মহাযান সূত্রাবলি হল বৌদ্ধসূত্র শাস্ত্রের একটি বিস্তারিত বর্গ, যা মহাযান বৌদ্ধধর্মে প্রামাণ্য ও বুদ্ধবচন ("বুদ্ধের বাণী") হিসেবে স্বীকৃত। এই সূত্রগুলি প্রধানত চীনা বৌদ্ধ সাহিত্য, তিব্বতি বৌদ্ধ সাহিত্য ও এখনও বিদ্যমান সংস্কৃত পুথিপত্রে সংরক্ষিত রয়েছে।[১] আদি উৎসগ্রন্থগুলিতে কোথাও কোথাও এই সূত্রাবলিকে "বৈপুল্য" (বিস্তৃত) সূত্রাবলি আখ্যা দেওয়া হয়েছে।[২] বৌদ্ধ পণ্ডিত অসঙ্গ মহাযান সূত্রাবলিকে বোধিসত্ত্বপিটকের (বোধিসত্ত্ব-বিষয়ক গ্রন্থাবলির একটি সংকলন) শ্রেণিভুক্ত করেছিলেন।[৩]
আধুনিক বৌদ্ধধর্ম বিশেষজ্ঞেরা সাধারণভাবে মনে করেন যে, এই সূত্রাবলির রচনা শুরু হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দী ও খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে[৪][৫] এবং ভারতে বৌদ্ধধর্মের অবনতির পূর্বাবধি এগুলির রচনা, সংকলনা ও সম্পাদনার কাজ চলেছিল। কয়েকটি সূত্র সম্ভবত ভারতের বাইরে মধ্য এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার মতো অঞ্চলে রচিত হয়েছিল।[৬]
মহাযানী বৌদ্ধরা মনে করেন, বেশ কয়েকটি প্রধান মহাযান সূত্র স্বয়ং গৌতম বুদ্ধ কর্তৃক উপদিষ্ট হয়েছিল এবং তাঁর শিষ্যরা (বিশেষত আনন্দ) সেগুলি মুখস্থ করে আবৃত্তি করেছিলেন।[৭] যদিও অন্যান্য মহাযান সূত্রগুলিকে পার্থিব বোধিসত্ত্বমঞ্জুশ্রী ও অবলোকিতেশ্বরের ন্যায় ব্যক্তিবর্গের শিক্ষা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এই সূত্রগুলি পরবর্তীকালে কেন প্রকাশিত হয়েছে, সেই ব্যাপারে ভারতীয় মহাযানী বৌদ্ধেরা বিভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করে থাকেন। এমনই একটি ব্যাখ্যা হল এই যে, প্রচারের উপযুক্ত সময় না আসা পর্যন্ত এগুলি নাগেদের (সর্পদেবতা, ড্রাগন) রাজ্যে লুক্কায়িত ছিল।
ভারতের সকল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মহাযান সূত্রাবলিকে স্বীকৃতি দেন না। বিভিন্ন ভারতীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়, বিশেষত আধুনিক থেরবাদ সম্প্রদায়, এগুলিকে "বুদ্ধবচন" বলে মনে করে না।[৮][৯]
Kanno, Hiroshi (2003). Chinese Sutra Commentaries from the Early Period, Annual Report of The International Research Institute for Advanced Buddhology at Soka University, IRIAB, vol VI, 301-320
Macmillan Encyclopedia of Buddhism, Macmillan, 2004.
Nakamura, Hajime (1980). Indian Buddhism: A Survey with Bibliographical Notes. 1st edition: Japan, 1980. 1st Indian Edition: Delhi, 1987. আইএসবিএন৮১-২০৮-০২৭২-১