসরা ও মিরাজের ঘটনা ঘটে বলে মনে করা হয়।[৩১৩] মুসলিমরা সাধারণত ইসরা কে মক্কা থেকে জেরুসালেম পর্যন্ত মুহাম্মাদ-এর ভ্রমণ এবং মেরাজকে জেরুসালেম থেকে সপ্ত আসমান পর্যন্ত তাঁর উর্ধ্বারোহণ হিসেবে বিশ্বাস করেন। এই ঘটনা অনুসারে, এক রাতে মুহাম্মাদ জিবরাঈল-এর সঙ্গে বোরাক নামক এক বাহনে চড়ে মসজিদুল আকসায় যান। সেখানে তিনি ইব্রাহিম, মুসা, ঈসা এবং অন্যান্য নবীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি সিদরাতুল মুনতাহা (সপ্তম আসমানের সর্বোচ্চ স্তর) পর্যন্ত আরোহণ করেন। সেখানে তিনি আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ করেন, জান্নাতজাহান্নাম অবলোকন করেন এবং তারপর নিজগৃহে ফিরে আসেন। সুন্নি বিশ্বাস অনুযায়ী, এই ভ্রমণের সময়, অন্যান্য বিধানের পাশাপাশি, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়েছিল। সুন্নি বিশ্বাস অনুযায়ী, মুহাম্মাদ এই ভ্রমণটি শরীররুহ দিয়ে করেছিলেন। অন্যদিকে, শিয়া বিশ্বাস অনুযায়ী এই ভ্রমণ নবী মুহাম্মাদ শুধুমাত্র রুহ দিয়ে করেছিলেন।[৩১৪]

মেরাজের বর্ণনা অনুযায়ী, বোরাক নামক বাহন আরোহণ করে সপ্ত আসমান ভ্রমণের সময় মুহাম্মাদ বিভিন্ন ফেরেশতার সাথে সাক্ষাৎ করেন। জরথুস্ত্রীয় সাহিত্য এবং পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে রচিত মিরাজনামাগুলোর মধ্যে কিছু সাদৃশ্য রয়েছে।

বর্ণনা অনুসারে, মুহাম্মাদ মেরাজ থেকে ফিরে এসে মক্কার লোকদের কাছে তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তার বন্ধু আবু বকর তাকে বিশ্বাস করলেও, কুরাইশরা তাকে মিথ্যাবাদী বলে অভিযুক্ত করে। তারা তাকে যদি সত্যিই মেরাজে গিয়ে থাকেন তবে মসজিদুল আকসা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করতে বলেন। তখন আল্লাহর ইচ্ছায় মসজিদুল আকসার দৃশ্য মুহাম্মাদের চোখের সামনে এসে উপস্থাপিত হয়। তিনি মসজিদের দরজা, জানালা এবং অন্যান্য বিশদ বিবরণ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন। এমনকি, তিনি আরও এক ধাপ এগিয়ে কুরাইশদের বলেন যে, মিরাজের সময় তিনি যে কুরাইশি ব্যবসায়ীদের কাফেলা দেখেছিলেন, তারা পরের দিন নির্দিষ্ট সময়ে এসে পৌঁছাবে। কুরাইশিরা অবাক হয়ে দেখে যে, ঠিক মুহাম্মাদ যে সময় বলেছিলেন, ঠিক সেই সময়ই কাফেলাটি এসে পৌঁছায়। অন্য কিছু বর্ণনা অনুসারে, কাফেলাটি আসলে এক ঘন্টা দেরিতে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু, আল্লাহ্ তাআলার বিশেষ ইচ্ছায় সূর্যোদয় এক ঘন্টা দেরিতে ঘটে এবং মুহাম্মাদের ভবিষ্যদ্বাণী সঠিক প্রমাণিত হয়। এই ঘটনা মুহাম্মাদের নবুয়তের সত্যতার আরও একটি প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়। মেরাজের মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীকে বিশেষ সম্মান এবং মর্যাদা দান করেছিলেন বলে বিশ্বাস করা হয়।[৩১৫]

কুরআনের সূরা ইসরা এর ১ম আয়াতে মেরাজের বিস্ময়কর ঘটনার কথা বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে-[৩১৬]

এই আয়াতটি মেরাজের ঘটনার বর্ণনা করে, যেখানে মুহাম্মাদকে এক রাতে মক্কার কাবা ঘর থেকে জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই অলৌকিক ভ্রমণে, তিনি আল্লাহর অসংখ্য নিদর্শন দেখেছিলেন।[৩১৭]

মেরাজের বিবরণ হাদিস এবং সীরাতের বইগুলোতে পাওয়া যায়। বলা হয়েছে যে, মুহাম্মাদ ঘুমিয়ে ছিলেন এবং ফেরেশতা জিবরাঈল তাকে বোরাক নামক একটি উড়ন্ত জীবের উপরে করে আল-আকসা মসজিদে নিয়ে যান। সেখানে তিনি অনেক নবী-রাসুলের সাথে সালাত আদায় করেন। এরপর তাকে জান্নাত, জাহান্নাম এবং সিদরাতুল মুনতাহা দেখানো হয়। সিদরাতুল মুনতাহা হলো সপ্তম আকাশে একটি গাছ, যেখানে সৃষ্টির জ্ঞানের সীমা শেষ হয়।

ইসলামী বিশ্বে এই ঘটনার সাথে সম্পর্কিত সবচেয়ে বিতর্কিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো নবী মুহাম্মাদ কি এই ভ্রমণের সময় আল্লাহকে দেখেছিলেন। এই বিষয়ে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। মুহাম্মাদ-এর স্ত্রী আয়িশা এবং সাহাবী ইবন মাসউদআবু হুরায়রার মতে, মুহাম্মাদ আল্লাহ‌কে দেখেননি। তবে, ইবনে আব্বাস, আল-গাজ্জালি, আল-তাফতাজানি, ইমাম রব্বানি, আবু হানিফা, ইমাম আশআরি এবং সাইদ নুরসি এর মত বিখ্যাত ব্যক্তিরা মনে করেন যে মুহাম্মাদ মেরাজে আল্লাহকে দেখেছিলেন।[৩১৮]

এই ঘটনাগুলোর তারিখ নিয়েও বর্ণনাভেদ রয়েছে। ইবনে সাদের মতে, হিজরতের ১৮ মাস আগে রমজান মাসের ২৭ তারিখে কাবার কাছ থেকে মুহাম্মাদ সপ্ত আসমানে উন্নীত হন। অন্যদিকে, হিজরতের আগে রবিউস সানি মাসের ১৭ তারিখে মক্কা থেকে জেরুসালেম যাত্রাটি (ইসরা) সংঘটিত হয়।[৩১৯] সুতরাং, পরবর্তীতে এই দুটি ঘটনাকে একীভূত করা হয়েছে। ইবনে হিশামের বিবরণ অনুসারে, প্রথমে ইসরা এবং তারপরে মেরাজের ঘটনা ঘটে। আবার তিনি এই ঘটনাগুলোকে হযরত খাদিজা এবং আবু তালিবের মৃত্যুর আগে ঘটেছিল বলে বর্ণনা করেছেন। বিপরীতে, আত-তাবারি, মুহাম্মাদ-এর নবুয়তের শুরুর দিকে মক্কা থেকে 'নিম্ন আসমানে' আরোহণের বিবরণটি অন্তর্ভুক্ত করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবন

বিবাহ ও সন্তান

মুহাম্মাদ এবং তার স্ত্রীদের জন্য মসজিদে নববীতে নির্মিত ঘরগুলোর বর্তমান রূপ।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, মুহাম্মাদ ১১ জন স্ত্রীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন এবং তার দুইজন উপপত্নী ছিলেন।[৩২০] ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, রায়হানা বিনতে জায়েদ এবং মারিয়া আল-কিবতিয়া দু'জন ছিলেন উপপত্নী। মুহাম্মাদের দুটি বিবাহ মক্কায় এবং বাকি ১১টি বিবাহ মদিনায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।[৩২১] মদিনায়, মসজিদে নববীর দেয়ালের সাথে সংযুক্ত ঘরগুলো তার স্ত্রীদের জন্য নির্মিত হয়েছিল। মুসলিমরা কুরআনের সূরা আহযাবের ৬নং আয়াতের ভিত্তিতে মুহাম্মাদের স্ত্রীদের "আমাদের মা" হিসেবে উল্লেখ করে। সূরা আহযাবে বলা হয়েছে,[৩২২]

ইসলামী ব্যাখ্যা অনুসারে, মুহাম্মাদের একাধিক বিবাহের পেছনে বেশ কিছু কারণ ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিবাহের মাধ্যমে বিভিন্ন কাবিলার মধ্যে বিচ্ছিন্ন সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা; যুদ্ধে পরাজিত শত্রুদের কন্যাদের সাথে বিবাহের মাধ্যমে তাদের ইসলাম গ্রহণে উৎসাহিত করা; বিভিন্ন কাবিলার সাথে বিবাহের মাধ্যমে রাষ্ট্রের অবস্থান ও শক্তি বৃদ্ধি করা; সুরক্ষাহীন নারীদের জীবনে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা প্রদান করা; বিভিন্ন ধর্মীয় বিধি ও রীতিনীতি ব্যক্তিগতভাবে অনুসরণ করে অন্যদের কাছে তা প্রদর্শন করা। কুরআনের সূরা আহযাব এর ৫০ ও ৫২ নম্বর আয়াত ও সূরা নিসার ৩ নম্বর আয়াতে একাধিক বিবাহের ব্যাপারে মুসলিমদের জন্য সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়েছে।[৩২৩][৩২৪][৩২৫] এই আয়াতগুলো অনুসারে, একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারজন নারীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন। যখন এই আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়েছিল তখন মুহাম্মাদের চারজনের বেশি স্ত্রী ছিলেন। কুরআনের বিশেষ বিধান অনুসারে তার বিদ্যমান বিবাহগুলো বহাল থাকে, তবে নতুন করে আর বিবাহ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।[৩২৬]

বিখ্যাত ইসকটিশ ইতিহাসবিদ ও ধর্মতত্ত্ববিদ উইলিয়াম মন্টগোমারি ওয়াট মনে করেন, মুহাম্মাদের সকল বিবাহ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন ও জোরদার করার নীতির উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল এবং এগুলো সমসাময়িক আরব রীতিনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।[৩২৭]

মুহাম্মাদ এর চারিত্রিক মাধুর্য ও বিশ্বস্ততার কথা শুনে মক্কার সম্মানিত ব্যবসায়ী ধনী ও বিধবা খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ তাঁকে নিজের ব্যাবসায়িক প্রতিনিধি হিসেবে সিরিয়ায় পাঠানোর প্রস্তাব দেন।[৩২৮] মুহাম্মাদ প্রস্তাবে রাজি হলে নিজের ক্রীতদাস মাইসারাকেও তাঁর সঙ্গে পাঠান। এ বাণিজ্যিক সফরে মুহাম্মাদ দ্বিগুণ মুনাফা অর্জন করেন। সফর থেকে ফেরার পর মুহাম্মাদ-এর সততা, বিচক্ষণতা ও মাইসারার বর্ণনা শুনে খাদিজা তাঁকে বিয়ে করার মনস্থ করেন। মুহাম্মাদ-এর কাছে বিবাহের প্রস্তাব দিলে তিনি সম্মত হন এবং চাচাদের তা অবগত করেন। মুহাম্মাদ-এর চাচা হামযা ইবনে আবদুল মুত্তালিব খাদিজা এর পরিবারের কাছে প্রস্তাব নিয়ে যান। উভয় পরিবারের সম্মমিতে তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিশুদ্ধ মতে বিয়ের সময় মুহাম্মাদ এর বয়স ২৫ বছর এবং খাদিজা-এর বয়স ৪০ বছর ছিল।[৩২৯] এই বিবাহ ২৫ বছর স্থায়ী হয় এবং এটি একটি সুখী দাম্পত্য জীবন ছিল। এই সময়ের মধ্যে মুহাম্মাদ অন্য কোন নারীকে বিবাহ করেননি। ৬১৯ সালে খাদিজা এর মৃত্যুর পর মুহাম্মাদ প্রায় ২.৫ বছর বিধব থাকেন।[৩৩০] এরপর সাহাবী উসমান ইবনে মাজউন এর স্ত্রী হাওলা বিনতে হাকিম মুহাম্মাদ কে সাবধানে ঘরের কাজকর্ম দেখাশোনার জন্য সাহায্য করার উদ্দেশ্যে সাওদা বিনতে জামআ এর সাথে বিবাহের পরামর্শ দেন। সাওদা তার স্বামীর মৃত্যুর পর পাঁচ সন্তানকে নিয়ে একা ছিলেন। মুহাম্মাদ এই পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং ৬২১ সালে সাওদা এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[৩৩১] তখন মুহাম্মাদের বয়স ছিল ৫০ বছর এবং সাওদা এর বয়সও মুহাম্মাদের এর চেয়ে বেশি, ৫০-এর কোঠায় ছিল বলে ধারণা করা হয়। ৬২৪ সালে মদিনায় হিজরত করার পর মুহাম্মাদ তার বাগদত্তা আয়িশা এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[৩৩২][৩৩৩] এর আগ পর্যন্ত, সাওদা তিন বছর ধরে মুহাম্মাদের একমাত্র স্ত্রী ছিলেন। মুহাম্মাদের একাধিক বিবাহের জীবন ৫৪ বছর বয়সে, ৬২৪ সালে আয়িশা এর সাথে বিবাহের পর শুরু হয়।[৩৩৩]

মুহাম্মাদ ও তার প্রথম স্ত্রী খাদিজা এর ঘরে মোট ৬ সন্তান ছিল।[৩৩৪][৩৩৫] এর মধ্যে কাসিমআব্দুল্লাহ নামের দুই পুত্র ছোটবেলায় মারা যান। আর চার কন্যার নাম ছিল জয়নব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম এবং ফাতিমা। মুহাম্মাদের "আবুল কাসেম" (কাসেমের পিতা) উপাধিটি তার প্রথম পুত্র কাসেমের নামের উপর ভিত্তি করে তৈরি। খাদিজার মৃত্যুর পর মুহাম্মাদের আরও বেশ কয়েকটি বিবাহ হয়েছিল।[৩৩৪] কিন্তু মারিয়া এর গর্ভজাত ইব্রাহিম ছাড়া অন্য স্ত্রীদের থেকে তার কোন সন্তান ছিল না। ইব্রাহিমও দুই বছর বয়সে মারা যায়।[৩৩৪]

ঐতিহাসিক তথ্য অনুসারে, আয়িশা যখন মুহাম্মাদ-এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তখন তার বয়স ৬ বা ৭ বছর ছিল।[৩৩৬] তাদের বৈবাহিক জীবন শুরু হয় যখন আয়িশা ৯ বা ১০ বছর বয়সে পৌঁছান।[৩৩২] ঐতিহ্যবাহী বর্ণনা অনুযায়ী, এই বিয়ের সময় আয়িশা কুমারী ছিলেন। তবে, আয়িশা এর বয়স নিয়ে বিতর্ক বিদ্যমান। কিছু আধুনিক মুসলিম লেখক আয়িশা এর বড় বোন আসমা এর সাথে বয়সের পার্থক্যের উপর ভিত্তি করে হাদিসের ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের ধারণা অনুযায়ী, আয়িশা বিবাহের সময় ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ছিলেন। তুর্কি ইসলামি পণ্ডিত ইয়াশার নুরি ওজতুর্ক মনে করেন আয়েশা এর বয়স ছিল ১৭ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।[৩৩৭] তুর্কি ধর্মতত্ত্ববিদ ও সাবেক ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী সুলেমান আতেশ মনে করেন আয়িশা বিংশতির কোঠায় পা রাখার পর বিবাহিত হয়েছিলেন। ধর্মতত্ত্ববিদ আহমেদ তেকিন ও মুস্তাফা ইসলামোগলু আয়িশা এর বয়সের ব্যাপারে আরবি সংখ্যা ব্যবহারের রীতিনীতির উপর আলোকপাত করে বলেছেন যে, উল্লেখিত বয়স ১৬ এবং ১৯ বছর হিসেবে ব্যাখ্যা করা উচিত।[৩৩৮][৩৩৮]

মুহাম্মাদের সবচেয়ে ছোট কন্যা ফাতিমা, 'ফাতিমা আল-জোহরা' নামেও পরিচিত, ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের একজন।[৩৩৯][৩৪০] তিনি ছিলেন নবী মুহাম্মাদের একমাত্র কন্যা যার বংশধর টিকে ছিল এবং ইসলামের নবীবংশের ধারক। ফাতিমা আলেভিশিয়া মতাদর্শে বিশেষভাবে সম্মানিত এবং 'দ্বিতীয় মরিয়ম' হিসেবে পরিচিত।[৩৪১] ইসলামী রীতিনীতি অনুযায়ী, শরীফসৈয়দদের বংশধারা ফাতিমা ও আলি এর মাধ্যমে মুহাম্মাদের সাথে সম্পর্কিত।[৩৪২]

মুহাম্মাদের মৃত্যুর পর তার নয়জন স্ত্রী বেঁচে ছিলেন এবং কেউই আর বিবাহ করেননি। কুরআনের সূরা আহযাব এর ৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, "পয়গম্বর মুমিনদের জন্য তাদের নিজেদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। তার স্ত্রীরা মুমিনদের মা।"[৩২২] এই আয়াতের কারণে তাদের পুনর্বিবাহকে সমর্থন করা হয়নি এবং তারা বিবাহিত হননি।[৩৪৩]

সাক্ষরতা

ক্যালিগ্রাফি শিল্প দ্বারা সুসজ্জিত সবুজ থিমের 'মুহাম্মাদ' নামটি লেখা।

মুহাম্মাদের সাক্ষরতা বা পড়তে ও লিখতে পারার দক্ষতা সম্পর্কে ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিভঙ্গি হলো তিনি সাক্ষর ছিলেন না। মুহাম্মাদ এর জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত একটি বিশেষণ হলো "উম্মি", যার একটি অর্থ হলো "যিনি জন্মগত অবস্থায় আছেন, যিনি পড়তে বা লিখতে শেখেননি"।[৩৪৪][৩৪৫] আরেকটি মতামত অনুযায়ী, "উম্মি" অর্থ "এমন একজন ব্যক্তি যিনি 'আহলে কিতাব' (ইহুদি ও খ্রিস্টানদের বোঝায়) হিসেবে পরিচিত ধর্মসমূহের কোনো একটিরও অন্তর্ভুক্ত নন"।[৩৪৫]

মুহাম্মাদ লেখাপড়া জানতেন না এই ধারণাটি কুরআনের কিছু আয়াত এবং হাদিসের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। সূরা আনকাবূত এর ৪৮ নম্বর আয়াত এবং সূরা আরাফ এর ১৫৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে যে মুহাম্মাদ পূর্বে কোন বই পড়েননি এবং তিনি ছিলেন একজন "উম্মি"।[৩৪৬] এছাড়াও, জিবরাঈল যখন প্রথম ওহি নিয়ে আসেন তখন তিনি মুহাম্মাদ কে "পড়ুন" বলে নির্দেশ দেন এবং মুহাম্মাদ বলেন "আমি পড়তে জানি না"। সূরা জুমুআ এর ২ নম্বর আয়াতেও বলা হয়েছে যে মুহাম্মাদ নিরক্ষরদের নিকট রাসুল হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন।[৩৪৭]

মুসলিমরা মনে করেন মুহাম্মাদ এর নিরক্ষরতাই প্রমাণ করে যে কুরআন তাঁর রচনা হতে পারে না, বরং এটি ঐশ্বরিক উৎস থেকে এসেছে তার স্পষ্টতম প্রমাণ।

কিছু বিকল্প মতামত অনুসারে, প্রাচীন আরবদের মধ্যে কবি, কাহিনীকার, হানিফ এবং ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মীয় পণ্ডিতদের সমন্বয়ে গঠিত একটি পুরনো ধর্মীয় জ্ঞানের ভাণ্ডার ছিল। সম্ভবত পৌরাণিক সংস্কৃতির জ্ঞানও সমাজের বিস্তৃত জনগোষ্ঠীর কাছে পরিচিত ছিল। মুহাম্মাদ যে সমাজে বাস করতেন সেই সমাজও লিখিত বা মৌখিক বর্ণনার মাধ্যমে তৈরি জ্ঞানের ভাণ্ডারের অধিকারী ছিল বলে ধারণা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, মুহাম্মাদ এর প্রথম স্ত্রী খাদিজার চাচাতো ভাই ওয়ারাকাহ ইবনে নওফেল ছিলেন একজন খ্রিস্টান পাদ্রী। তিনি সিরীয় ভাষায় পারদর্শী ছিলেন এবং তাওরাত, যাবুরইঞ্জিল সম্বলিত কিতাব-ই-মুকাদ্দাসে জ্ঞানী ছিলেন। ধারণা করা হয় যে ওয়ারাকাহ তার কিছু ধর্মীয় জ্ঞান মুহাম্মাদ কে শিখিয়েছিলেন এবং এই জ্ঞানগুলোই কুরআনে ইহুদি ও খ্রিস্টান সংস্কৃতি সম্পর্কিত ধর্মীয় বর্ণনার উৎস হিসেবে কাজ করেছিল। এছাড়াও, দীর্ঘদিন ধরে একজন প্রভাবশালী ও ধনী মহিলা হিসেবে খাদিজার লেখাপড়া জানার বিষয়টিও ধারণা করা হয়। তবে, ইসলামী পণ্ডিত এবং কুরআন নিজেই এই দাবিগুলোর তীব্র বিরোধিতা করে।

অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক

মক্কায় ধর্ম প্রচারের সময় মুহাম্মাদ খ্রিস্টানইহুদিদের "আহলে কিতাব" হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। তাদের ধর্মীয় শিক্ষার মূলনীতির সাথে ইসলামের মিল খুঁজে পেয়ে তিনি তাদেরকে স্বাভাবিক মিত্র মনে করেছিলেন এবং তাদের সমর্থন পাবেন বলে আশা করেছিলেন। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার পর তিনি মদিনার সনদ প্রণয়ন করেন যার আওতায় বনু কায়নুকা, বনু নাদির এবং বনু কুরাইজা সহ বিভিন্ন ইহুদি গোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত ছিল।

হিজরতের পূর্বে ও পরে অনেক মদীনাবাসী মক্কার অভিবাসীদের বিশ্বাস গ্রহণ করে, কিন্তু অধিকাংশ ইহুদি ধর্মান্তরিত হতে অস্বীকৃতি জানায়। তাদের অস্বীকৃতির মূল কারণ ছিল মুহাম্মাদ কে পয়গম্বর (নবী) হিসেবে স্বীকার না করা। স্কটিশ ইতিহাসবিদ ও প্রাচ্যবিদ উইলিয়াম মন্টগোমারি ওয়াটের মতে, ইহুদি ধর্মে একজন ইহুদি-নয় এমন ব্যক্তির পয়গম্বরত্ব স্বীকার করা সহজ ব্যাপার নয়। আমেরিকান ইহুদি ইতিহাসবিদ মার্ক আর. কোহেনের মতে, মুহাম্মাদ এর বাণী ইহুদিদের কাছে অপরিচিত ছিল। মুহাম্মাদ যদিও বলেছিলেন যে তার শিক্ষা পূর্ববর্তী পয়গম্বরদের শিক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, ওয়াটের মতে ইহুদিরা কুরআনকে তাদের নিজস্ব ধর্মীয় গ্রন্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মনে করেনি।

ঐতিহ্যবাহী সীরাত বর্ণনা অনুসারে আমরা জানতে পারি যে, পূর্বে বনু নাদিরবনু কায়নুকা গোষ্ঠীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল এবং বনু কুরাইজা গোষ্ঠী চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগে অবরুদ্ধ হয়েছিল। এরপর বনু কুরাইজার পুরুষদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল এবং নারী ও শিশুদের দাস হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল এবং তাদের সম্পত্তি মুসলমানদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে আমাদের জ্ঞান এই পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। এই দাবিটি প্রথম উত্থাপন করেছিলেন ইহুদি বংশোদ্ভূত আরব ইতিহাসবিদ ইবনে ইসহাক। ভারতীয় পণ্ডিত বারাকাত আহমদ তার মুহাম্মাদ অ্যান্ড দ্য জিউস: এ রি-এক্সামিনেশন (মুহাম্মাদ ও ইহুদিরা: পুনর্বিবেচনা) গ্রন্থে বলেছেন যে, মদিনায় ৬০০ থেকে ৯০০ মানুষের হত্যাকাণ্ড একটি গুরুতর বিপদ ডেকে আনতে পারত এবং প্রদত্ত সংখ্যাগুলো ইহুদি হিসাব অনুসারে মুহাম্মাদ এর পূর্বে সংঘটিত গণহত্যার উপর ভিত্তি করে তৈরি। বারাকাত আহমদ আরও বলেন যে, এই গোষ্ঠীগুলোর শুধুমাত্র একটি অংশকে হত্যা করা হয়েছিল এবং বাকিদের দাস হিসেবে বন্দি করা হয়েছিল। ভেলিড এন. আরফাত বলেছেন যে, ইবনে ইসহাক মুহাম্মাদ এর থেকে প্রায় ১০০ বছর পর এই ঘটনাগুলো লিপিবদ্ধ করেছিলেন এবং ইহুদি উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন। আরফাত আরও উল্লেখ করেছেন যে, ইবনে ইসহাককে তার সমসাময়িক বিখ্যাত ইমাম মালিক ইবনে আনাস একজন নির্ভরযোগ্য ইতিহাসবিদ হিসেবে বিবেচনা করেননি। এই বর্ণনাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক বিদ্যমান। কিছু ইতিহাসবিদ মনে করেন যে, এই ঘটনাগুলো বানানো বা অতিরঞ্জিত। তারা যুক্তি দেখান যে, ইবনে ইসহাক একজন নির্ভরযোগ্য ইতিহাসবিদ ছিলেন না এবং তার বর্ণনাগুলো পক্ষপাতদুষ্ট। অন্যদিকে, কিছু ইতিহাসবিদ মনে করেন যে, এই ঘটনাগুলো সত্য এবং এগুলো ইসলামের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ঐতিহ্যবাহী সীরাত বর্ণনা অনুসারে মুহাম্মাদ এর সময়ে মদিনায় ইহুদি গোষ্ঠীগুলোর সাথে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক বিদ্যমান এবং এগুলো সম্পর্কে আরও গবেষণার প্রয়োজন।

ইসলামী অধ্যয়নের সংশোধনবাদী ধারা-এর মতো গবেষকরা এই কাহিনীগুলোর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। হাদিসসীরাতের উৎসগুলোতে মুহাম্মাদ এর জীবনের সাথে সম্পর্কিত নয় এমন কাহিনীগুলো পরবর্তী সময়ে তার জীবনীতে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে প্রায়শই বলা হয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, মুসলমান ও ইহুদিদের মধ্যে সম্পর্ক ইসলামের প্রাথমিক যুগে বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। ইহুদিদের "মুমিন" হিসেবে অভিহিত করা হত এবং তারা উম্মতের অংশ ছিল। উদাহরণস্বরূপ, মদিনার ইহুদি গোষ্ঠী বনু কুরাইজার হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা সহ কিছু ইহুদি-বিরোধী বর্ণনা মুহাম্মাদ এর অনেক পরে (১০০-১৫০ বছর পরে) ইসলামের ইহুদি ধর্ম থেকে পৃথক হওয়ার সময় তৈরি হয়েছিল।

ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত সুইস আইনজীবী সামি আলদীব এই বিষয়ে একটি উল্লেখযোগ্য মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন যে, খায়বারের যুদ্ধ এবং কুরাইজা গণহত্যার মতো ঘটনাগুলো ইহুদিদের ধর্মীয় গ্রন্থেও উল্লেখ রয়েছে, তবে এই উৎস অনুসারে, ইহুদিরা ইহুদি-নয় এমন ব্যক্তিদের হত্যা করেছিল। তুর্কি ধর্মতত্ত্ববিদ মুস্তাফা ইসলামোগলু মনে করেন যে, খ্রিস্টাব্দ ৭৩-৭৪ সালে ইসরায়েলের দক্ষিণে মাসাদায় রোমানদের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ইহুদিদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যা, ইহুদি বংশোদ্ভূত ইবনে ইসহাক কর্তৃক "বনু কুরাইজা গণহত্যা" হিসেবে বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইসলামোগলু মাসাদায় নিহত ইহুদিদের মোট সংখ্যা (৯১০-৯৫০ এর মধ্যে) মুহাম্মাদ এর উপর চাপিয়ে দেওয়া এই ঘটনায় মোট নিহত ইহুদির সংখ্যার সাথে তুলনা করে সমালোচনা করেছেন।

মুহাম্মাদ মদিনায় তার ১০ বছরের জীবনে মক্কাবাসীদের সহ বিভিন্ন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রায় ১০০টি সামরিক অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই অভিযানগুলো ছিল প্রতিরক্ষামূলক, আক্রমণাত্মক, অভিযানমূলক অথবা কেবলমাত্র মানসিক চাপ প্রয়োগের উদ্দেশ্যে। ইসলামী সাহিত্যে, মুহাম্মাদ যেসব অভিযানে স্বয়ং সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সেগুলোকে "গাজওয়া" এবং যেসব অভিযানে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ না করে অন্য কাউকে সেনাপতি হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন সেগুলোকে "সরিয়া" বলা হয়েছে।

চিত্রায়ন ও শারীরিক গঠন

মুহাম্মাদ এর চিত্রায়ন ইসলামে একটি বিতর্কিত বিষয়। মৌখিক ও লিখিত বর্ণনা সকল ইসলামী ঐতিহ্য দ্বারা সহজেই গ্রহণযোগ্য হলেও, চিত্রায়নের ক্ষেত্রে মতবিরোধ দেখা যায়। কুরআন স্পষ্টভাবে মুহাম্মাদ এর ছবি আঁকা বা তৈরি করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে না। তবে, কিছু হাদিস রয়েছে যেখানে মুসলিমদের মুহাম্মাদ এর চিত্র তৈরি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সকলেই একমত যে, মুহাম্মাদ এর চেহারার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে কোনো প্রামাণিক চিত্রকলার ঐতিহ্য নেই। তবে, প্রাথমিক সীরাত গ্রন্থগুলোতে মুহাম্মাদ এর প্রতিকৃতি অঙ্কিত হয়েছে এবং তার চেহারার বর্ণনা সম্পর্কে কিছু লিখিত বিবরণ রয়েছে যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গ্রহণযোগ্য।

অনেক চিত্রকর্মে নবী মুহাম্মাদকে কেবলমাত্র তার মুখ সাদা রঙে ঢেকে রাখা অথবা আলোর শিখার মতো প্রতীকীভাবে চিত্রিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, বিশেষ করে ১৫০০ সালের পূর্বে নির্মিত চিত্রকর্মগুলোতে তার মুখও দেখানো হয়েছে। বর্তমান ইরানে কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম ছাড়া, মুহাম্মাদ এর চিত্রায়ন বেশ বিরল এবং ইসলামের ইতিহাসে কোনও সম্প্রদায় বা যুগে এর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি। তবে, এটি প্রায়শই শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ফার্সি এবং অন্যান্য মিনিয়েচার চিত্রকর্মের বইগুলোতে দেখা যায়। ইসলামে সাধারণ ধর্মীয় শিল্পের প্রধান হাতিয়ার অতীতেও এবং বর্তমানেও হলো ক্যালিওগ্রাফীউসমানীয় সাম্রাজ্যে "হিলিয়া" শিল্পের বিকাশ ঘটে, যা মুহাম্মাদ এর সম্পর্কে লেখা বিষয়বস্তুকে সুন্দরভাবে চিত্রিত করার মাধ্যমে প্রকাশ করে।

মুহাম্মাদ এর প্রাচীনতম চিত্রগুলো ১৩-শতকের আনাতোলীয় সেলজুকইলখানিদ ইরানি ক্ষুদ্র চিত্রকর্মে (মিনিয়েচার) পাওয়া যায়। এগুলো সাধারণত সাহিত্যিক রচনায় ব্যবহৃত হতো যেখানে মুহাম্মাদ এর জীবন ও কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়েছে। ইরানে যখন মঙ্গোল শাসকরা ইসলাম গ্রহণ করেন, তখন ইসলামী ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা উপস্থাপনে সুন্নিশিয়া সম্প্রদায়গুলো মুহাম্মাদ এর ছবিসহ দৃশ্যমান চিত্রকলার ব্যবহার শুরু করে। মঙ্গোল অভিজাতদের ধর্মান্তরিত হওয়ার পূর্বে ইসলামি শিল্পে এমন বাস্তবধর্মী চিত্ররীতি চোখে পড়েনি। এর ফলে ইসলামের চিত্রকলায় বিমূর্ততা থেকে সরে আসার প্রবণতা তৈরি হয়। এসময়ে মসজিদ, কার্পেট, রেশম, সিরামিক এবং বইয়ের চিত্রায়নে, এমনকি কাচ এবং ধাতব শিল্পকর্মেও মানুষের চিত্রায়ন দেখা যায়। পারস্য অঞ্চলে, ষোড়শ শতাব্দীর শুরুতে ক্ষমতায় আসা সাফাভিদদের আগমনের আগ পর্যন্ত এই বাস্তবতাবাদী চিত্রণশৈলী অব্যাহত থাকে। শিয়া মতবাদকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম ঘোষণা করা সাফাভিদরা মুহাম্মাদ এর মুখমণ্ডল আলোর বলয় দিয়ে ঢেকে দিয়ে তাঁর বৈশিষ্ট্যগুলো অস্পষ্ট করে দেয়। তাঁর সত্তার দীপ্তি প্রকাশের জন্য তারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে। একইসাথে পূর্বেকার কিছু চিত্র বিকৃত করাও হয়। পরবর্তীতে উসমানীয় শাসনাধীন অঞ্চলসহ অন্যান্য এলাকাতেও চিত্র তৈরি অব্যাহত থাকে, কিন্তু মসজিদগুলো কখনোই মুহাম্মাদ এর ছবি দিয়ে সাজানো হতো না। ইলখানাত যুগ থেকে সাফাভিদ যুগ পর্যন্ত রাতের ভ্রমণ বা মেরাজের সচিত্র বর্ণনাগুলো ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। উনবিংশ-শতাব্দীতে ইরানে ছাপানো এবং সচিত্র মেরাজের বইয়ের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। কমিক বইয়ের কায়দায় নিরক্ষর জনগণ ও শিশুদের লক্ষ্য করে এগুলোতে মুহাম্মাদ এর মুখাবয়ব আবরণ দিয়ে দেখানো হত। মূলত ছাপাখানার আবির্ভাবের কল্যাণে এগুলো ছিল "ছাপানো পাণ্ডুলিপি"। বর্তমানে, বিশেষ করে তুরস্কইরানে, মুহাম্মাদ এর লক্ষ লক্ষ ঐতিহাসিক ও আধুনিক চিত্র রয়েছে। এগুলো পোস্টার, পোস্টকার্ড এমনকি কফি টেবিলসহ বই আকারেও প্রকাশিত হয়। কিন্তু মুসলিম বিশ্বের অন্য অংশে এরকম চিত্র বিরল। অনেক দেশের মুসলিমরা এই ধরণের চিত্র সামনে পেলে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হতে পারেন।

ইবনে সাদ-এর "কিতাবুত-তাবাকাতুল-কবির" নামক গ্রন্থটি অন্যতম প্রাচীন উৎস, যেখানে মুহাম্মাদ এর শারীরিক বর্ণনার বহু মৌখিক চিত্র রয়েছে। মুহাম্মাদ এর চাচাতো ভাই এবং জামাতা আলীর বর্ণনা অনুসারে:

আনাস ইবনে মালিক হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,

সাহাবি আবু হুরাইরাহ বর্ণনা করেছেন:

ইসলামি পণ্ডিতদের বেশিরভাগই মতামত দিয়েছেন যে মুহাম্মাদ এর সাধারণত লম্বা চুল ছিল। তাদের মতে, তার চুলের দৈর্ঘ্য কানের লতি থেকে কাঁধের মধ্যে থাকত। এমনকি, তিনি মাঝে মাঝে তার চুল বেঁধে রাখতেন এবং বিনুনিও করতেন। সাধারণভাবে জানা যায় যে মুহাম্মাদ এর চুল লম্বা ছিল, কখনো কখনো তিনি কাঁধ পর্যন্ত লম্বা করে রাখতেন, কখনো দুই ভাগ করে রাখতেন, আবার কখনো ধুলোবালি থেকে রক্ষা করার জন্য বা ভ্রমণে বের হওয়ার সময় বিনুনি করে রাখতেন।

উত্তরাধিকার ও অনুসরণ

রিওয়ায়েত সংগ্রহ

মুহাম্মাদের বক্তব্য, কর্ম এবং আচরণকে হাদিস বলা হয় এবং এই হাদিস থেকে উদ্ভূত ঐতিহ্যবাহী রীতিনীতিগুলোকে সুন্নাহ বলা হয়। প্রথম দিকে, এই হাদিসের সংখ্যা কয়েকশ বা কয়েক হাজার (প্রথম ১০০ বছরের মধ্যে ১০০০ টি) এর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, তবে তিন শতাব্দীর মধ্যে এই সংখ্যা লক্ষাধিকে পৌঁছেছে।

শিয়া মুসলিমরা মুহাম্মাদের বক্তব্যের পাশাপাশি, তাদের ইমামদের (যাদেরকে তারা নির্দোষ বলে মনে করে) বক্তব্যকেও হাদিস হিসেবে গ্রহণ করে। অন্যদিকে, সুন্নিরা সমস্ত সাহাবিকে নির্ভরযোগ্য মনে করে, শিয়াদের মতে, সাহাবি এবং সাহাবিদের দেখা ব্যক্তিদের (তাবিয়ীন) একের পর এক বিশ্লেষণ করা হয় এবং ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় আলী বা আহলে বাইত-এর পক্ষে না থাকা বা তাদের বিরোধীদের মধ্যে থাকা ব্যক্তিদের নির্ভরযোগ্য বলে মনে করা হয় না এবং তাদের থেকে আসা রিওয়ায়েতগুলো প্রত্যাখ্যান করা হয়।

সুন্নি হাদিস গ্রন্থগুলো মুহাম্মাদের মৃত্যুর ২০০-৩০০ বছর পরে এবং শিয়া হাদিস গ্রন্থগুলো ৪০০-৫০০ বছর পরে লেখা হয়েছিল। হাদিসকে কুরআনের পরে ইসলামের দ্বিতীয় উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়; তবে, ইতিহাসে এবং বর্তমানে, "অবিশ্বস্ত" হওয়ার কারণে হাদিস থেকে দূরে থাকা, অনেক হাদিসকে প্রত্যাখ্যান করা বা সমস্ত হাদিসকে প্রত্যাখ্যান করা মুসলিমও বিদ্যমান।

ইসলামী ঐতিহ্যে মুহাম্মাদের স্থান

আল্লাহর একত্ববাদ (ঈশ্বর এক এবং অদ্বিতীয়) প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের পর, মুহাম্মাদের নবুয়তের প্রতি বিশ্বাস ইসলামের মূল ভিত্তি। প্রত্যেক মুসলিম শাহাদত পাঠে ঘোষণা করে: "আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল" শাহাদত হলো ইসলামের মূল বিশ্বাস বা নীতি। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, একজন নবজাতকের কানে শাহাদতই প্রথম পাঠ করা উচিত; শিশুদেরকে শাহাদত শেখানো হয় এবং মৃত্যুর সময় শাহাদত পাঠ করা হয়। মুসলিমরা নামাজের আহ্বানে (আযান) এবং নামাজে শাহাদত পুনরাবৃত্তি করে। ইসলামে ধর্মান্তরিত হতে ইচ্ছুক অমুসলিমদেরকেও এই শাহাদত পাঠ করেই ইসলামে প্রবেশ করতে হয়।

ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, মুহাম্মাদ হলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত সর্বশেষ রাসুল। কুরআন স্পষ্টভাবে এই ধারণাকে নিশ্চিত করে। কুরআনে মোট চারবার মুহাম্মাদ নাম উল্লেখ রয়েছে এবং "সূরা মুহাম্মাদ" নামে আলাদা সূরাও অবতীর্ণ হয়েছে। কুরআনের সূরা আহযাব এর ৪০নং আয়াতে বলা হয়েছে,

সূরা মুহাম্মাদ এর ২নং আয়াতে বলা হয়েছে,

সূরা আল-ইমরান এর ১৪৪নং আয়াতে বলা হয়েছে,

সূরা আল-ফাতহ এর ২৯নং আয়াত উল্লেখিত হয়েছে,

মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে, নবী মুহাম্মাদের সাথে বিভিন্ন মুজিজা বা অলৌকিক ঘটনার সম্পর্ক জড়িয়ে আছে। এর মধ্যে রয়েছে চাঁদকে দুই ভাগ করা। অনেক মুসলিম ভাষ্যকার এবং কিছু পশ্চিমা পণ্ডিত কুরআনের সূরা ক্বামার এর ১-২নং আয়াতকে এইভাবে ব্যাখ্যা করেন যে, যখন কুরাইশরা মুহাম্মাদের অনুসারীদের উপর নির্যাতন চালাতে শুরু করে, তখন তিনি তাদের সামনে চাঁদকে দুই ভাগ করে দিয়েছিলেন। এই ঘটনাটি মুহাম্মাদের নবুয়তের প্রমাণ হিসেবে দেখা হয়। তবে, পশ্চিমা ইসলামি ইতিহাসবিদ ডেনিস গ্রিল মনে করেন যে, কুরআনে স্পষ্টভাবে মুহাম্মাদের মুজিজা করার কথা বলা হয়নি। বরং, কুরআনকেই মুহাম্মাদের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজিজা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি যুক্তি দেন যে, কুরআন একটি অলৌকিক বই যা মুহাম্মাদের উপর ঈশ্বরের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছিল। কুরআনের ভাষা, শৈলী এবং বিষয়বস্তু এতটাই অসাধারণ যে এটি মানুষের রচনা হতে পারে না।

ইসলামী ঐতিহ্য অনুসারে, মুহাম্মাদ যখন তায়েফের জনগণের কাছে ইসলামের প্রচার করতে গিয়েছিলেন, তখন তাকে তীব্র নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। তায়েফের লোকেরা তাকে পাথর ছুঁড়ে এবং ধাওয়া করে তাকে শহর থেকে বের করে দিয়েছিল। এই ঘটনায় মুহাম্মাদ গুরুতরভাবে আহত হয়েছিলেন এবং তার পায়ের রক্ত বয়ে চলেছিল। ঐতিহ্য আরও বর্ণনা করে যে, এই ঘটনার পর মুহাম্মাদ এর সাথে ফেরেশতা জিবরাঈল দেখা করেছিলেন এবং তায়েফের লোকদের উপর আল্লাহর আযাব নামানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন। জিবরাঈল বলেছিলেন, "আপনি যদি চান, তাহলে আমি এই পাহাড়ের দুই অংশ একত্রিত করে তাদের উপর চাপিয়ে দেব।" কিন্তু মুহাম্মাদ এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং তায়েফের লোকদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা ও হেদায়েতের প্রার্থনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "না, আমি তাদের ধ্বংস চাই না। বরং আমি আশা করি তাদের বংশধরদের মধ্যে এমন লোক জন্মগ্রহণ করবে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলে বিশ্বাস করবে।"

সুন্নাহ হলো নবী মুহাম্মাদ এর জীবন, কর্ম এবং উক্তির সমষ্টি। হাদিস নামে পরিচিত বর্ণনাগুলোতে এগুলো সংরক্ষিত আছে। ধর্মীয় রীতিনীতি, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, মৃতদেহের দাফন থেকে শুরু করে মানুষ ও আল্লাহর মধ্যকার ভালোবাসা, রহস্যময় বিষয়গুলোর উপর আলোকপাত সহ বিস্তৃত কর্মকাণ্ড ও বিশ্বাসের সমাহার এতে অন্তর্ভুক্ত। ধার্মিক মুসলমানদের জন্য সুন্নাহ হলো অনুসরণের এক আদর্শ। এটি মুসলিম সংস্কৃতিকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে। মুহাম্মাদ মুসলমানদের "আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক" (আরবী: السّلامُ عَلَيْكُمْ - আসসালামু আলাইকুম) বলে সালাম বিনিময় করতে শিখিয়েছিলেন, যা বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করে। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়মকানুন ও বিবরণ, রোজা এবং বার্ষিক হজ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইসলামি রীতিনীতির অনেক বিবরণ কুরআনে নয়, বরং কেবল সুন্নাতেই পাওয়া যায়।

মুসলিমরা প্রথাগতভাবে বিভিন্ন উপায়ে মুহাম্মাদ এর প্রতি তাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করে আসছে। তার জীবন, শেফা'আত (পক্ষপাত) এবং মু'জিযা (মুজেজা)-র সাথে সম্পর্কিত ঘটনাগুলো জনপ্রিয় মুসলিম চিন্তাভাবনা ও কবিতাকে প্রভাবিত করেছে। মিশরীয় সুফি আল-বুসিরি (১২১১-১২৯৪)-এর মুহাম্মাদ এর প্রতি উৎসর্গীকৃত আরবি কবিতাগুলোর মধ্যে, কাসিদা-ই-বুরদা ("মান্টো কবিতা") বিশেষভাবে পরিচিত এবং এর নিরাময়কারী, আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। কুরআনে মুহাম্মাদকে "জগতের জন্য রহমত" হিসেবে উল্লেখ করে সূরা আম্বিয়ার ১০৭নং আয়াতে বলা হয়েছে,

পূর্বের দেশগুলোতে বৃষ্টির সাথে রহমতের সম্পর্ক স্থাপন, যেমন বৃষ্টি মৃতপ্রায় জমি কে পুনরুজ্জীবিত করে, তেমনি মুহাম্মাদকে একটি বৃষ্টির মেঘ হিসেবে কল্পনা করা হয় যা আশীর্বাদ বিতরণ করে, জমি ভেজায় এবং মৃত হৃদয়কে পুনরুজ্জীবিত করে (উদাহরণস্বরূপ, আল-লাতিফ)। মুহাম্মাদ এর জন্মদিন মুসলিম বিশ্বে একটি বড় উৎসব হিসেবে পালিত হয়, তবে ওয়াহাবি-প্রধান সৌদি আরব বাদ দিয়ে, যেখানে এই ধরনের উদযাপন উৎসাহিত করা হয় না। মুসলিমরা যখন মুহাম্মাদ এর নাম উল্লেখ করে বা লেখে, তখন তারা সাধারণত আরবি ভাষায় "صلى الله عليه وسلم" (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অভিব্যক্তিটি ব্যবহার করে যার অর্থ "আল্লাহ্ তাকে সম্মানিত করুন এবং তাকে শান্তি দান করুন"।

তাসাউফ

তাসাউফ বা ইসলামী আধ্যাত্মবাদ, ইসলামের প্রাথমিক যুগের শেষ দিক থেকে, বিশেষত প্রথম শতাব্দীর পরবর্তী সময় থেকে ইসলামী শরীয়াহ আইনের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। সুফি নামে পরিচিত ইসলামী মরমী সাধকগণ, যারা কুরআনের গূঢ় অর্থ এবং মুহাম্মাদ এর অভ্যন্তরীণ প্রকৃতি খুঁজতেন, তারা মুহাম্মাদকে শুধু একজন নবী হিসেবে নয়, একজন নিখুঁত মানুষ হিসেবেও দেখতেন। সকল সুফি আধ্যাত্মিক ধারা তাদের আধ্যাত্মিক উৎসকে মুহাম্মাদ পর্যন্ত নির্দেশ করে। ইসলামের সাথে সুফিবাদের গভীর যোগসূত্রের ক্ষেত্রে মুহাম্মাদ কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেন। সুফিগণ কুরআনকে বহির্মুখী ও অভ্যন্তরীণ অর্থের ধারক হিসেবে দেখেন এবং মুহাম্মাদকে এই অভ্যন্তরীণ জ্ঞানের মূর্ত প্রতীক মনে করেন। সমস্ত সুফি ধারা একমত যে, তাদের আধ্যাত্মিক পথের উৎস সরাসরি মুহাম্মাদ থেকে এসেছে।

সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি

খ্রিস্টান ও ইউরোপীয় বিশ্ব

মুহাম্মাদ সম্পর্কে প্রাপ্ত প্রাচীনতম নথিভুক্ত খ্রিস্টান ধারণাগুলো পাওয়া যায় বাইজেন্টাইন (পূর্ব রোমান) সাম্রাজ্যের উৎসগুলোতে। এই নথিগুলো ইঙ্গিত করে যে, ইহুদিখ্রিস্টান উভয় ধর্মাবলম্বীই মুহাম্মাদকে একজন মিথ্যা নবী হিসেবে বিবেচনা করত।

মুহাম্মাদ সম্পর্কে আরেকটি গ্রিক উৎস হলো নবম শতাব্দীর লেখক থিওফেনসের লেখা। সবচেয়ে প্রাচীন সিরীয় (প্রাচীন আরামীয় ভাষার একটি উপভাষা) উৎস পাওয়া যায় সপ্তম শতাব্দীর লেখক জন বার পেনকায়ের রচনায়।

ইরানি অধ্যাপক সাইয়্যেদ হোসাইন নাসর এর মতে, ঐ সময়ের ইউরোপীয় সাহিত্যে মুহাম্মাদ সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিই বেশি দেখা যেত। মধ্যযুগীয় ইউরোপের কিছু শিক্ষিত সম্প্রদায় (বিশেষ করে লাতিন ভাষাভাষী পণ্ডিতরা) মুহাম্মাদ সম্পর্কে বেশ বিস্তারিত জীবনী সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু তারা এই জীবনীগুলোকে খ্রিস্টান দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেছিলেন এবং মুহাম্মাদ কে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে দেখেছিলেন যিনি ধর্মের ছদ্মবেশে মানুষকে (সারাসেন) প্রতারিত করে তাদের নিজের প্রতি আনুগত করেছিলেন। সে সময়ের জনপ্রিয় ইউরোপীয় সাহিত্যে মুহাম্মাদ কে মুসলমানদের পূজিত দেবতা বা মূর্তিপূজক ঈশ্বর হিসেবে চিত্রিত করা হত।

ইয়ারমুকের যুদ্ধ (৬৩৬) এর স্থান, যেখানে মুসলিমরা খালিদ বিন ওয়ালিদ এর নেতৃত্বে বাইজেন্টাইনদের পরাজিত করেছিল।

ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত ৬৩৫ সালে সিরীয় পাদ্রী প্রেসবিটার থমাস কর্তৃক লিখিত ঐতিহাসিক নথি অনুসারে, ৬৩৪ সালে রোমান সাম্রাজ্য এবং মুহাম্মাদ এর আরব সেনাবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল এবং এই যুদ্ধে আরবরা রোমানদের পরাজিত করে। ইতিহাসবিদরা এই যুদ্ধকে "দাসিনের যুদ্ধ" নামে অভিহিত করেছেন। এই নথিগুলোতে স্পষ্টভাবে "মুহাম্মাদ এর আরব" বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং বাইজেন্টাইনদের পরাজয়ের কথাও বর্ণিত হয়েছে। এর পূর্বে, ৬২৯ সালে, মুহাম্মাদ এর প্রেরিত একটি মুসলিম সেনাবাহিনী সম্রাট হেরাক্লিয়াস কর্তৃক প্রেরিত একটি বাইজেন্টাইন সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং "মুতার যুদ্ধ" নামে পরিচিত এই যুদ্ধে কোন স্পষ্ট ফলাফল না আসলেও মুসলিমরা পরাজিত হয়নি।

৬৩৬ সালে লেখা একটি সিরীয় জার্নালে মুহাম্মাদ এর সেনাবাহিনীর বিজয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই জার্নালে অভিযোগ করা হয়েছে যে মুহাম্মাদ এর সেনাবাহিনী বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে এবং গালীল থেকে বাল্‌খ পর্যন্ত সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। জার্নালে আরও বলা হয়েছে যে মুসলিম সেনারা বাইজেন্টাইন সৈন্যদের হত্যা করেছে এবং ৬৩৬ সালে গাবিতায় পরবর্তী যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হবে। "গাবিতা" অঞ্চলটি ইয়ারমুক নদীর তীরে অবস্থিত এবং বিখ্যাত জার্মান পণ্ডিত ও ধর্মতত্ত্ববিদ থিওডোর নোলডেকে বলেছেন যে এই যুদ্ধের তারিখ ও স্থান ইয়ারমুক যুদ্ধের তারিখ ও স্থানের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। খালিদ বিন ওয়ালিদ এই যুদ্ধে মুসলিম সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং এই যুদ্ধে মুসলিম আরবদের বিজয় অর্জিত হয়েছিল।

পরবর্তী যুগগুলোতে, মুহাম্মাদকে একজন ধর্মদ্রোহী হিসেবে দেখা শুরু হয়েছিল। ১৩শ শতাব্দীতে ইতালীয় পণ্ডিত ব্রুনেত্তো লাতিনি তাঁর বিখ্যাত রচনা "Li livres dou tresor" গ্রন্থে মুহাম্মাদ কে একজন প্রাক্তন রোমান ক্যাথলিক সন্ন্যাসী এবং কার্ডিনাল হিসেবে চিত্রিত করেন। ১৩০০-এর দশকে ইতালীয় কবি ও রাজনীতিবিদ দান্তে তাঁর মহাকাব্য "ইনফার্নো"তে (দান্তের ইলাহি কবিতা - ২৮তম ক্যান্টো), মুহাম্মাদ এবং আলী কে 'বিভেদ সৃষ্টিকারী এবং ধর্মদ্রোহী' হিসেবে বিবেচনা করে জাহান্নামে স্থান দেন, যেখানে তাদেরকে শয়তানেরা বারবার আহত করে।

জার্মান দার্শনিক গটফ্রিড লাইবনিজ মুহাম্মাদকে "প্রাকৃতিক ধর্ম থেকে বিচ্যুত না হওয়ার" জন্য প্রশংসা করেছিলেন। ফরাসি ইতিহাসবিদ হেনরি দে বোল্যাভিলিয়ার তার "ভি দে মাহোমেদ" (মুহাম্মাদের জীবন) গ্রন্থে, যা তার মৃত্যুর পর ১৭৩০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল, মুহাম্মাদকে "দক্ষ রাজনৈতিক নেতা এবং ন্যায়পরায়ণ আইন প্রণেতা" হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি তাকে ঈশ্বরের একজন রাসুল হিসেবে চিত্রিত করেছেন যিনি ঈশ্বরের একত্ববাদের (তাওহীদ) জ্ঞান পূর্ব দিকে দক্ষিণ এশিয়া থেকে পশ্চিমে স্পেন পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে, ঈশ্বরের বিরোধী পূর্বের খ্রিস্টানদের বিস্মিত করতে এবং পূর্বকে রোমানপারস্যদের স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য ঐশ্বরিক বাণী লাভ করেছিলেন।

মুহাম্মাদকে প্রথম স্থানে রেখে মাইকেল হার্ট রচিত দ্য ১০০: এ র‍্যাঙ্কিং অফ দ্য মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল পারসনস ইন হিস্ট্রি

ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট মুহাম্মাদ এবং ইসলামের প্রতি বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। তিনি তাকে একজন অনুকরণীয় আইন প্রণেতা এবং মহান ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন।

বিশ্বখ্যাত রাশিয়ান লেখক লিও তলস্তয় তার কিছু বইয়ে (ইতিরাজ) স্পষ্টভাবে বলেছেন যে তিনি ইসলামের নবী মুহাম্মাদ এর প্রতি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি মনে করতেন মুহাম্মাদ এবং তিনি যে ইসলাম ধর্ম এনেছিলেন তা খ্রিস্টধর্মের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তলস্তয় এই দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে তার জীবনের শেষ দিকে মুহাম্মাদ শিরোনামে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলেন এবং এতে তিনি তার কিছু অল্প পরিচিত উক্তি উল্লেখ করেছিলেন।

আমেরিকান জ্যোতির্পদার্থবিদ ও লেখক মাইকেল এইচ. হার্ট প্রায় ৩০ বছরের গবেষণার পর ১৯৭৮ সালে "দ্য ১০০: এ র‍্যাঙ্কিং অফ দ্য মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল পারসনস ইন হিস্ট্রি" (বাংলায় অনূদিত শিরোনাম: মাইকেল এইচ. হার্ট-এর সেরা ১০০) নামক একটি বই রচনা করেন। এই বইটিতে তিনি বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকা তৈরি করেছিলেন এবং তালিকার শীর্ষে রেখেছিলেন নবী হযরত মুহাম্মাদকে। এই মতামতের জন্য হার্ট ব্যাপক সমালোচনা ও নিন্দার সম্মুখীন হন।

আধুনিক ইতিহাসবিদ

উইলিয়াম মন্টগোমারি ওয়াট এবং রিচার্ড বেল-এর মতো কিছু আধুনিক লেখক মুহাম্মাদ যে ইচ্ছাকৃতভাবে তার অনুসারীদের প্রতারণা করেছিলেন এই ধারণাটিকে প্রত্যাখ্যান করেন। তারা মনে করেন মুহাম্মাদ "নিঃসন্দেহে একজন সৎ ব্যক্তি ছিলেন এবং সম্পূর্ণ ভালো উদ্দেশ্যে কাজ করেছিলেন"। তারা যুক্তি দেন যে, মুহাম্মাদ তার দাবির জন্য যেকোনো প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে প্রস্তুত ছিলেন, যা তার আন্তরিকতার প্রমাণ। তবে ওয়াট আরও বলেন যে, ভালো উদ্দেশ্য সবসময় সঠিকতা বহন করে না। তার মতে, "আধুনিক পরিভাষায় বলতে গেলে, মুহাম্মাদ সম্ভবত তার নিজস্ব অবচেতন মনকে ঐশ্বরিক বার্তার সাথে মিশ্রিত করে ফেলেছিলেন।" উল্লেখ্য, উইলিয়াম এম. ওয়াট নিজে একজন খ্রিস্টান ধর্মযাজক হলেও তিনি বলেছেন "মুহাম্মাদ ঈশ্বরের রাসুল"।

মন্টগোমারি ওয়াট এবং ইতিহাসবিদ বারনার্ড লুইস মনে করেন, মুহাম্মাদকে কেবল একজন স্বার্থপর প্রতারক হিসেবে দেখা ইসলামের বিকাশকে বোঝার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করবে। আলফোর্ড টি. ওয়েলচ মনে করেন, মুহাম্মাদ যে কাজটি করেছিলেন তার প্রতি অটুট বিশ্বাসের কারণেই তিনি এতটা কার্যকর এবং সফল হতে পেরেছিলেন।

অন্যান্য ধর্ম

বাহাই ধর্মাবলম্বীরা মুহাম্মাদ-কে তাদের অনেক নবীদের একজন হিসেবে বিশ্বাস করেন। তারা মনে করেন মুহাম্মাদ ছিলেন নবীদের চক্রের শেষ নবী, কিন্তু তার শিক্ষার স্থান ও গুরুত্বকে বাহাই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বাহাউল্লাহ-র শিক্ষা দখল করে নিয়েছে।

সমালোচনা

মুহাম্মাদ এর বিরুদ্ধে সমালোচনা ৭ম শতাব্দীতেই শুরু হয়েছিল যখন তিনি এক ঈশ্বরে বিশ্বাসের প্রচার শুরু করেন এবং তখনকার পৌত্তলিক আরবরা তার নিন্দা ও কটূ সমালোানা করে। আরবের ইহুদি গোষ্ঠীগুলো তাকে "হা-মেশুগা" (হিব্রু: מְשֻׁגָּע, "পাগল" বা "জ্বীনগ্রস্থ") বলে ডাকত কারণ তাদের মতে তিনি তানাখের বর্ণনা ও ব্যক্তিত্বগুলোকে অনুসরণ করেছিলেন, ইহুদি বিশ্বাসকে "অবমূল্যায়িত" করেছিলেন এবং কোনো অলৌকিক কাজ দেখাননি বা তানাখে যিহোভার নির্বাচিত সত্যিকারের নবী ও মিথ্যা নবীদের মধ্যে পার্থক্য বোঝার জন্য বর্ণিত ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করার আগেই নিজেকে "শেষ নবী" ঘোষণা করেছিলেন।

মধ্যযুগ জুড়ে, বিভিন্ন পশ্চিমা এবং বাইজেন্টাইন খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্ববিদেরা মুহাম্মাদ কে একজন বিপথগামী এবং দুঃখজনক মিথ্যা নবী, এমনকি ডেজাল বা দাজ্জাল (খ্রিস্টধর্মের শেষ সময়ের বিরোধী) বলে অভিহিত করেছিলেন। খ্রিস্টান জগতে, মুহাম্মাদকে প্রায়শই একজন বিধর্মী এবং দানবদের দ্বারা আচ্ছন্ন আত্মা হিসেবে দেখা হত। টমাস আকুইনাস-এর মতো কিছু সমালোচক মুহাম্মাদ এর পরকালে যৌন সুখের প্রতিশ্রুতির সমালোচনা করেছিলেন।

ইসলাম, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম, দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে সমালোচিত হয়ে আসছে। এই সমালোচনাগুলো প্রায়শই নবী মুহাম্মাদের নবুয়ত, নৈতিকতা, দাসপ্রথা, শত্রুদের প্রতি আচরণ, বৈবাহিক জীবন, ধর্মীয় বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিক অবস্থার উপর কেন্দ্রীভূত হয়।

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে মুহাম্মাদ

চলচ্চিত্র

মুহাম্মাদ: দ্য ম্যাসেঞ্জার অব গড (২০১৫) চলচ্চিত্রের পোস্টার

মুহাম্মাদের জীবন বা ইসলাম ধর্মের উপর দুটি বড় ধরনের চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। প্রথমটি হলো সিরীয়-আমেরিকান পরিচালক মুস্তফা আক্কাদের পরিচালিত ১৯৭৬ সালের "দ্য মেসেজ"।[৩৪৮] এই চলচ্চিত্রে মুহাম্মাদের মুখ বা শরীর কখনো দেখানো হয়নি, বরং ইসলাম ধর্মের উত্থান ও বিস্তারের উপর মনোযোগ দেওয়া হয়েছে।[৩৪৯] "প্রথম" হিসেবে এর বিশেষত্বের কারণে এটি সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়েছিল।[৩৫০] চলচ্চিত্রের বেশিরভাগ দৃশ্য লিবিয়াতে এবং কিছু দৃশ্য মরক্কোতে ধারণ করা হয়েছিল এবং এটি ১২টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল।[৩৫০]

দ্বিতীয়টি হলো ইরানি পরিচালক মাজিদ মাজিদির পরিচালিত এবং ২০১৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত "মুহাম্মাদ: দ্য ম্যাসেঞ্জার অব গড"।[৩৫১] এই চলচ্চিত্রে মুহাম্মাদের ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শৈশবকাল দেখানো হয়েছে এবং মুহাম্মাদের মুখ না দেখালেও তার শরীর, হাত, পা এবং চুল দেখানো হয়েছে। ৫-৬ বছর ধরে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটি কিছু সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত হলেও অনেকের কাছ থেকে তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিল; এমনকি কিছু সুন্নি প্রধান দেশে এটি প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিছু সুন্নি মুসলিম পরিচালক মাজিদি'কে শিয়া দৃষ্টিকোণ থেকে চলচ্চিত্র তৈরির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলেন; যা মাজিদি অস্বীকার করেছিলেন।

সাহিত্য

বাংলা এবং মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র মুহাম্মাদের জীবন নিয়ে অসংখ্য সাহিত্যকর্ম রচিত হয়েছে।

বিখ্যাত রুশ লেখক লিও টলস্টয় তার ইতিরাজ মুহাম্মাদের প্রতি তার শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন এবং তার সম্পর্কে তার ইতিবাচক মতামত লিপিবদ্ধ করেছেন। লিও টলস্টয় তার জীবনের শেষ বছরগুলোতে মুহাম্মাদের কিছু অল্প পরিচিত উক্তি (হাদিস) সংগ্রহ করে একটি বই আকারে প্রকাশ করেছিলেন।

আমেরিকান জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং লেখক মাইকেল এইচ. হার্ট ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত "মাইকেল এইচ. হার্ট-এর সেরা ১০০" (ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকা) বইতে ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের জীবনী লিপিবদ্ধ করেছেন। অনেক বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের দ্বারা সফল বলে বিবেচিত এবং কখনও কখনও তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হওয়া মাইকেল এইচ. হার্টের তালিকার ১ নম্বরে "মুহাম্মাদ" রয়েছেন।

সঙ্গীত

বহিঃস্থ ভিডিও
video icon মেহের জেইন - ইয়া নাবী সালাম আলাইকা (আন্তর্জাতিক সংস্করণ), অফিসিয়াল মিউজিক ভিডিও

মুহাম্মাদ এবং ইসলাম ধর্মকে কেন্দ্র করে রচিত সঙ্গীতের ক্ষেত্রে লেবাননের বংশোদ্ভূত সুইডিশ সঙ্গীতশিল্পী মেহের জেইন এর গানগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ও অন্যতম জনপ্রিয়। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত "ইয়া নাবী সালাম আলাইকা" (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক, হে পয়গম্বর) এবং ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত "মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম" (মুহাম্মাদ, আল্লাহর শান্তি ও আশীর্বাদ তার উপর বর্ষিত হোক) গানগুলো এর উদাহরণ।

ঘটনাপঞ্জি

মক্কার বছর[৩৫২][৩৫৩][৩৫৪][৩৫৫] মদিনার বছর[৩৫২][৩৫৩][৩৫৪][৩৫৫]
বছর বয়স ঘটনা বছর বয়স ঘটনা
আনু. ৫৭০ - পিতা আবদুল্লাহর মৃত্যু ৬২২ ৫২ মদিনায় আগমন এবং মসজিদে নববীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
আনু. ৫৭০ - হস্তিবর্ষ মদিনায় মদিনার সনদ নামে সংবিধান প্রণয়ন
আনু. ৫৭০ - মক্কা নগরীতে তাঁর জন্ম সাসানীয় সাম্রাজ্যের দখলকৃত সিরিয়া ও মিশর বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য কর্তৃক পুনর্দখল
৫৭৪ দুধমা হালিমার নিকট হতে পরিবারের নিকট প্রত্যাবর্তন ৬২২-৬২৩ ৫২-৫৩ মুহাজির এবং আনসারদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন
৫৭৬ মাতা আমিনার মৃত্যু ৬২৩ ৫৩ মদিনা নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে নির্বাচন
৫৭৮ দাদা আবদুল মুত্তালিব-এর মৃত্যু মসজিদ আল-আকসা (জেরুজালেম) থেকে কাবায় (মক্কা) মুসলমানদের কিবলা পরিবর্তন
আনু. ৫৮৩ ১২-১৩ চাচা আবু তালিব-এর সাথে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে সিরিয়া গমন ৬২৪ ৫৪ বদরের যুদ্ধ
৫৮৭ ১৭ চাচা যুবায়ের-এর সাথে ইয়েমেন গমন ৬২৪ কন্যা রুকাইয়াহর মৃত্যু
৫৮৮ ১৮ চাচাদের সাথে ফিজার যুদ্ধে অংশগ্রহণ ৬২৪ বাগদত্তা আয়িশার সাথে তার বিবাহ
৫৯০ ২০ হিলফুল ফুজুল সামাজিক সংঘ গঠন ৬২৪ মদিনায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ইহুদীদের বিরোধীতা ও ষড়যন্ত্রের সূচনা
৫৯৪ ২৪ খাদিজার ব্যবসায়িক প্রতিনিধি হিসেবে বুসরা গমন ৬২৪ বনু কাইনুকা অভিযান
৫৯৫ ২৫ খাদিজার সাথে সাক্ষাৎ, খাদিজার বৈবাহিক প্রস্তাব এবং বিবাহ ৬২৫ ৫৫ বদরের যুদ্ধ এবং চাচা হামযার মৃত্যু
৫৯৮ ২৭-২৮ তাঁর প্রথম সন্তান কাসিমের জন্ম, পিতা হিসেবে আবুল কাসিম (কাসিমের পিতা) উপাধি লাভ এবং শিশুবয়সেই প্রথম সন্তানের মৃত্যু নাতি হাসান ইবনে আলীর জন্ম
৫৯৯ ২৮-২৯ প্রথম কন্যাসন্তান জয়নবের জন্ম রেসি'র ঘটনা এবং বিয়ার-ই মাউনে'র দুর্ঘটনা।
৬০২ ৩২ কন্যাসন্তান রুকাইয়াহর জন্ম বনু নাদির অভিযান
৬০৫ ৩৫ কাবা ঘরের পুনর্নির্মাণের সময় হাজরে আসওয়াদ পাথরটির স্থাপন বিষয়ে বিরোধের মীমাংসায় মধ্যস্থতা করা ৬২৬ ৫৬ দ্বিতীয় নাতি হোসাইন ইবনে আলীর জন্ম
আনু. ৬০৭ ৩৭ কন্যাসন্তান উম্মে কুলসুমের জন্ম ৬২৭ ৫৭ খন্দকের যুদ্ধ
আনু. ৬০৯ ৩৯ কনিষ্ঠ কন্যা ফাতিমার জন্ম খন্দকের যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ইহুদী গোত্র বনু কুরাইজার শাস্তি
৬১০ ৪০ হেরা গুহায় অবস্থানকালে প্রথম ওহি প্রাপ্তি ৬২৮ ৫৮ হুদাইবিয়ার সন্ধি
৬১১ ৪১ দ্বিতীয় পুত্রসন্তান আব্দুল্লাহর জন্ম এবং এক বছর বয়স হওয়ার আগেই তার মৃত্যু ইসলামের দাওয়াত দিয়ে চিঠি লিখে রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজ্যের শাসকদের কাছে পত্র প্রেরণ
৬১৩ ৪৩ প্রকাশ্যে মক্কাবাসীর নিকট আল্লাহর একত্ববাদের প্রচার খায়বারের যুদ্ধ
৬১৪ ৪৪-৪৫ মক্কায় মুসলিমদের উপর তীব্র নিপীড়নের সূচনা খায়বার বিজয়ের পর একজন ইহুদি মহিলা কর্তৃক বিষ প্রয়োগের চেষ্টা
৬১৫ ৪৫ আবিসিনিয়ায় একদল মুসলিমের অভিবাসন নিনেভের যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যে বাইজেন্টাইন-সাসানিদের যুদ্ধের সমাপ্তি
৬১৬ ৪৬ হামযা এবং উমরের ইসলাম গ্রহণ ৬২৯ ৫৯ কন্যা জয়নবের মৃত্যু
সাসানীয় সাম্রাজ্যের শাসক দ্বিতীয় খসরুর বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীনস্থ সিরিয়া এবং মিশর দখল খালিদ বিন ওয়ালিদ এবং আমর ইবনুল আস-এর ইসলাম গ্রহণ
বনু হাশিম গোত্রের বিরুদ্ধে অবরোধের সূচনা মুতার যুদ্ধ (বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের সাথে প্রথম যুদ্ধ)
৬১৯ ৪৯ বনু হাশিম গোত্রের বিরুদ্ধে অবরোধের সমাপ্তি ৬৩০ ৬০ মক্কা বিজয়, কাবা থেকে সকল মূর্তির অপসারণ
স্ত্রী খাদিজা এবং চাচা আবু তালিবের মৃত্যু (দুঃখের বছর) আরবে ব্যাপক অভিযান এবং ইসলামের দ্রুত প্রসার
৬২০ ৫০ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে তায়েফ গমন, তাঁর উপর তায়েফবাসীর নিপীড়ন ও পাথর নিক্ষেপ এবং মক্কায় পুনরায় ফিরে আসা কন্যা উম্মে কুলসুমের মৃত্যু
ইসরা ও মিরাজের ঘটনা স্ত্রী মারিয়া থেকে পুত্র ইব্রাহিমের জন্ম এবং ১-২ বছর বয়সে তার মৃত্যু
আকাবার প্রথম শপথ তাবুকের যুদ্ধ
আনু. ৬২১ ৫১ সাওদা বিনতে জামআর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ আনু. ৬২৮-৬৩১ ৫৮-৬১ দাহিয়া কালবীর মাধ্যমে বাইজেন্টাইন সম্রাট হেরাক্লিয়াসের কাছে ইসলামের আমন্ত্রণ পত্র প্রেরণ
৬২১ ৫১ আকাবার দ্বিতীয় শপথ ৬৩২ ৬১-৬২ মক্কায় বিদায় হজ্জ পালন এবং এরপর এক লক্ষেরও অধিক মুসলমানের কাছে বিদায় হজ্জের ভাষণে শেষবারের মতো সকলের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান
৬২২ ৫২ মদিনায় হিজরত ৬২-৬৩ শারীরিক অসুস্থতা এবং মদিনায় শাহাদৎবরণ

আরও দেখুন

পাদটীকা

  1. পূর্ণ নাম: আবুল কাসিম মুহাম্মাদ ইবনে ʿআবদুল্লাহ ইবনে ʿআবদুল মুত্তালিব ইবনে হাশিম (ابو القاسم محمد ابن عبد الله ابن عبد المطلب ابن هاشم)
  1. গোল্ডম্যান ১৯৯৫, পৃষ্ঠা ৬৩, প্রভাবশালী ইসলামী রীতি অনুসারে ৮ জুন ৬৩২ খ্রিস্টাব্দকে নির্দেশ করে। অনেক পূর্ববর্তী (প্রধানত অ-ইসলামী) রীতি তাকে মুসলিমদের ফিলিস্তিন বিজয়ের সময়েও জীবিত বলে উল্লেখ করে।
  2. ওয়েলচ, মুসালি এবং নিউবি (২০০৯) অনুসারে ইসলামিক বিশ্বকোষে লেখা: "ইসলামের নবী ছিলেন একজন ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারক যিনি বিশ্বের অন্যতম মহান সভ্যতার জন্ম দিয়েছেন। একটি আধুনিক, ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে, মুহাম্মদ ছিলেন ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা। ইসলামিক বিশ্বাসের দৃষ্টিকোণ থেকে, তিনি ছিলেন আল্লাহর রাসূল (রাসূল আল্লাহ), যাকে প্রথমে আরবদের এবং তারপর সমগ্র মানবজাতির জন্য "সতর্ককারী" হিসাবে ডাকা হয়েছিল।"

তথ্যসূত্র

  1. "রাসূল (সাঃ) এর উপর দরুদ প্রেরণ করা হয় কেন?" (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১২ 
  2. "মুসলিমদের "শান্তি তার উপর বর্ষিত হোক" বাক্যটির অর্থ কী?" (ইংরেজি ভাষায়)। ইনোভেটআস ইনক.। ১১ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুলাই ২০১৫ 
  3. কনরাড, লরেন্স আই. (১৯৮৭)। "আবরাহা ও মুহাম্মদ: প্রাথমিক আরবি ঐতিহাসিক ঐতিহ্যে কালানুক্রমিক এবং সাহিত্যিক টোপোইয়ের কিছু পর্যবেক্ষণ"। স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের বুলেটিন৫০ (২): ২২৫–৪০। এসটুসিআইডি 162350288ডিওআই:10.1017/S0041977X00049016 
  4. ওয়েলচ, মুসাল্লি এবং নিউবাই ২০০৯
  5. এস্পোসিটো ২০০২, পৃ. ৪-৫।
  6. এস্পোসিটো ১৯৯৮, পৃ. ৯,১২।
  7. কনরাড ১৯৮৭
  8. রডিনসন ২০২১, পৃ. ৩৮, ৪১–৩।
  9. রজার্স ২০১২, পৃ. ২২।
  10. ওয়াট ১৯৭৪, পৃ. ৭।
  11. হাওয়ার্থ, স্টিফেন। নাইট টেম্পলাররা। ১৯৮৫. আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮২৬৪-৮০৩৪-৭ পৃ. ১৯৯
  12. মুহাম্মাদ মুস্তফা আল-আজামি (২০০৩), কুরআন পাঠ্যের ইতিহাস: ওহী থেকে সংকলন পর্যন্ত - পুরাতন এবং নতুন নিয়মের সাথে একটি তুলনামূলক অধ্যয়ন, পৃ. ২৬–২৭। ইউকে ইসলামিক একাডেমী। আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৭২৫৩১-৬৫-৬.
  13. আহমদ ২০০৯
  14. পিটার্স ২০০৩, পৃ. ৯।
  15. বুহল ও ওয়েলচ ১৯৯৩
  16. হোল্ট, ল্যাম্বটন এবং লুইস ১৯৭৭, পৃ. ৫৭।
  17. ল্যাপিডাস ২০০২, পৃ. ৩১-৩২।
  18. "নবী মুহাম্মাদের নাম" (ইংরেজি ভাষায়)। dinimizislam.com। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  19. উইলিয়াম মন্টগোমারি ওয়াট, নিকোলাই সিনাই। "মুহাম্মাদ - ইসলামের নবী" (ইংরেজি ভাষায়)। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  20. Diane, Morgan (২০০৯)। Essential Islam: A Comprehensive Guide to Belief and Practice [ইসলামের মূল বিষয়: বিশ্বাস ও কর্মের একটি ব্যাপক নির্দেশিকা]। পৃষ্ঠা ১০১। আইএসবিএন 978-0-313-36025-1। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০১২ 
  21. Kandemir, M. Yaşar। "MUHAMMED" [মুহাম্মাদ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। জুলাই ৩, ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  22. "Muhammet Kelimesinin Kökeni ve Anlamı" [মুহাম্মাদ শব্দের উৎপত্তি ও অর্থ] (তুর্কি ভাষায়)। etimolojiturkce.com। ১১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  23. Bozkurt, Nebi। "KÜNYE" [লেখক পরিচিতি] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  24. Ebû'l–Mehasin Yusuf b. İsmail b. Yusuf Şâfii Nebhânî (২০০৫)। Hüccetüllah ale’l-Âlemîn fî Mu'cizati Seyyidi'l-Mürselin [আল্লাহর নিদর্শন সমগ্র জগতের জন্য: সর্বশেষ নবীর মু'জিজা] (আরবি ভাষায়)। Darü'l-Kütübi'l-İlmiyye। পৃষ্ঠা ১০৮, ১১২। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  25. Nureddin Ali bin İbrahim bin Ahmed El-Halebi (২০১৩)। Es-Siretü'l-Halebiyye [হালাবীর জীবনী] (আরবি ভাষায়)। Darü'l-Kütübi'l-İlmiyye। পৃষ্ঠা ১:৩৫৩। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  26. El-Envaru'l-Muhammediyye Mine'l-Mevahibü'l-Ledünni [মহানবী মুহাম্মাদ এর আলোকিত জ্ঞানের ঝর্ণা: অলৌকিক অনুপ্রেরণা থেকে প্রাপ্ত দান] (আরবি ভাষায়)। Fazilet Neşriyat। ২০১৮। পৃষ্ঠা ১৪৩। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত। 
  27. পপ H. 16 (৬৩৭ খ্রিস্টাব্দ) সালে তৈরি কিছু মুদ্রার সন্ধান পেয়েছিলেন যেখানে "mhmd" (আরবি স্বরবর্ণ ছাড়াই লেখা) খোদাই করা ছিল। এই মুদ্রাগুলিতে "রাসুলুল্লাহ" শব্দটি অনুপস্থিত ছিল, যা পরবর্তীতে মুহাম্মাদের নামের সাথে যুক্ত হয়েছিল। পপ আরও কিছু আরব-সাসানিয়ান এবং সিরিয়ান মুদ্রার উল্লেখ করেছেন যেখানে "MHMT" (পেহলেভি বর্ণমালায়) এবং "mhmd" (আংশিকভাবে আরবি বর্ণমালায়) লেখা ছিল। কিছু ক্ষেত্রে, এই মুদ্রাগুলিতে খ্রিস্টান প্রতীকও খোদাই করা ছিল। Volker Popp, Bildliche Darstellungen aus der Frühzeit des Islam (IV), in: imprimatur 5+6, 2004; Volker Popp, Die frühe Islamgeschichte nach inschriftlichen und numismatischen Zeugnissen, in: Karl-Heinz Ohlig (ed.), Die dunklen Anfänge. Neue Forschungen zur Entstehung und frühen Geschichte des Islam, Berlin 2005, pp. 16–123 (here p. 63 ff.)
  28. Jean-Louis Déclais, Names of the Prophet , Encyclopedia of the Quran
  29. Nasr, Seyyed Hossein (২০০৭)। "Qurʾān [কুরআন]"Encyclopædia Britannica Online। ৫ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  30. Living Religions: An Encyclopaedia of the World's Faiths , Mary Pat Fisher, 1997, p. 338, I.B. Tauris Publishers.
  31. কুরআন ১৭:১০৬
  32. Watt, William Montgomery (৪ জানুয়ারি ২০২৪)। "Muhammad [মুহাম্মাদ]"Encyclopædia Britannica Online। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  33. Bennett ১৯৯৮, পৃ. ১৮–১৯।
  34. Peters ১৯৯৪, পৃ. ২৬১।
  35. Bora, Fozia (২০১৫-০৭-২২)। "Discovery of 'oldest' Qur'an fragments could resolve enigmatic history of holy text" ["প্রাচীনতম" কুরআনের খণ্ড আবিষ্কার পবিত্র গ্রন্থের রহস্যময় ইতিহাস উন্মোচন করতে পারে]। The Conversation (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০২-০৪ 
  36. Lumbard, Joseph E. B. (২৪ জুলাই ২০১৫)। "New Light on the History of the Quranic Text?" [নতুন আলোকপাতে কুরআনের ইতিহাস]। Huffington Post। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মার্চ ২০২১ 
  37. Watt 1953, পৃ. xi।
  38. Reeves, Minou (২০০৩)। Muhammad in Europe: A Thousand Years of Western Myth-Making [ইউরোপে মুহাম্মাদ: পশ্চিমা পৌরাণিক কাহিনীর এক হাজার বছর]। New York University Press। পৃষ্ঠা 6–7। আইএসবিএন 0814775640 
  39. Nigosian 2004, পৃ. 6।
  40. Donner, Fred (১৯৯৮)। Narratives of Islamic Origins: The Beginnings of Islamic Historical Writing [ইসলামের উৎপত্তির বর্ণনা: ইসলামী ঐতিহাসিক লেখার সূচনা]। Darwin Press। পৃষ্ঠা 132আইএসবিএন 0878501274 
  41. Holland, Tom (২০১২)। In the Shadow of the Sword [তরবারির ছায়ায়]। Doubleday। পৃষ্ঠা 42। আইএসবিএন 978-0-7481-1951-6Things which it is disgraceful to discuss; matters which would distress certain people; and such reports as I have been told are not to be accepted as trustworthy – all these things have I omitted.  
  42. Watt 1953, পৃ. xv।
  43. Lewis, Bernard (১৯৯৩)। Islam and the West [ইসলাম এবং পাশ্চাত্য]। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 33–34। আইএসবিএন 978-0195090611 
  44. Jonathan, A.C. Brown (২০০৭)। The Canonization of al-Bukhārī and Muslim: The Formation and Function of the Sunnī Ḥadīth Canon [আল-বুখারী ও মুসলিমের হাদিস সংকলনের প্রামাণিকতা প্রতিষ্ঠা: সুন্নী হাদিস ক্যাননের গঠন ও কার্যকারিতা]। Brill Publishers। পৃষ্ঠা 9। আইএসবিএন 978-90-04-15839-9। ১৮ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। We can discern three strata of the Sunni ḥadīth canon. The perennial core has been the Ṣaḥīḥayn. Beyond these two foundational classics, some fourth-/tenth-century scholars refer to a four-book selection that adds the two Sunans of Abū Dāwūd (d. 275/889) and al-Nāsaʾī (d. 303/915). The Five Book canon, which is first noted in the sixth/twelfth century, incorporates the Jāmiʿ of al-Tirmidhī (d. 279/892). Finally, the Six Book canon, which hails from the same period, adds either the Sunan of Ibn Mājah (d. 273/887), the Sunan of al-Dāraquṭnī (d. 385/995) or the Muwaṭṭaʾ of Mālik b. Anas (d. 179/796). Later ḥadīth compendia often included other collections as well. None of these books, however, has enjoyed the esteem of al-Bukhārīʼs and Muslimʼs works. 
  45. Madelung 1997, পৃ. xi, 19–20।
  46. Ardic 2012, পৃ. 99।
  47. Robinson, Chase F. (২০১৫)। History and Religion [ইতিহাস এবং ধর্ম] (পিডিএফ)। Library of Congress। পৃষ্ঠা ১৩০। ১৩ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  48. Fred M. Donner (৩১ জানুয়ারি ২০১৯)। "Islam's Origins: Myth and Material Evidence" [ইসলামের উৎপত্তি: রহস্য এবং বস্তুগত প্রমাণ] (প্রকাশিত হয় এপ্রিল ৩, ২০১৯)। সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১ 
  49. Conrad, Lawrence I. (১৯৮৭)। "Abraha and Muhammad: Some Observations Apropos of Chronology and Literary" [আব্রাহা এবং মুহাম্মাদ: কালক্রম এবং সাহিত্যিক বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু পর্যবেক্ষণ]। Bulletin of the School of Oriental and African Studies (ইংরেজি ভাষায়): ২২৫–২৪০। আইএসএসএন 1474-0699ডিওআই:10.1017/S0041977X00049016। ডিসেম্বর ২৮, ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  50. "Uluslararası Hz. Ömer Sempozyumu" [আন্তর্জাতিক হজরত ওমর সিম্পোজিয়াম] (পিডিএফ)। Cumhuriyet Üniversitesi İlahiyat Fakültesi। ২০১৮। জানুয়ারি ২৬, ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  51. Güngör, Şeyma। "Tarihî Olaydan Menkıbeye, Menkıbeden Şahesere (Kerbelâ Olayı ve Hadikatü's-Süeda)" [ঐতিহাসিক ঘটনা থেকে কিংবদন্তি, কিংবদন্তি থেকে মহাকাব্য: কারবালার ঘটনা ও হাদিকাতুস সুয়াদা] (পিডিএফ)। ১৯ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  52. Nigosian, Solomon Alexander (২০০৪)। Islam: Its History, Teaching, and Practices [ইসলাম: ইতিহাস, শিক্ষা এবং অনুশীলন] (ইংরেজি ভাষায়)। Indiana University Press। পৃষ্ঠা ৬। আইএসবিএন 978-0-253-34315-4। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  53. Bearman, Peri J. (১৯৯৭)। The Encyclopaedia of Islam, New Edition: Index of Subjects [ইসলামের বিশ্বকোষ, নতুন সংস্করণ: বিষয়বস্তুর সূচি] (ইংরেজি ভাষায়)। E. J. Brill। পৃষ্ঠা ৬৬০–৬৬৩। আইএসবিএন 978-90-04-10422-8। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  54. Cook, Michael (১৯৮৩)। Muhammad [মুহাম্মাদ] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৬২। আইএসবিএন 978-0-19-287605-8। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  55. "Muhammet Yaşadı Mı? | Prof. Dr. Sami Aldeeb ve Furkan Er" ["মুহাম্মাদ কি জীবিত ছিলেন?" | প্রফেসর ডঃ সামি আলদিব এবং ফুরকান এর]। www.nonteizm.com। মে ২৭, ২০২১। জুন ২২, ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৮, ২০২৩ 
  56. Anderson, Mark (২৮ অক্টোবর ২০১৮)। "Is Mecca Really the Birthplace of Islam?" [মক্কা কি সত্যিই ইসলামের জন্মস্থান?]। Zwemer Center for Muslim Studies। ১৩ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  57. Al-Tamimi, Aymenn Jawad (২৯ আগস্ট ২০১৯)। "The Byzantine-Arabic Chronicle: Full Translation and Analysis" [বাইজেন্টাইন এবং আরবদের ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ ও বিশ্লেষণ] (ইংরেজি ভাষায়)। aymennjawad.org। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  58. "Arşivlenmiş kopya" [আর্কাইভ কপি]। ২৫ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২১ 
  59. "Arşivlenmiş kopya" [আর্কাইভ কপি]। এপ্রিল ২৩, ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৬, ২০২১ 
  60. "Mekke Nerede???" [মক্কা কোথায়?]। YouTube। 26 May 2021: İlyas Özkan। ২৭ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  61. Nigosian, Solomon A. (২৯ জানুয়ারি ২০০৪)। Islam: Its History, Teaching, and Practices [ইসলাম: ইতিহাস, শিক্ষা এবং অনুশীলন] (ইংরেজি ভাষায়)। Indiana University Press। পৃষ্ঠা ৬। আইএসবিএন 978-0-253-11074-9। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  62. Nevo, Nehuda D.; Koren, Judith (২০০০)। The Quest for the Historical Muhammad [ঐতিহাসিক মুহাম্মাদের অনুসন্ধান] (ইংরেজি ভাষায়)। New York: Prometheus Books। পৃষ্ঠা ৪২০–৪৪৩। 
  63. Juynboll, G. H. A. (১৯৮২)। Studies on the First Century of Islamic Society [ইসলামী সমাজের প্রথম শতাব্দীর উপর গবেষণা] (ইংরেজি ভাষায়)। Southern Illinois University Press। পৃষ্ঠা ২০। আইএসবিএন 978-0-8093-1062-3। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  64. Juynboll, G. H. A. (১৯৮২)। Studies on the First Century of Islamic Society [ইসলামী সমাজের প্রথম শতাব্দীর উপর গবেষণা] (ইংরেজি ভাষায়)। Southern Illinois University Press। পৃষ্ঠা ১৪। আইএসবিএন 978-0-8093-1062-3। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  65. Nevo, Nehuda D.; Koren, Judith (২০০০)। The Quest for the Historical Muhammad [ঐতিহাসিক মুহাম্মাদের অনুসন্ধান] (ইংরেজি ভাষায়)। New York: Prometheus Books। পৃষ্ঠা ৪৩২। 
  66. Deus, A. J. (২০২১)। "Doctrina Jacobi: Jacob and Justus" [জ্যাকোবের শিক্ষা: জ্যাকোব ও জাস্টাস]। academia.edu। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  67. Anthony, Sean W. (১ নভেম্বর ২০১৪)। "Muḥammad, the Keys to Paradise, and the Doctrina Jacobi: A Late Antique Puzzle" [মুহাম্মাদ, স্বর্গের চাবি এবং ডকট্রিনা জ্যাকোবি: একটি প্রাচীন রহস্য]। Der Islam (ইংরেজি ভাষায়) (২): ২৪৩–২৬৫। আইএসএসএন 1613-0928ডিওআই:10.1515/islam-2014-0010। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  68. Crone, Patricia; Cook, Michael (২১ এপ্রিল ১৯৭৭)। Hagarism: The Making of the Islamic World [হ্যাগারিজম: ইসলামী বিশ্বের গঠন] (ইংরেজি ভাষায়)। CUP Archive। আইএসবিএন 978-0-521-21133-8। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  69. "Muhammed diye biri yaşamış mıdır? | Doç. Dr. Zafer Duygu" [মুহাম্মাদ নামে কি কেউ ছিলেন? | ডঃ জাফের দুইগ্যু]। YouTube। Dini Cevaplar। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২। ৯ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  70. Kaegi, Walter Emil (১৯৯২)। Byzantium and the Early Islamic Conquests [বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং প্রাথমিক ইসলামী বিজয়] (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা ৯০–৯৩। আইএসবিএন 978-0-521-41172-1। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  71. Kaegi, Walter Emil (১৯৯২)। Byzantium and the Early Islamic Conquests [বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য এবং প্রাথমিক ইসলামী বিজয়] (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা ১১০। আইএসবিএন 978-0-521-41172-1। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০২৩ 
  72. Thomson, Robert W.; Howard-Johnston, James (১৯৯৯)। The Armenian History Attributed to Sebeos [সেবেওসের নামে পরিচিত আর্মেনীয় ইতিহাস] (ইংরেজি ভাষায়)। Liverpool University Press। পৃষ্ঠা ২৩৮। আইএসবিএন 978-0-85323-564-4। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  73. Hoyland, Robert G. (১০ জানুয়ারি ২০১৪)। Seeing Islam as Others Saw It: A Survey and Evaluation of Christian, Jewish and Zoroastrian Writings on Early Islam [অন্যদের দৃষ্টিতে ইসলাম: প্রাথমিক ইসলামের উপর খ্রিস্টান, ইহুদি ও জরথুস্ট্রীয় লেখার একটি সমীক্ষা ও মূল্যায়ন] (ইংরেজি ভাষায়)। The Darwin Press। পৃষ্ঠা ১২৮। আইএসবিএন 978-1-61813-131-7। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  74. Thomson, Robert W. (১৯৯৯)। The Armenian History Attributed to Sebeos [সেবেওসের নামে পরিচিত আর্মেনীয় ইতিহাস] (ইংরেজি ভাষায়)। Liverpool University Press। পৃষ্ঠা ৯৫–৯৬। আইএসবিএন 978-0-85323-564-4। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  75. Crone, Patricia; Cook, M. A.; Cook, Michael (২১ এপ্রিল ১৯৭৭)। Hagarism: The Making of the Islamic World [হ্যাগারিজম: ইসলামী বিশ্বের বিকাশ] (ইংরেজি ভাষায়)। CUP Archive। পৃষ্ঠা ৬–৭। আইএসবিএন 978-0-521-21133-8। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  76. Marr, Andrew (২০১৮)। Büyük Dünya Tarihi [বৃহত্তর বিশ্বের ইতিহাস] (তুর্কি ভাষায়)। Yakamoz Yayınları। পৃষ্ঠা ১৯৯। আইএসবিএন 978-605-297-160-4। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  77. "Dinlerin İnsan Ürünü Olduğunun Kanıtı Var mı? – Celâl Şengör" [ধর্মগুলো কি মানুষের তৈরি? – সেলাল শেঙ্গোর]। YouTube। BilimNeDiyor। ৬ অক্টোবর ২০২২। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  78. "Öteki Gündem – Göbeklitepe Sırları" [অন্যদিকের গল্প - গোবেক্লিটেপের রহস্য]। YouTube। Habertürk TV। ২২ নভেম্বর ২০১৭। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  79. "Celâl Şengör, Mehmet Önal ve Ahmet Arslan, Teke Tek Bilim'de son kazılar ışığında Harran'ı anlattı" [সেলজুক শেঙ্গোর, মেহমেত ওনাল এবং আহমেত আরসলান, "টেক টেক বিলিম" অনুষ্ঠানে সাম্প্রতিক খননকার্যের আলোকে হারান শহর সম্পর্কে আলোচনা করেছেন।]। YouTube। Habertürk TV। ২৩ মে ২০২২। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০২৩ 
  80. Avcı, Casim। "KUREYŞ (Benî Kureyş)" [কুরাইশ (বনী কুরাইশ)] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ৩ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  81. İbn-i Hişâm, Sîre, 1. cilt, ss. 1–3
  82. İbn Sa'd, Tabakat, 1. cilt, ss. 55–56
  83. Belâzuri, Ensabü'l-Eşraf, 1. cilt, s. 12
  84. Taberî, Tarih, 2. cilt, ss. 172–180
  85. Suruç, Salih (২০২০)। Kâinatın Efendisi Peygamberimizin Hayatı [বিশ্বজগতের রহমত আমাদের নবীর জীবন] (তুর্কি ভাষায়)। Nesil Yayınları। পৃষ্ঠা ৪০। আইএসবিএন 978-975-269-894-9। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  86. İbn-i Sâd, Tabakat, 1. cilt, s. 20
  87. Müslim, Sahih-i Müslim, 7. cilt, s. 58
  88. Harman, Ömer Faruk। "İSMÂİL" [ইসমাইল] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  89. "Quraish or Qorash (Q 106): From the Perspectives of Qur'an and Bible" [কুরাইশ বা কোরেশ (সূরা ১০৬): কুরআন এবং বাইবেলের দৃষ্টিকোণ থেকে]। 
  90. Ağırakça, Ahmet। "NABATÎLER" [নাবাতী] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  91. Hamidullah, Muhammad (ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯)। "The Nasi', the Hijrah Calendar and the Need of Preparing a New Concordance for the Hijrah and Gregorian Eras: Why the Existing Western Concordances are Not to be Relied Upon" [নাসি, হিজরি ক্যালেন্ডার এবং হিজরি ও গ্রেগরিয়ান যুগের জন্য একটি নতুন সমন্বয় প্রস্তুত করার প্রয়োজনীয়তা: কেন বিদ্যমান পাশ্চাত্য সমন্বয়গুলি নির্ভরযোগ্য নয়] (পিডিএফ)The Islamic Review & Arab Affairs: ৬–১২। ৫ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৩ 
  92. Hajjah Amina Adil (২০০২)। Muhammad, the Messenger of Islam: His Life & Prophecy [মুহাম্মাদ, ইসলামের নবী: তাঁর জীবন ও নবুয়ত] (ইংরেজি ভাষায়)। ISCA। আইএসবিএন 978-1-930409-11-8। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  93. "Ebrehe'nin Ordusu – Prof. Dr. Yaşar Nuri Öztürk" [ইব্রাহিমের সৈন্য - অধ্যাপক ড. ইয়াসার নুরি ওজটুর্ক]। www.hakikat.com। ১৩ জুলাই ২০১৩। ১৩ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  94. Conrad, Lawrence I. (১৯৮৭)। "Abraha and Muhammad: Some Observations Apropos of Chronology and Literary Topoi in the Early Arabic Historical Tradition 1" [আব্রাহা এবং মুহাম্মাদ: ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষার্ধের আরব ঐতিহাসিক ঐতিহ্যে কালক্রম এবং সাহিত্যিক বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু পর্যবেক্ষণ]। Bulletin of the School of Oriental and African Studies (২): ২২৫–৪০। ডিওআই:10.1017/S0041977X00049016। ২১ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৩ 
  95. Sherrard Beaumont Burnaby (১৯০১)। Elements of the Jewish and Muhammadan Calendars: With Rules and Tables and Explanatory Notes on the Julian and Gregorian Calendars [ইহুদি ও ইসলামি ক্যালেন্ডারের মৌলিক বিষয়সমূহ: জুলিয়ান ও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের নিয়ম, সারণী এবং ব্যাখ্যা সহ]। G. Bell। পৃষ্ঠা ৪৬৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  96. Yücel, İrfan (২০১২)। Peygamberimizin Hayatı [আমাদের নবীর জীবন] (পিডিএফ)। Diyanet İşleri Başkanlığı Yayınları। পৃষ্ঠা ৭–৩৮। আইএসবিএন 9789751901880। ২০ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  97. Burnaby, Sherrard Beaumont (১৯০১)। Elements of the Jewish and Muhammadan Calendars: With Rules and Tables and Explanatory Notes on the Julian and Gregorian Calendars [ইহুদি ও ইসলামি পঞ্জিকার উপাদানসমূহ: জুলিয়ান এবং গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের নিয়ম, সারণী এবং ব্যাখ্যামূলক টীকা সহ]। London: G. Bell। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  98. "Peygamberimizin Doğumu" [আমাদের নবীর জন্ম]। kalbinsesi.com। ১৯ অক্টোবর ২০১৩। ১৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  99. "MUHAMMED" [মুহাম্মাদ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  100. Ünver, Mustafa (১ জুন ২০১৬)। "Nesî Ayeti ve Modern Nesî Uygulamaları" [নেসি আয়াত এবং আধুনিক নেসির প্রয়োগ]। Diyanet İlmi Dergi। পৃষ্ঠা ৪৩–৬৮। আইএসএসএন 1300-8498। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  101. Fayda, Mustafa। "NESÎ" [নেসি] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৭ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  102. Lawrence Conrad (জুন ১৯৮৭)। "Abraha and Muhammad: Some Observations Apropos of Chronology and Literary topoi in the Early Arabic Historical Tradition" [আবরাহা এবং মুহাম্মাদ: প্রারম্ভিক আরব ঐতিহাসিক ঐতিহ্যে কালক্রম এবং সাহিত্যিক বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছু পর্যবেক্ষণ]। Bulletin of the School of Oriental and African Studies। পৃষ্ঠা ২৩৯। ডিওআই:10.1017/S0041977X00049016। ১১ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২০ 
  103. "History and Religion" [ইতিহাস এবং ধর্ম] (পিডিএফ)। Walter de Gruyter GmbH। ২০১৫। ১৩ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩News of Muḥammad and his contemporaries circulated by word of mouth from the start, vectors for the transit of information not only to subsequent generations of Muslims, but also to non-Muslims. 
  104. Watt, William Montgomery (১৯৬০)। Muhammad at Mecca [মক্কার মুহাম্মাদ] (ইংরেজি ভাষায়)। Clarendon Press। পৃষ্ঠা ১৬–১৮। আইএসবিএন 978-0-19-577277-7। ১১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  105. Yıldız, Hakkı Dursun। "ARABİSTAN" [আরবদের দেশ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২০ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  106. Rue, Loyal D. (২০০৫)। Religion is Not About God: How Spiritual Traditions Nurture Our Biological Nature and What to Expect When They Fail [ধর্ম ঈশ্বর সম্পর্কিত নয়: কীভাবে আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য আমাদের জৈবিক প্রকৃতিকে লালন করে এবং সেগুলো ব্যর্থ হলে কী আশা করা যায়] (ইংরেজি ভাষায়)। Rutgers University Press। পৃষ্ঠা ২২৪। আইএসবিএন 978-0-8135-3511-1। ১১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  107. Esposito, John L. (২৮ এপ্রিল ২০১৬)। Islam: The Straight Path [ইসলাম: সরল পথ] (Updated Fifth Edition, Updated Fifth Edition)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৪–৫। আইএসবিএন 978-0-19-063215-1। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  108. Kara, Cahid (২০১৫)। "İslam Öncesi Arap Yarımadası'nda Bir Kültür Merkezi: Cüreş" [ইসলাম পূর্ব আরব উপদ্বীপে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র: জুরাশ]। গবেষণা : dergipark.org.tr। Hitit Üniversitesi İlahiyat Fakültesi Dergisi। ১২ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  109. Tarih Kitabı [ইতিহাসের বই] (তুর্কি ভাষায়)। Alfa Basım Yayım Dağıtım। ২০০০। পৃষ্ঠা ৭৯। আইএসবিএন 978-605-171-364-9। ১২ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  110. Watt, William Montgomery (১৯৬০)। Muhammad at Mecca [মক্কায় মুহাম্মাদ] (ইংরেজি ভাষায়)। Clarendon Press। পৃষ্ঠা ১–২। আইএসবিএন 978-0-19-577277-7। ১১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  111. Johnson, Scott Fitzgerald (২০১২)। The Oxford Handbook of Late Antiquity [অক্সফোর্ড প্রাচীনতম ইতিহাসের নির্দেশ-পুস্তক] (ইংরেজি ভাষায়)। OUP USA। পৃষ্ঠা ২৮৬–২৮৭। আইএসবিএন 978-0-19-533693-1। ২১ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২২ 
  112. Johnson, Scott Fitzgerald (২০১২)। The Oxford Handbook of Late Antiquity [অক্সফোর্ড প্রাচীনতম ইতিহাসের নির্দেশ-পুস্তক] (ইংরেজি ভাষায়)। OUP USA। পৃষ্ঠা ৩০১। আইএসবিএন 978-0-19-533693-1। ২১ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২২ 
  113. Fayda, Mustafa। "CÂHİLİYE" [অজ্ঞতার যুগ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  114. Aktan, Ali (২০১১)। İslam Tarihi: Başlangıcından Emevîlerin Sonuna Kadar [ইসলামের ইতিহাস: সূচনা থেকে উমাইয়া রাজবংশের সমাপ্তি পর্যন্ত] (তুর্কি ভাষায়)। Nobel Akademik Yayıncılık। পৃষ্ঠা ৫৪। আইএসবিএন 978-605-133-101-0। ১১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  115. Demircan, Adnan (২০০৪)। "Câhiliyye Araplarında Kız Çocuklarını Gömerek Öldürme Âdeti" [জাহিলী যুগে আরবদের মধ্যে কন্যা সন্তান জীবন্ত কবর দেয়ার প্রথা]। dergipark.org.tr। ৩ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অক্টোবর ২০২৩ 
  116. "Arşivlenmiş kopya" [আর্কাইভ কপি]। ৩ মার্চ ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২২ 
  117. Güç, Ahmet। "PUT" [মূর্তি] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৬ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  118. Dindi, Emrah (২০১৭)। "Câhiliye Arap Hac Ritüellerinin Kur'an'daki Menâsikle Diyalektik İlişkisi" [ইসলাম-পূর্ব আরবের হজ্জের রীতিনীতিসমূহ এবং কুরআনে বর্ণিত ধর্মীয় আচারের দ্বন্দ্বাত্মক সম্পর্ক] (পিডিএফ)। Cumhuriyet İlahiyat Dergisi। ১৮ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০২২ 
  119. Aytaç, Bedrettin। "Cahiliye Çağı İnançları" [অজ্ঞতার যুগের বিশ্বাস]। acikders.ankara.edu.tr। ২৫ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০২৩ 
  120. Sarıcık, Murat (২০১৩)। "Cahiliye Döneminde Arap Yarımadası Panayırları" [জাহিলিয়া যুগে আরব উপদ্বীপের মেলা]। গবেষণা: dergipark.org.tr। Süleyman Demirel Üniversitesi İlahiyat Fakültesi Dergisi। ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  121. İvgin, Hayrettin। "Put ve Putperestlik'in Mitolojik Boyutu" [মূর্তি এবং মূর্তিপূজার পৌরাণিক দিক] (পিডিএফ)web.archive.org। Kültür Evreni। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  122. Esposito, John L. (৬ এপ্রিল ২০০০)। The Oxford History of Islam [ইসলামের অক্সফোর্ড ইতিহাস] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-988041-6। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  123. Ueberweg, Friedrich। History of Philosophy, Vol. 1: From Thales to the Present Time [দর্শনের ইতিহাস, খণ্ড ১: থেলিস থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত] (ইংরেজি ভাষায়)। Charles Scribner's Sons। পৃষ্ঠা ৪০৯। আইএসবিএন 978-1-4400-4322-2। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  124. Rubin, Uri, "Ḥanīf" , Encyclopaedia of the Qur'ān, General Editor: Johanna Pink, University of Freiburg. Erişim tarihi: 12 Ağustos 2023.
  125. Kuzgun, Şaban। "HANÎF" [হানিফ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  126. Köchler, Hans (১৯৮২)। The Concept of Monotheism in Islam and Christianity [ইসলাম ও খ্রিস্টধর্মে ঈশ্বরের একত্ববাদের ধারণা] (ইংরেজি ভাষায়)। International Progress Organization। পৃষ্ঠা ২৯। আইএসবিএন 978-3-7003-0339-8। ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  127. Jacobs, Louis (১৯৯৫)। The Jewish Religion: A Companion [ইহুদি ধর্ম: একটি সঙ্গী]। Internet Archive। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ২৭২। আইএসবিএন 978-0-19-826463-7। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  128. Turner, Colin (২০০৬)। Islam: The Basics [ইসলাম: মূল বিষয়]। Internet Archive। Routledge। পৃষ্ঠা ১৬। আইএসবিএন 978-0-415-34105-9। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  129. Çetkin, Muhammed (২০১৮)। "Cahiliyye Dönemi Şiir ve Nesrinde Nübüvvet" [প্রাক-ইসলামি আরবদের যুগের কবিতা ও গদ্যে নবুয়ত]। গবেষণা: dergipark.org.tr। Şarkiyat İlmi Araştırmalar Dergisi। ১৪ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  130. "(61:6) As-Saff | (৬১:৬) আস-সাফ এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১১ 
  131. El-Envaru'l-Muhammediyye Mine'l-Mevahibü'l-Ledünni [মুহাম্মাদ এর নূর: ঈশ্বরের পক্ষ থেকে প্রাপ্ত অলৌকিক দানের আলো] (আরবি ভাষায়)। Fazilet Neşriyat। ২০১৮। পৃষ্ঠা ১৪৩। ১০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩Abdullah bin Abbas|İbn-i Abbas'tan rivayet olunmuştur. 
  132. Said Nursî (২০১০)। Mektûbat [চিঠিপত্র]। İstanbul: Envâr Neşriyât। পৃষ্ঠা ১৬৫। Said Nursî, İncil'deki ilgili fıkralardan ikisinin Arapçalarını alıntılar. Bunlardan birisi, "قَالَ الْمَسِيحُ اِنِّى ذَاهِبٌ اِلَى اَبِى وَ اَبِيكُمْ لِيَبْعَثَ لَكُمُ الْفَارَقْلِيطَا", diğeri ise "اِنِّى اَطْلُبُ مِنْ رَبِّى فَارَقْلِيطًا يَكُونُ مَعَكُمْ اِلَى اْلاَبَدِ" idir. 
  133. Allison, Gregg (১৯ এপ্রিল ২০১১)। Historical Theology: An Introduction to Christian Doctrine [ঐতিহাসিক ধর্মতত্ত্ব: খ্রিস্টান ধর্মীয় নীতির ভূমিকা] (ইংরেজি ভাষায়)। Zondervan Academic। পৃষ্ঠা ৪৩১। আইএসবিএন 978-0-310-41041-6। ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  134. "İncil: Yuhanna 14:15-17" [ইনজিল: যোহন ১৪:১৫-১৭]। incil.info। ২৩ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  135. "CATHOLIC ENCYCLOPEDIA: Paraclete" [ক্যাথলিক এনসাইক্লোপিডিয়া: পারাক্লিত]। newadvent.org। ১২ অক্টোবর ১৯৯৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  136. Gördük, Yunus Emre (২০২০)। "Kitâb-ı Mukaddes Metinlerinde Hz. Peygamber'in Müjdelenmesi Konusunda Bir İnceleme: Mu'cizât-ı Ahmediye Risalesi Perspektifinden (II)" [কিতাব-ই মুকাদ্দাস মতিনগুলোতে মুহাম্মাদের মুজদেলা (ভবিষ্যদ্বাণী) : মু'জিযাত-ই আহমদিয়া রিসালার দৃষ্টিকোণ থেকে (দ্বিতীয় পর্ব)]। Katre International Human Studies Journal। পৃষ্ঠা ৪৮। ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  137. Öztürk Bitik, Başak (২০১১)। "Evliyâ Çelebi Seyahatnâmesinde Cadı, Obur, Büyücü Anlatıları ve Kurgudaki İşlevleri" [ইভলিয়া চেলেবি স্যাহাটনামায় ডাইনি, দানব, জাদুকরের বর্ণনা এবং কল্পকাহিনীতে তাদের ভূমিকা]। Millî Folklor। ১৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০২২ 
  138. "ŞEM'UN-U SAFÂ" [উত্তরের আলো] (তুর্কি ভাষায়)। Sorularla Risale। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭। ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ অক্টোবর ২০২২ 
  139. Said Nursî, Mektûbat, s. 171, Envâr Neşriyât, İstanbul: 2010. Evliya Çelebi'nin eserinde Osmanlı alfabesiyle alıntıladığı o âyette geçen kelimeler; "ايتون Bir oğlan", "ازربيون İbrahim neslinden ola", "پروفتون Peygamber ola", "لوغسلين yalancı olmaya", "بنت onun", "افزولات doğum yeri Mekke ola", "كه كالوشير salihlikle gelmiş ola", "تونومنين onun mübarek adı", "مواميت Mevamit ola", "اسفدوس ona uyanlar", "تاكرديس bu dünyânın mâliki olalar", "بيست بيث ve o dünyânın mâliki olalar" Said Nursî, mevamit kelimesinin sırasıyla Muhammed ve Memed kelimelerinden tahrif edildiğini savunur.
  140. Evliya Çelebi (২০১১)। Kahraman, Seyit Ali; Dağlı, Yücel, সম্পাদকগণ। Günümüz Türkçesiyle Evliya Çelebi Seyahatnâmesi [আধুনিক তুর্কি ভাষায় এভলিয়া চেলেবির ভ্রমণ কাহিনী] (তুর্কি ভাষায়)। İstanbul: Yapı Kredi Yayınları। পৃষ্ঠা ১৪০–১৪১। আইএসবিএন 978-975-08-1859-2। ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  141. Sherrard Beaumont Burnaby (১৯০১)। Elements of the Jewish and Muhammadan Calendars: With Rules and Tables and Explanatory Notes on the Julian and Gregorian Calendars [ইহুদি ও মুসলিম ক্যালেন্ডারের মূলনীতি: জুলিয়ান ও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের নিয়ম, সারণী ও ব্যাখ্যামূলক দিকনির্দেশনা সহ]। G. Bell। পৃষ্ঠা ৪৬৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০২৩ 
  142. Conrad, Lawrence I. (১৯৮৭)। "Abraha and Muhammad: Some Observations Apropos of Chronology and Literary Topoi in the Early Arabic Historical Tradition 1" [আব্রাহা এবং মুহাম্মাদ: প্রাথমিক আরবি ঐতিহাসিক ঐতিহ্যে কালানুক্রম এবং সাহিত্যিক বিষয়বস্তুর প্রসঙ্গে কিছু পর্যবেক্ষণ]। Bulletin of the School of Oriental and African Studies: ২২৫–৪০। ডিওআই:10.1017/S0041977X00049016। ২১ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৩ 
  143. "Muhammad – Prophet of Islam" [মুহাম্মাদ – ইসলামের নবী] (ইংরেজি ভাষায়)। Encyclopedia Britannica। ১৭ জুন ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  144. Yücel, İrfan (২০১২)। Peygamberimizin Hayatı [পয়গম্বরের জীবন] (পিডিএফ)। Diyanet İşleri Başkanlığı Yayınları। পৃষ্ঠা ৭–৩৮। আইএসবিএন 9789751901880। ২০ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ 
  145. Encyclopedia of World History [বিশ্ব ইতিহাসের বিশ্বকোষ] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। ১৯৯৮। পৃষ্ঠা ৪৫২। আইএসবিএন 978-0-19-860223-1। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  146. Weil, Gustav; Sanders, Frank K.; Dunning, Harry W. (১৮৯৫)। "An Introduction to the Quran" [কুরআনের সাথে পরিচয়]। The Biblical World। The University of Chicago Press: ১৮২। জেস্টোর 3135387ডিওআই:10.1086/471621। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  147. "Peygamberimize Gelen İlk Vahiy" [আমাদের নবীর প্রথম ওহি] (তুর্কি ভাষায়)। İslam ve İhsan। ১৫ মে ২০১৮। ৩ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  148. Hocaoğlu, Mustafa; Hocaoğlu, Öznur (২০২১)। "Kur'an ve Siyer İlişkisi Bağlamında Hz. Peygamber'in Dâvete Başlaması ve Gizli Dâvet Döneminin Mahiyeti" [কুরআন ও সীরাতের আলোকে নবী মুহাম্মাদ এর দাওয়াত শুরু এবং গোপন দাওয়াতের যুগের বৈশিষ্ট্য] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: Akademik Siyer Dergisi। পৃষ্ঠা ২০–৪২। আইএসএসএন 2687-5810ডিওআই:10.47169/samer.811314। ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  149. Peters, Francis E. (২০০৩)। Islam, A Guide for Jews and Christians [ইসলাম, ইহুদি এবং খ্রিস্টানদের জন্য একটি নির্দেশিকা]। Internet Archive। Princeton University Press। পৃষ্ঠা ৯। আইএসবিএন 978-0-691-11553-5। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  150. Esposito, John L. (1998), s. 12; (1999) s. 25; (2002) ss. 4–5
  151. Buhl, F.; Welch, A. T. (১৯৯৩)। "Muḥammad" [মুহাম্মাদ]। Encyclopaedia of Islam। Brill Academic Publishers: ৩৬০–৩৭৬। আইএসবিএন 90-04-09419-9 
  152. Dinçer, Süleyman (২০২০)। "Hz. Muhammed Döneminde Çok Kültürlü Toplumsal Yapısıyla Medine'de "Birlikte Yaşama Modeli"nin Temelleri" [হযরত মুহাম্মাদ এর আমলে বহুসংস্কৃতির সমাজ গঠন করে মদিনায় "সহাবস্থানের নিদর্শন"-এর ভিত্তি স্থাপন]। গবেষণা: dergipark.org.tr। MANAS Journal of Social Studies। ২৬ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  153. Bozkurt, Nebi; Küçükaşçı, Mustafa Sabri। "MEKKE" [মক্কা] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১৪ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  154. Yücel 2012, পৃ. 30, 38
  155. "Sahih Bukhari – Volume 5, Book 59, Hadith Number 641" [সহীহ বুখারী - খণ্ড ৫, বই ৫৯, হাদিস নং ৬৪১] (ইংরেজি ভাষায়)। hadithcollection.com। ১৪ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০২৩ 
  156. Hisham Ibn al-Kalbi (২০১৫)। Book of Idols [মূর্তিপূজার বই] (ইংরেজি ভাষায়)। Faris, Nabih Amin কর্তৃক অনূদিত। Princeton University Press। পৃষ্ঠা ২১–২২। আইএসবিএন 978-0-691-62742-7। ১২ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  157. "Mekke'nin Fethi'nden Sonra Peygamberimizin Yaptıkları" [মক্কার বিজয়ের পর নবী মুহাম্মাদ যা করেছিলেন] (তুর্কি ভাষায়)। İslam ve İhsan। ১১ ডিসেম্বর ২০২১। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৩ 
  158. Holt, P. M. (1977), s. 57; Lapidus, Ira (2022), ss. 31–32
  159. Martin, Richard C. (২০১৬)। Encyclopedia of Islam and the Muslim World [ইসলাম ও মুসলিম বিশ্বের বিশ্বকোষ]। Macmillan Reference USA। ১৪ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০২৩ 
  160. Öztürk, Levent। "SÜVEYBE" [সওয়াইবা] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১৫ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  161. Ertürk, Hatice Nur (২০১৮)। "Hz. Peygamber'in Sütanneleri ve Sütanneye Verilmesi" [হজরত মুহাম্মাদ এর দুধমা এবং দুধমায়ের কাছে পাঠানো]। dergipark.org.tr। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  162. Şahin Utku, Nihal (২০২০)। "Antik ve Orta Çağ'da Sütannelik: Başkasının Sütünün Biyolojik, Ekonomik ve Kültürel Kodları" [প্রাচীন এবং মধ্যযুগে স্তন্যদান: অন্যের দুধের জৈবিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক তাৎপর্য]। Kadem Kadın Araştırmaları Dergisi। পৃষ্ঠা ৮৬, ৮৯। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  163. Watt, W. Montgomery (১৯৭১)। "Encyclopaedia of Islam – Ḥalīma Bint Abī Ḏh̲u'ayb" [ইসলামের বিশ্বকোষ - হালিমা বিনতে আবি সুয়ায়েব]। Brill। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  164. Suruç, Salih (২০২০)। Peygamberimizin Hayatı [আমাদের নবীর জীবন] (তুর্কি ভাষায়)। Nesil Yayınları। পৃষ্ঠা ৫৪–৬৮। আইএসবিএন 978-975-269-894-9। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  165. Peterson, Daniel C. (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৭)। Muhammad, Prophet of God [মুহাম্মাদ, ঈশ্বরের প্রেরিত পয়গম্বর] (ইংরেজি ভাষায়)। Eerdmans Publishing। পৃষ্ঠা ৩৮। আইএসবিএন 978-0-8028-0754-0। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  166. Peters, F. E. (৬ এপ্রিল ১৯৯৪)। Muhammad and the Origins of Islam [মুহাম্মাদ এবং ইসলামের উৎপত্তি] (ইংরেজি ভাষায়)। State University of New York Press। আইএসবিএন 978-0-7914-1876-5। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  167. Şükrullah Efendi (২০১০)। Behcetü't Tevarih [ইতিহাসের বাগান]। Almaz, Hasan কর্তৃক অনূদিত। Mostar Yayınları। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  168. Watt, William Montgomery (১৯৬১)। Muhammad: Prophet and Statesman [মুহাম্মাদ: নবী ও রাষ্ট্রনায়ক] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৭। আইএসবিএন 978-0-19-881078-0। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  169. Abel, A.। "Baḥīrā – Encyclopaedia of Islam" [বহীরা - ইসলামের বিশ্বকোষ]। Brill। ১৮ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  170. Ibn Rāshid, Ma'mar; Haleem, M. A. S. Abdel (১৬ মে ২০১৪)। The Expeditions: An Early Biography of Muhammad [অভিযান: মুহাম্মাদের একটি প্রাথমিক জীবনী] (ইংরেজি ভাষায়)। NYU Press। আইএসবিএন 978-0-8147-6963-8। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  171. Watt, William Montgomery (১৯৬১)। Muhammad: Prophet and Statesman [মুহাম্মাদ: নবী ও রাষ্ট্রনায়ক] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ১–২। আইএসবিএন 978-0-19-881078-0। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  172. Algül, Hüseyin। "FİCÂR" [ফিজার] (ইংরেজি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  173. Watt, William Montgomery (১৯৬১)। Muhammad: Prophet and Statesman [মুহাম্মাদ: নবী ও রাষ্ট্রনায়ক] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৮। আইএসবিএন 978-0-19-881078-0। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  174. Ramadan, Tariq (২০০৭)। In the Footsteps of the Prophet: Lessons from the Life of Muhammad [নবীর পদাঙ্ক অনুসরণে: মুহাম্মাদের জীবন থেকে শিক্ষা]। Internet Archive। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ১৯। আইএসবিএন 978-0-19-530880-8। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  175. McNeill, William H. (২০১৬)। Berkshire Encyclopedia of World History [বিশ্ব ইতিহাসের বার্কশায়ার বিশ্বকোষ] (ইংরেজি ভাষায়)। Berkshire Publishing Group। পৃষ্ঠা ১০২৫। আইএসবিএন 978-0-19-062271-8। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  176. "MUHAMMED" [মুহাম্মাদ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  177. Yücel 2012, পৃ. 9, 38
  178. Esposito, John L. (১৯৯৮)। Islam: The Straight Path [ইসলাম: সরল পথ] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৬। আইএসবিএন 978-0-19-511233-7। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  179. Lings, Martin (১৯৯১)। Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources [মুহাম্মাদ: প্রাথমিক সূত্রের উপর ভিত্তি করে তার জীবন] (ইংরেজি ভাষায়)। Islamic Texts Society। আইএসবিএন 978-0-946621-25-5। ১৩ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  180. İbn-i İshak, Müstedrek el-Hâkim, 3. cilt, s. 182
  181. İbn Sa'd, Tabakatü'l Kübra, 8. cilt, s. 13
  182. Kandemir, M. Yaşar। "HATİCE" [খাদিজা] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১৩ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  183. Seyhan, Ahmet Emin (৪ মে ২০২১)। "Hz. Hatice, Hz. Muhammed ile Kaç Yaşında Evlendi?" [হযরত খাদিজা হযরত মুহাম্মাদ এর সাথে কত বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন?] (তুর্কি ভাষায়)। Sürmeli Haber। ৭ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  184. "Peygamberimiz Hz. Muhammed'in, gençken putlarla bir ilgisi olmuş mudur?" [আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ যখন যুবক ছিলেন তখন মূর্তির প্রতি কিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন?]। Sorularla İslamiyet। ২ আগস্ট ২০১৪। ২৮ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ আগস্ট ২০২৩ 
  185. "(42:52) Ash-Shura | (৪২:৫২) আশ-শূরা এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১২ 
  186. "(93:7) Ad-Dhuha | (৯৩:৭) আদ-দুহা এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.net। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১২ 
  187. Peters, F. E. (Francis E. ) (২০০৩)। Islam, a guide for Jews and Christians [ইসলাম: ইহুদি ও খ্রিস্টানদের জন্য একটি নির্দেশিকা]। Internet Archive। Princeton, NJ : Princeton University Press। আইএসবিএন 978-0-691-11553-5 
  188. Glubb, Sir John Bagot (২০০১)। The Life and Times of Muhammad [মুহাম্মাদ এর জীবন ও সময়কাল] (ইংরেজি ভাষায়)। Cooper Square Press। পৃষ্ঠা ৭৯–৮১। আইএসবিএন 978-0-8154-1176-5। ১৪ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৩ 
  189. "Peygamber Efendimizin Kâbe Hakemliği" [কাবায় মধ্যস্থতাকারী পয়গম্বর] (তুর্কি ভাষায়)। İslam ve İhsan। ৮ মে ২০১৮। ১৯ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৩ 
  190. Jomier, J.; Wensinck, A. J. (১৯৯০)। "Ka'ba" [কাবা]। Brill। পৃষ্ঠা ৩১৯। ২৮ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৩ 
  191. Uludağ, Süleyman। "ABÂ" [আবা (চাদর)] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৯ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০২৩ 
  192. Bogle, Emory C. (১৯৯৮)। Islam: Origin and Belief [ইসলাম: উৎপত্তি ও বিশ্বাস] (ইংরেজি ভাষায়)। University of Texas Press। পৃষ্ঠা ৬। আইএসবিএন 978-0-292-70862-4। ১৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  193. Haaren, John Henry; Poland, Addison B. (১৯৯২)। Famous Men of the Middle Ages [মধ্যযুগের বিখ্যাত পুরুষগণ] (ইংরেজি ভাষায়)। Greenleaf Press। পৃষ্ঠা ৮৩। আইএসবিএন 978-1-882514-05-2। ১৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  194. Peterson, Daniel C. (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৭)। Muhammad, Prophet of God [মুহাম্মাদ, আল্লাহর নবী] (ইংরেজি ভাষায়)। Wm. B. Eerdmans Publishing। পৃষ্ঠা ৫১। আইএসবিএন 978-0-8028-0754-0। ১৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  195. Klein, F. A. (১৯০৬)। The Religion of Islám [ইসলাম ধর্ম] (ইংরেজি ভাষায়)। K. Paul, Trench, Trübner। পৃষ্ঠা ৭। আইএসবিএন 978-90-90-00408-2। ১৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  196. Wensinck, A. J.; Rippin, A. (২০০২)। "Waḥy" [ওহী]। গবেষণা: Encyclopaedia of Islam। Brill। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  197. Weil, Gustav; Sanders, Frank K.; Dunning, Harry W. (১৮৯৫)। "An Introduction to the Quran" [কুরআনের সাথে পরিচয়] (ইংরেজি ভাষায়)। গবেষণা: The Biblical World: ১৮৪। আইএসএসএন 0190-3578ডিওআই:10.1086/471621। ১১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  198. "(৯৬) আল-আলাক | (96) Al-Alaq | سورة العلق-অনুবাদ/তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৩ 
  199. "İlk vahyin gelişi nasıl gerçekleşmiştir?" [প্রথম ঐশ্বরিক বাণীর আগমন কিভাবে ঘটেছিল?] (তুর্কি ভাষায়)। Sorularla İslamiyet। ১ জুন ২০০৬। ১৮ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  200. Günel, Fuat। "HİRA" [হিরা] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১১ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  201. Brown, Daniel W. (২০০৩)। A New Introduction to Islam [ইসলামের সাথে একটি নতুন পরিচয়] (ইংরেজি ভাষায়)। Wiley। পৃষ্ঠা ৭৩। আইএসবিএন 978-0-631-21604-9। ১৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  202. Bogle, Emory C. (১৯৯৮)। Islam: Origin and Belief [ইসলাম: উৎপত্তি ও বিশ্বাস] (ইংরেজি ভাষায়)। University of Texas Press। পৃষ্ঠা ৭। আইএসবিএন 978-0-292-70862-4। ১৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  203. "Fetret'ul-vahiy hakkında bilgi verir misiniz?" [আপনি ফেত্রাতু'ল-ওয়াহী সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেন?]। sorusorcevapbul.com। ১৯ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  204. "(৭৪) আল-মুদ্দাসসির | (74) Al-Muddathir | سورة المدثر-অনুবাদ/তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৩ 
  205. "(৯৩) আদ-দুহা | (93) Ad-Dhuha | سورة الضحى-অনুবাদ/তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৩ 
  206. "İlk Müslümanlar Kimlerdir? İlk Müslümanların İsimleri" [প্রথম মুসলিমরা কারা? প্রথম মুসলিমদের নাম] (তুর্কি ভাষায়)। Hürriyet। ১১ মে ২০২০। ১৬ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  207. "İslam'da Gizli Davet Dönemi" [ইসলামে গোপনীয় দাওয়াতের যুগ] (তুর্কি ভাষায়)। İslam ve İhsan। ১৪ মে ২০১৮। ৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০২৩ 
  208. Lewis, Bernard (২০০২)। Arabs in History [ইতিহাসে আরব জাতি] (ইংরেজি ভাষায়)। OUP Oxford। পৃষ্ঠা ৩৫–৩৬। আইএসবিএন 978-0-19-280310-8। ১৭ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২৩ 
  209. Tarih Kitabı [ইতিহাস বই] (তুর্কি ভাষায়)। Alfa Basım Yayım Dağıtım। ২০১৯। পৃষ্ঠা ৭৯। আইএসবিএন 978-605-171-364-9। ১২ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২৩ 
  210. Gordon, Matthew (৩০ মে ২০০৫)। The Rise of Islam [ইসলামের উত্থান] (ইংরেজি ভাষায়)। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা ১২০–১২১। আইএসবিএন 978-0-313-32522-9। ১৭ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২৩ 
  211. Peters, F.E. (২০০৩)। Islam: A Guide for Jews and Christians [ইসলাম: ইহুদী ও খ্রিস্টানদের জন্য একটি নির্দেশিকা]। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 9আইএসবিএন 0-691-11553-2। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২৩ 
  212. Fayda, Mustafa। "MUHAMMED" [মুহাম্মাদ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২৩ 
  213. Cerrahoğlu, İsmail। "GARÂNÎK" [অভিশপ্ত বাণী] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১৮ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৩ 
  214. Küçükaşçı, Mustafa Sabri। "SENETÜ'l-HÜZN" [দুঃখের বছর] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৩ 
  215. Kapar, Mehmet Ali। "EBÛ LEHEB" [আবু লাহাব] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১০ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৩ 
  216. Muhammad ibn Ishaq (১৯৯৫)। Sirat Rasul Allah [নবী মুহাম্মাদের জীবনী] (ইংরেজি ভাষায়)। Guillaume, A. কর্তৃক অনূদিত। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ১৯৪–১৯৫। 
  217. Adil, Hajjah Amina (২০০২)। Muhammad, the Messenger of Islam: His Life & Prophecy [মুহাম্মাদ, ইসলামের রাসূল: তাঁর জীবন ও ভবিষ্যদ্বাণী] (ইংরেজি ভাষায়)। ISCA। পৃষ্ঠা ১৪৫–১৪৬। আইএসবিএন 978-1-930409-11-8। ২২ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০২৩ 
  218. Momen, Moojan (1985), s. 4
  219. Küçükaşçı, Mustafa Sabri। "MUT'İM b. ADÎ" [মুত'ইম ইবনে আদী] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০২২ 
  220. Kapar, M. Ali। "Hz. Peygamber Döneminde Bey'at" [হজরত মুহাম্মাদ এর যুগে বাইআত (ইসলাম গ্রহণের প্রতিজ্ঞা)]। dergipark.org.tr। ১০ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৩ 
  221. Özdemir, Öznur (২০২১)। "Hz. Peygamber Zamanında Medine'de Müslüman–Yahudi İlişkilerini Anlamak" [মদিনায় হযরত মুহাম্মাদ এর সময়ে মুসলিম-ইহুদি সম্পর্ক অনুধাবন] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: acarindex.com। Siyer Araştırmaları Dergisi। ১৯ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২৩ 
  222. Peterson, Daniel (2007), ss. 86–89
  223. Watt, W. Montgomery (১৯৭৪)। Muhammad: Prophet and Statesman [মুহাম্মাদ: নবী ও রাষ্ট্রনায়ক]। Internet Archive। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ৮৩। আইএসবিএন 978-0-19-881078-0। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০২৩ 
  224. Khan, Muhammad Zafrulla (১৯৮০)। Muhammad, Seal of the Prophets [মুহাম্মাদ, নবীদের সীলমোহর] (ইংরেজি ভাষায়)। Majlis Khuddamul Ahmadiyya। পৃষ্ঠা ৭৩। আইএসবিএন 978-0-85525-992-1। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০২৩ 
  225. Önkal, Ahmet। "HİCRET" [হিজরত] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ১২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২৩ 
  226. Ayrancı, İlhami (২৬ ডিসেম্বর ২০১৮)। "Hz. Peygamber'in Medine'ye Hicreti ve Bu Dönemde Uyguladığı Stratejiler Üzerine Bir Deneme" [হযরত মুহাম্মাদ এর মদিনায় হিজরত এবং এই সময়ে তাঁর প্রয়োগ করা কৌশল সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ] (তুর্কি ভাষায়) (৬)। গবেষণা: dergipark.org.tr। Kalemname: ৪৪–৭৭। আইএসএসএন 2651-3595। ২১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২৩ 
  227. Cengiz, Ercan (২০২২)। Hz. Muhammed'e Yapılan Suikast ve Öldürme Teşebbüsleri [হযরত মুহাম্মাদ এর উপর আক্রমণ ও হত্যার প্রচেষ্টা]। Kitap Dünyası। ২১ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২৩ 
  228. Fığlalı, Ethem Ruhi। "ALİ" [আলি] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৫ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২৩ 
  229. Algül, Hüseyin। "KUBÂ" [কুবা] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২৩ 
  230. Algül, Hüseyin। "EBÛ EYYÛB el-ENSÂRÎ" [আবু আইয়ুব আনসারি] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৭ জুন ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২৩ 
  231. Bozkurt, Nebi; Küçükaşçı, Mustafa Sabri। "MESCİD-i NEBEVÎ" [মসজিদে নববী] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৫ মে ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২৩ 
  232. Watt, W. Montgomery (১৯৫৬)। Muhammad at Medina [মদিনায় মুহাম্মাদ]। Osmania University, Digital Library Of India। Oxford At The Clarendon Press। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  233. Watt, William Montgomery (১৯৮১)। Muhammad at Medina [মদিনায় মুহাম্মাদ] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ২২৭। আইএসবিএন 978-0-19-577307-1। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  234. Özkan, Mustafa। "MEDİNE VESİKASI" [মদিনার সনদ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ৯ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  235. Khan, L. Ali (২০০৬)। "The Medina Constitution" [মদিনার সংবিধান]। Legal Scholar Academy। ২৪ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  236. Williams, John Alden (১৯৭১)। Themes of Islamic Civilization [ইসলামি সভ্যতার রূপ] (ইংরেজি ভাষায়)। University of California Press। পৃষ্ঠা ১২। আইএসবিএন 978-0-520-04514-9। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  237. "Umma in the Constitution of Medina" [মদিনার সংবিধানে উম্মাহ]। গবেষণা: Journal of Near Eastern Studies। The University of Chicago Press। ১৯৭৭: ৪৪। 
  238. Serjeant, R. B. (১৯৬৪)। The Constitution of Medina [মদিনার সংবিধান]। Islamic Quarterly। 
  239. Ahmad, Barakat (১৯৭৯)। Muhammad and the Jews: A Re-examination [মুহাম্মাদ এবং ইহুদি: একটি পুনঃপরীক্ষা] (ইংরেজি ভাষায়)। Vikas Publishing House। পৃষ্ঠা ৪৬–৪৭। আইএসবিএন 978-0-7069-0804-6। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০২৩ 
  240. "হাদীস সম্ভার | হাদিস: ১১৯৪ [বিশেষ বিশেষ মসজিদের মাহাত্ম্য]"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৫ 
  241. "İslam Tarihi'nde İlk Nüfus Sayımı" [ইসলামের ইতিহাসে প্রথম জনগণনা] (তুর্কি ভাষায়)। mehmetalkis.com। ২ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০২২ 
  242. Bozkurt, Nebi। "NÜFUS" [জনসংখ্যা] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৫ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০২২ 
  243. "Savaşa izin veren âyetler ile ilgili ayetler ve mealleri" [যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া আয়াত এবং তাদের অনুবাদ] (তুর্কি ভাষায়)। kuranvemeali.com। ২৫ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০২৩ 
  244. "(22:39) Al-Hajj | (২২:৩৯) আল-হজ্জ এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৫ 
  245. Watt, William Montgomery (১৯৬১)। Muhammad: Prophet and Statesman [মুহাম্মাদ: নবী ও রাষ্ট্রনায়ক] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। পৃষ্ঠা ১১৯। আইএসবিএন 978-0-19-881078-0। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২৩ 
  246. Fayda, Mustafa। "BEDİR GAZVESİ" [বদর যুদ্ধ] (তুর্কি ভাষায়)। TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২৩ 
  247. Razwy, Sayed Ali Asgher (২০১৫)। A Restatement of the History of Islam and Muslims [ইসলাম ও মুসলিমদের ইতিহাসের পুনর্বিবৃতি] (ইংরেজি ভাষায়)। CreateSpace Independent Publishing Platform। আইএসবিএন 978-1-5150-8784-7। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২৩ 
  248. Gabriel, Richard A. (২০০৭)। "Muhammad : Islam's First Great General" [মুহাম্মাদ: ইসলামের প্রথম মহান সেনাপতি] (ইংরেজি ভাষায়)। গবেষণা: worldcat.org। University of Oklahoma Press। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২৩ 
  249. Lings, Martin (১৯৮৩)। Muhammad: His Life Based on the Earliest Sources [মুহাম্মাদ: প্রাথমিক সূত্রের উপর ভিত্তি করে তার জীবন] (ইংরেজি ভাষায়)। Inner Traditions International। পৃষ্ঠা ১৪৮। আইএসবিএন 978-0-89281-046-8। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২৩ 
  250. Demirci, Abdurrahman (২০১৬)। "Ensar Kimliğinin Oluşumuna Etki Eden Faktörler" [আনসারদের পরিচয় কীভাবে তৈরি হয়েছিল]। গবেষণা: dergipark.org.tr। Yakın Doğu Üniversitesi İslam Tetkikleri Merkezi Dergisi। পৃষ্ঠা ৩২। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০২৩ 
  251. Uğurlu, Nur, Hz. Muhammed Sallallahu Aleyhi ve Sellem (মুহম্মাদ, যার উপর আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক), Nuh Yayınları. (sayfa: 205)
  252. "UHUD GAZVESİ" [উহুদের যুদ্ধ] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: TDV İslâm Ansiklopedisi। ৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০২২ 
  253. Changder, Narayan (২০২৪-০২-১১)। THE BATTLE OF UHUD (ইংরেজি ভাষায়)। Changder Outline। 
  254. Rodgers 2012, পৃ. 148।
  255. Watt 1961, পৃ. 169।
  256. Hazleton 2014, পৃ. 259।
  257. Ali Usta: Alternatif bir Kuran tefsiri, Araştırı ve bilimsel kitaplar serisi 1, öz Yapım & Havuz Yayınları, 2004, ISBN 3980861163, sayfa 150.
  258. Watt 1961, পৃ. 168।
  259. Watt 1971
  260. Hawting 1986
  261. Learning Islam 8। Islamic Services Foundation। ২০০৯। পৃষ্ঠা D14। আইএসবিএন 1-933301-12-0 
  262. "(7:158) Al-A'raf | (৭:১৫৮) আল-আ'রাফ এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৫ 
  263. "(5:67) Al-Ma'ida | (৫:৬৭) আল-মায়েদা এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৫ 
  264. "(34:28) Saba | (৩৪:২৮) সাবা এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৫ 
  265. Ahmed Cevdet Paşa, Son Peygamber Hz. Muhammed , Milli Gençlik Vakfı & Anadolu Gençlik Derneği, Ankara, 2018. (sayfa: 129)
  266. Footnote of the El-Cheikh(1999) reads: "Opposed to its authenticity is R. B. Sejeant "Early Arabic Prose: in Arabic Literature to the End of the Umayyad Period, ed. A. E L. Beeston et a1 ... (Cambridge, 1983), pp. 141–2. Suhaila aljaburi also doubts the authenticity of the document; "Ridlat al-nabi ila hiraql malik al-~m,H" amdard Islamicus 1 (1978) no. 3, pp. 15–49"
  267. El-Cheikh, Nadia Maria (1999). "Muhammad and Heraclius: A Study in Legitimacy". Studia Islamica. s. 5-21
  268. Irfan Shahid, Arabic literature to the end of the Umayyad period, Journal of the American Oriental Society, Vol 106, No. 3, p. 531
  269. "HERAKLEİOS" [হেরাক্লিয়াস] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: TDV İslâm Ansiklopedisi। ৩ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০২২ 
  270. "DİHYE b. HALÎFE" [দাহিয়া কালবী] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: TDV İslâm Ansiklopedisi। ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০২২ 
  271. "HERAKLİUS'UN İSLÂMA DÂVET EDİLMESİ" [হেরাক্লিয়াসের ইসলামে দাওয়াত]। গবেষণা: Sorularla İslamiyet। ২১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০২২ 
  272. Muhammad and Heraclius: A Study in Legitimacy, Nadia Maria El-Cheikh, Studia Islamica, No. 89. (1999), pp. 5–21.
  273. Footnote of the El-Cheikh(1999) reads: "Hamidullah discussed this controversy and tried to prove the authenticity of Heraclius' letter in his "La lettre du Prophete P Heraclius et le sort de I'original: Arabica 2(1955), pp. 97–1 10, and more recently, in Sir originaw des lettms du prophbte de I'lslam (Paris, 1985), pp. 149.172, in which he reproduces what purports to be the original letter."
  274. "Peygamber Efendimiz'in İslam'a Davet Mektupları" [ইসলামে দাওয়াতের নবীর চিঠি] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: İslam ve İhsan। ৩১ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২২ 
  275. "MEKKE" [মক্কা] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: TDV İslam Ansiklopedisi। ১৪ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০২২ 
  276. "MEKKE" [মক্কা] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: TDV İslam Ansiklopedisi। ১৪ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জানুয়ারি ২০২২ 
  277. Uğurlu, Nur, Hz. Muhammed Sallallahu Aleyhi ve Sellem, Nuh Yayınları.
  278. Watt 1974। পৃষ্ঠা ২০৭। 
  279. Muhammed [মুহাম্মাদ]। গবেষণা: İslam Ansiklopedisi (সপ্তম সংস্করণ)। Welch AT। ১৯৯৩। পৃষ্ঠা ৩৬০–৩৭৬। 
  280. Tabuk [তাবুক]। গবেষণা: İslam Ansiklopedisi। MA al-Bakhit। 
  281. The Life Of Muhammad [মুহাম্মাদের জীবনী]। Oxford Üniversitesi Yayınları। পৃষ্ঠা ২৮১–২৮৭। 
  282. The Life of Muhammad [মুহাম্মাদের জীবনী]। গবেষণা: Chicago University। Haykal MH। ১৯৯৩। 
  283. Ali İbn Abi-Talib'in Biyografisi [আলী ইবনে আবী তালিবের জীবনী]। Ansariyan Yayınları, Kum, İran İslam Cumhuriyeti। 
  284. Lewis 1993। পৃষ্ঠা ৪৩–৪৪। 
  285. সাহীহে বুখারী, চিকিৎসা বিভাগ, জিদী অধ্যায়, সাহীহে মুসলিম, সলাম বিভাগ, জিদী চিকিৎসার ঘৃণ্যতা অধ্যায়, মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ১১৮, সুনানে তিরমিযী, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ২৬৫
  286. Uğurlu, Nur, Hz. Muhammad Sallallahu Alayhi wa Sallam , Noah Publications.
  287. Ibn Sad Tabakat c. 2 H. 254
  288. Kılıç, Mustafa Cemil (১৭ অক্টোবর ২০১২)। "En Yüce Dosta Doğru" [সর্বোচ্চ বন্ধুর দিকে]। haberiniz। ২৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০১৩ 
  289. SURUÇ, Salih (২০০৫)। Peygamberimizin Hayatı [আমাদের নবীর জীবন]। ইস্তাম্বুল: Nesil Yayınları। পৃষ্ঠা ৫৪–৬৮। আইএসবিএন 975-408-019-4 
  290. "EBÛ BEKİR" [আবু বকর] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: TDV İslâm Ansiklopedisi। ১১ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২২ 
  291. "Hz. Ebu Bekir'in halife seçilmesi nasıl olmuştur?" [হযরত আবু বকরের খলিফা নির্বাচন: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বিবরণ]। গবেষণা: Sorularla İslamiyet। ২৫ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০২২ 
  292. Leila Ahmed 1986। পৃষ্ঠা ৬৬৫। 
  293. Peters, F. E. (১০ জানুয়ারি ২০০৯)। Islam: A Guide for Jews and Christians [ইসলাম: ইহুদী ও খ্রিস্টানদের জন্য একটি নির্দেশিকা] (ইংরেজি ভাষায়)। Princeton University Press। আইএসবিএন 978-1-4008-2548-6। ২০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  294. İslam'da Mimari Koruma: Mescid-i Nebevî Örneği [ইসলামে স্থাপত্য সংরক্ষণ: মসজিদে নববীর উদাহরণ]। Ariffin, Syed Ahmad Iskandar Syed। ২০০৫। পৃষ্ঠা ৮৮। 
  295. "Peygamber Mescidi" [নবীর মসজিদ]। ১১ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০২২ 
  296. İsa। İslam Ansiklopedisi। 
  297. Al-Haqqani, Shaykh Adil (জুলাই ২০০২)। The Path to Spiritual Excellence [আধ্যাত্মিক উৎকর্ষের পথ] (ইংরেজি ভাষায়)। ISCA। আইএসবিএন 978-1-930409-18-7। ২০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  298. Weston, Mark (২৮ জুলাই ২০০৮)। Prophets and Princes: Saudi Arabia from Muhammad to the Present [নবী ও রাজপুত্র: মুহম্মাদ থেকে বর্তমান সময়ের সৌদি আরব] (ইংরেজি ভাষায়)। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 978-0-470-18257-4। ২০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  299. Behrens-Abouseif, Doris; Vernoit, Stephen (২০০৬)। Islamic Art in the 19th Century: Tradition, Innovation, And Eclecticism [ইসলামী শিল্প: ঊনবিংশ শতাব্দীতে ঐতিহ্য, উদ্ভাবন এবং বৈচিত্র্য] (ইংরেজি ভাষায়)। BRILL। আইএসবিএন 978-90-04-14442-2। ২০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  300. Cornell, Vincent J. (২০০৭)। Voices of Islam [ইসলামের কণ্ঠস্বর] (ইংরেজি ভাষায়)। Greenwood Publishing Group। আইএসবিএন 978-0-275-98732-9। ২০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  301. Clark, Malcolm (১০ মার্চ ২০১১)। Islam For Dummies [ইসলামের সহজ ব্যাখ্যা] (ইংরেজি ভাষায়)। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 978-1-118-05396-6। ২০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 
  302. "Peygamber Efendimizin Mucizeleri - Dinimiz İslam" [আমাদের নবীর মুজিজা - আমাদের ধর্ম ইসলাম]। গবেষণা: dinimizislam.com। ২৬ মে ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০২২ 
  303. "Peygamberimizin Kur'an'dan başka mucizesi var mıdır? | Prof. Dr. Abdülaziz Bayındır" [আমাদের নবীর কুরআনের বাইরে কি অন্য কোনো মুজেজা আছে? | প্রফেসর ড. আব্দুলআজিজ বায়িন্দির]। YouTube। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০২২ 
  304. Zone, Islam (২০২০-১২-২৪)। History Of Prophet Muhammad: Muhammad's Birth and Infancy, Muhammad's Teens and Marriage with Khadija, Declaration of Prophethood, The Hijra (Migration to Medina), Conquest of Mecca, Last Sermon, Death [নবী মুহাম্মাদ এর ইতিহাস: মুহাম্মাদ এর জন্ম ও শৈশব, মুহাম্মাদ এর বয়ঃসন্ধি এবং খাদিজা এর সাথে বিবাহ, নবুয়তের ঘোষণা, হিজরত {মদিনায় অভিবাসন}, মক্কা বিজয়, শেষ ভাষণ, মৃত্যু] (ইংরেজি ভাষায়)। Independently Published। আইএসবিএন 979-8-5857-1998-1 
  305. Nur Uğurlu, Hz. Muhammad Sallallahu Alayhi wa Sallam , Noah Publications. (page 13)
  306. "(৫৪) আল-কামার | (54) Al-Qamar | سورة القمر-অনুবাদ/তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  307. "৬. চাঁদ দ্বিখন্ডিত করণের প্রস্তাব (اقتراح شق القمر)"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  308. "Arşivlenmiş kopya" [আর্কাইভ কপি]। ২৫ মার্চ ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ 
  309. When The Moon Split [যখন চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছিল] (ইংরেজি ভাষায়)। Darussalam। ২০০২। আইএসবিএন 978-9960-897-28-8 
  310. "Kamer Suresi - İşte Kur'an" [সূরা ক্বামার: এটি কুরআন]। গবেষণা: istekuran.com। İşte Kur'an। ২ জানুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৩ 
  311. Durmuş, Mehmet (২১ জানুয়ারি ২০১০)। "Ayın Yarılması (Şakkul Kamer) diye bir mucize var mıdır?" [চাঁদ বিভক্তকরণ (শাক্কুল কামার)]। গবেষণা: erdemyolu.com। Erdem Yolu। ১৮ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৩ 
  312. Jonathan M. Bloom; Sheila Blair (২০০৯)। The Grove encyclopedia of Islamic art and architecture [ইসলামী শিল্প ও স্থাপত্যের গ্রোভ বিশ্বকোষ]। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 76। আইএসবিএন 978-0-19-530991-1। ১৫ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০১১ 
  313. "Peygamberimizin en büyük mucizelerinden olan İsra ve Mirac mucizesi ne zaman ve nasıl vuku bulmuştur?" [ইসরা ও মিরাজ মুজিজা: সময় ও বিবরণ]। গবেষণা: Sorularla İslamiyet। ১ জুন ২০০৬। ২৯ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০২২ 
  314. Martin, Richard C. (২০০৪)। Encyclopedia of Islam and the Muslim World [ইসলাম ও মুসলিম বিশ্বের বিশ্বকোষ] (ইংরেজি ভাষায়)। Macmillan Reference USA। আইএসবিএন 978-0-02-865604-5। Archived from the original on ৩০ জুলাই ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২৪ 
  315. Bootman, Elizabeth (২০১৭-১১-২২)। Isra Wal Miraj [ইসরা ও মিরাজ] (ইংরেজি ভাষায়)। Independently Published। আইএসবিএন 978-1-9733-6146-6 
  316. "(১৭) আল-ইসরা (বনী-ইসরাঈল) | (17) Al-Isra | سورة الإسراء-অনুবাদ/তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  317. "আর মিরাজ সত্য, নাবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাতের বেলা আকসায় ভ্রমণ করানো হয়েছে। অতঃপর তাকে জাগ্রত অবস্থায় স্ব-শরীরে উর্ধ্ব আকাশে উত্থিত করা হয়েছে। সেখান থেকে আল্লাহর ইচ্ছা অনুসারে আরো উর্ধ্বে নেয়া হয়েছে। সেখানে আল্লাহ স্বীয় ইচ্ছা অনুসারে তাকে সম্মান প্রদর্শন করেছেন এবং তাকে যা প্রত্যাদেশ করার ছিল তা করেছেন। তিনি যা দেখেছেন তার অন্তর তা মিথ্যা বলেনি। আল্লাহ তার উপর আখেরাতে এবং দুনিয়ার জগতে সালাত (দরুদ) ও সালাম নাযিল করুন"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  318. Khalifa, Dr Rashad (২০১০-১২-৩১)। Quran, Hadith and Islam [কুরআন, হাদিস ও ইসলাম] (ইংরেজি ভাষায়)। Dr. Rashad Khalifa Ph.D.। 
  319. "৮. ২. মিরাজের তারিখ"www.hadithbd.net। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  320. Rizvi, Sayyid Muhammad। Polygamy & Marriages of the Prophet Muhammad [নবী মুহাম্মাদের বিবাহ এবং একাধিক বিবাহ] (ইংরেজি ভাষায়)। Al-Ma‘ãrif Publications। আইএসবিএন 978-0-920675-29-8 
  321. Khan, Saniyasnain (২০১৪)। The Prophet Muhammad Storybook-2: Marriage, Prophethood and Early Days in Makkah [নবী মুহাম্মাদ ঘটনার বই - ২য় অংশ: বিবাহ, নবুওয়াত এবং মক্কায় প্রাথমিক জীবন] (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসবিএন 978-81-7898-855-9 
  322. "(33:6) Al-Ahzab | (৩৩:৬) আল-আহযাব এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  323. "(33:50) Al-Ahzab | (৩৩:৫০) আল-আহযাব এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  324. "(33:52) Al-Ahzab | (৩৩:৫২) আল-আহযাব এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  325. "(4:3) An-Nisa | (৪:৩) আন-নিসা এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৬ 
  326. Rizvi, Sayyid Muhammad; Foundation, Vancouver Islamic Educational (১৯৯০)। Marriage & Morals in Islam [ইসলামে বিবাহ ও নীতিশাস্ত্র] (ইংরেজি ভাষায়)। Vancouver Islamic Educational Foundation। আইএসবিএন 978-0-920675-10-6 
  327. Watt, William Montgomery (১৯৬১)। Muhammad: Prophet and Statesman [মুহাম্মাদ: নবী ও রাষ্ট্রনায়ক] (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-881078-0 
  328. Haylamaz, Reşit (২০০৭)। Khadija: The First Muslim and the Wife of the Prophet Muhammad [খাদিজা: ইসলামের প্রথম মুসলিম এবং নবী মুহাম্মাদের স্ত্রী] (ইংরেজি ভাষায়)। Tughra Books। আইএসবিএন 978-1-59784-121-4 
  329. Thomson, Zahra (২০১৮-০৯-১৯)। Khadija: The First Lady of Islam [খাদিজা: ইসলামের প্রথম নারী] (ইংরেজি ভাষায়)। CreateSpace Independent Publishing Platform। আইএসবিএন 978-1-7258-1779-1 
  330. Hashimi, Abdul-Munim (২০০৬)। The Days of Prophet Muhammad with His Wives [স্ত্রীদের সাথে নবী মুহাম্মাদ এর দিনগুলো] (ইংরেজি ভাষায়)। International Islamic Publishing House। আইএসবিএন 978-9960-850-55-9 
  331. Rizvi, Allamah Sayyid Sa'eed Akhtar (২০১৫-১১-০৩)। The Life of Muhammad the Prophet (ইংরেজি ভাষায়)। CreateSpace Independent Publishing Platform। আইএসবিএন 978-1-5191-0505-9 
  332. Haylamaz, Resit (২০১৩-০৩-০১)। Aisha: The Wife, The Companion, The Scholar [আয়েশা: নবীর প্রিয়তমা, সঙ্গী, জ্ঞানী] (ইংরেজি ভাষায়)। Tughra Books। আইএসবিএন 978-1-59784-655-4 
  333. Ahmad, Fazl (১৯৯৯)। Aisha, the Truthful [আয়িশা, সত্যবাদী] (ইংরেজি ভাষায়)। Sh. Muhammad Ashraf। 
  334. Kahn, Tamam (২০১৩-০৪-০২)। Untold: A History of the Wives of Prophet Muhammad (ইংরেজি ভাষায়)। Monkfish Book Publishing। আইএসবিএন 978-1-939681-05-8 
  335. "রাসুল (সা.)-এর কতজন সন্তান ছিল"www.kalerkantho.com। ২০২২-১০-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৮ 
  336. Abbott, Nabia (১৯৮৫)। Aishah: The Beloved of Mohammed (ইংরেজি ভাষায়)। Al Saqi। আইএসবিএন 978-0-86356-007-1 
  337. Cevizoğlu, M. Hulki (১৯৯৮)। Yaşar Nuri Öztürk (তুর্কি ভাষায়)। Beyaz Yayınları। আইএসবিএন 978-975-8261-23-9 
  338. İslamoğlu, Mustafa (২০১১)। The Conquest of Heart (ইংরেজি ভাষায়)। Düşün Yayıncılık। আইএসবিএন 978-605-4195-79-4 
  339. Syariati, Ali (২০০৮-০৭-০১)। Fatimah: The Greatest Woman in Islamic History (sc) (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। PT Mizan Publika। আইএসবিএন 978-979-18258-0-1 
  340. Syariati, Ali (২০০৮)। Fatimah: the greatest woman in Islamic history (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। PT Mizan Pustaka। আইএসবিএন 978-979-433-488-1 
  341. "FÂTIMA"TDV İslâm Ansiklopedisi (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৮ 
  342. Shams, Dr Iftekhar Ahmed (২০২৩-০৩-১৫)। Hazrat Fatimah Bint Muhammad: The Pure One (ইংরেজি ভাষায়)। Dr. Iftekhar Ahmed Shams। আইএসবিএন 979-8-4454-5927-9 
  343. "স্ত্রীগণ (الأزواج المطهرات)"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৮ 
  344. Muhammad, Lydia Magras (২০২২-০৩-০৮)। Elijah Muhammad and Supreme Literacy: Lessons in Supreme Knowledge, Wisdom, and Understanding (ইংরেজি ভাষায়)। Rowman & Littlefield। আইএসবিএন 978-0-7618-7248-1 
  345. "উম্মি বা নিরক্ষর দ্বারা উদ্দেশ্য"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৮ 
  346. "(29:48) Al-Ankabut | (২৯:৪৮) আল-আনকাবূত এর অনুবাদ ও তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৮ 
  347. "(৬২) আল-জুমু'আ | (62) Al-Jumu'a | سورة الجمعة-অনুবাদ/তাফসীর"www.hadithbd.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-১৮ 
  348. TRHaber। "TRHaber - Çağrı filmi konusu ne, oyuncuları kimler? Çağrı filmi nerede çekildi?" [টিআরহাবার- কল সিনেমার বিষয় কী, অভিনেতা কারা? কল চলচ্চিত্রটি কোথায় চিত্রায়িত হয়েছিল?] (তুর্কি ভাষায়)। অক্টোবর ৩০, ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৩০, ২০২২ 
  349. "Çağrı" [আহ্বান]। গবেষণা: Beyazperde। জুলাই ১, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ৩০, ২০২২ 
  350. তুরস্কের সাক্ষাৎকার ২, মুস্তাফা আক্কাদের সাথে সাক্ষাৎকার, কুরে প্রকাশনা
  351. "Muhammad: The Messenger of God" [মুহাম্মাদ: দ্য ম্যাসেঞ্জার অব গড]। Mahdi Pakdel, Sareh Bayat, Mina Sadati। ২০১৫-০৮-২৭। 
  352. W. Montgomery Watt, Hz. Muhammed Mekke'de , Ankara Üniversitesi İlahiyat Fakültesi Yayınları No: 175, Ankara, 1986.
  353. "Peygamber Efendimiz Hz. Muhammed'in (asv) kronolojik hayatı kısaca nasıldır? » Sorularla İslamiyet" [প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ইসলাম: হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জীবনী] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: Sorularla İslamiyet। ১৭ নভেম্বর ২০০৯। ২৫ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২২ 
  354. "Diyanet Dergi | Diyanet - Aylık Dergi - Aile - Çocuk - İlmi Dergi - Bülten" [ধর্মীয় বিষয়াবলির মাসিক পত্রিকা: পরিবার - শিশু - একাডেমিক জার্নাল - বুলেটিন]। গবেষণা: dergi.diyanet.gov.tr। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২২ 
  355. "Hz. Peygamber Devri Kronolojisi" [হযরত মুহাম্মাদ এর জীবনকালের ঘটনাপ্রবাহ] (তুর্কি ভাষায়)। গবেষণা: Hz. Muhammed (sav) - Son Peygamber। ৩ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২২ 

গ্রন্থপঞ্জী

আরও পড়ুন

বিশ্বকোষ

অনলাইন

বহিঃসংযোগ